Ajker Patrika

ইতিহাসের এই দিনে /বাংলাদেশ–নেপাল ফুটবল ম্যাচে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারায় ৯৩ দর্শক

আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫, ১৬: ৫০
আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করছেন দর্শকেরা। ছবি: উইকিপিডিয়া
আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করছেন দর্শকেরা। ছবি: উইকিপিডিয়া

১২ মার্চ। ১৯৮৮ সালের এই দিনে নেপালের কাঠমান্ডুতে ঘটেছিল মর্মান্তিক এক ঘটনা। দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে চলছিল নেপাল–বাংলাদেশের ফুটবল ম্যাচ। ত্রিভুবন চ্যালেঞ্জ শিল্ড ফুটবল টুর্নামেন্টের ম্যাচটিতে অংশ নিয়েছিল নেপালের জনকপুর সিগারেট ফ্যাক্টরি ও বাংলাদেশি ফুটবল ক্লাব বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সংসদ ক্রীড়া চক্র। ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে প্রায় ৩০ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন।

ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎ শুরু হয় শিলাবৃষ্টি, সঙ্গে ব্যাপক ঝোড়ো হাওয়া। স্টেডিয়ামটির পশ্চিম দিকে শুধু একটি ছাউনি ছিল, বাকি স্টেডিয়াম ছাদবিহীন। ফলে শিলাবৃষ্টি শুরু হলে সবাই ওই ছাউনির নিচে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এত বিপুলসংখ্যক মানুষের স্থানসংকুলান না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ মাঠে নামে। ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে যাওয়া দর্শকদের লাঠিচার্জ করে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ

এমন পরিস্থিতিতে দর্শকেরা আতঙ্কিত হয়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। স্টেডিয়াম থেকে বের হতে হাজার হাজার মানুষ একসঙ্গে স্টেডিয়ামের গেটের দিকে দৌড়ে যায়। কিন্তু বিনা টিকিটে প্রবেশ ঠেকাতে গেট বন্ধ রাখা হয়েছিল। যে কারণে গেটের সরু গলিতে হুড়োহুড়ি লেগে যায়, পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয় ৯৩ জনের। আহত হয় শত শত মানুষ।

মর্মান্তিক এই ঘটনায় নেপাল সরকারের অবস্থান ছিল অমানবিক। হতাহতদের পরিবারকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকৃতি জানায় তারা। তাদের যুক্তি ছিল—দর্শকেরা নিজের ইচ্ছায় খেলা দেখতে গেছে। সেখানে যা ঘটেছে তাতে সরকারের কোনো হাত ছিল না। তাই, সরকার কোনো দায় নেবে না।

অবশ্য পরে পদত্যাগ করেন দেশটির তৎকালীন শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রী কেশর বাহাদুর বিস্তা এবং অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমল থাপা।

এ ঘটনার অল্প কিছুদিন পরই ইংল্যান্ডেও একটি ফুটবল ম্যাচে একই ধরনের ঘটনায় প্রাণ হারান ৯৬ জন মানুষ। ১৯৮৯ সালে দেশটির শেফিল্ডে লিভারপুল ও নটিংহাম ফরেস্টের ম্যাচে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে পদদলিত হয়ে মারা যান এত বিপুলসংখ্যক মানুষ।

১৯৯১ সালের ১৩ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার ফুটবল ইতিহাসে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। ওরকনি শহরের ওপেনহাইমার স্টেডিয়ামে পদদলিত হয়ে ৪২ জন প্রাণ হারান।

সেদিন একটি প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল কাইজার চিফস এবং অরল্যান্ডো পাইরেটস। কাইজার চিফসের স্ট্রাইকার ফানি মাদিদা গোল করে দলকে এগিয়ে নেওয়ার পরই সমর্থকদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। পুরো মাঠে ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত