Ajker Patrika

আগুনে পোড়া রোগীর জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধে যা করতে হবে

ডা. কাকলী হালদার
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

হাসপাতালে ভর্তি আগুনে পোড়া রোগীদের সেপসিস, একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া, মূত্রনালির সংক্রমণ, শক ইত্যাদি হতে পারে। ফলে তাদের বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা সাধারণ রোগীর চেয়ে বেশি। এসব জীবাণুর অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালসের প্রতি রেজিস্ট্যান্স হার অনেক বেশি। সে জন্য অনেক অ্যান্টিবায়োটিক হাতে থাকলেও সেগুলো সব সময় কার্যকর না-ও হতে পারে।

আগুনে পোড়া রোগীর যত্নে দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে শুরু করে হাসপাতালে দীর্ঘমেয়াদি পরিচর্যা—সব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে মেনে চললে তাদের মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে যা করতে হবে

পোড়া রোগীদের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেসব বিষয় মেনে চলতে হবে—

দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া

জীবাণু প্রবেশে বাধা দিতে দ্রুত পোড়া স্থান ঠান্ডা করে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

হাত ধোয়া

রোগীকে স্পর্শ করার আগে ও পরে, রোগীর বিছানা কিংবা আশপাশ স্পর্শ করার পরে, রোগীর শরীরের কোনো তরল স্পর্শ করলে, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীর সংস্পর্শে আসা সবাইকে নিয়মিত সঠিক পদ্ধতিতে হাত ধুতে হবে।

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম

চিকিৎসক ও নার্সদের অবশ্যই গ্লাভস, গাউন, মাস্ক এবং প্রয়োজনে অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে।

জীবাণুমুক্ত পরিবেশ

বার্ন ইউনিট বা হাসপাতালের পরিবেশকে যথাসম্ভব জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণুনাশক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বায়ু চলাচল ব্যবস্থা, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং হাসপাতালের যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত রাখার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

রোগীকে আলাদা রাখা

সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে সংক্রমিত রোগীদের আলাদা রাখতে হবে।

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ক্ষত ড্রেসিং

ড্রেসিং পরিবর্তন করার সময় জীবাণুমুক্ত কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

নিয়মিত পরীক্ষা

রোগীর ক্ষত থেকে নমুনা নিয়ে জীবাণুর উপস্থিতি ও অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি তাদের সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা খুব জরুরি।

সঠিকভাবে ক্ষত পরিচর্যা

নিয়মিত জীবাণুমুক্ত ড্রেসিং পরিবর্তন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার ক্ষত সংক্রমণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

পুষ্টিকর ও তরল খাবার খাওয়ানো

পর্যাপ্ত পুষ্টি ও তরল খাবার গ্রহণ শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী রাখে এবং দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে।

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার

শুধু প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা উচিত, যাতে জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স তৈরি করতে না পারে।

ভ্যাকসিনেশন

কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে নির্দিষ্ট কিছু ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে পারেন চিকিৎসক।

ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি

রোগী ও রোগীর স্বজনদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। মনে রাখতে হবে, আগুনে পোড়া রোগীদের সংক্রমণ প্রতিরোধ একটি জটিল প্রক্রিয়া। এর জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান থেকে রোগীর স্বজনদেরও নিয়মগুলো যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।

পরামর্শ দিয়েছেন: এমবিবিএস, এমডি (মাইক্রোবায়োলজি), সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বীর্যে বিরল অ্যালার্জি, নারীর বন্ধ্যত্ব নিয়ে চিকিৎসকদের নতুন সতর্কতা

কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ২৩ মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা

আওয়ামী লীগ নেতাকে ধরতে গিয়ে ছেলের বঁটির আঘাতে এসআই আহত, আটক ২

নিহত ১১, আহত ৫০, ভারতের সেই মাঠ থেকে সরে যেতে পারে বিশ্বকাপ

এক টন কয়লাও ইসরায়েলে যাবে না, নির্দেশ কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত