Ajker Patrika

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড আর ব্যবহার করবে না চীন, বিকল্প কী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৫৬
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আমেরিকায় ইউরোপীয়দের প্রথম আগমনের সময় তারা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সামনে নিজেদের নির্দেশ পড়ে শোনাত। এখন তেমনি এক দৃশ্য যেন দেখা যাচ্ছে চীনের আচরণেও। তবে এবার লক্ষ্য দখল নয়, নিয়ন্ত্রণ। বেইজিং এখন চায় না—যুক্তরাষ্ট্র সহজে তাদের সরকারি নথিপত্র পড়তে পারুক।

আর এ লক্ষ্যেই গত সপ্তাহে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিরল খনিজ রপ্তানির ওপর নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। কিন্তু সেই নথি খোলা যাচ্ছে না মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কিংবা অন্য কোনো মার্কিন সফটওয়্যারে। প্রথমবারের মতো মন্ত্রণালয় এমন ফাইল ফরম্যাটে নথি প্রকাশ করেছে, যা কেবল চীনের নিজস্ব ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার ‘ডব্লিউপিএস অফিস’—এ খোলা যায়। হংকং থেকে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

বেইজিংভিত্তিক সফটওয়্যার কোম্পানি কিংসফট তৈরি করেছে এই ডব্লিউপিএস অফিস। সফটওয়্যারটির কোডিং পদ্ধতি ভিন্ন হওয়ায় এর ফাইল সরাসরি মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে খোলা যায় না; আগে কনভার্ট করতে হয়। এই পরিবর্তনের সময়টা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে এখন স্নায়ুযুদ্ধের মতো উত্তেজনা চলছে। প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর আর ডিজিটাল সিস্টেম—সবকিছুই এখন দুই পরাশক্তির মধ্যে কৌশলগত প্রতিযোগিতার অস্ত্রে পরিণত হয়েছে।

এই পরিবর্তনের পেছনে আছে চীনের বড় লক্ষ্য—প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা অর্জন। গত কয়েক বছরে বেইজিং সরকারি দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও গুরুত্বপূর্ণ শিল্প খাতে বিদেশি আইটি সিস্টেমের ওপর নির্ভরতা কমাতে জোর দিচ্ছে।

এর এক উদাহরণ দেখা গিয়েছিল ২০২৪ সালের জুলাইয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্রাউডস্ট্রাইকের একটি ত্রুটিপূর্ণ আপডেটের কারণে সারা বিশ্বে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ সিস্টেম অচল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু চীন তেমন ক্ষতির মুখে পড়েনি। কারণ, দেশটির ব্যাংক, বিমান সংস্থা থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান আগেই বিদেশি সিস্টেম ত্যাগ করে স্থানীয় সফটওয়্যারে চলে গিয়েছিল।

এটি কোনো কাকতালীয় ঘটনা ছিল না। ২০২২ সালে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ তদারকি কমিশন নির্দেশ দিয়েছিল—সব রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানকে ২০২৭ সালের মধ্যে দাপ্তরিক কার্যক্রমে পুরোপুরি দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহারে যেতে হবে। এরপর থেকেই ডব্লিউপিএস অফিস হয়ে উঠেছে দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়ার্ড প্রসেসর। একই সঙ্গে টেনসেন্ট, হুয়াওয়ে, আলিবাবা ও নেটইজ নিজেদের তৈরি ই-মেইল ক্লায়েন্ট, ক্লাউডসহ নানা ডিজিটাল সেবা উন্নয়ন করছে।

চীনে বিদেশি সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো ধীরে ধীরে কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে, কেউ কেউ বাধ্যও হচ্ছে। অ্যাডোব ও সিট্রিক্স (বর্তমানে ক্লাউড সফটওয়্যার) চীনে তাদের ব্যবসা সীমিত করেছে। অন্যদিকে মাইক্রোসফট ২০২৪ সালের মধ্যেই সাংহাইয়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাগার ও মূল ভূখণ্ডের সব আউটলেট বন্ধ করেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে চীনের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাইটড্যান্স, আলিবাবাসহ বড় কোম্পানিগুলোকে এনভিডিয়ার ‘আরটিএক্স প্রো ৬০০০ ডি’ চিপের পরীক্ষা ও কেনা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।

এর আগে, চীনের সাইবার নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ টেনসেন্ট, বাইদু ও বাইটড্যান্সের মতো দেশীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে এনভিডিয়ার ‘এইচ ২০’ এআই চিপ ব্যবহারে সতর্ক করেছিল। কারণ বলেছিল, এসব চিপ জাতীয় নিরাপত্তা ও ডেটা ঝুঁকির কারণ হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুক্তরাষ্ট্রে প্রভাবশালী ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ গ্রেপ্তার

বিহার নির্বাচন: লড়বেন না প্রশান্ত কিশোর, ‘নিশ্চিত পরাজয়’ দেখছেন বিজেপি জোটের

প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করছে চ্যাটজিপিটি, শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়

পায়ে নূপুর দেখে মেয়ের লাশ শনাক্ত করলেন বাবা

‎ডিপ ফ্রিজে লাশ উদ্ধার: পলাতক স্বামী গ্রেপ্তার ‎

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত