Ajker Patrika

মালিকদের দাবি দোকান বৈধ

মেহেরপুর প্রতিনিধি
মালিকদের দাবি দোকান বৈধ

একদিকে অবৈধ স্থাপনা বলে বুলডোজার দিয়ে দোকান ভাঙচুর করে চলেছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, অন্যদিকে বৈধ দোকান উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন দোকান মালিকেরা। তাঁদের দাবি, ২০১২ সালে কোর্ট মসজিদের কমিটির সঙ্গে বন্দোবস্ত করে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। নিয়মিত ভাড়াও পরিশোধ করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে মেহেরপুর শহরের কোর্ট মোড়ের ওই দোকান উচ্ছেদে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। এর প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা শহরের মূল সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। তাতেও মেলেনি কোনো সমাধান। অনড় অবস্থানে থাকা প্রশাসন পুলিশের সহায়তায় দোকানগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।

বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু সাইদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি টিম কোর্ট মসজিদের সামনের দোকানপাট ভাঙা শুরু করেন। এ সময় দোকান মালিক ও তাদের পরিবারের লোকজন অনুরোধ করে সময় চান। কিন্তু জেলা প্রশাসকের নির্দেশের কথা বলে ভাঙা শুরু করে প্রশাসন।

দোকান মালিক ইয়াছিন আলী বলেন, ‘এখানে দোকানপাট হওয়ার আগ থেকেই একটি খুপরির ঘর করে হোমিওপ্যাথিক দোকান দিয়ে মানুষের চিকিৎসা করে আসছি। ১০ বছর আগে এখানকার মসজিদ কমিটির সঙ্গে চুক্তি করে দোকান নির্মাণ করি। কোর্ট মসজিদেও তৎকালীন সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আমাদের দোকান করার অনুমতি দেন। একটি দোকান বাবদ ৩ লাখ টাকা দিই। আমরা নিজেরা টাকা দিয়ে মার্কেটটি নির্মাণ করি। এরপর থেকেই এখানে ব্যবসা করে আসছি। আজ হঠাৎ করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলো। আমরাতো বৈধভাবে এখানে ব্যবসা করে আসছি। আমরা অবৈধ হলাম কি করে?’

এখানকার দুটি দোকান ভাড়া নিয়ে ডেকোরেটরের ব্যবসা করছেন ওলিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘১০ বছর আগে দুটি দোকান বাবদ মসজিদ কমিটিকে ৬ লাখ টাকা দিই। প্রতি মাসে ৫০০ টাকা ভাড়াও দিই। কয়েক মাস ধরে শুনে আসছি আমরা নাকি অবৈধ, আমাদের দোকানগুলো ভেঙে ফেলা হবে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলমের সঙ্গে অনেকবার বসা হয়েছে। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন মডেল মসজিদের পথের জন্য ৪টি দোকান ভাঙা হবে। কিন্তু হঠাৎ করে সব দোকান ভাঙচুর করা হলো। আমরা বৈধ হয়েও আজ অবৈধ।’

হোটেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবার সিমন বলেন, ‘আমরা বারবার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বসেও কোনো সমাধান পাইনি। আমরা সিকিউরিটির টাকা ফেরতও চেয়েছিলাম, সেটিও দেননি। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’

সহকারী কমিশনার আবু সাইদের বলেন, ‘ওপরের নির্দেশে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।’ 
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ দারা জানান, তাঁদের কাজ প্রশাসনকে সহায়তা করা। সেই কাজটিই করেছেন।

জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান বলেন, ‘নিয়ম মেনেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কখনো কোনো দোকান মালিকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। তাঁদের সঙ্গে দোকান নিয়ে কোনো চুক্তিও হয়নি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত