Ajker Patrika

সরকারি সুযোগ-সুবিধা সত্ত্বেও বিয়েতে আগ্রহ হারাচ্ছেন চীনা তরুণ-তরুণীরা

ডয়চে ভেলে
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৩, ১০: ৫৭
Thumbnail image

বিয়ে করলে সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বেকারত্ব ও আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে চীনা তরুণ-তরুণীরা বিয়ে এবং পরিবার শুরু করার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

চীনের উত্তরের প্রদেশ সাংসির বাসিন্দা জিনহি হু। ২৯ বছর বয়সী এই স্কুলশিক্ষকের কাছে বিয়ের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। যদিও তার বাবা-মা এ বিষয়ে তাঁকে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন এবং গত তিন বছরে অন্তত ২০টি ‘অপরিচিত মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাতে’ (ব্লাইন্ড ডেটে) পাঠিয়েছেন, তা সত্ত্বেও জিনহির জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। তিনি বিয়ে করার আগ্রহ পাচ্ছেন না।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘বিয়ে করা না করা স্বাধীনতার ব্যাপার। সবার যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে করার প্রয়োজন নেই।’

জিনহি একা নন। চীনের সিভিল অ্যাফেয়ার্স-বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত মাসে জানিয়েছে যে দেশটিতে নতুন বিয়ের সংখ্যা গত ৩৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে গিয়ে ঠেকেছে। গত আট বছর ধরেই বিয়ের হার কমতির দিকে রয়েছে। গত বছর দেশটিতে মাত্র ৬৮ লাখ ৩০ হাজার দম্পতি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।

বিশেষ করে গত শতকের নব্বইয়ের দশকে এবং চলতি শতকের প্রথম দশকে জন্ম নেওয়া নারীদের মধ্যে বিয়ে করার আগ্রহ বেশ কম। চীনের আদমশুমারি অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিয়ের গড় বয়স ছিল প্রায় ২৯ বছর, যা ২০১০ সালের তুলনায় চার বছর বেশি।

লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক ইয়ে ল্যু মনে করেন, চীনে কর্মক্ষেত্রে এখনো লিঙ্গবৈষম্য ব্যাপকভাবে রয়ে গেছে। একজন নারীকে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর সন্তানসম্ভবা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না এবং মাতৃত্বকালীন ছুটির প্রয়োজন পড়বে কি না, সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়।

ফলে অনেক নারী ক্যারিয়ার ও পারিবারিক জীবনের মধ্য থেকে কোনো একটি বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি।

ইয়ে বলেন, ‘যখন নারীরা শিক্ষার পেছনে দীর্ঘ সময় ব্যয় করেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই তারা বিয়ে এবং মাতৃত্বে প্রবেশের জন্য একটু বেশি বয়স অবধি অপেক্ষা করেন।’

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, চীনে সন্তান জন্মদানের হার আশির দশকে ২.৬ শতাংশ ছিল, ২০২১ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১.১৫ শতাংশ। গত প্রায় ছয় দশকের মধ্যে গত বছর থেকে জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে দেশটিতে। এই হিসাব থেকে অবশ্য ২০০৩ সাল বাদ দেওয়া হয়েছে। কেননা, সে বছর ভয়াবহ এক মহামারিতে মানুষ জন্মের চেয়ে মৃত্যু বেড়ে গিয়েছিল দেশটিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত