Ajker Patrika

ভূঞাপুরে ভাঙন আতঙ্কে মানুষ

ভূঞাপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জুন ২০২২, ১৪: ০৮
Thumbnail image

উজান থেকে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভূঞাপুরে শুরু হয়েছে ভাঙন। নদীতে চলে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। এতে নতুন করে গৃহহীন হচ্ছেন নদীপারের মানুষ। ভিটেমাটি ও ফসলি জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। আশ্রয় হারানোর শঙ্কায় দিন কাটছে হাজারো মানুষের। এ ছাড়া চর ও নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।

গত দুই দিনে (সোমবার পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি ৩০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য সব নদীর পানিও বাড়ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে জেলায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা তীরবর্তী ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়াপাড়া এলাকায় প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মিটারজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে পাকা, আধা পাকা ঘরবাড়িসহ অসংখ্য স্থাপনা। গোবিন্দাসী ঘাট থেকে ভালকুটিয়ার কিছু অংশে জিওব্যাগ ফেলা হলেও চিতুলিয়াপাড়ার প্রায় ৫০০ মিটার এলাকায় ভাঙন রোধে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া যমুনার তীরবর্তী উপজেলার জিগাতলা গ্রামের বেশ কিছু অংশেও দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যমুনার পূর্বপাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছরের ভাঙনে বিলীন হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, বসতভিটা ও ফসলি জমি। নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে শত শত পরিবার। প্রতিবছর নদীভাঙনের শিকার হচ্ছেন উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ি, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়াপাড়ার যমুনা তীরবর্তী লোকজন। চলতি বর্ষায় ভাঙন রোধে ভালকুটিয়া গ্রামে কিছু জিওব্যাগ ফেলা হলেও চিতুলিয়াপাড়া গ্রামে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এখন পর্যন্ত। ভালকুটিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের স্বেচ্ছাশ্রমে ৬০০ প্লাস্টিকের ব্যাগভর্তি মাটি ফেলা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। বরং সেখানে আরও বড় ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেক বছর ধরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কথা বলা হলেও, তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে প্রতিবছর ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

চিতুলিয়াপাড়া গ্রামের কুলসুম বেগম বলেন, ‘আমার বাড়ি থেকে নদী অনেক দূরে ছিল। ভাঙতে ভাঙতে নদীর কিনারে এসে পড়েছি। যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে যাবে আমার ঘরবাড়ি। এখন ঘরবাড়ি ভেঙে গেলে আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা থাকবে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে নিঃস্ব হয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে। আমরা সরকারের কাছে খাবার চাই না। আমরা চাই, যমুনার পূর্বপাড়ে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক।’

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা পূর্বপাড়ের ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। কিছু জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। পরিবেশ অনুকূলে এলে যমুনা পূর্বপাড়ে আড়াই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।’

সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, এখন যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য সব নদীর পানিও বাড়ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে জেলায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত