Ajker Patrika

২০ বছর পর ‘বালি-নাইন গ্যাংয়ের’ ৫ অস্ট্রেলিয়ানকে মুক্তি দিল ইন্দোনেশিয়া

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
এই পাঁচজনকে মুক্তি দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এক নারী সহ একটি হেরোইন পাচারকারী চক্রের ৯ সদস্য ধরা পড়েছিলেন। পরে তারা ‘বালি-নাইন গ্যাং’ নামে কুখ্যাতি পান। রোববার সিএনএন জানিয়েছে, দুই দশক ধরে বন্দী ওই গ্যাংয়ের অবশিষ্ট পাঁচ অস্ট্রেলিয়ানকে মুক্তি দিয়ে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে একটি সমঝোতার মাধ্যমে তাঁদের মুক্তি নিশ্চিত হয়েছে।

আজ রোববার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এক্স মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করছি, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক সি ইয়ি চেন, মাইকেল জুগাজ, ম্যাথিউ নরম্যান, স্কট রাশ এবং মার্টিন স্টিফেন্স আজ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে এসেছেন।’

বিশ্ব গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী—বালি-নাইন গ্যাংয়ের মুক্তি পাওয়া ওই পাঁচ অস্ট্রেলিয়ান ২০০৫ সালে বালির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৮ কেজির বেশি হেরোইন সহ ধরা পড়েছিলেন। ওই হেরোইন তাঁরা অস্ট্রেলিয়ায় পাচারের চেষ্টা করছিলেন।

এই ঘটনাটি পরবর্তীতে বহু বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অস্ট্রেলিয়ার সরকার গ্রেপ্তার নিজ দেশের নাগরিকদের ফেরানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

২০১৫ সালে গ্যাংয়ের দুই প্রধান নেতা অ্যান্ড্রু চ্যান এবং মাইরান সুকুমারানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইন্দোনেশিয়া। এই ঘটনাকে অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ‘একটি অন্ধকার মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।

এদিকে গত মাসে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনের সময় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ ইন্দোনেশিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে ৫ বন্দীর মুক্তির বিষয়ে কথা বলেছিলেন। পরে ইন্দোনেশিয়ার আইনমন্ত্রী তাদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেন।

রোববার এক্স-এ আলবানিজ লিখেছেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর উদারতার জন্য ধন্যবাদ জানাই।’

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি অং এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, ‘মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে তাদের ব্যক্তিগত পুনর্বাসন ও পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।’

২০০৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষের তথ্যের ভিত্তিতেই বালির দেনপাসার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘বালি-নাইন’ গ্যাংকে গ্রেপ্তার করেছিল। এর মধ্যে চারজনের শরীরে হেরোইন বাঁধা অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য চারজনকে আটক করা হয় ইন্দোনেশিয়ার কুটা দ্বীপের একটি হোটেল থেকে। এই দলের প্রধান নেতা চ্যান সিডনির উদ্দেশে বিমানে ওঠার সময় ধরা পড়েন।

গ্যাংয়ের গ্রেপ্তার ৯ সদস্য। ছবি: বিবিসি
গ্যাংয়ের গ্রেপ্তার ৯ সদস্য। ছবি: বিবিসি

আটক ৯ জনের মধ্যে চ্যান এবং সুকুমারান নামে একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। অন্য সাতজন আপিলের পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান।

এর আগে ১৩ বছর কারাভোগের পর ২০১৮ সালে একমাত্র নারী সদস্য রেনি লরেন্স মুক্তি পান। শুরুতে তাঁকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হলেও পরে ২০ বছরে কমিয়ে আনা হয়। তবে ভালো আচরণের জন্য ২০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে রেনিকে। এই গ্যাংয়ের আরেক সদস্য তান ডাক থান গুয়েন ২০১৮ সালে কারাগারের কিডনি ক্যানসারে মারা গিয়েছিলেন।

‘বালি-নাইন’ মামলাটি ইন্দোনেশিয়ার কঠোর মাদক পাচার আইনকে আবারও সামনে এনেছে। দেশটিতে এখনো বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক মাদক সংক্রান্ত অভিযোগে আটক রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত