Ajker Patrika

‘ওয়েবিল’ নিয়েই সংকট

আল-আমিন রাজু, ঢাকা
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১২: ১৬
‘ওয়েবিল’ নিয়েই সংকট

খাতা হাতে রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকেন কয়েকজন কর্মী। এই কর্মীরা দেখেন, সংশ্লিষ্ট পয়েন্টে ওই সময় বাসে কতজন যাত্রী ছিলেন। যতজন যাত্রী থাকেন, সেই সংখ্যা দিয়ে ওই পয়েন্ট পর্যন্ত যে ভাড়া সেটি গুণ করে যে সংখ্যা পাওয়া যায়, সেটিই বাসের মালিককে বুঝিয়ে দিতে হয় চালকদের। আর এই প্রক্রিয়াটিই হচ্ছে ‘ওয়েবিল’। পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকেরা এই বিলে শিক্ষার্থীদের ছাড় না দেওয়াতেই হাফ পাস নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

এদিকে ওয়েবিলের কথা বলে অল্প দূরত্বেও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সম্প্রতি গণপরিবহনেও ভাড়া বেড়েছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন রুটের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। তারপরও ওয়েবিল জটিলতায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

আসাদগেট থেকে লাব্বাইক পরিবহনে ফার্মগেট এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী রাহাত বিন মর্তুজা। তিনি বলেন, ‘মাত্র কয়েক কিলোমিটার পথেও আমাকে ১৫ টাকা দিতে হয়েছে। আগে ১০ টাকা নিলেও এখন ১৫ টাকা নিচ্ছে। বাসের হেলপার ওয়েবিলের কথা বলে ১৫ টাকা চেয়েছে। ১৫ টাকা না দিলে আমাকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল তারা।’

আরেক যাত্রী মোহাম্মদ কাওসার বলেন, ‘বাসে উঠলেই বাড়তি ভাড়ার আতঙ্কে থাকতে হয়। শুধু ডিজেলচালিত বাসে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কথা থাকলেও সবাই এখন সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। আজ দেখলাম ছাত্ররা তেলের গাড়িতে ডিজেলচালিত স্টিকার তুলে ফেলছে, অথচ এসব নিয়ে পুলিশের তদারকি খুব একটা চোখে পড়ছে না। শুরুর দিকে কয়েক দিন মোবাইল কোর্ট চালিয়েই তাদের কাজ শেষ!’

এদিকে গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর সরকারি সায়েন্স কলেজের এক শিক্ষার্থী ৩০ টাকার হাফ ভাড়া দিতে চাইলে বাসের হেলপার তাকে মারধর করেছেন—এমন অভিযোগ এনে স্বাধীন পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুর করে ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা। এ বিষয়ে জানতে স্বাধীন পরিবহনের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আমরা অঘোষিতভাবে হাফ পাস দিই। কিন্তু এটাও ঠিক, হাফ পাসের কারণে অনেক কোম্পানিই দেউলিয়া হয়ে গেছে। এটা তো আর স্কুল বাস নয়। এখন ছাত্রদের কাছে ভাড়া চাইলেই তারা ঝামেলা করছে, ভাঙচুর করছে। এটা তো ঠিক না।’

সাভার, গাবতলী, ফার্মগেট, মালিবাগ হয়ে সাইনবোর্ড রুটে চলাচল করা লাব্বাইক পরিবহনের হেলপার রেজাউল বলেন, ‘ছাত্ররা হাফ ভাড়া দিতে চায়। এতে আমাদের তো কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু মালিকেরা ওয়েবিলে এটা মানতে চান না। কোম্পানি থেকে হাফ ভাড়া নেওয়া নিষেধ। নিজের পকেট থেকে হলেও মালিককে আমাদের টাকা বুঝিয়ে দিতে হয়।’

একই রুটে চলাচল করা এমএম লাভলী পরিবহনের হেলপার মোহাম্মদ সাকিব বলেন, ‘কোম্পানি যা ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে, আমরা সে অনুযায়ীই নিচ্ছি। ওয়েবিলের কারণে চাইলেও হাফ পাস নিতে পারছি না।’

সাকিব আরও বলেন, ‘এই বিলের কারণে যে কয়জন হাফ পাস দিচ্ছে তাদের টাকা আমরা নিজেদের পকেট থেকেই দিতে হচ্ছে। রুটি-রোজগারের কথা ভেবে অনেককে হয়তো আমরা বুঝিয়ে বলি। কিন্তু তারপরও বেশির ভাগই রাজি হয় না। তখনই গেঞ্জাম হয়।’

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘হাফ ভাড়া নেওয়ার সরকারি কোনো নির্দেশনা নেই। তবে মৌখিকভাবে আমরা মালিকদের বলেছি শিক্ষার্থীদের বেলায় ছাড় দিতে। এখন নির্দিষ্ট কোনো মালিক যদি এটা না মানেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোরপূর্বক অপুর স্বীকারোক্তি নিয়েছেন বিএনপির ইশরাক, এনসিপির ব্যবস্থা করা সংবাদ সম্মেলনে দাবি স্ত্রীর

‘মিরপুরের উইকেটের পাশে পুঁইশাক বের হচ্ছে, এত বছর হয়নি কেন’

ভোররাতে হাঁসের মাংস খেতে ৩০০ ফুটে যান আসিফ মাহমুদ, না পেয়ে যান ওয়েস্টিনে

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভুলভাবে কথা বলেছেন: প্রেস সচিব

নীলা মার্কেটের হাঁসের মাংস নাকি ওয়েস্টিনের—কোনটি সেরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত