Ajker Patrika

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন

বিপুল বকেয়া সত্ত্বেও ব্যবসা হারানোর ভয়ে বাংলাদেশ-নেপালে সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১২: ১৩
২০২১ সালের অক্টোবর থেকে বিজ্ঞাপন মুক্ত সম্প্রচার চালিয়ে আসছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো।  ছবি: সংগৃহীত
২০২১ সালের অক্টোবর থেকে বিজ্ঞাপন মুক্ত সম্প্রচার চালিয়ে আসছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো। ছবি: সংগৃহীত

নেপালের পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গেও ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন সংকট দেখা দিয়েছে। নেপাল ও বাংলাদেশের স্থানীয় পরিবেশকদের কাছে শত শত কোটি রুপির লাইসেন্স ফি বকেয়া রয়েছে ভারতের টিভি সম্প্রচার সংস্থাগুলোর। গত এক বছরে এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে এ বিষয়ে অবগত দুজন নির্বাহীর বরাত দিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য হিন্দু।

নির্বাহীরা বলছেন, এই বকেয়া সমস্যা সবচেয়ে গুরুতর হয়েছে বাংলাদেশে। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশি টিভি পরিবেশকেরা ভারতীয় সম্প্রচার সংস্থাগুলোকে তাদের চ্যানেলের ফি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

নেপাল ও বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেলগুলোর বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। এই জনপ্রিয়তার কারণে ভারতীয় সম্প্রচারকেরা স্থানীয় পরিবেশকদের ‘ক্লিন ফিড’ সরবরাহ করে, যা বিজ্ঞাপনমুক্ত সরাসরি সম্প্রচার। এর পরেও নেপালে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বকেয়ার পরিমাণ ১০০ কোটি রুপি ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে, এক নির্বাহীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি সম্প্রচারকদের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ২৫০ কোটি রুপির বেশি।

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহৎ ব্যবসায়িক গ্রুপ বেক্সিমকোসহ অনেক প্রতিষ্ঠান ভারতীয় সম্প্রচারকদের পাওনা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রেমিট্যান্স ছাড়পত্র পায়নি। এ ছাড়া, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কূটনীতিক ও রাজনীতিবিদদের মধ্যে সম্প্রচারকদের বাণিজ্যিক উদ্বেগ নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না বলে এক নির্বাহী জানিয়েছেন।

এদিকে, নেপালে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ভারতীয় চ্যানেলগুলো সরকারের সঙ্গে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটির যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ‘আ লা কার্তে’ নামক একটি মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি কার্যকর করতে মাত্র দুই দিনের সময় দিয়েছিল। এই পদ্ধতি কার্যকর না হওয়ায় নেপাল সরকার ভারতীয় সম্প্রচার সংস্থাগুলোর পাওনা পরিশোধের জন্য বিদেশি মুদ্রা ছাড় করা বন্ধ করে দিয়েছে।

এদিকে বিপুল বকেয়া থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সম্প্রচারকেরা ফিড বন্ধ করতে দ্বিধাবোধ করছেন। এ বিষয়ে একজন নির্বাহী জানিয়েছেন, যদি তাঁরা ফিড বন্ধ করে দেন, তাহলে বাংলাদেশের পরিবেশকেরা সহজেই পাইরেটেড ফিড ব্যবহার করতে পারে। এতে করে বকেয়া লাইসেন্স ফি আদায়ের সব আশা শেষ হয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে এই বাজারে পুনরায় প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়বে। ২০২৩ সালে এয়ারটেল নেপালে তাদের সংযোগ সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল, যা পরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় চালু করা হয়।

এই ক্রমবর্ধমান সমস্যার মধ্যে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে. পি. শর্মা ওলির আগামী সেপ্টেম্বরে ভারত সফরের কথা রয়েছে। এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি সম্প্রতি কাঠমান্ডু সফর করেছেন। তবে, দ্য হিন্দু এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেপালের দূতাবাস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশন এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে দেশে আইন করা হয়, বিদেশি চ্যানেল বিদেশি বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে প্রচার করতে হবে। কিন্তু স্থানীয় কেবল টিভি প্রোভাইডাররা তা বারবার সময় নিলেও বাস্তবায়ন করেনি। পরে ২০২১ সালের ১ অক্টোবর থেকে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয় তৎকালীন সরকার। এরপর অধিকাংশ বিদেশি টিভি চ্যানেল প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। তবে পরে ক্লিন ফিডেই সম্প্রচার শুরু করে অনেক চ্যানেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

ঢাবিতে পাঁচ প্যানেলে ভোটের যুদ্ধ

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এনসিপির মাহিন সরকারকে বহিষ্কার

যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কারের কারণ জানাল এনসিপি

আদালতে আসামির স্বীকারোক্তি—১০ লাখ টাকা লোন দেয়নি বলে ব্যাংকে চুরির সিদ্ধান্ত নিই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত