Ajker Patrika

ই-মেইলের ওপর স্কলারশিপ ও ভর্তির অনেক কিছুই নির্ভর করে

অনুলিখন: রাকিবুল হাসান রবিন
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ০৩
ই-মেইলের ওপর স্কলারশিপ ও ভর্তির অনেক কিছুই নির্ভর করে

বিদেশে পড়াশোনার জন্য সবাইকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অধ্যাপকদের ই-মেইল করতে হয়। এ ই-মেইলের ওপর স্কলারশিপ ও ভর্তির অনেক কিছুই নির্ভর করে। বাংলাদেশের ছেলে আশুতোষ নাথ। রসায়ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস বোস্টনে। তিনি যেভাবে প্রফেসরদের ই-মেইল করেছিলেন বিদেশে পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য তা তুলে ধরা হলো–

  • প্রথমেই আপনার আগ্রহের বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রফেসরকে খুঁজে বের করুন। কারণ, তিনি আপনাকে দীর্ঘসময় ধরে সুপারভাইজ করবেন। যদি আপনার আগ্রহের সঙ্গে প্রফেসরের গবেষণার অমিল হয়, তাহলে আপনার স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। তাই ই-মেইল করার আগে প্রফেসর সম্পর্কে গুগল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত জানার পর মেইল করুন। তাহলে ইতিবাচক রিপ্লাই পাওয়ার সম্ভাবনা শতগুণে বেড়ে যায়।
  • আপনি প্রফেসরের ল্যাব মেম্বারদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করবেন। তাহলে ওই প্রফেসরের আন্ডারে ফান্ডসহ ল্যাবে গবেষণার পরিবেশ, প্রফেসরের মানসিকতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন। এ ছাড়া প্রফেসর একজন শিক্ষার্থীর কাছে কী কী গুণাবলি প্রত্যাশা করেন, সে বিষয়েও ধারণা পাবেন এবং ওই অনুসারে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবেন। ফলে প্রফেসরকে সরাসরি ই-মেইল করলে আপনার স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
  • প্রতিবছর একজন প্রফেসর শত শত ই-মেইল পান। ফলে বড় ই-মেইল পড়ে রিপ্লাই দেওয়ার জন্য যে সময়ের প্রয়োজন হয়, তা প্রায় সব প্রফেসরেরই থাকে না। কারণ, তাঁরা অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক কাজেও সম্পৃক্ত থাকেন। তাই সংক্ষেপে প্রফেসরকে ই-মেইল করুন। সাধারণত এক থেকে দুই লাইনে আপনার পরিচয়। তারপর সংক্ষেপে গবেষণার আগ্রহ, নিজের গবেষণা-সম্পর্কিত কাজ (যদি থাকে), আপনার মোটিভেশন এবং সিভি সংযুক্ত করে পাঠিয়ে দেবেন।
  •  অনেকেই গুগল থেকে কপি-পেস্ট করে প্রফেসরকে ই-মেইল করেন। এটা ভুলেও করবেন না। নিজে নিজে ই-মেইল লেখার চেষ্টা করবেন। এ-সম্পর্কিত বিষয়ে প্রয়োজনে সিনিয়র কারও কাছ থেকে পরামর্শ ও চেক করে নিতে পারেন।
  •  আপনার ইনস্টিটিউট মেইল আইডি থেকে প্রফেসরকে ই-মেইলের চেষ্টা করবেন। জিমেইল বা অন্য কোনো মেইল থেকে দিলে সেটা ওই প্রফেসরের মেইলে স্প্যাম হিসেবে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে প্রফেসরের পক্ষে মেইলটি আর চেক করা হয় না। এ ক্ষেত্রে যাঁদের ইনস্টিটিউট মেইল নেই, তাঁরা নিজেদের মেইলটি যেন প্রফেশনাল হয়, তার চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ আপনার মেইলটি যেন কোনোভাবে স্প্যাম মেইল না হয়, তার জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবেন।
  •  অনেকে মেইলে নিজের পাণ্ডিত্য প্রকাশের চেষ্টা করেন। আমার পরামর্শ হলো, নিজের পাণ্ডিত্যের পরিবর্তে আপনি কতটা পরিশ্রমী, তা মেইলে প্রকাশের চেষ্টা করুন।
  •  অনেক সময় প্রফেসরকে মেইলের দু-এক মাস পার হলেও রিপ্লাই পাওয়া যায় না। হয়তো প্রফেসর আপনার মেইলটি পড়েননি বা তিনি অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ ক্ষেত্রে প্রফেসরকে ভদ্রতার সহিত রিমাইন্ডার মেইল করবেন।
  •  বর্তমানে প্রায় সব প্রফেসরেরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে linkedin, twitter-এ অ্যাকাউন্ট থাকে। সেখানে তাঁদের গবেষণা-সম্পর্কিত বিভিন্ন আর্টিকেলসহ নিয়মিত আপডেট দেন। অনেকে ল্যাবের জন্য বিভিন্ন সার্কুলারের লিংকও শেয়ার করেন। ফলে উক্ত প্রফেসরের সঙ্গে কানেক্ট থাকতে পারলে আপনি নিয়মিত আপডেট পাবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য ও মেসেজের মাধ্যমেও সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে পারেন। ফলে যখন নতুন সার্কুলার আসবে, প্রফেসর আপনাকে বেশি অগ্রাধিকার দেবেন।

আশা করি, উল্লিখিত নিয়ম অনুসরণ করে ই-মেইল করলে আপনার স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

অনুলিখন: রাকিবুল হাসান রবিন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত