Ajker Patrika

করোনার চতুর্থ ঢেউয়ে দেশ

আজাদুল আদনান, ঢাকা
আপডেট : ২৪ জুন ২০২২, ১২: ৪৪
করোনার চতুর্থ ঢেউয়ে দেশ

টানা দুই মাসের বেশি সময় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা ১ শতাংশের নিচে থাকার পর আবার তা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এখন সংক্রমণ ১৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা একে করোনার চতুর্থ ঢেউ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন। আর পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম এবং আসন্ন ঈদুল আজহা ঘিরে লাখ লাখ মানুষের ঢাকা থেকে যাওয়া-আসা পরিস্থিতিকে খারাপের দিকে নিতে পারে। যদিও ভরসা একটাই, দেশের প্রায় ১৩ কোটি মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজ চলছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, জানুয়ারির শুরুতে ব্যাপকভাবে সামাজিক সংক্রমণের মাধ্যমে করোনার ওমিক্রন ধরন ছড়িয়ে পড়ে। তবে ডেলটার মতো প্রাণঘাতী না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে সতর্ক হওয়ার প্রবণতা তেমনটা ছিল না। ফলে জানুয়ারিতে সংক্রমণের

হার ছিল রেকর্ড ৩৩ শতাংশ। এরপর তীব্রতা কমতে থাকে। এপ্রিল ও মে মাসে দৈনিক শনাক্ত ২০-৩০ জনে নেমে আসে, হার ছিল ১ শতাংশের অনেক নিচে। মৃত্যুও চলে এসেছিল শূন্যের কোঠায়। এমনকি করোনায় টানা ২০ দিন মৃত্যুহীন ছিল দেশ।

কিন্তু এখন আবার পুরোনো চরিত্রে ফিরছে করোনা, যা চতুর্থ ঢেউ হয়ে চলতি জুনের শুরু থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৩ থেকে ২৯ মে দেশে সংক্রমণের মাত্রা ছিল নিম্নমুখী। ৬ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত আগের সপ্তাহের তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১১৮ শতাংশ বেশি ছিল। আর ১৩ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত সাত দিনে বাড়ে ৩৮৩ শতাংশ। বর্তমানে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের বেশি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলামের মতে, সংক্রমণের যে ধারা দেখা যাচ্ছে, সন্দেহাতীতভাবে বলা যায় নতুন ঢেউয়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। সামনে যা সামাজিক সংক্রমণের মধ্য দিয়ে আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন এবং আসন্ন ঈদুল আজহা ঘিরে সংক্রমণ বাড়বে। তবে গত বছরের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে না বলে মনে করেন তিনি।

সংক্রমণের এমন বেপরোয়া অবস্থা দেখে ১৮ জুন রাজধানীতে এক হুঁশিয়ারি দেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। যেভাবে সংক্রমণ ছুটছে তাতে সচেতন না হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হওয়ার পাশাপাশি প্রাণহানি বাড়বে বলেও জানান তিনি।

হঠাৎ করে সংক্রমণ বাড়ার পেছনে একাধিক কারণ কাজ করছে বলে মনে করেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রথমত, টিকা নেওয়ায় যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, নির্দিষ্ট সময় পর তা ধীরে ধীরে কমে আসে। ফলে আবারও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ জন্য দ্রুত দুই ডোজ টিকা নিশ্চিতের পরও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এ জন্য দ্রুত বুস্টার ডোজ দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ কতকগুলো ভাইরাস আছে, যেগুলো অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে আছে। ভাইরাসের একটা নিয়ম হলো, কোনোটা দেহে প্রবেশ করলে আরেকটিকে প্রবেশ করতে দেয় না। কিন্তু শীতকালের ভাইরাসগুলো এখন কমে গেছে, ফলে করোনাকে বাধা দেওয়ার মতো ভাইরাস দেহে নেই। তবে এটি এখনো ধারণামাত্র।

অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘সংক্রমণ বাড়ার পেছনে কোন ধরন কাজ করছে, সেটি বের করতে প্রয়োজন ব্যাপক আকারে ধরন বিশ্লেষণ। এতে করে ধরনটি আমাদের জন্য কতটা ক্ষতিকর, সেটি জানা যাবে এবং মানুষকে সতর্ক করা যাবে। এখন পর্যন্ত যেটা দেখা যাচ্ছে ওমিক্রনের একটি উপধরন কাজ করতে পারে। আবারও এও দেখতে হবে, ধরনটি বাংলাদেশে উৎপত্তি হয়েছে, নাকি কোনো দেশ থেকে আসা রোগীর মাধ্যমে ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কৌশলে বিনিয়োগ সরাচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানি

বিমান বিধ্বস্ত: এক ঘণ্টা পর উদ্ধার হন পাইলট, তখনো বেঁচে ছিলেন

মোহাম্মদপুর থানায় ভুক্তভোগীকে হেনস্তা: চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার, ৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

‘ওসি হয়েও আমার কম দামি ফোন, দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই’, ভুক্তভোগীকে মোহাম্মদপুরের ওসি

রংপুরের ১০ কিমি সড়কে ৩৬৫ টন পাথর উধাও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত