Ajker Patrika

তিন মাস হলো বাচ্চার জন্য খেলনা কেনেন না দিলসান

রাশেদ নিজাম, কলম্বো থেকে
আপডেট : ২১ জুলাই ২০২২, ১৯: ৫১
Thumbnail image

দিলসান পেরেরা। লাল টুকটুকে একটা গাড়ি চালান। আকর্ষণীয় তার রং। কলম্বোয় মেরিন ড্রাইভের হোটেল থেকে সংসদের দিকে যাওয়ার পথে কথা হল ২৮ বছরের চালকের সঙ্গে। টুরিস্ট কমে গেছে, আয় নেই। জ্বালানির সংকট সবকিছু নিয়েই টুকটাক আলাপ চলছে (বাংলাদেশের সিএনজিকে এখানে টুকটুক বলে) তাই ভুল করবেন না ভেবে।

দিলসানের ডাক নাম দিলীপ। একই নামে বেশি মানুষ হওয়ায় দিলীপ হিসেবেই পরিচয় দেন। কথা বলতে বলতে চোখ পড়ল গাড়ির ড্যাশবোর্ডে একটি ছোট্ট নেমপ্লেটের (নাম লেখা বোর্ড) ওপর। সেনেরা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস। কথায় কথা আসে, সেভাবেই আসলো নামটা দিলিপের দেড় বছরের মেয়ের। তার নামেই মাস আটেক আগে লাল গাড়িসহ তিনটি প্রাইভেটকার নিয়ে চালু করেন নিজের একটি ছোট্ট কোম্পানি।

পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকা শ্রীলঙ্কায় ট্রিপের অভাব ছিল না। দম ফেলার সুযোগ পেতেন না। আজ ক্যানডি, কাল গল, পরশু হামবানটোটা। মাসে একেকটি গাড়িতেই প্রায় ৫ লাখ রুপি আয় হতো। তিনটায় গড়ে ১৪ থেকে ১৫ লাখ। সেখান থেকে সাড়ে ৪ লাখ ব্যাংকের কিস্তি, বাকি চালকদের বেতন দিয়ে আরামে চলতো সংসার।

গত চার মাসে কিস্তি দিতে পারেননি একবারও। সংসারে নেমেছে টানাটানি। কেমন যাচ্ছে দিনকাল? দিলিপের উত্তর-একবারের জন্যও মেয়েকে নিয়ে বাইরে খেতে যেতে পারেননি। মাসে বহু কষ্টে ২ লাখের মত কামাই হয়। তাতে কিস্তি দেওয়া সম্ভব নয়। যে কোম্পানির মাধ্যমে লোন নিয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সময় নিয়েছেন।

জানালেন, সপ্তাহে একবার কিংবা কোনো সপ্তাহে কলম্বোয় বাসায় আসার সুযোগ পেতেন না। এখন প্রতি রাতেই বাসায় থাকেন। গত মাসে ৮ দিন একটানা জ্বালানি তেলের জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করেছেন। তারপর মিলেছে অর্ধেক।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত দেড় বছরের মেয়ের বাবা বললেন, গত তিন-চার মাসে সেনোরার জন্য একটা খেলনা কিনতে পারিনি। এই অবস্থা কেটে যাক, এটাই একমাত্র চাওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত