Ajker Patrika

শিশুর শরীরে ফুসকুড়ি হলে অবহেলা নয়

অধ্যাপক ডা. ইমনুল ইসলাম
শিশুর শরীরে  ফুসকুড়ি হলে  অবহেলা নয়

শিশুদের শরীরে প্রায়ই ফোসকার মতো র‌্যাশ দেখা যায়। এর কারণ হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ। এই রোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কিছু আন্ত্রিক ভাইরাসের সংক্রমণে হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে ককসাকি-এ ১৬, এন্টারোভাইরাস-এ ৭১ এবং কিছু ইকো ভাইরাস অন্যতম।

রোগটি খুবই ছোঁয়াচে। তবে এর তীব্রতা কম এবং জটিলতা নেই বললেই চলে। সাধারণত ১০ বছরের কম বয়সী শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। সংক্রমিত শিশুদের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায় ৩ থেকে ৬ দিনের মধ্যে। শিশু ও বড়দের একই রকম লক্ষণ থাকে। তবে ৫ বছরের নিচের বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো বেশি কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে। রোগটি একাধিকবার হতে পারে। রোগীর কাছের মানুষদের মধ্যে ৯০ শতাংশের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই রোগ আটকানোর কোনো উপায় নেই। এর কোনো টিকাও নেই। স্কুলে যদি শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ শুরু হয়, তবে আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শে আসা অন্য শিশুদের মধ্যে এটি মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

রোগটি কীভাবে ছড়ায়

  • রোগীর সরাসরি সংস্পর্শে এলে।
  • আক্রান্ত শিশুর ফোসকা থেকে বের হওয়া তরল পদার্থ অন্য কারও দেহে লাগলে।
  • হাঁচি ও কাশিতে ছড়িয়ে পড়া ড্রপলেটের মাধ্যমে।
  • মলের মাধ্যমে।

লক্ষণ

  • প্রাথমিক উপসর্গগুলো সাধারণ ভাইরাল জ্বরের মতো।
  • শিশুদের জ্বর ও গলাব্যথা হতে পারে।
  • প্রথম দিকে তীব্র জ্বর (১০৩ ডিগ্রি) থাকে।
  • জ্বর শুরু হওয়ার এক বা দুদিন পরে মুখের ভেতরে, হাতে-পায়ে বা নিতম্বে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। 
  • ফুসকুড়ি চুলকায় না, তবে যন্ত্রণাদায়ক ফোসকা পড়ে।
  • শিশুর ত্বকের রঙের ওপর নির্ভর করে ফুসকুড়ি লাল, সাদা, ধূসর বা ছোট ছোট দাগ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
  • ফুসকুড়ি সাধারণত জ্বর হওয়ার ৩ থেকে ৫ দিন পরে দেখা যায়।
  • সাধারণত স্বল্পমাত্রার জ্বর থাকে।

তবে তীব্র জ্বর ও খাবারে অনীহা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা
এই রোগের জন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। আক্রান্ত শিশুদের স্যুপ, পর্যাপ্ত পানি ও নরম খাবার খেতে দেওয়া হয়। শুধু জ্বর ও ব্যথার ওষুধ দেওয়া হয়। চুলকানির জন্য অ্যান্টি হিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ দেওয়া যেতে পারে চিকিৎসকের পরামর্শে। শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে ও জ্বর বেশি হলে এবং ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ব্যথা ভালো না হলে, অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

প্রতিকার
রোগীর পরিচর্যার সময় মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করুন। বাড়িতে অন্য শিশু থাকলে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। আক্রান্ত শিশুদের সংস্পর্শে যত কম আসা যায়, ততই ভালো। রোগীর ব্যবহার করা থালা, গ্লাস, বাটি-চামচ পরিষ্কার করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করা জরুরি।

লেখক: শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত