Ajker Patrika

সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে ১০ বছরে মৃত ও নিখোঁজ ৪৫০০ রোহিঙ্গা

আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২: ০৭
সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে ১০ বছরে মৃত ও নিখোঁজ ৪৫০০ রোহিঙ্গা

মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে মারা গেছে কিংবা নিখোঁজ হয়েছে অন্তত সাড়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গা। মূলত বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে রোহিঙ্গারা। এর মধ্যে কেবল ২০২৩ সালেই মারা গেছে সাড়ে পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। 

গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মিয়ানমার অথবা বাংলাদেশ থেকে পালাতে গিয়ে সমুদ্রে অন্তত ৫৬৯ জন রোহিঙ্গা মারা গেছে, যা ২০১৪ সালের পর সর্বোচ্চ। সংস্থাটি রোহিঙ্গাদের রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বিবৃতিতে। 

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিগত ১০ বছরে বঙ্গোপসাগর বা আন্দামান সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে অথবা নিখোঁজ হয়েছে অন্তত সাড়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গা। সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এর আগে এক বছরে সমুদ্রে সর্বোচ্চ পরিমাণ রোহিঙ্গা মারা গিয়েছিল ২০১৪ সালে। সে বছর মোট ৭৩০ জন রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছিল। 

ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে গিয়ে বেঁচে ফেরা ব্যক্তিরা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাসহ নানা ধরনে অপব্যবহার ও শোষণের ভয়ংকর বিবরণ প্রকাশ করেছেন। সংস্থাটি জানিয়েছে, এসব রোহিঙ্গার বেশির ভাগই যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে এবং বাকিরা মিয়ানমার থেকে। সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশই নারী ও শিশু। 

এদিকে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনীর নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার সেই সব রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়। কক্সবাজার ও নোয়াখালীর বেশ কয়েকটি ক্যাম্পে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

অন্যদিকে গত সোমবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘ মহাসচিবের পরিকল্পনা কী—এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘প্রথমত, কাউকে কখনোই প্রত্যাবাসন করা উচিত নয়। কোনো শরণার্থীকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রত্যাবাসন করা উচিত নয়। এটি তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এমন স্বেচ্ছামূলক পদ্ধতিতে করা দরকার।’ 

স্টিফেন ডুজারিক আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে এটি পরিষ্কার যে, মিয়ানমারের পরিস্থিতি বর্তমানে প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করছে না। আমাদের যা করা উচিত তা হলো, সেই সব সম্প্রদায়ের জন্য বিশ্বব্যাপী সংহতি বাড়ানো, যারা উদারভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভরণপোষণ করছে। যেমন কক্সবাজারের সম্প্রদায়—যেটি মহাসচিব পরিদর্শন করেছেন—কারণ শরণার্থীদের আমাদের সংহতি প্রয়োজন। স্বাগতিক দেশের মানুষেরও আমাদের সংহতি প্রয়োজন। এ জন্য আমাদের আরও তহবিল বাড়ানো দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত