Ajker Patrika

ভূমিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তাবাহিনী, আক্রমণ বাড়িয়েছে আকাশপথে 

ভূমিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তাবাহিনী, আক্রমণ বাড়িয়েছে আকাশপথে 

জান্তাবাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করেছে দেড় বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেল। এরপর ক্রমেই বিদ্রোহীদের প্রতিরোধের মুখে ক্রমেই ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে তারা। দেশটির বিদ্রোহীদের গঠিত সরকার জাতীয় ঐক্যের সরকার বা এনইউজি দাবি করেছে, তারা দেশের ৫০ ভাগেরও বেশি ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। বিপরীতে জান্তাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে মাত্র ৫ থেকে ৬ শতাংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ। ক্রমশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারানো জান্তাবাহিনী এবার তাদের যুদ্ধবিমানকে কাজে লাগাচ্ছে নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে। 

থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক বিশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে এক নৃগোষ্ঠীর সংগীত অনুষ্ঠানে আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ করায় অন্তত ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। জান্তাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর এমন নৃশংস হামলার ঘটনা আর ঘটেনি। এ ছাড়া, দেশটির মধ্যবর্তী লেত ইয়াত কোনে গ্রামে বিমান হামলায় সাত শিশুসহ অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে এমন আক্রমণের ঘটনা নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটিতে। 
 
এর আগে, গত ১৯ অক্টোবর ইন পাউঙ তাইঙ গ্রামে হঠাৎ করেই দুটি যুদ্ধবিমান এবং ৪টি হেলিকপ্টার মহড়া দিয়ে যায়। সেদিন যুদ্ধবিমানগুলো গ্রামটিতে বোমা ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং হেলিকপ্টার থেকে সৈন্যদের নামানো হয় গ্রামটির চারপাশে। এ ছাড়া, সেদিন এক গর্ভবতী নারী এবং তাঁর শাশুড়িকে গুলি করে হত্যা করে জান্তা সৈন্যরা। এরও দুদিন পর জান্তা সৈন্যরা বিদ্রোহী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএ) কয়েকজন সদস্য এবং বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে। 

সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো—যুদ্ধবিমানগুলো নির্বিচারে সামরিক–বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুকে উদ্দেশ্য করে হামলা চালাচ্ছে। জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিমানবাহিনীর এমন নির্বিচার হামলার তীব্র নিন্দা করেছে এবং এই দেশটিতে যুদ্ধাপরাধ বন্ধের বিষয়ে চাপ দিতে বিশ্বের দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়েছে। 

চলতি বছরের মার্চ থেকেই জান্তাবাহিনী ব্যাপক হারে বিমান হামলা বাড়িয়েছে। এ সময় তাঁরা নির্বিচারে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে সেগুলোকে ‘সন্ত্রাসী’ আস্তানা বলে আখ্যা দিয়েছে। দেশটির জাতীয় ঐক্যের সরকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে এই সময়ে জান্তাবাহিনী অন্তত ২৪০টি বিমান হামলা চালিয়েছে বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে। এসব হামলায় অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে এনইউজি। এমনকি এসব হামলায় দেশটির অভ্যন্তরে অন্তত ১০ লাখ লোক বাস্তুহারা হয়েছেন। 

দেশটিতে বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণের পরিমাণ আরও বাড়িয়েছে জান্তা বাহিনী। কেবল অক্টোবরের ১ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ অবধি সব মিলিয়ে ২৮টি বিমান হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় প্রাণ গেছে অন্তত ১২৬ জনের বলে জানানো হয়েছে ইরাবতীর প্রতিবেদনে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা জান্তাবাহিনী ভূখণ্ডে যত বেশি নিয়ন্ত্রণ হারাবে বিমান হামলার আশঙ্কা তত বেশি বাড়তে থাকবে। কারণ, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে জান্তা বাহিনী মরিয়া হয়ে উঠেছে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত