Ajker Patrika

চীন জিনজিয়াংয়ে সম্ভবত মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে: জাতিসংঘ

আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০: ৪০
চীন জিনজিয়াংয়ে সম্ভবত মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে: জাতিসংঘ

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘু জনগণের প্রতি দেশটির আচরণ ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ সংঘটিত হতে পারে। গতকাল বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের প্রতিবেদনে এ কথা জানান হয়।

হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম গোষ্ঠীর সদস্যদের  বৈষম্যমূলক আটকের পরিমাণ আন্তর্জাতিক অপরাধ বিশেষ করে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ গঠন করতে পারে।’ 

প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, চীন সরকারের ‘সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ দমন’ কৌশল প্রয়োগের প্রেক্ষাপটে জিনজিয়াং অঞ্চলে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।

মিশেল ব্যাচেলেটেপ্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘জোরপূর্বক চিকিৎসা এবং আটকের প্রতিকূল অবস্থাসহ নির্যাতন বা খারাপ আচরণের অভিযোগগুলোর প্রমাণ পাওয়া গেছে।’ 

এই প্রতিবেদন প্রকাশের বিরোধিতা করেছিল চীন। ১৩১ পৃষ্ঠার নথিতে প্রতিবেদনটির প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটি। প্রতিবেদনে অনুসন্ধানগুলোকে বিভ্রান্তির ওপর ভিত্তি করে এবং বিরোধীদের দ্বারা বানোয়াট বলে নিন্দা করেছে চীন বাহিনী। 

চীনকে পর্যালোচনা এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে নথিতে অগ্রিম অ্যাক্সেস দেওয়ার পরে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) এর নিজস্ব প্রতিবেদনের সঙ্গে এই প্রতিক্রিয়াটি প্রকাশ করা হয়েছিল। 

প্রতিবেদন মূল্যায়ন করার জন্য, জাতিসংঘ বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টেশন এবং অন্যান্য উপকরণের মূল্যায়ন করেছে। উইঘুর, কাজাখ এবং কিরগিজ জাতিসত্তার ৪০ জন লোকের সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিবেদন কতরা হয়েছে। যার মধ্য ২৬ জন জানিয়েছেন যে তাদের আটক করা হয়েছিল। 

প্রতিবেদনে চীনা সরকারকে ‘আন্তর্জাতিক নিয়ম ও মানদণ্ড লঙ্ঘন করে মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার ওপর সুদূরপ্রসারী, স্বেচ্ছাচারী এবং বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধ’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে বর্ণিত নীতি লংঘন হচ্ছে, পরিবারগুলিকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং মানবিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। যার কারণে উইঘুর, কাজাখ এবং অন্যান্য প্রধানত মুসলিম সংখ্যালঘু পরিবারগুলিকে কাটাতে হচ্ছে যন্ত্রণাকর জীবন। তাদের ভয় দেখানো এবং হুমকি বেড়েছে। প্রবাসীরা এই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে প্রকাশ্যে কথা বলেছে। 

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন চীনের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে নির্বিচারে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের অবস্থানের ব্যাখ্যা। 

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন জাতিসংঘের আন্তঃসরকারি সংস্থা এবং মানবাধিকার ব্যবস্থার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ৷ 

নথির প্রতিক্রিয়ায়, বেইজিং বলেছে যে প্রতিবেদনটি চীনের আইন ও নীতিকে ‘বিকৃত’ করেছে। 

চীন প্রতিক্রিয়া বলেছে, উইঘুরসহ সমস্ত জাতিগোষ্ঠী চীনা জাতির সদস্য। জিনজিয়াং আইন অনুযায়ী সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে, কার্যকরভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনাগুলিকে দমন করেছে। বর্তমানে জিনজিয়াং সামাজিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি উপভোগ করছে। জিনজিয়াং-এর সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর মানুষ শান্তি ও তৃপ্তিতে সুখী জীবনযাপন করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত