Ajker Patrika

ঠিকভাবে হিজাব না পরায় আটক আফগান নারীরা, মারধরের শিকার বাবা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯: ০৩
Thumbnail image

আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবানের হিজাব রীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে গত এক সপ্তাহে রাজধানী কাবুলের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করা হয়েছে নারীদের। তাঁদের মধ্যে ১৬ বছরের এক কিশোরী আছে। তাঁরা মারধরের শিকার হচ্ছেন বলে এক প্রতিবেদনে বলেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

শপিং সেন্টার, শ্রেণিকক্ষ, রাস্তাঘাট বা বাজার থেকে আটক করা হয়েছে আফগান নারীদের। বলা হয়েছে, এই নারীরা মেকআপ করার মাধ্যমে অন্যদের খারাপভাবে হিজাব পরতে উৎসাহিত করেছিলেন।

আটক নারীদের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী লালেও (ছদ্মনাম) ছিল। ইংরেজি শেখার ক্লাস থেকে অন্য অনেক মেয়ের সঙ্গে তালেবানরা তাকেও গ্রেপ্তার করে একটি পুলিশ ট্রাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। লালে বলে, যে নারীরা তালেবানদের মুখোমুখি হয়ে তাদের সঙ্গে যাওয়ার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানান, তাঁদের মারধর করা হয়। এমনকি, এ রকম ‘দুশ্চরিত্র’ মেয়েকে বড় করার দায়ে লালের বাবাকেও ভীষণভাবে পিটিয়েছেন তালেবান সদস্যরা।

লালে দাবি করে, তার পোশাক শালীন ছিল, মুখও ছিল ঢাকা। সে বলে, ‘তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমি সতর্কতা অবলম্বন হিসেবে হিজাব করি এবং মুখ ঢেকে রাখি। কিন্তু তারপরও তারা (তালেবান) আমাকে মারতে থাকে এবং জোর দিয়ে বলে, আমার পোশাক নাকি অশালীন!’

দুই দিন দুই রাত আটক ছিল লালে। ইংরেজি পড়া এবং বিদেশে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জন্য তালেবানরা আটক নারীদের সারা সময় কাফের বলে অভিশাপ দিয়েছে। সম্প্রদায়ের প্রবীণদের হস্তক্ষেপের পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং বাধ্যতামূলক মাথা ঢেকে না রেখে তার বাড়ি থেকে বের না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি নথিতেও স্বাক্ষর করেছে লালে। তার ইংরেজি ক্লাসে যোগ দেওয়াও এখন নিষিদ্ধ।

লালে বলে, ‘২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আমার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়েছিল। আর এখন প্রাইভেট ক্লাসেও যেতে পারব না। বাসায় বসে থাকা, আর বিয়ে করা ছাড়া ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুই ভাবতে পারছি না। আর যেভাবে আমার বাবাকে মারধর করা হয়েছে, তাতে আমার পড়াশোনার কোনো আগ্রহই আর অবশিষ্ট নেই।’

তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেছেন, আটক নারীদের পরিবার আফগানিস্তানের পুণ্যের প্রচার এবং পাপ প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে বিদেশিদের সমর্থনে তাদের মেয়েরা ঠিকভাবে হিজাব না পরাকে প্রচার করছে। এ কারণেই তাঁদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাঁদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুজাহিদ বলেন, এ ধরনের গ্রেপ্তার আফগানিস্তানের সাধারণ প্রথা নয়।

২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে তালেবানরা শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও জনসমক্ষে নারীদের প্রবেশাধিকার আরও সীমিত করেছে। ২০২২ সালের মে মাসে তারা আদেশ দিয়েছিল, নারীদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত নিজেকে সম্পূর্ণ ঢেকে রাখতে হবে। শুধু তাঁদের চোখ দেখা যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত