Ajker Patrika

মালয়েশিয়ায় চীনের তৈরি শহর ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ

আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৪০
মালয়েশিয়ায় চীনের তৈরি শহর ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ

মালয়েশিয়ার জহর প্রদেশেই চীনারা গোড়াপত্তন করেছিল ফরেস্ট সিটি কমপ্লেক্স নামের এক উচ্চাভিলাষী প্রকল্প। বর্তমানে এই সিটিতে বসবাস করা কিছু মানুষ দাবি করেছেন, পর্যাপ্ত স্থান কিন্তু মানুষের অভাব ওই স্থানকে অসহনীয় করে তুলেছে।

ফরেস্ট সিটিতে বসবাস করেছেন, এমন ব্যক্তিদের মধ্যে সম্প্রতি নাজমি হানাফিয়াহ নামে ৩০ বছর বয়সী এক আইটি ইঞ্জিনিয়ার ১০০ বিলিয়ন ডলারের ওই প্রকল্পে বসবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন বিবিসির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি ওই স্থান ছেড়ে পালিয়ে এসেছি।’

পালানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হানাফিয়াহ বলেন, ‘এখানকার চারপাশ জনশূন্য।’

এ বিষয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে চীনের সবচেয়ে বড় ডেভেলপার কোম্পানি ‘কান্ট্রি গার্ডেন’ ওই ফরেস্ট সিটির উদ্বোধন করেছিল। সে সময়ের বিজ্ঞাপনে এই শহরকে পরিবেশবান্ধব ‘স্বপ্নের স্বর্গ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল কোম্পানিটি। বলা হয়েছিল, সবুজ সুশোভিত এই শহরে থাকবে ওয়াটার পার্ক, থাকবে গলফ খেলার মাঠ, দেশি-বিদেশি খাবারের রেস্তোরাঁ আর অন্তত ১০ লাখ বাসিন্দা।

কিন্তু আট বছরের ব্যবধানে প্রকল্পটি বাস্তব রূপ পেতে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ। হাতে গোনা কিছু মানুষ যাঁরা এই শহরে থাকেন, তাঁরা এটিকে এখন একটি ‘ভুতুড়ে শহর’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ফরেস্ট সিটি নির্মাণ পরিকল্পনার মাত্র ১৫ শতাংশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। শহরের অ্যাপার্টমেন্টগুলোর মাত্র ১ শতাংশ এখন ব্যবহার উপযোগী। কিন্তু এর মধ্যেই নির্মাতা কোম্পানি ‘কান্ট্রি গার্ডেন’ প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার ঋণের মুখোমুখি হয়েছে।

তারপরও ডেভেলপার কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, ফরেস্ট সিটির পুরো প্রকল্প একদিন বাস্তবায়িত হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।

চীনাদের নির্মিত ফরেস্ট সিটি যেন এক ‘ভুতুড়ে শহর’।ফরেস্ট সিটিতে সমুদ্র দেখা যায় এমন অবস্থানে ১ বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন হানাফিয়াহ। কিন্তু ছয় মাস পার না হতেই তাঁর মনে হয়েছিল—অনেক হয়েছে। ভুতুড়ে এই শহরে তিনি আর বসবাস করতে চান না।

বিবিসিকে হানাফিয়াহ বলেন, ‘ওই স্থান নিয়ে আমার অনেক উঁচু প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এটা আমার জন্য একটি বাজে অভিজ্ঞতা হলো। সেখানে করার মতো কিছুই নেই।’

হানাফিয়াহ দাবি করেছেন, বর্তমানে তিনি সেখানে বেড়াতেও যেতে চান না।

জোয়ান কৌর নামে ফরেস্ট সিটির আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সেই লোকগুলোর জন্য আমার দুঃখ হচ্ছে। যারা আসলেই এখানে বিনিয়োগ করেছে এবং জায়গা কিনেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি এমন একটি প্রকল্প হওয়া উচিত, যেমনটি জনগণকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এটি বাস্তব রূপ পায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত