Ajker Patrika

বাবুগঞ্জে কীটনাশক দিয়ে মাছ শিকার, ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য

মোহাম্মদ আলী, বাবুগঞ্জ
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ০৯: ২৪
বাবুগঞ্জে কীটনাশক দিয়ে মাছ শিকার, ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য

বাবুগঞ্জে সন্ধ্যা, সুগন্ধা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে কীটনাশক দিয়ে মাছ শিকারের অভিযোগ উঠেছে। এই মাছ শিকারিরা শুধু নদীতেই নয় বিভিন্ন মাছের ঘের এবং খালেও কীটনাশক প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে নদীতে স্রোতের গতিবেগ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে নদীর তীরে বিষ প্রয়োগ করতে শুরু করে এই অসাধু চক্র। এভাবে ধরা মাছ বিক্রি করা হয় স্থানীয় বাজারে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর নদীতে বিষ দিয়ে এভাবে মাছ শিকার করা হয়। বিভিন্ন বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে এই বিষ কেনে। পরে রাতের প্রথম অথবা শেষ ভাগে নদীর কিনারে নির্দিষ্ট স্থানে বিষ প্রয়োগ করেন। কিছু সময় পরে অসহ্য যন্ত্রণায় ছোট বড় চিংড়ি মাছসহ নানা প্রজাতির মাছ লাফিয়ে উঠে শুকনায়। পরে এসব মাছ নদীর কিনার থেকে কুড়িয়ে তোলেন ওই অসাধু মাছ শিকারিরা। পরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। এদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান প্রকৃত মৎস্যজীবীদের।

বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতেরদিয়া গ্রামের মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর এ সময়ে উপজেলার বিভিন্ন নদী ও খালে বিষ প্রয়োগ করে অসাধু মাছ শিকারিরা মাছ শিকার করেন। এভাবে মাছ শিকার বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

বাবুগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ফিরোজ বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রহমতপুর ইউনিয়নের রাজকর এলাকার একটি খালে এভাবে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। ফলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ খালের পানির ওপরে ভেসে থাকতে দেখা যায়। শুকনা মৌসুম এলে নদীতে পানি স্রোতের গতিবেগ কমে আসে। এই সময় অসাধু মাছ শিকারিরা নদীতে বিষ প্রয়োগ করেন। কিছুক্ষণ পর বিষের তীব্র দুর্গন্ধে নদীর কিনারে ভেসে উঠে মাছ। চিংড়ি মাছ শুকনায় লাফিয়ে উঠে। এ সময় যারা বিষ প্রয়োগ করেন তাঁরা নদীর কিনার থেকে মাছ কুড়িয়ে নেন।

বাবুগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শিমুল রানী পাল জানান, কীটনাশক প্রয়োগ করে মাছ শিকার একটি অনৈতিক কাজ। যেখানে বিষ প্রয়োগ করা হয় সেখানে মাছের বংশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি যারা এই মাছ খাবে তাদের কিডনি অকেজোর মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে ইতিমধ্যে দুটি ইউনিয়নে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে অবহিতকরণ সভা করেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে এ ধরনের জনসচেতনতামূলক সভা করার এবং যারা এই বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছেন তাদের আইনের আওতায় আনার কথা জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।

বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুবাস সরকার বলেন, রাসায়নিক দিয়ে শিকার করা মাছ শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো খেলে কিডনি, যকৃৎ, হৃৎপিণ্ড অকেজোর মতো জটিল রোগে আক্রান্তের সম্ভাবনা থাকে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে।

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, মাছের ঘেরে কীটনাশক প্রয়োগ করে মাছ শিকারের অভিযোগ পেয়েছি। শিগগিরই প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত