Ajker Patrika

ইগলস সিনড্রোম

ঘাড় ও গলাব্যথার এক অজানা কারণ

ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী 
ঘাড় ও গলাব্যথার এক অজানা কারণ

ইগলস সিনড্রোম হলো নাক-কান-গলা বিভাগের অন্তর্গত একটি সমস্যা। গলায় টনসিলের ঠিক নিচে একটি হাড় থাকে। তার নাম স্টাইলয়েড প্রসেস। এর স্বাভাবিক দৈর্ঘ্য আড়াই থেকে তিন সেন্টিমিটারের কম। কোনো কারণে এই হাড় চার সেন্টিমিটারের বেশি লম্বা হলে অথবা স্টাইলোহাইওয়েড লিগামেন্ট ক্যালসিফাই বা শক্ত হয়ে গেলে আশপাশের স্নায়ু এবং রক্তনালির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। এ কারণে ঘাড়, গলা, চোয়াল ও কানে ব্যথা হয়। কখনো কখনো এর জন্য মাথাব্যথা হয়। এই অবস্থাই হলো ইগলস সিনড্রোম।

যে সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে

  • গলার এক পাশে তীব্র ব্যথা, গলায় কাঁটা বিঁধলে যে রকম ব্যথা ও অস্বস্তি হয়, সে রকম কষ্ট অনুভূত হয়। ক্ল্যাসিক ইগল সিনড্রোমে এ উপসর্গ দেখা গেলেও কখনো কখনো গলার উভয় পাশে সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।
  • কান, চোয়াল বা মাথায় ব্যথা ছড়িয়ে যাওয়া। এমনকি অনেক সময় হাতের স্নায়ুতে চাপ দিলে সেখানেও ব্যথা হতে পারে।
  • খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া।
  • গলায় কিছু আটকে থাকার অনুভূতি হওয়া।
  • মাথা ঘোরালে বা নিচু করলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া।
  • এই উপসর্গগুলোতে ভুগলে এবং কোনো নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পেলে নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে।

যেসব কারণে এই সমস্যা হয়

  • নিজে থেকে স্টাইলয়েড প্রসেস বেড়ে যেতে পারে।
  • স্টাইলোহাইয়য়েড লিগামেন্টে ক্যালসিফিকেশন বা শক্ত হয়ে যাওয়া।
  • পুরোনো টনসিল অপারেশনের জটিলতা।
  • বয়সজনিত পরিবর্তন।
  • বংশগত প্রবণতা।

শারীরিক পরীক্ষা, এক্স-রে স্টাইলয়েড প্রসেস ও সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে এ রোগ শনাক্ত করা যায়। ওষুধ ও অপারেশন—এই দুই পদ্ধতিতে ইগলস সিনড্রোমের চিকিৎসা করা হয়।

ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা

অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগী মারাত্মক কষ্টে না ভুগলে চিকিৎসকেরা কাউন্সেলিং করে অস্ত্রোপচার ছাড়া চিকিৎসা করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যথানাশক, স্নায়ুজনিত ব্যথার ওষুধ, লোকাল স্টেরয়েড বা লিডোকেইন ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়।

অস্ত্রোপচার

এই মাধ্যমে স্টাইলয়েড হাড় অপসারণ করা হয়। মুখের ভেতর দিয়ে ও ঘাড় কেটে হাড় অপারেশন করা যায়। মুখের ভেতর দিয়ে অপারেশন করা নিরাপদ। এতে বাইরে কোনো দাগ থাকে না এবং সীমিত পরিসরে কাজ করা যায়। ইগলস সিনড্রোমকে প্রায় সময় উপেক্ষা করা হয় রোগ হিসেবে। নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসা সহজ ও কার্যকর।

লেখক: ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী এফসিপিএস (ইএনটি), আবাসিক সার্জন (ইএনটি) সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত