Ajker Patrika

হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতির কারণ হতে পারে ন্যাপিং

আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২২, ১৩: ৪২
হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতির কারণ হতে পারে ন্যাপিং

নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, ন্যাপিংয়ের পাশাপাশি খুব বেশি কিংবা খুব কম ঘুমানো বা ঘুমের অনিয়মের কারণে বয়স্কদের মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো ঘুমের অভ্যাসের বিকল্প নেই। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তির স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার একটি চেকলিস্ট করে, যাতে ঘুমের সময়সীমা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। 

এর আগের এক গবেষণায় দেখা যায়, কম ঘুম মানুষকে অনেক দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা এবং হৃদ্‌যন্ত্র ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করার উচ্চ ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, ডিমেনশিয়া, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্থূলতা। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য অনুসারে, প্রায় ৩৫% মার্কিন প্রাপ্তবয়স্করা বলেন যে তাঁরা সাত ঘণ্টার কম ঘুমান, আর ৩.৬% বলেন, তাঁরা ১০ বা তার বেশি ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকেন। 

ঘুমের সময়সীমা নিয়ে পূর্বের গবেষণায় দেখা গেছে, খুব বেশি বা খুব কম ঘুম উভয়ই কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তবে ন্যাপিং ভালো না খারাপ তা সেখানে স্পষ্ট ছিল না। 

খুব বেশি বা খুব কম ঘুম উভয়ই কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ছবি: পেক্সেলস

নতুন গবেষণায় ১২ হাজার ২৬৮ জন প্রাপ্তবয়স্কদের ঘুমের ধরন বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকেরা। এতে অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ছিল ৭০ বছর, এবং তাঁদের বড় কোনো কার্ডিওভাসকুলার রোগের ইতিহাস ছিল না। 

এই গবেষণায় তথ্য সংগ্রহ করতে একটি প্রশ্নপত্র ব্যবহার করা হয়েছিল; যেখানে দিনের বেলা ঘুমানো, ন্যাপিং (কাজের ফাঁকে অল্প সময়ের জন্য ঘুম বা বিশ্রাম), যারা রাত জাগেন কিংবা খুব ভোরে ওঠেন, এবং নাক ডাকা ও অনিদ্রার মতো সমস্যা আছে কিনা। অংশগ্রহণকারীদের হৃদ্‌রোগ এবং স্ট্রোকসহ কোনো বড় কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা তৈরি হয়েছে কিনা তা ট্র্যাক করার জন্য ১৮ বছর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। 

ফলাফলে দেখা যায়, যারা প্রতি রাতে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানোর কথা জানিয়েছেন তাঁদের কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল। আর যারা সাত ঘণ্টার কম ঘুমায় তাঁদের কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ১৪% বেশি এবং ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমানোর কথা জানানো ব্যক্তিদের কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ১০% বেশি। 

যারা কখনই ন্যাপ নেয়নি, তাঁদের তুলনায় যারা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ন্যাপ নিত তাঁদের কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ১১% বেশি। ছবি: পেক্সেলসযারা কখনই ন্যাপ (কাজের ফাঁকে অল্প সময়ের জন্য ঘুম বা বিশ্রাম) নেয়নি বলে জানায়, তাঁদের তুলনায় যারা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ন্যাপ নেওয়াদের কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ১১% বেশি। আর ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ন্যাপ নেওয়াদের হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি ২৩% বেড়ে যায়। এ ছাড়া যারা রাত জাগেন কিংবা খুব ভোরে ওঠেন, বেশি ঘুমান কিংবা একেবারে কম এবং ভারী নাক ডাকা ও অনিদ্রার মতো সমস্যা আছে তাঁদের ঝুঁকি ২২% বেশি। 

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যেসব ব্যক্তি রাতে সাত ঘণ্টার কম সময় ঘুমানোর কথা জানিয়েছেন এবং প্রতিদিন ৩০ মিনিটের বেশি ন্যাপ নিয়েছেন, তাঁদের কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এমনকি যারা একদম পর্যাপ্ত ঘুমান এবং ন্যাপ নেন না তাঁদের থেকে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি ৪৮% বেশি বলেও উল্লেখ করা হয় গবেষণা প্রতিবেদনে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত