Ajker Patrika

নেবুলাইজার ব্যবহার যখন

ডা. শাহেদ সাব্বির আহমেদ
নেবুলাইজার ব্যবহার যখন

শ্বাসতন্ত্রের রোগের চিকিৎসায় নেবুলাইজার একটি বহুল ব্যবহৃত যন্ত্র। এটি অ্যারোসল বা সূক্ষ্ম জলকণা তৈরি করে। সূক্ষ্ম জলকণার আকারে ওষুধ শ্বাসতন্ত্রের গভীরে পৌঁছে দেওয়াই এর কাজ।

তীব্র শ্বাসকষ্টের সময় ইনহেলার ব্যবহার করতে রোগীর সমস্যা হলে নেবুলাইজার একটি কার্যকর বিকল্প। ইনহেলারের ব্যবহার জানা না থাকলে সরাসরি শ্বাসযন্ত্রে ওষুধ পৌঁছাতে নেবুলাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে নিয়মিত চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইনহেলার উপযুক্ত।

যেভাবে কাজ করে
উচ্চচাপ এর বাতাস বা অক্সিজেন প্রবাহ তৈরি করে ওষুধ মিশ্রিত তরলকে অ্যারোসল বা সূক্ষ্ম জলকণায় পরিণত করে নেবুলাইজার। উচ্চ কম্পাঙ্কের ধাতব পাতের সংঘাতের মাধ্যমেও কিছু নেবুলাইজার অ্যারোসল তৈরি করতে পারে। বর্তমানে ব্যবহৃত নেবুলাইজার একটি বিদ্যুচ্চালিত যন্ত্র।

নেবুলাইজার সলিউশন সাধারণত ২০-৩০ মিনিট পর্যন্ত ওষুধ বাষ্প করে। এই সময়টুকু রোগী বসা অবস্থায় থাকবে। মাউথপিসের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। নেবুলাইজার ব্যবহারে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ওষুধ যথাস্থানে পৌঁছে যায়। অন্যদিকে, ইনহেলার ব্যবহারের ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমেই ওষুধ গ্রহণ ও প্রয়োগ একই সময়ে না হলে ওষুধ প্রয়োগ সফল হয় না।

বিভিন্ন ধরনের ওষুধ
নেবুলাইজারের মাধ্যমে প্রয়োগ করা যায়। ব্রংকোডাইলেটর স্টেরয়েড শ্বাসনালির সংকোচন ও প্রদাহ কমায়।

নেবুলাইজারের প্রয়োগ যেভাবে

  • তীব্র শ্বাসকষ্টের সময় নেবুলাইজারের মাধ্যমে দীর্ঘক্ষণ ও ঘন ঘন ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।
  • বসা বা আধশোয়া অবস্থায় নেবুলাইজার ব্যবহার করতে হবে।
  • শোয়া অবস্থায় নেবুলাইজারের ওষুধ শ্বাসতন্ত্রে কম প্রবেশ করে।
  • নেবুলাইজারের তৈরি অ্যারোসলাইজড ওষুধ বাষ্প হয়ে একটি টিউবের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। ফেসমাস্ক বা মাউথপিসের মাধ্যমে রোগী এই বাষ্প গ্রহণ করতে পারে।
  • ওষুধ কত দূর প্রবেশ করবে তা নির্ভর করে অ্যারোসলের সূক্ষ্মতার ওপর। অ্যারোসল বেশি বড় হলে নাকে বা মুখে আটকে পড়ে। আবার বেশি ছোট হলে ফুসফুস পরিভ্রমণ করে নিশ্বাসের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।
  • যথাযথ আকৃতির অ্যারোসল শ্বাসনালি ও ফুসফুসে পৌঁছে শোষিত হয়। নেবুলাইজার সব ধরনের অ্যারোসল তৈরি করে বিধায় ওষুধ অধিক পরিমাণে ব্যবহার করতে হয়।
  • ব্যবহারের পর কুলি করে মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত।
  • নেবুলাইজার ব্যবহার করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। প্রশিক্ষিত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে রোগীকে নেবুলাইজ করতে হবে।

সতর্কতা 
নেবুলাইজারে সাধারণত স্যালাইন পানির সঙ্গে মিশ্রিত ওষুধ ব্যবহার করা হয়। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নেবুলাইজার সলিউশন তৈরি করা হয়ে থাকে। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায়ই মূলত নেবুলাইজার ব্যবহার বেশি উপযোগী। তবে বাসায় নিয়মিত ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং ওষুধের মাত্রা ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন মানতে হবে।

নেবুলাইজারের টিউব ও ওষুধপত্র নিয়মিত পরিষ্কারের পর বাতাসে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। এটি একটি বিদ্যুচ্চালিত যন্ত্র। তাই যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

লেখক: বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

চীনা পণ্যে শুল্ক ‘উল্লেখযোগ্য’ পরিমাণে কমিয়ে সুখে বসবাসের ঘোষণা ট্রাম্পের

২৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪১৪ কোটি টাকার অনিয়ম

কাশ্মীরে হামলায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ না হলে মানবজাতির সামনে ‘চরম অন্ধকার’, ভ্যান্সের হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত