Ajker Patrika

১৩৫ বছরে ভারত থেকে ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে গেছে ব্রিটেন: অক্সফাম

উপনিবেশিক আমলে তৎকালীন ভারত থেকে প্রায় ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ নিয়ে গেছে ব্রিটেন। ছবি: অক্সফাম
উপনিবেশিক আমলে তৎকালীন ভারত থেকে প্রায় ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ নিয়ে গেছে ব্রিটেন। ছবি: অক্সফাম

ভারত ব্রিটিশ শাসনের সরাসরি অধীনে আসে ১৭৫৭ সালে। এরপর ১৭৬৫ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত ঔপনিবেশিক সময়ে ব্রিটেন ভারত থেকে ৬৪ দশমিক ৮২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্য সম্পদ শোষণ করেছে। আর এই সম্পদের মধ্যে ৩৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার ভোগ-দখল করেছেন ব্রিটেনের শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনী জনগণ। এই অর্থের পরিমাণ এত বেশি যে ৫০ পাউন্ড মূল্যের নোট দিয়ে লন্ডন শহরকে প্রায় চারবার মোড়ানো সম্ভব।

আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থা অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের সর্বশেষ বৈশ্বিক বৈষম্যবিষয়ক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি প্রতিবছর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠকের প্রথম দিনে প্রকাশ করা হয়।

এবারের প্রতিবেদনটির শিরোনাম ‘টেকার্স, নট মেকার্স’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে, আধুনিক বহুজাতিক কোম্পানির ধারণা মূলত উপনিবেশবাদের সৃষ্টি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপনিবেশবাদের সময় তৈরি হওয়া বৈষম্য এবং লুটপাটের প্রবণতা এখনো আধুনিক জীবনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে চলেছে।

অক্সফাম বলেছে, ‘উপনিবেশবাদ থেকে শুরু হওয়া এই বৈষম্য একটি গভীর অসম পৃথিবী তৈরি করেছে। এটি এমন এক বিভক্ত পৃথিবী তৈরি করেছে যেখানে বর্ণবৈষম্য বিদ্যমান এবং দক্ষিণ গোলার্ধের সম্পদ উত্তর গোলার্ধের ধনীরা নিয়মিত শোষণ করছে।’

বিভিন্ন গবেষণার ভিত্তিতে অক্সফাম দেখিয়েছে, ১৭৬৫ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে ব্রিটেনের শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনী ভারত থেকে ৩৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার শোষণ করেছে। এই অর্থ যদি ৫০ পাউন্ডের নোটে রূপান্তর করা হয়, তবে তা দিয়ে পুরো লন্ডন শহরকে চারবার ঢেকে দেওয়া সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান ব্রিটেনের অনেক ধনী পরিবারের সম্পদের মূল দাস প্রথা এবং উপনিবেশবাদে নিহিত।

অক্সফামের মতে, আধুনিক বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও উপনিবেশবাদের ফসল। যেমন, ভারতে কাজ করা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিজেকে একটি স্বতন্ত্র আইনি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল এবং বহু ঔপনিবেশিক অপরাধের জন্য দায়ী ছিল। আজকের দিনে এই কোম্পানিগুলোর মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় একচেটিয়া অবস্থান নিয়ে দক্ষিণ গোলার্ধের শ্রমিকদের শোষণ করে, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের। আর এ থেকে লাভবান হন প্রধানত উত্তর গোলার্ধের ধনী শেয়ারহোল্ডাররা।

বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পগুলো এখনো দক্ষিণ থেকে উত্তর গোলার্ধে সম্পদ শোষণের আধুনিক উপনিবেশবাদী কাঠামো বহাল রেখেছে। দক্ষিণ গোলার্ধে শ্রমিকেরা সাধারণত খারাপ কর্মপরিবেশ, সম্মিলিত দর–কষাকষির অধিকারহীনতা এবং ন্যূনতম সামাজিক সুরক্ষার লাভ করেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দক্ষতায় সমান হলেও দক্ষিণ গোলার্ধে শ্রমিকেরা উত্তর গোলার্ধের তুলনায় ৮৭ থেকে ৯৫ শতাংশ কম মজুরি পান। বড় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় আধিপত্য বিস্তার করে সস্তা শ্রম এবং দক্ষিণের সম্পদ শোষণের মাধ্যমে বিশাল মুনাফা অর্জন করে। এই বিষয়টি অর্থনৈতিকভাবে দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোকে উত্তর গোলার্ধের উন্নত দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ায়। যার ফলে, শোষণ এবং নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে।

১৭৫০ সালে ভারতের বিশ্বের মোট শিল্প উৎপাদনের ২৫ শতাংশই ছিল ভারতে। কিন্তু ১৯০০ সালের মধ্যে তা কমে মাত্র ২ শতাংশে নেমে আসে। এই পতনের কারণ ছিল ব্রিটেনের কঠোর রক্ষণশীল নীতি, যা এশিয়ার টেক্সটাইল শিল্পের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং ভারতের শিল্প বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে।

অক্সফাম বলেছে, ‘বেশির ভাগ উপনিবেশবাদ পরিচালিত হয়েছে বেসরকারি বহুজাতিক কোম্পানির মাধ্যমে। এসব কোম্পানির অনেকে একচেটিয়া সুবিধা পেয়েছিল এবং উপনিবেশ বিস্তারে বিপুল সাফল্য লাভ করেছিল।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীই ছিল ২ লাখ ৬০ হাজার সৈন্যের এক শক্তিশালী বাহিনী। এই সংখ্যা যা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর যুদ্ধকালীন সদস্যসংখ্যার দ্বিগুণ।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘১৮৭৫ সালে ভারতে সবচেয়ে বেশি আয় করা ব্যক্তিরা মূলত সেনা ও প্রশাসনের ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ছিলেন। কিন্তু ১৯৪০ সালে তাদের জায়গা নেন ব্যবসায়ী, ব্যাংকার এবং শিল্পপতিরা। ঔপনিবেশিক দেশগুলোর হাত থেকে স্বাধীনতা হওয়ার পরও বিশ্বের অনেক দেশের গ্লোবাল সাউথ অঞ্চলে ধন-সম্পদ ও রাজনৈতিক ক্ষমতা কেবল ধনী ব্যক্তিদের হাতেই কেন্দ্রীভূত ছিল। অক্সফাম বলেছে, ‘এই দেশগুলোতে যে বৈষম্য আজ দেখা যায়, তা অনেকাংশেই ঔপনিবেশিক যুগের ফল।’

অক্সফাম আরও বলেছে, ঔপনিবেশিক যুগে জাত, ধর্ম, লিঙ্গ, যৌনতা, ভাষা এবং ভৌগোলিক অবস্থার মতো বিভাজনগুলোকে আরও বিস্তৃত, সুসংগঠিত এবং গভীর করা হয়েছিল। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে জাত ব্যবস্থাকে আইনি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল, যা এর কঠোর সীমারেখাগুলোকে শক্তিশালী করেছিল।

অক্সফাম বলেছে, করপোরেট লোভের কারণে যেভাবে বিশ্বকে মাদকের নেশায় আসক্ত করা হয়েছে, তা স্মরণ রাখা জরুরি। ঠিক একইভাবে, ডাচ ও ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিগুলো আফিমের ব্যবসা ব্যবহার করে তাদের ঔপনিবেশিক শাসনকে দৃঢ় করেছিল। ১৭৫৭ সাল থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পূর্ব ভারতের আফিম উৎপাদনে একচেটিয়া অধিকার স্থাপন করেছিল। এই আফিম চীনে রপ্তানি করা হতো, যা শেষ পর্যন্ত আফিম যুদ্ধ এবং চীনের তথাকথিত ‘অপমানের শতাব্দী’ শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিয়ানমারে স্টারলিংক ব্যবহার করে প্রতারণা, আড়াই হাজারের বেশি ডিভাইস নিষ্ক্রিয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত বিভিন্ন স্ক্যাম সেন্টারে থাকা আড়াই হাজারের বেশি স্টারলিংক ইন্টারনেট ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করেছে স্পেসএক্স। ছবি: এএফপি
মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত বিভিন্ন স্ক্যাম সেন্টারে থাকা আড়াই হাজারের বেশি স্টারলিংক ইন্টারনেট ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করেছে স্পেসএক্স। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় ২ হাজার ৫০০ টিরও বেশি স্টারলিংক ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। থাইল্যান্ড সীমান্তঘেঁষা এসব এলাকায় আইনের শাসন নেই। আর এই সুযোগে প্রতারকেরা পুরো এলাকাজুড়ে সাইবার প্রতারণা কেন্দ্র বা স্ক্যাম সেন্টার গড়ে তুলেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন–এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

স্পেসএক্স গতকাল বুধবার জানিয়েছে, মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় সাইবার প্রতারণা চক্রের হাতে থাকা ২ হাজার ৫০০-এরও বেশি স্টারলিংক ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে। এ বছর থাইল্যান্ড সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমারের প্রতারণা কেন্দ্রগুলোয় আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের কঠোর অভিযানের পরও জালিয়াত চক্র ক্রমেই বেড়ে চলেছে। গৃহযুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে এখনো অবাধে চলছে এসব সাইবার অপরাধের কার্যক্রম।

স্পেসএক্স জানিয়েছে, স্টারলিংক যেসব দেশে পরিচালিত হয়, সেখানে নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা শনাক্তে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত কাজ করে। স্টারলিংকের ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘বিরল কোনো ক্ষেত্রে আমরা নিয়ম লঙ্ঘন শনাক্ত করলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিই, যার মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ও অন্তর্ভুক্ত।’

তিনি আরও জানান, ‘উদাহরণস্বরূপ মিয়ানমারে স্পেসএক্স নিজ উদ্যোগে সন্দেহভাজন প্রতারণা কেন্দ্রগুলোর আশপাশে ২ হাজার ৫০০-রও বেশি স্টারলিংক কিট নিষ্ক্রিয় করেছে।’ কবে এসব ডিভাইস বন্ধ করা হয়েছে তা জানাননি ড্রেয়ার। তবে এ ঘোষণা আসে এমন এক সময়ে এল, যখন মিয়ানমারের সেনা সরকার জানিয়েছে যে, তারা এই সপ্তাহে এক প্রতারণা কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ৩০ সেট স্টারলিংক ‘রিসিভার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ’ জব্দ করেছে।

অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ড সীমান্তজুড়ে মিয়ানমারে অন্তত ৩০টি বিশাল প্রতারণা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের কাছ থেকে প্রতিবছর বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এই কেন্দ্রগুলোতে কর্মীদের ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আনা হয় কিংবা পাচার করা হয়। এরপর তাদের জোর করে প্রতারণার কাজে লাগানো হয়। এসব সশস্ত্র প্রহরায় ঘেরা কম্পাউন্ডে আটক থাকা বহু ব্যক্তি পরে সিএনএনকে জানিয়েছেন, সেখানে নিয়মিত মারধর ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করছে যে, মিয়ানমারের এসব অপরাধচক্র স্টারলিংক ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে প্রতারণা চালাচ্ছে। স্পেসএক্সের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে স্টারলিংকের গ্রাহকসংখ্যা ৬০ লাখেরও বেশি। নিম্ন-কক্ষপথে হাজারো উপগ্রহের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এই সেবা দূরবর্তী এলাকাগুলোতেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে জানা গেছে, মিয়ানমারের প্রতারণা কেন্দ্রগুলোর ছাদে ‘বিশাল আকারে’ স্টারলিংক রিসিভার বসানো হয়েছে। এএফপির ওই প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের জয়েন্ট ইকোনমিক কমিটি এখন স্টারলিংকের এই সব কেন্দ্রে সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার তদন্ত শুরু করেছে।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের (ইউএনওডিসি) তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রতারণা শিল্প এখন অভূতপূর্ব গতিতে বিস্তার লাভ করছে। অপরাধী চক্রগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারের মাধ্যমে অগাধ পরিমাণ অর্থ গোপনে স্থানান্তর করছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এখন এই ধরনের ‘রোমান্স’ বা ‘বিনিয়োগ’ প্রতারণার প্রধান কেন্দ্র, যা ‘পিগ বুচারিং’ নামে পরিচিত। দুর্নীতি ও সামরিক জান্তার সুরক্ষায় মিয়ানমার এখন এসব অপরাধচক্রের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির জান্তা সরকার পুরো দেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। তারা বিভিন্ন জাতিগত ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে আছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ড মিয়ানমারের ওই সব সীমান্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, যাতে প্রতারণা কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম ব্যাহত হয়। তারপরপরই সীমান্তের বিভিন্ন প্রতারণা কেন্দ্র থেকে প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক ও ভুক্তভোগীকে মুক্ত করে দেশে ফেরত পাঠায় থাই কর্তৃপক্ষ।

মিয়ানমারের সামরিক সরকার জানিয়েছে, ৩০ জানুয়ারি থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত তারা এসব প্রতারণা কেন্দ্র থেকে ৯ হাজার ৫৫১ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করে, যাদের অধিকাংশকে ইতিমধ্যে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের শুল্কের কশাঘাতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের তৈরি পোশাকশিল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ২০
ট্রাম্পের শুল্কের আঘাতে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের তৈরি পোশাক শিল্প। ছবি: সিনহুয়া
ট্রাম্পের শুল্কের আঘাতে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের তৈরি পোশাক শিল্প। ছবি: সিনহুয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের কশাঘাতে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলো। আগস্টের পর থেকে ইয়াঙ্গুনের শিল্পাঞ্চলে অন্তত ৬টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরও কয়েকটি কারখানা কর্মী ছাঁটাই করছে, অতিরিক্ত কাজের সময় কমাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি আদেশ কমে যাওয়ার পর থেকেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের তৈরি পোশাকের চতুর্থ বৃহত্তম বাজার যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের আগস্টে দেশটি মিয়ানমারে তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক প্রায় ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে নিয়ে যায়। কারখানা মালিক ও শ্রমিকেরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে ইতিমধ্যেই অর্ডার কমে গেছে। বিশেষ করে, জুতা ও ব্যাগ উৎপাদনে বড় ধাক্কা লেগেছে।

ফেডারেশন অব জেনারেল ওয়ার্কার্স মিয়ানমারের (এফজিডব্লিউএম) মুখপাত্র মা ই বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ানোর কারণে কিছু কারখানা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। আবার অনেক মালিক অতিরিক্ত সময় (ওভারটাইম) কমিয়ে দিচ্ছেন বা কর্মী ছাঁটাই করছেন। শ্রমিকেরা আতঙ্কে আছে—মালিকেরা না হঠাৎ করে পালিয়ে যায়।’

শ্রমিক সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত যে কারখানাগুলো বন্ধ হয়েছে সেগুলো মূলত চীনা মালিকানাধীন, ইয়াঙ্গুনের শ্বেপিথা এলাকার ওয়ার তায়ার ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন, হ্লাইং থারয়ারের মিয়া সাইন ইয়াউং জোন এবং শ্বে লিন বান জোনে অবস্থিত। বড় ক্ষতিপূরণ দিতে না হওয়ার জন্য অনেক মালিক পুরোপুরি বন্ধ না করে উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছেন। মা ই বলেন, ‘তারা পুরোপুরি বন্ধ না করে ছোট করে ফেলছে, এতে শ্রমিকদের পেছনে কম অর্থ ব্যয় করতে হয়।’

মিয়ানমারের কাটিং, মেকিং অ্যান্ড প্যাকিং (সিএমপি) খাতে প্রায় ৮ লাখ মানুষ কাজ করে। কিন্তু ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, বিদ্যুৎ ঘাটতি, জ্বালানি সংকট এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ—সব মিলিয়ে খাতটি আগে থেকেই সংকটে ছিল। সরকার রপ্তানি আয়ের মুদ্রা বাজারদরের চেয়ে অনেক কম নির্ধারিত মূল্যে রূপান্তরের বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে।

হ্লাইং থারয়ারের এক কারখানা মালিক দ্য ইরাবতীকে বলেন, ‘আগের মৌসুমের তুলনায় এবার অর্ডার ১০ থেকে ২০ শতাংশ কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ডার কমেছে, আর শুল্ক না কমলে এই অবস্থা চলতেই থাকবে। ব্যাগ ও জুতার অর্ডারও অনেক পড়ে গেছে। এ কারণেই কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।’ মিয়ানমার গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এমজিএমএ) জানিয়েছে, আগস্ট পর্যন্ত তাদের ৫৮৯টি সদস্য কারখানার মধ্যে ৫৬ টির কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্যালাওয়ে গলফ কোম্পানি ও ব্যাগ প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ড স্যামসোনাইটের জন্য পণ্য উৎপাদন করা টুইঙ্কল (মিয়ানমার) নামের কারখানাটি আগস্টে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। ইয়াঙ্গুনের কারখানা মালিকেরা জানাচ্ছেন, জান্তা সরকারের আমদানি-নিষেধাজ্ঞার কারণে কাঁচামাল সংগ্রহেও সমস্যা তৈরি হয়েছে।

হ্লাইং থারয়ারের এক শ্রমিক বলেন, ‘আগে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা ওভারটাইম কাজ করতাম, এখন তা পুরোপুরি বন্ধ। তারা বলছে, কাঁচামাল আসছে না, অর্ডারও কমে গেছে। এতে মজুরি কমে গেছে, অনেককে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর নতুন অস্ত্র এআই: গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১০
ভারতে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্রে নতুন হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এআই। ছবি: এএফপি
ভারতে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্রে নতুন হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এআই। ছবি: এএফপি

ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর নতুন অপতৎপরতা সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট–এর (সিএসওএইচ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এআই এখন সংখ্যালঘুবিরোধী প্রচারণার এক শক্তিশালী অস্ত্রে পরিণত হয়েছে।

জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনভিত্তিক এই অরাজনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের ওয়েবসাইটে ‘এআই জেনারেটেড ইমেজারি অ্যান্ড দ্য নিউ ফ্রন্টিয়ার অব ইসলামোফোবিয়া ইন ইন্ডিয়া বা ভারতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের নতুন সীমানা ও এআই-নির্মিত চিত্র’—শীর্ষক ৬০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতে মুসলিমদের লক্ষ্য করে তৈরি করা ১ হাজার ৩২৬টি এআই-নির্ভর ঘৃণামূলক পোস্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো এক্স, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে সক্রিয় ২৯৭টি পাবলিক অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে।

সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রাকিব হামিদ নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, ‘এটি কেবল সমুদ্রে ভাসমান বরফের চূড়ার মতোই দৃশ্যমান ক্ষুদ্র এক অংশ। ভারতের ডিজিটাল জগতে এর পরিধি অনেক বিশাল।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে এ ধরনের কার্যক্রম ছিল তুলনামূলক কম। কিন্তু ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ বেড়ে যায়। Stable Diffusion–স্ট্যাবল ডিফিউশন, Midjourney–মিডজার্নি ও DALL·E-ডল–ই—এর মতো এআই টুল সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য সহজলভ্য হয়ে ওঠার সঙ্গে সম্পর্কিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এআই-নির্মিত ছবিগুলো এখন মুসলিমদের মানবিকতাবোধহীনভাবে উপস্থাপন, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো, সহিংসতাকে নান্দনিকভাবে সাজানো এবং নারীবিদ্বেষ ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।’

এই প্রতিবেদন ভারতে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কারণ, এতে উঠে এসেছে কীভাবে এআই সাম্প্রদায়িক প্রোপাগান্ডার বিস্তারকে আরও দ্রুততর করছে। এতে আরও সতর্ক করা হয়, মুসলিম নারীদের যৌন অবমাননাকর এআই-নির্মিত ছবি ও কনটেন্ট তৈরির প্রবণতা ক্রমবর্ধমান।

প্রতিবেদন প্রকাশের সময়টাতে ভারতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ আন্দোলন তুঙ্গে ছিল। সেপ্টেম্বরে উত্তর ভারতের কানপুর শহর থেকে শুরু হয়ে এই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। একটি ডানপন্থী হিন্দু সংগঠন ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানারে আপত্তি জানালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিভিন্ন রাজ্যে পুলিশ হাজার হাজার মুসলিমের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সমাবেশের’ অভিযোগ আনে, যদিও আয়োজকেরা দাবি করেন—এগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সমাবেশ।

সিএসওএইচ–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘যেকোনো সাধারণ প্রতিবাদ বা স্থানীয় সংঘাতকেও এখন সহজেই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘৃণা ছড়াতে চায় তাদের হাতে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এআই-নির্মিত ছবি এসব প্রেক্ষাপটে সহজেই ব্যবহার করা সম্ভব।’

এই অনুসন্ধান প্রকাশের পর উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ, ভারত এখনো এআই-নির্মিত মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত আইনগত ও সাংস্কৃতিক সক্ষমতা অর্জন করেনি।

ডিজিটাল প্রাইভেসি অধিকারবিষয়ক গবেষক শ্রীনিবাস কোদালি নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো, এসব কনটেন্ট সমাজের বিভিন্ন অংশে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বাসকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘এআই-নির্মিত মিডিয়ার প্রভাব সরলরেখায় চলে না। কে দেখছে, কীভাবে ব্যাখ্যা করছে—তা নির্ভর করছে দর্শকের মানসিক প্রেক্ষাপটে।’

ভারত সরকারের ২০২৫ সালের রোডম্যাপ অনুযায়ী, এআই-কে ‘উন্মুক্ত, সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য’ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে উদ্ভাবন ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ঘটাবে, নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করবে এবং বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এক ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলবে।’

কোদালি আরও বলেন, ‘সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিকর বক্তব্য রোধের জন্য নিয়মকানুনের পক্ষে যুক্তি দিয়েছে, কিন্তু এআই সেই সীমানাগুলোকে আরও ঘোলা করে ফেলেছে। এটি একদিকে সৃজনশীল, অন্যদিকে প্রতারণার হাতিয়ার।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানহানি, ভুয়া তথ্য বা ঘৃণাবাচক বক্তব্যের মতো প্রচলিত ক্ষতিকর ভাষার ধরন তো ছিলই, এখন এআই সেই জগতে নতুন জটিলতা যোগ করেছে।’

হামিদ বলেন, সমস্যার মূল শিকড় লুকিয়ে আছে এআই মডেল তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে, ‘যেসব কোম্পানি এই মডেল বানাচ্ছে, তারা বিপুল পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিত তথ্য, ঘৃণা ছড়ায় এমন কনটেন্ট ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়ে সেগুলো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ফলে যে কেউ চাইলে কয়েক সেকেন্ডেই এসব মডেল দিয়ে মুসলিমবিদ্বেষী কনটেন্ট বানাতে পারে।’

প্রতিবেদনটির শেষে নয়টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। যার কিছু নীতিনির্ধারকদের জন্য, আর কিছু এআই মডেল নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে। সেখানে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানকে ‘অবিলম্বে ও ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী শনাক্তকরণ, রিপোর্টিং ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু করতে হবে, যাতে অপব্যবহার তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত ও রোধ করা যায়।’

বুধবার ভারতের ইলেকট্রনিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য নতুন নিয়মের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীদের বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে যে—তাদের কনটেন্ট এআই-নির্মিত কি না।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফাটল-ছত্রাকের সংক্রমণ, হুমকির মুখে তুতেনখামেনের সমাধি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৩৩
প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেন। ছবি: সংগৃহীত
প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেন। ছবি: সংগৃহীত

ধ্বংসের ঝুঁকিতে প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেনের সমাধি। ঐতিহাসিক এই সমাধিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে এবং ছত্রাক জমে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেচার সংবাদপত্রের এনপিজে হেরিটেজ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এ কথা জানা গেছে।

১৯২২ সালের ৪ নভেম্বর ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার সমাধিটি আবিষ্কার করেন। এই সমাধি চারটি প্রধান অংশে বিভক্ত—প্রবেশদ্বার, অ্যান্টিচেম্বার (অগ্রকক্ষ), সমাধিকক্ষ এবং ভান্ডারঘর।

গবেষণায় বলা হয়েছে, অগ্রকক্ষ এবং সমাধিকক্ষের ছাদ জুড়ে বড় ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় সমাধির কাঠামোটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢুকে দুর্বল ‘এসনা শেল’ শিলা ভিজিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে সেখানে নতুন ফাটল ও ফিসার তৈরি হচ্ছে।

গবেষণাপত্রের লেখক ড. সায়েদ হেমেদা জানান, এই সমাধিটি দীর্ঘকাল ধরে আকস্মিক বন্যা এবং বড় ধরনের ফাটলের শিকার হয়েছে। যার ফলে এর অবস্থা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ খারাপের দিকে গেছে।’

গবেষক জিওটেকনিক্যাল মডেলিং এবং হিসাবের সাহায্যে, জয়েন্টেড রক মডেল-সহ উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যাক্সিস থ্রিডি সফটওয়্যার ব্যবহার করে সমাধির বিদ্যমান সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণাটিতে সংখ্যাগত সিমুলেশনের মাধ্যমে আকস্মিক বন্যা এবং সমাধিটির প্রধান ফাটলের স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব বিশদভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অ্যান্টিচেম্বার (অগ্রকক্ষ) ও সমাধিকক্ষের ছাদের স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করা প্রধান উপাদানগুলো, বিকৃতি ও ধ্বংসের ধরন এবং গুরুত্বপূর্ণ দুর্বল অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সমাধির বর্তমান স্থিতিশীলতার স্তরও নির্ধারণ করা হয়েছে।’

এই গবেষণার লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতে সমাধির স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য কার্যকর পরামর্শ প্রদান করা। সমাধিটি সংরক্ষণের জন্য এর অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে আর্দ্রতার তারতম্য কমানো এবং সংরক্ষণের একটি সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এই গবেষণায়।

দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আর্দ্রতার কারণে হওয়া ক্ষতিই একমাত্র কারণ নয়। কায়রো ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্ত্ব অনুষদের স্থাপত্য সংরক্ষণ বিদ্যার অধ্যাপক মোহামেদ আতিয়া হাওয়াশের বরাতে বলা হয়, ভ্যালি অব দ্য কিংস ঘিরে থাকা পাহাড়গুলোতে বড় বড় ফাটল রয়েছে, যার কারণে পাথরের চাঁই ভেঙে পড়লে সমাধিটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অধ্যাপক হাওয়াশ সতর্ক করে বলেন, ‘যে কোনো মুহূর্তে একটি বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিংস ভ্যালিকে রক্ষা করতে হলে খুব দেরি হওয়ার আগেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এটিকে একটি কঠোর সতর্কতা হিসেবে মানার আহ্বান জানান তিনি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত