Ajker Patrika

বিস্মৃতি

সম্পাদকীয়
বিস্মৃতি

কালনী নদীর পশ্চিম পারে শাহ আবদুল করিমের বাড়ি। তিনি তখন অসুস্থ। বয়স হয়েছে। সবকিছু মনে রাখতে পারছেন না। এই মুহূর্তে যা জিজ্ঞেস করছেন, পর মুহূর্তেই তা ভুলে যাচ্ছেন।

এ রকম একটি দিনে সেই ঘাটে একটা মাঝারি আকারের ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভিড়ল। নৌকা থেকেই দেখা গেল কুঞ্জাকৃতির চৌচালা ঘরটি। সাধারণত এ ধরনের ঘর গ্রামাঞ্চলে খুব কম। বাউলপুত্র নূরজালাল এসে অতিথিদের বরণ করে নিলেন।

গ্রামের নাম উজান ধল। চৌচালা বাড়িটির সামনে অনেকটা খালি জায়গা। ঘরটির পশ্চিমে শাহ আবদুল করিমের স্ত্রী সরলার সমাধি।অতিথিরা বাউলের ঘরে ঢুকলেন। সমস্বরে অভিবাদন জানালেন। দীর্ঘদেহী বাউলসম্রাটের চেহারা ভাবলেশহীন। ডায়রিয়ায় ভুগেছেন, শরীর খুব দুর্বল তাঁর। কথা বলেন খুব কম। বাউলের বিছানায় তাঁর পাশে বসলেন মি. হান্নান।

টেবিলের ওপর রাখা হলো ধল বাজারের খাঁটি ছানার মিষ্টি আর দুধ। 
বাউলসম্রাটকে ড. ফাত্তাহ জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমাকে চিনতে পারছেন?’ 
বাউলসম্রাট বললেন, ‘আপনাকে সবার আগে চিনতে পেরেছি।’
জামান সাহেব বললেন, ‘বলেন তো, আমি কে?’
তাঁকে থামিয়ে দিলেন হান্নান সাহেব। বললেন, ‘পরীক্ষা নেবেন না। পরীক্ষা নিলে আমিও ফেল করব।’ 
বাউলসম্রাটের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
কুঞ্জাকৃতি ঘরটায় শুরু হলো বাউলের গান। ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম...’। আরও কত গান। 
হঠাৎ গানের মাঝখানে উঠে গেলেন বাউলসম্রাট। এর পাঁচ মিনিট পর তিনি ছেলের ঘরে এসে বসলেন। বললেন, ‘সিলেট থেকে যাঁদের আসার কথা, তাঁরা আসলেন না কেন?’
নূরজালাল বললেন, ‘তুমি তো তাঁদের সঙ্গে ও ঘরে বসে গান শুনছিলে! তুমি তো হঠাৎ করে এ ঘরে চলে এলে।’

বাউল তখনই উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘তাহলে তো আমার ও ঘরে যাওয়া প্রয়োজন।’ 

সূত্র: সুমনকুমার দাশ সম্পাদিত শাহ আবদুল করিম সংবর্ধন-গ্রন্থ, পৃষ্ঠা ৭৯-৮০

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত