Ajker Patrika

গরমে মুরগির খামারে মড়ক

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
গরমে মুরগির খামারে মড়ক

অতিরিক্ত গরম ময়মনসিংহের বেশির ভাগ খামারে প্রায় প্রতিদিন হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। তাপমাত্রা বেশি থাকায় লেয়ার মুরগির খামারে ডিমের উৎপাদনও কমেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরা।

 পোলট্রিশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতার দাবি তাঁদের। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলেছেন, পোলট্রি খামারে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর তাপমাত্রা। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে পোলট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এটাই স্বাভাবিক। খামারে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলে বিশেষ করে পোলট্রি মুরগির হিটস্ট্রোক করে। সম্প্রতি গরমে অনেক খামারে মুরগি মারা যাচ্ছে।  

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী জেলায় ব্রয়লার মুরগির নিবন্ধনকৃত বাণিজ্যিক খামারের সংখ্যা ৪৩৮টি, অনিবন্ধনকৃত ৫ হাজার ২২৭টি, নিবন্ধনকৃত লেয়ার মুরগির খামার ৩১৫টি, অনিবন্ধনকৃত ৪ হাজার ৭৮৩টি, নিবন্ধনকৃত কক মুরগির খামার ৩৭টি, অনিবন্ধনকৃত ১ হাজার ২১৩টি, নিবন্ধনকৃত হাঁসের খামার ৬১টি এবং অনিবন্ধনকৃত ১ হাজার ৬৫টি রয়েছে। সম্প্রতি এসব খামারে মুরগির মড়ক দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি অতিরিক্ত গরম, লোডশেডিং এবং খাবারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মুরগির খামারিরা। প্রত্যেক খামারে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টি করে মুরগি মারা যাচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন খামারিরা। অনেকে লোকসান গুনে গুটিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসা। পোলট্রিশিল্প টিকিয়ে রাখতে ভর্তুকির দাবি অনেক খামারির। 
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার মোহাব্বতপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, চার বছর যাবৎ লেয়ার মুরগির খামার করে আসছেন। বর্তমানে তাঁর খামারে এক হাজার মুরগি রয়েছে। গত বছর থেকে খাবারের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধির কারণে অনেকটা চাপের মধ্যে আছেন তিনি। সম্প্রতি অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে গরমের কারণে প্রতিদিন তাঁর খামারে ১০ থেকে ১৫টি মুরগি মারা যাচ্ছে। কোনো উপায় না পেয়ে দিশেহারা তিনি।

সাখাওয়াত হোসেন নামে এক খামারি বলেন, গরমের কারণে নানা রোগে মুরগি আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পাশাপাশি ডিম উৎপাদনও অনেক কমে গেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদেরও সঠিক পরামর্শ পাওয়া যায় না।

একই এলাকার খামারি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, `আগে যে দামে সয়াবিন কিনতাম, এখন তা দ্বিগুণ হয়েছে। প্রোটিন এবং ভুট্টার দামও বেড়েছে। মেডিসিনের দাম বেড়ে হয়েছে তিন গুণ। কিন্তু মুরগির দাম খুব একটা বাড়েনি।

এক কেজি ওজনের মুরগি বড় করতে খরচ হয় ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। আমাদের বিক্রিও করতে হয় একই দামে। এখন তো গরমে স্ট্রোক করে প্রতিদিন মুরগি মারা যাচ্ছে।'
সাত বছর খামার করে শখ মিটে গেছে জানিয়ে রামচন্দ্রপুর গ্রামের খামারি শাহিন আহম্মেদ বলেন, `খামার করে ১০ লাখ টাকা দেনার বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছি। খাদ্যের সঙ্গে ডিমের বাজারের সামঞ্জস্য না থাকায় আমার এই করুণ দশা হয়েছে।

 তাই তিন মাস আগে খামার বন্ধ করে সবকিছু গুটিয়ে নিয়েছি। শুধু আমি যে খামার ছেড়েছি তা নয়, এলাকার অনেক খামারি দেনাগ্রস্ত হয়ে খামার ছেড়ে ঢাকায় বিভিন্ন কাজে চলে গেছেন।

অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও লোডশেডিংয়ের কারণে মুরগির মৃত্যুতে খামারিদের ক্ষতির কথা স্বীকার করে ময়মনসিংহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.আবদুল হাই বলেন, পোলট্রি খামারে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর তাপমাত্রা। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে পোলট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এটাই স্বাভাবিক। খামারে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলে বিশেষ করে পোলট্রি মুরগির হিটস্ট্রোক করে। সম্প্রতি গরমে অনেক খামারে মুরগি মারা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক খামারি রয়েছেন যাঁদের জেনারেটর কেনার সামর্থ্য নেই। তাঁরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিনশেডের চালায় পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত