Ajker Patrika

শিশুর বাড়তি আঙুল নিয়ে চিন্তা করছেন

অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন
Thumbnail image

পলিড্যাকটাইলি একটি জন্মগত রোগ। এই রোগে একটি শিশু এক বা একাধিক আঙুল নিয়ে জন্মায়। এটি একটি স্বাভাবিক ও সাধারণ রোগ। অতিরিক্ত আঙুলগুলো সাধারণত ছোট, অস্বাভাবিক ছোট এবং অস্বাভাবিকভাবে বিকশিত হয়।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আঙুলটি হাত বা পায়ের শেষ অর্থাৎ পঞ্চম আঙুলের পাশে থাকে। এই অস্বাভাবিকতা বংশপরম্পরায় হতে পারে। আবার পরিবেশগত প্রভাব কিংবা জিন মিউটেশনের ফলেও হতে পারে। পলিড্যাকটাইলির কারণে ডান হাত ও বাঁ পা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়। পুরুষের ক্ষেত্রে এই রোগে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা নারীদের তুলনায় দ্বিগুণ বলা চলে। পায়ের চেয়ে হাতে পলিড্যাকটাইলি বেশি প্রভাব ফেলে।

সাধারণত এক হাজার নবজাতকের মধ্যে একজন পলিড্যাকটাইলিতে আক্রান্ত হয়। এর ফলে গঠিত অতিরিক্ত আঙুলটির গঠন ও কার্যক্ষমতা সম্পূর্ণ হতে পারে। আবার কখনো আংশিক গঠনও দেখা যায়। অনেক সময় অতিরিক্ত আঙুলটির কোনো সঠিক গঠন না হয়ে সেটি নরম কোষ হিসেবেও উপস্থিত থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পলিড্যাকটাইলি অন্য কোনো অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি করে না। অতিরিক্ত আঙুলটি কখনো হাত বা পায়ের বাইরের দিকে থাকতে পারে। এই ধরনের পলিড্যাকটাইলি বেশি দেখা যায়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে আঙুলের উপস্থিতি হাত বা পায়ের অন্যান্য আঙুলের মাঝখানে দেখা যায়। এই ধরনের পলিড্যাকটাইলি বিরল।

পলিড্যাকটাইলির অস্বাভাবিকতা এ ক্ষেত্রে অন্যান্য জিনগত রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন ডাউন সিনড্রোম বা কারপেন্টার সিনড্রোমের মতো বেশ কয়েকটি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে পলিড্যাকটাইলি। এই রোগের কারণ পলিড্যাকটাইলির কারণ হিসেবে ছয়টি জিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়েছে, যাদের মিউটেশনের ফলে এই অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া যেসব কারণে রোগটি হতে পারে—

  • ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মা

  •  ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় শিশুর ওজন কম থাকা

  • গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে মায়ের রেসপিরেটরি ট্রাক্টে সংক্রমণ 

  • মায়ের মৃগীরোগের মতো কোনো ইতিহাস 

চিকিৎসা
পলিড্যাকটাইলি রোগের সাধারণ চিকিৎসা হলো অতিরিক্ত আঙুল অপসারণ করা। এটি শিশুর বয়স এক থেকে দুই বছরের মধ্যে হয়। বাড়তি আঙুল স্বাভাবিক কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ালে এটি অপসারণ করা হয়। অস্ত্রোপচারের ১০ দিনের মধ্যে সেলাই কাটা হয়। এর পর থেকেই রোগী স্বাভাবিক হয়ে যায়। হাড়, জয়েন্টের গঠনসহ একাধিক আঙুলের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে শিশুর বয়স দুই বছর বা কিছু ক্ষেত্রে পাঁচ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। 

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয়তা নেই; বরং অতিরিক্ত আঙুল অপসারণে ব্যর্থতা বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। 

অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন
অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন, চিফ কনসালট্যান্ট, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ, ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত