ডা. মোহাম্মদ আলী
একসময় এই সমাজের একজন সাধারণ মানুষকে বোঝানো খুব কঠিন হতো, শরীরের মতো মনেরও অসুখ হতে পারে। তবে দিন বদলেছে। মানসিক স্বাস্থ্যকে মানুষ গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে মানসিক রোগের ভালো মানের চিকিৎসা। কোমরব্যথার সঙ্গে এ কথাগুলোর যোগাযোগ আছে।
কোমরব্যথা কি মানসিক রোগ? এ কথার ‘ছোট উত্তর’ দেওয়া দুরূহ। ধরুন, সামান্য বা মাঝারি মানের ডিস্ক প্রল্যাপস বা পিএলআইডির কারণে কারও কোমরব্যথা হলো। চিকিৎসায় ডিস্ক আগের জায়গায় ফিরে গেল ঠিকই; তীব্র ব্যথাও কমে গেল, কিন্তু মৃদু থেকে মাঝারি ব্যথা রয়েই গেল। এই ব্যথা শরীরে বয়ে চলল দীর্ঘকাল। কোমরে আঘাত বা ডিস্ক প্রল্যাপসে যে ব্যথার ধারা তৈরি হয়েছিল, মস্তিষ্ক সেই ধারাকে মনে রাখতে সক্ষম। মস্তিষ্কের এই স্মরণশক্তি হয় প্রাকৃতিক অথবা পারিপার্শ্বিক অবস্থা দিয়ে প্রভাবিত। যেমন ধরুন, কারও যদি কোমরে ব্যথা সম্পর্কে অতিমাত্রায় নেতিবাচক মনোভাব থাকে অথবা প্রকৃত কোমরব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তি আর্থসামাজিক বা পারিবারিক কারণে মানসিক চাপে থাকে, তবে তার মনের ব্যথার সঙ্গে কোমরব্যথার সংমিশ্রণ ঘটতে পারে। তৈরি হতে পারে মনের ভেতর স্থায়ী দাগের, যা তার শরীরকে ব্যথার উপলব্ধি দিতে থাকবে বছরের পর বছর। এ ধরনের কোমরব্যথা ফাইব্রোমায়ালজিয়া নামক রোগের সঙ্গে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এই ব্যথা নির্ণয়ের উপায় কী
এ ধরনের ব্যথা নির্ণয় চ্যালেঞ্জিং। এ ধরনের রোগীর এমআরআই, এক্স-রেতেও সমস্যা থাকতে পারে। পিএলআইডি বা লাম্বার স্পন্ডালাইসিস পরিলক্ষিত হতে পারে টেস্ট রেজাল্টে। কিন্তু এর প্রকৃত কারণ অন্যখানে নিহিত। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কারণ একে একে নির্ণয়ে রোগীকে সময় দিতে হবে। এ জন্য চিকিৎসকের থাকতে হবে বাস্তবসম্মত ও উন্নত প্রশিক্ষণ।
চিকিৎসা
মনের ব্যথা যখন শরীরে চলে যায়, সেখান থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কঠিন। অবাধ তথ্যপ্রবাহের এই যুগে ইউটিউব, ফেসবুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন রকমের মনগড়া ও ভুল তথ্য থেকে ভুল শিক্ষা নেওয়া রোগীকে কোমরব্যথা সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলা বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন ধরনের তথ্য মাথায় নিয়ে আসা রোগীদের প্রথমত সঠিক বিষয়টি বোঝাতে হবে। দ্বিতীয়ত, টার্গেটেড বা সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা দিতে হবে। সেটা হতে পারে থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, অ্যাডভাইস বা অন্য চিকিৎসা।
রোগীদের যা করতে হবে
মনে রাখতে হবে, আপনি ইউটিউব বা ফেসবুকে ভাইরাল যা কিছু দেখছেন, তা সত্যি না-ও হতে পারে। আজকাল বিজ্ঞাপন ও অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন পোস্ট বা ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া যায়। একটি তথ্য বিশ্বাস করার আগে দেখে নিন, কে তথ্যটি দিচ্ছে, তার যোগ্যতা কী। রোগীদের মধ্যে প্রচলিত ধারণা হলো, কোমরব্যথা পিএলআইডির কারণে বেশি হয়। কিন্তু এই তথ্য অনেকাংশে মিথ্যা। বেশির ভাগ ব্যথার কারণ পিএলআইডি নয়। উন্নত মানের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, এমন হাজার হাজার সুস্থ মানুষ রয়েছে, যাদের এমআরআই করে দেখা গেছে, তারা পিএলআইডিতে আক্রান্ত। অথচ তাদের কোমরব্যথা নেই। সে কারণে অনেক কোমরব্যথার রোগী রয়েছে, যাদের এমআরআই স্বাভাবিক। তাই সঠিক তথ্য ও চিকিৎসা পেতে রোগীকে সবার আগে সচেতন হতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. মোহাম্মদ আলী, কোমরব্যথাবিষয়ক গবেষক, লা ট্রোব ইউনিভার্সিটি, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া এবং বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাব বিভাগ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সেক্টর-৯, উত্তরা, ঢাকা
একসময় এই সমাজের একজন সাধারণ মানুষকে বোঝানো খুব কঠিন হতো, শরীরের মতো মনেরও অসুখ হতে পারে। তবে দিন বদলেছে। মানসিক স্বাস্থ্যকে মানুষ গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে মানসিক রোগের ভালো মানের চিকিৎসা। কোমরব্যথার সঙ্গে এ কথাগুলোর যোগাযোগ আছে।
কোমরব্যথা কি মানসিক রোগ? এ কথার ‘ছোট উত্তর’ দেওয়া দুরূহ। ধরুন, সামান্য বা মাঝারি মানের ডিস্ক প্রল্যাপস বা পিএলআইডির কারণে কারও কোমরব্যথা হলো। চিকিৎসায় ডিস্ক আগের জায়গায় ফিরে গেল ঠিকই; তীব্র ব্যথাও কমে গেল, কিন্তু মৃদু থেকে মাঝারি ব্যথা রয়েই গেল। এই ব্যথা শরীরে বয়ে চলল দীর্ঘকাল। কোমরে আঘাত বা ডিস্ক প্রল্যাপসে যে ব্যথার ধারা তৈরি হয়েছিল, মস্তিষ্ক সেই ধারাকে মনে রাখতে সক্ষম। মস্তিষ্কের এই স্মরণশক্তি হয় প্রাকৃতিক অথবা পারিপার্শ্বিক অবস্থা দিয়ে প্রভাবিত। যেমন ধরুন, কারও যদি কোমরে ব্যথা সম্পর্কে অতিমাত্রায় নেতিবাচক মনোভাব থাকে অথবা প্রকৃত কোমরব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তি আর্থসামাজিক বা পারিবারিক কারণে মানসিক চাপে থাকে, তবে তার মনের ব্যথার সঙ্গে কোমরব্যথার সংমিশ্রণ ঘটতে পারে। তৈরি হতে পারে মনের ভেতর স্থায়ী দাগের, যা তার শরীরকে ব্যথার উপলব্ধি দিতে থাকবে বছরের পর বছর। এ ধরনের কোমরব্যথা ফাইব্রোমায়ালজিয়া নামক রোগের সঙ্গে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এই ব্যথা নির্ণয়ের উপায় কী
এ ধরনের ব্যথা নির্ণয় চ্যালেঞ্জিং। এ ধরনের রোগীর এমআরআই, এক্স-রেতেও সমস্যা থাকতে পারে। পিএলআইডি বা লাম্বার স্পন্ডালাইসিস পরিলক্ষিত হতে পারে টেস্ট রেজাল্টে। কিন্তু এর প্রকৃত কারণ অন্যখানে নিহিত। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কারণ একে একে নির্ণয়ে রোগীকে সময় দিতে হবে। এ জন্য চিকিৎসকের থাকতে হবে বাস্তবসম্মত ও উন্নত প্রশিক্ষণ।
চিকিৎসা
মনের ব্যথা যখন শরীরে চলে যায়, সেখান থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কঠিন। অবাধ তথ্যপ্রবাহের এই যুগে ইউটিউব, ফেসবুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন রকমের মনগড়া ও ভুল তথ্য থেকে ভুল শিক্ষা নেওয়া রোগীকে কোমরব্যথা সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলা বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন ধরনের তথ্য মাথায় নিয়ে আসা রোগীদের প্রথমত সঠিক বিষয়টি বোঝাতে হবে। দ্বিতীয়ত, টার্গেটেড বা সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা দিতে হবে। সেটা হতে পারে থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, অ্যাডভাইস বা অন্য চিকিৎসা।
রোগীদের যা করতে হবে
মনে রাখতে হবে, আপনি ইউটিউব বা ফেসবুকে ভাইরাল যা কিছু দেখছেন, তা সত্যি না-ও হতে পারে। আজকাল বিজ্ঞাপন ও অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন পোস্ট বা ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া যায়। একটি তথ্য বিশ্বাস করার আগে দেখে নিন, কে তথ্যটি দিচ্ছে, তার যোগ্যতা কী। রোগীদের মধ্যে প্রচলিত ধারণা হলো, কোমরব্যথা পিএলআইডির কারণে বেশি হয়। কিন্তু এই তথ্য অনেকাংশে মিথ্যা। বেশির ভাগ ব্যথার কারণ পিএলআইডি নয়। উন্নত মানের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, এমন হাজার হাজার সুস্থ মানুষ রয়েছে, যাদের এমআরআই করে দেখা গেছে, তারা পিএলআইডিতে আক্রান্ত। অথচ তাদের কোমরব্যথা নেই। সে কারণে অনেক কোমরব্যথার রোগী রয়েছে, যাদের এমআরআই স্বাভাবিক। তাই সঠিক তথ্য ও চিকিৎসা পেতে রোগীকে সবার আগে সচেতন হতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. মোহাম্মদ আলী, কোমরব্যথাবিষয়ক গবেষক, লা ট্রোব ইউনিভার্সিটি, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া এবং বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাব বিভাগ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সেক্টর-৯, উত্তরা, ঢাকা
নানা কারণে ঘুম নেই, মেজাজ খিটখিটে, অতিরিক্ত রাগ আর কোনো কিছুতেই প্রশান্তি নেই। এসব কারণে ইদানীং মানসিক সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। মানসিক সমস্যা মানুষেরই হয়। বিশেষ করে যুবসমাজ এ সমস্যায় ভুগছে মারাত্মকভাবে। যে কারণেই হোক না কেন, মানসিক সমস্যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না। তাকে বলাও যায় না...
৬ ঘণ্টা আগেঅফিসে বারবার ঘুম পেলে তা কাজের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। ডেডলাইন মিস করা, কাজ জমে যাওয়া, এমনকি চাকরিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসা জরুরি। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে কাজের সময় ঘুম পাওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন।
৬ ঘণ্টা আগেবাতরোগ সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের সমস্যা বলে বিবেচিত। কিন্তু শিশুরাও এতে আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় অভিভাবকেরা ভাবেন, এই বয়সে এমন ব্যথা বা অস্বস্তি সাময়িক। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক শিশু দীর্ঘস্থায়ী বাতরোগে ভোগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগকে বলা হয় জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রারাইটিস...
৬ ঘণ্টা আগেশরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তাকে জ্বর বলা হয়। জ্বর আসলে কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। ফলে জ্বর হওয়াকে শরীরের ভেতরের কোনো রোগের সতর্কবার্তা বলা যেতে পারে।
৬ ঘণ্টা আগে