Ajker Patrika

কাশ্মীরের জুরিমাঞ্জ গ্রামকে কেন বাংলাদেশ নামে ডাকে সবাই

অনলাইন ডেস্ক
কাশ্মীরের জুরিমাঞ্জ গ্রামকে কেন বাংলাদেশ নামে ডাকে সবাই

রাজধানী শ্রীনগর থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে কাশ্মীরের উত্তরাঞ্চলীয় বান্দিপোরা জেলায় ছোট্ট এক গ্রামের নাম জুরিমাঞ্জ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠা পানির হ্রদ উলার লেকের তীরেই এই গ্রামের অবস্থান। দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে ছোট্ট এই গ্রামটি ধীরে ধীরে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো-এই গ্রামটিকে কাশ্মীরের মানুষ বাংলাদেশ নামে ডাকে। কিন্তু কেন? 

গত রোববার (২ অক্টোবর) মানিকন্ট্রোল-এর এক প্রতিবেদনে কাশ্মীরের বাংলাদেশ তথা জুরিমাঞ্জের পর্যটন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গ্রামটির নাম কেন বাংলাদেশ হলো সে সম্পর্কে ‘মানিকন্ট্রোল’কে স্থানীয়রা জানান, ১৯৭১ সালে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের পরই এই গ্রামকে সবাই বাংলাদেশ নামে ডাকতে শুরু করেছিল। এর একটি কারণও আছে। 

স্থানীয় নৌকার মাঝি ফেরদৌস আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) যখন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ চলছিল, সেই দিনগুলোতেই একদিন জুরিমাঞ্জ গ্রামে বিশাল এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই আগুনে পুরো গ্রামই ছাই হয়ে যায়। একপর্যায়ে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ নাম ধারণ করে। অন্যদিকে জুরিমাঞ্জ গ্রামেও মানুষেরা তাদের নতুন ঘর-বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। কাকতালীয় এই মিলের মধ্য দিয়েই জুরিমাঞ্জ হয়ে যায় কাশ্মীরের বাংলাদেশ।’ 

৩৫ বছর বয়সী ফেরদৌস জানান, সেদিনের সেই আগুনে গ্রামটি দুটি কলোনিতে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। এই দুই কলোনির একটি বাংলাদেশ অন্যটি জুরিমাঞ্জ। প্রায় সাড়ে তিন শ বসতি রয়েছে এই এলাকাটিতে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মীরের বাংলাদেশ নামের গ্রামটিতেই জন্ম হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এবং বিভিন্ন পার্টির সম্মিলিত হুরিয়াত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাঈদ আলী শাহ জিলানির জন্ম হয়েছিল। 

পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে জুরিমাঞ্জ গ্রাম।অভূতপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য গ্রামটি এখন পর্যটকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গত এক বছর ধরে গ্রামটিতে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ভিড় জমাচ্ছেন। সেখানে তাঁরা নৌকায় চড়া, মাছ ধরা, পাখি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের মতো নানা ধরনের কর্মকাণ্ড করছেন। 

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, তাঁদের গ্রাম দেখতে বাংলাদেশ থেকেও অনেক পর্যটক যান। এ ছাড়া পোল্যান্ড, রাশিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশ থেকেও অসংখ্য পর্যটক গ্রামটিতে ভ্রমণ করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত