Ajker Patrika

চীনের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে রেকর্ড প্রতিরক্ষা বাজেট ঘোষণা করল জাপান

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০: ৩১
Thumbnail image

সমুদ্রে পারমাণবিক বর্জ্য পানি নিষ্কাশন নিয়ে চীনের সঙ্গে জাপানের উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। দক্ষিণ কোরিয়াও বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। এর মধ্যে রেকর্ড প্রতিরক্ষা বাজেট ঘোষণা করল জাপান। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রতিরক্ষা খাতে রেকর্ড ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি ইয়েনের (৫ হাজার ২৬৭ কোটি ডলার) বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। 

এই প্রস্তাব পাস হলে এটি হবে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার পাঁচ বছর মেয়াদে ৪৩ লাখ কোটি ইয়েন ব্যয়ে সামরিক খাত উন্নয়ন পরিকল্পনার নতুন পদক্ষেপ। 

গত বছর ঘোষিত এই পরিকল্পনা অনুসারে, জাপান ২০২৭ সাল নাগাদ মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় করে দ্বিগুণ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা গড়ে তুলতে চায়। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী মনোভাব এবং উত্তর কোরিয়ার বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় এই পরিকল্পনা নিয়েছে জাপান। 

গত সপ্তাহে জাপান ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রের পরিশোধিত তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছাড়তে শুরু করেছে। জাপানের সি ফুড আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে চীন এই পদক্ষেপের নিন্দা জানায়। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা বাজেট গত বছরের চেয়ে ১ লাখ কোটি ইয়েন বেশি। অর্থাৎ গত বছরের প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। 

প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন জাহাজভিত্তিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ গোলাবারুদ ও অস্ত্রের জন্য ৯০ হাজার কোটি ইয়েন বরাদ্দ করার পরিকল্পনা করেছে। 

জরুরি অবস্থার সময় দক্ষিণ-পশ্চিম দ্বীপপুঞ্জে অস্ত্র ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মোতায়েনের জন্য রসদের ক্ষমতা বাড়াতে ৬০ হাজার কোটি ইয়েন ব্যবহার করা হবে। 

বাজেটে তিনটি নতুন ল্যান্ডিং জাহাজের জন্য ১ হাজার ৭০০ কোটি ইয়েন, ১৭টি হেলিকপ্টারের জন্য ৩০ হাজার কোটি ইয়েন এবং প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন সক্ষমতা উন্নত করার জন্য একটি নতুন বিশেষায়িত পরিবহন দলের প্রস্তাব করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। 

জাপান সুপারসনিক যুদ্ধাস্ত্র মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে ৭ হাজার ৫০০ কোটি ইয়েন ব্যয় করবে। এ ছাড়া ব্রিটেন ও ইতালির সঙ্গে মিলে ৬ হাজার ৪০০ কোটি ইয়েন ব্যয়ে নেক্সট জেনারেশন ফাইটার জেট তৈরি করবে জাপান। 

কয়েক দশক ধরে শান্তিবাদী নীতি মেনে চলার পর যুক্তরাষ্ট্রের এই মিত্র দেশ এবার প্রতিরক্ষায় রেকর্ড পরিমাণ ব্যয় করতে যাচ্ছে। ১৯৪৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের ওপর যুদ্ধবিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেয়। ফলে দীর্ঘ দিন সেই অর্থে আনুষ্ঠানিক সামরিক বাহিনীই ছিল না জাপানের। 

কিন্তু সমুদ্রে প্রভাব বিস্তারে চীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বিশেষ করে তাইওয়ান নিয়ে আগ্রাসী মনোভাব এবং ক্রমে সশস্ত্র হয়ে ওঠা উত্তর কোরিয়ার কারণে জাপানের চিন্তায় পরিবর্তন ঘটেছে। এ ছাড়া ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পর উদ্বেগ আরও বেড়েছে। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং এর আগে আগ্রাসনের কারণে এখনো এশিয়ার কয়েকটি দেশের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ। জাপান আশ্বস্ত করেছে, তার ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি অন্য দেশের জন্য কোনোভাবেই হুমকি হবে না। জাপান বলছে, ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও সংলাপকেই গুরুত্ব দেবে টোকিও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত