Ajker Patrika

জুনিয়র-মোস্টের রুটিন

সম্পাদকীয়
জুনিয়র-মোস্টের রুটিন

আবদুশ শাকুর তখন ইংরেজিতে এমএ পরীক্ষা দিয়েছেন। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের কারণে পরীক্ষার ফল বের হতে আর চাকরি হতে দেরি হচ্ছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রথম নমিনি হিসেবে তিনি পোস্টিং পেয়েছিলেন ঢাকা কলেজে। কিন্তু জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর আকর্ষণে চলে গিয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে। যদিও তিনি জানতেন, শুরুতে জুনিয়র শিক্ষকদের শুধু সাবসিডিয়ারির ক্লাসগুলোই নিতে দেওয়া হয়। অনার্সে পড়ানোর সুযোগ পেতে কয়েক বছর লেগে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে এটাই দেখে এসেছেন আবদুশ শাকুর।

আবদুশ শাকুরের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, ভাইস চ্যান্সেলরের চেম্বারে বসে। তিনি কখনোই পরীক্ষার্থী কিংবা চাকরিপ্রার্থীকে ভড়কে দিতেন না। তাই তাঁকে ভয় পাওয়ার কিছু ছিল না। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী তখন ইংরেজি বিভাগের প্রধান। আবদুশ শাকুর ডিপার্টমেন্টে জয়েন করার পর পড়ানোর নির্ধারিত রুটিন পেয়ে আনন্দে-বিস্ময়ে বিমূঢ় হলেন। অনার্স প্রথম বর্ষে রোমান্টিক কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থ, দ্বিতীয় বর্ষে শেক্‌সপিয়ারের রিচার্ড দ্য সেকেন্ড, তৃতীয় বর্ষে ক্রিটিক্যাল লিটারেচার, এমএ ফাইনাল ইয়ারে চসার পড়াতে হবে। নবীন শিক্ষকদের জন্য এ একেবারে সোনার খনি। রুটিন পেয়ে আবদুশ শাকুর কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, এই রুটিন তাঁর জন্য তৈরি হয়েছে। তিনি জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীকে গিয়ে বললেন, ‘স্যার, এসব কি আমি পড়াব?’

‘কেন নয়? রুটিনটা আপনার জন্য পড়ে আছে তিন মাস ধরে।’

‘স্যার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এসব পড়ান সিনিয়র টিচাররা।’

‘এখানে দৃষ্টিভঙ্গিটা ভিন্ন। আমরা মনে করি, সুযোগ পেলে অনুপ্রাণিত হয়ে জুনিয়ররা হয়তো-বা আরও ভালো পড়াবেন।’

‘তাই বলে একেবারে জুনিয়র-মোস্ট?’

‘কেন নয়? আপনি তো ইতিমধ্যে স্বীকৃত একজন সাহিত্যিকও।’

আবদুশ শাকুর বললেন, ‘আপনার এই আস্থার সমান হতে আমি আমার সবকিছুই বিনিয়োগ করব।’

জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী হাসলেন। ‘আই হোপ, ইউ উইল এনজয় ইট।’
 
সূত্র: আবদুশ শাকুর, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর আশিতম জন্মদিনের সংবর্ধনা, পৃষ্ঠা ৯৭-৯৮

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত