ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান

মহান মে দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মারক হিসেবে ১ মে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ পালিত হয়। উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকেরা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাতেন। ১৮৭৭ সালে ন্যায্য মজুরি, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস ও অন্যান্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রমিকেরা ব্যাপক ধর্মঘট পালন করেছিলেন। এই ন্যায্য আন্দোলনের বিরুদ্ধে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়। গুলিতে ১৮৮৪ সাল পর্যন্ত ৩০০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে অনেক শ্রমজীবী মানুষ নিপীড়নের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলেন দুর্বার আন্দোলন। সেই দিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ হাজার ৫৬২টি শিল্পকারখানাসহ সব শিল্পাঞ্চলে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন শ্রমিকেরা।
শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটের শ্রমিকদের আত্মত্যাগ ও রক্তস্নাত প্রতিরোধযুদ্ধে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দৈনিক কাজের সময় ৮ ঘণ্টা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ঐতিহাসিক বিজয় হয়। ১৮৮৯ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে ‘শ্রমিক দিবস’ ঘোষণা দেওয়া হয়।
শ্রমিকদের রক্তরাঙা পতাকা হাতে নিয়ে ১৩৭ বছর ধরে দুনিয়াব্যাপী শ্রমিকেরা ন্যায্য অধিকার আদায় ও শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রাম করে আসছেন। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিবিপ্লব ও অন্যান্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধার উৎকর্ষের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক উন্নয়ন ঘটলেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি আমাদের দেশের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশে এখনো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কর্মঘণ্টা ও নিরাপদ কর্মস্থলের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক—কোনো ক্ষেত্রেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
মুক্তবাজার অর্থনীতি ও নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বেশির ভাগ শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা নেই। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করা হয় না। তাঁদের ছুটি দেওয়া হয় না। একজন শ্রমিক হিসেবে নারী শ্রমিক শ্রম আইন অনুযায়ী সব অধিকারের সমান অংশীদার হলেও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। নারী শ্রমিক-অধ্যুষিত গার্মেন্টস, অন্যান্য ক্ষুদ্র শিল্প ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে স্বল্প মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিম্ন পদমর্যাদা, খণ্ডকালীন নিয়োগ, যখন-তখন ছাঁটাই এবং কর্মঘণ্টার অধিক কাজ করানো হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র থেকে সাপ্তাহিক ছুটি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, সুপেয় পানির অভাব, যৌন হয়রানিসহ অনেক সমস্যা তাঁদের প্রতিনিয়ত ভোগ করতে হয়। সমকাজে সমমজুরি ও নারী-পুরুষের মজুরিবৈষম্য তো রয়েছেই। কৃষি ও গৃহস্থালির কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকলেও তাঁদের কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। গৃহকর্মে নিয়োজিত নারীরা সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। ভাত-কাপড়, মাথা গোঁজার ঠাঁই, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষের বিশাল অংশ এখনো এই অধিকার থেকে বঞ্চিত। প্রয়োজনীয় ক্যালরি ও পুষ্টির অভাবে ন্যূনতম মানসম্মত খাবার খেতে না পারায় শ্রমিক, কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণের কোনো পথ খুঁজে পান না। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি চরমভাবে উপেক্ষিত। শ্রমিকেরা কাজ করতে গিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসতে পারবেন কি না, তার নিশ্চয়তা নেই।
আমাদের দেশের সিংহভাগ শ্রমিক নির্মাণ, গার্মেন্টস, পরিবহন, চাতাল, ওয়েল্ডিং, শিপ ব্রেকিংসহ অসংগঠিত সেক্টরে কাজ করেন। এসব কারখানা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের যে মজুরি দেওয়া হয় তা দিয়ে কোনোভাবেই পরিবার-পরিজনসহ জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব নয়। সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব সেক্টরে মজুরিবৈষম্য বিরাজমান।
দেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষসহ নিম্ন আয়ের সাধারণ জনগণ এক সংকটময় অবস্থায় দিন যাপন করছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির দাপট এবং মুনাফাখোর ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে কয়েক বছর ধরে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি বর্তমানে এমন অবস্থায় এসে পৌঁছেছে যে শ্রমিক, তা কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। একদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি বাড়েনি, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ জীবনধারণ ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রকৃত মজুরি কমে গিয়ে তাঁদের এক অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আগে আমাদের দেশে রেশন প্রথা ও মহার্ঘ ভাতা প্রথা চালু ছিল। এমতাবস্থায় শ্রমিক-কর্মচারী তথা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য, বিশেষ করে গার্মেন্টস, নির্মাণ, পরিবহন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চা-শ্রমিক, রিকশাশ্রমিক, হকার, চাতাল, ওয়েল্ডিং ও গৃহশ্রমিকদের জন্য রেশন প্রথার মাধ্যমে সস্তা ও সুলভ মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন চাল, ডাল, তেল, চিনি সরবরাহ করতে হবে। একই সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই মোতাবেক শ্রমিক-কর্মচারীরা মজুরি না পাওয়ায় তাঁদের প্রকৃত মজুরি ও ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এই সংকট নিরসনের জন্য বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা আজ অত্যন্ত জরুরি, যেটা আগে একসময় চালু ছিল। শ্রমিক-কর্মচারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কারখানা ও শিল্পাঞ্চলভিত্তিক আবাসন, হাসপাতাল ও বিদ্যালয় স্থাপন করে সেখানে স্বল্পমূল্যে অথবা বিনা মূল্যে বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারঘোষিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল, চিনিকল, সুতা, বস্ত্রকলসহ বৃহৎ শিল্পকারখানাগুলো আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু করতে হবে। কর্মস্থলে সব ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতা রোধে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বর্তমানে রোবটিকস, আইওটি, ন্যানো প্রযুক্তি, ডেটা সায়েন্স ইত্যাদি প্রযুক্তির ফলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে চলে এসেছে। বাংলাদেশে এর প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়বে। তবে সবচেয়ে বেশি পড়বে শ্রমবাজারে। অটোমেশন প্রযুক্তির ফলে শিল্পকারখানা হয়ে পড়বে ক্রমেই যন্ত্রনির্ভর। ফলে বিপুল পরিমাণ মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। প্রযুক্তিভিত্তিক এই শিল্পবিপ্লবে প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে নানাবিধ কর্মক্ষেত্রে। চতুর্থ বিপ্লব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য পেতে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। শুধু দেশেই নয়, যারা বিদেশে কাজ করছেন, তাঁদেরও যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে। তাই শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে এই চতুর্থ বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে।
কিন্তু শ্রমিকশ্রেণি যে শুধু উৎপাদনব্যবস্থারই অংশ নন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনেরও অন্যতম কারিগর—এটা আমাদের দেশের মালিকশ্রেণি মানতে চায় না। আমাদের দেশে এখনো মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক বিরাজ করে, যা কোনোভাবেই শিল্প বিকাশের জন্য অনুকূল বা সহায়ক পরিবেশ হতে পারে না। শ্রমজীবী মানুষের অবদানের জন্যই শিল্প ও কৃষিবিপ্লব হয়েছে। আমাদের দেশের শ্রমিকেরা দক্ষ ও মেধাবী, এটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তাই শ্রমিকদের আস্থায় নিয়ে তাঁদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে সারা বিশ্বে যেভাবে শিল্প বিকশিত হয়েছে, আমাদের দেশেও সেভাবে শিল্পের বিকাশ সম্ভব। দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের ওপর মানুষের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ একটি শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে মে দিবসের তাৎপর্য এ দেশে বিকশিত হবে, গড়ে উঠবে সোনার বাংলাদেশ। জয় হোক মেহনতি মানুষের।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র

মহান মে দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মারক হিসেবে ১ মে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ পালিত হয়। উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকেরা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাতেন। ১৮৭৭ সালে ন্যায্য মজুরি, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস ও অন্যান্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রমিকেরা ব্যাপক ধর্মঘট পালন করেছিলেন। এই ন্যায্য আন্দোলনের বিরুদ্ধে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়। গুলিতে ১৮৮৪ সাল পর্যন্ত ৩০০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে অনেক শ্রমজীবী মানুষ নিপীড়নের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলেন দুর্বার আন্দোলন। সেই দিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ হাজার ৫৬২টি শিল্পকারখানাসহ সব শিল্পাঞ্চলে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন শ্রমিকেরা।
শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটের শ্রমিকদের আত্মত্যাগ ও রক্তস্নাত প্রতিরোধযুদ্ধে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দৈনিক কাজের সময় ৮ ঘণ্টা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ঐতিহাসিক বিজয় হয়। ১৮৮৯ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে ‘শ্রমিক দিবস’ ঘোষণা দেওয়া হয়।
শ্রমিকদের রক্তরাঙা পতাকা হাতে নিয়ে ১৩৭ বছর ধরে দুনিয়াব্যাপী শ্রমিকেরা ন্যায্য অধিকার আদায় ও শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রাম করে আসছেন। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিবিপ্লব ও অন্যান্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধার উৎকর্ষের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক উন্নয়ন ঘটলেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি আমাদের দেশের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশে এখনো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কর্মঘণ্টা ও নিরাপদ কর্মস্থলের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক—কোনো ক্ষেত্রেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
মুক্তবাজার অর্থনীতি ও নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বেশির ভাগ শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা নেই। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করা হয় না। তাঁদের ছুটি দেওয়া হয় না। একজন শ্রমিক হিসেবে নারী শ্রমিক শ্রম আইন অনুযায়ী সব অধিকারের সমান অংশীদার হলেও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। নারী শ্রমিক-অধ্যুষিত গার্মেন্টস, অন্যান্য ক্ষুদ্র শিল্প ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে স্বল্প মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিম্ন পদমর্যাদা, খণ্ডকালীন নিয়োগ, যখন-তখন ছাঁটাই এবং কর্মঘণ্টার অধিক কাজ করানো হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র থেকে সাপ্তাহিক ছুটি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, সুপেয় পানির অভাব, যৌন হয়রানিসহ অনেক সমস্যা তাঁদের প্রতিনিয়ত ভোগ করতে হয়। সমকাজে সমমজুরি ও নারী-পুরুষের মজুরিবৈষম্য তো রয়েছেই। কৃষি ও গৃহস্থালির কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকলেও তাঁদের কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। গৃহকর্মে নিয়োজিত নারীরা সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। ভাত-কাপড়, মাথা গোঁজার ঠাঁই, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষের বিশাল অংশ এখনো এই অধিকার থেকে বঞ্চিত। প্রয়োজনীয় ক্যালরি ও পুষ্টির অভাবে ন্যূনতম মানসম্মত খাবার খেতে না পারায় শ্রমিক, কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণের কোনো পথ খুঁজে পান না। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি চরমভাবে উপেক্ষিত। শ্রমিকেরা কাজ করতে গিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসতে পারবেন কি না, তার নিশ্চয়তা নেই।
আমাদের দেশের সিংহভাগ শ্রমিক নির্মাণ, গার্মেন্টস, পরিবহন, চাতাল, ওয়েল্ডিং, শিপ ব্রেকিংসহ অসংগঠিত সেক্টরে কাজ করেন। এসব কারখানা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের যে মজুরি দেওয়া হয় তা দিয়ে কোনোভাবেই পরিবার-পরিজনসহ জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব নয়। সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব সেক্টরে মজুরিবৈষম্য বিরাজমান।
দেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষসহ নিম্ন আয়ের সাধারণ জনগণ এক সংকটময় অবস্থায় দিন যাপন করছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির দাপট এবং মুনাফাখোর ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে কয়েক বছর ধরে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি বর্তমানে এমন অবস্থায় এসে পৌঁছেছে যে শ্রমিক, তা কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। একদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি বাড়েনি, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ জীবনধারণ ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রকৃত মজুরি কমে গিয়ে তাঁদের এক অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আগে আমাদের দেশে রেশন প্রথা ও মহার্ঘ ভাতা প্রথা চালু ছিল। এমতাবস্থায় শ্রমিক-কর্মচারী তথা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য, বিশেষ করে গার্মেন্টস, নির্মাণ, পরিবহন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চা-শ্রমিক, রিকশাশ্রমিক, হকার, চাতাল, ওয়েল্ডিং ও গৃহশ্রমিকদের জন্য রেশন প্রথার মাধ্যমে সস্তা ও সুলভ মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন চাল, ডাল, তেল, চিনি সরবরাহ করতে হবে। একই সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই মোতাবেক শ্রমিক-কর্মচারীরা মজুরি না পাওয়ায় তাঁদের প্রকৃত মজুরি ও ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এই সংকট নিরসনের জন্য বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা আজ অত্যন্ত জরুরি, যেটা আগে একসময় চালু ছিল। শ্রমিক-কর্মচারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কারখানা ও শিল্পাঞ্চলভিত্তিক আবাসন, হাসপাতাল ও বিদ্যালয় স্থাপন করে সেখানে স্বল্পমূল্যে অথবা বিনা মূল্যে বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারঘোষিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল, চিনিকল, সুতা, বস্ত্রকলসহ বৃহৎ শিল্পকারখানাগুলো আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু করতে হবে। কর্মস্থলে সব ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতা রোধে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বর্তমানে রোবটিকস, আইওটি, ন্যানো প্রযুক্তি, ডেটা সায়েন্স ইত্যাদি প্রযুক্তির ফলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে চলে এসেছে। বাংলাদেশে এর প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়বে। তবে সবচেয়ে বেশি পড়বে শ্রমবাজারে। অটোমেশন প্রযুক্তির ফলে শিল্পকারখানা হয়ে পড়বে ক্রমেই যন্ত্রনির্ভর। ফলে বিপুল পরিমাণ মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। প্রযুক্তিভিত্তিক এই শিল্পবিপ্লবে প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে নানাবিধ কর্মক্ষেত্রে। চতুর্থ বিপ্লব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য পেতে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। শুধু দেশেই নয়, যারা বিদেশে কাজ করছেন, তাঁদেরও যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে। তাই শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে এই চতুর্থ বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে।
কিন্তু শ্রমিকশ্রেণি যে শুধু উৎপাদনব্যবস্থারই অংশ নন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনেরও অন্যতম কারিগর—এটা আমাদের দেশের মালিকশ্রেণি মানতে চায় না। আমাদের দেশে এখনো মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক বিরাজ করে, যা কোনোভাবেই শিল্প বিকাশের জন্য অনুকূল বা সহায়ক পরিবেশ হতে পারে না। শ্রমজীবী মানুষের অবদানের জন্যই শিল্প ও কৃষিবিপ্লব হয়েছে। আমাদের দেশের শ্রমিকেরা দক্ষ ও মেধাবী, এটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তাই শ্রমিকদের আস্থায় নিয়ে তাঁদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে সারা বিশ্বে যেভাবে শিল্প বিকশিত হয়েছে, আমাদের দেশেও সেভাবে শিল্পের বিকাশ সম্ভব। দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের ওপর মানুষের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ একটি শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে মে দিবসের তাৎপর্য এ দেশে বিকশিত হবে, গড়ে উঠবে সোনার বাংলাদেশ। জয় হোক মেহনতি মানুষের।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র
ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান

মহান মে দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মারক হিসেবে ১ মে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ পালিত হয়। উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকেরা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাতেন। ১৮৭৭ সালে ন্যায্য মজুরি, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস ও অন্যান্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রমিকেরা ব্যাপক ধর্মঘট পালন করেছিলেন। এই ন্যায্য আন্দোলনের বিরুদ্ধে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়। গুলিতে ১৮৮৪ সাল পর্যন্ত ৩০০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে অনেক শ্রমজীবী মানুষ নিপীড়নের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলেন দুর্বার আন্দোলন। সেই দিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ হাজার ৫৬২টি শিল্পকারখানাসহ সব শিল্পাঞ্চলে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন শ্রমিকেরা।
শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটের শ্রমিকদের আত্মত্যাগ ও রক্তস্নাত প্রতিরোধযুদ্ধে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দৈনিক কাজের সময় ৮ ঘণ্টা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ঐতিহাসিক বিজয় হয়। ১৮৮৯ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে ‘শ্রমিক দিবস’ ঘোষণা দেওয়া হয়।
শ্রমিকদের রক্তরাঙা পতাকা হাতে নিয়ে ১৩৭ বছর ধরে দুনিয়াব্যাপী শ্রমিকেরা ন্যায্য অধিকার আদায় ও শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রাম করে আসছেন। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিবিপ্লব ও অন্যান্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধার উৎকর্ষের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক উন্নয়ন ঘটলেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি আমাদের দেশের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশে এখনো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কর্মঘণ্টা ও নিরাপদ কর্মস্থলের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক—কোনো ক্ষেত্রেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
মুক্তবাজার অর্থনীতি ও নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বেশির ভাগ শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা নেই। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করা হয় না। তাঁদের ছুটি দেওয়া হয় না। একজন শ্রমিক হিসেবে নারী শ্রমিক শ্রম আইন অনুযায়ী সব অধিকারের সমান অংশীদার হলেও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। নারী শ্রমিক-অধ্যুষিত গার্মেন্টস, অন্যান্য ক্ষুদ্র শিল্প ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে স্বল্প মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিম্ন পদমর্যাদা, খণ্ডকালীন নিয়োগ, যখন-তখন ছাঁটাই এবং কর্মঘণ্টার অধিক কাজ করানো হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র থেকে সাপ্তাহিক ছুটি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, সুপেয় পানির অভাব, যৌন হয়রানিসহ অনেক সমস্যা তাঁদের প্রতিনিয়ত ভোগ করতে হয়। সমকাজে সমমজুরি ও নারী-পুরুষের মজুরিবৈষম্য তো রয়েছেই। কৃষি ও গৃহস্থালির কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকলেও তাঁদের কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। গৃহকর্মে নিয়োজিত নারীরা সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। ভাত-কাপড়, মাথা গোঁজার ঠাঁই, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষের বিশাল অংশ এখনো এই অধিকার থেকে বঞ্চিত। প্রয়োজনীয় ক্যালরি ও পুষ্টির অভাবে ন্যূনতম মানসম্মত খাবার খেতে না পারায় শ্রমিক, কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণের কোনো পথ খুঁজে পান না। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি চরমভাবে উপেক্ষিত। শ্রমিকেরা কাজ করতে গিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসতে পারবেন কি না, তার নিশ্চয়তা নেই।
আমাদের দেশের সিংহভাগ শ্রমিক নির্মাণ, গার্মেন্টস, পরিবহন, চাতাল, ওয়েল্ডিং, শিপ ব্রেকিংসহ অসংগঠিত সেক্টরে কাজ করেন। এসব কারখানা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের যে মজুরি দেওয়া হয় তা দিয়ে কোনোভাবেই পরিবার-পরিজনসহ জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব নয়। সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব সেক্টরে মজুরিবৈষম্য বিরাজমান।
দেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষসহ নিম্ন আয়ের সাধারণ জনগণ এক সংকটময় অবস্থায় দিন যাপন করছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির দাপট এবং মুনাফাখোর ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে কয়েক বছর ধরে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি বর্তমানে এমন অবস্থায় এসে পৌঁছেছে যে শ্রমিক, তা কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। একদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি বাড়েনি, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ জীবনধারণ ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রকৃত মজুরি কমে গিয়ে তাঁদের এক অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আগে আমাদের দেশে রেশন প্রথা ও মহার্ঘ ভাতা প্রথা চালু ছিল। এমতাবস্থায় শ্রমিক-কর্মচারী তথা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য, বিশেষ করে গার্মেন্টস, নির্মাণ, পরিবহন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চা-শ্রমিক, রিকশাশ্রমিক, হকার, চাতাল, ওয়েল্ডিং ও গৃহশ্রমিকদের জন্য রেশন প্রথার মাধ্যমে সস্তা ও সুলভ মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন চাল, ডাল, তেল, চিনি সরবরাহ করতে হবে। একই সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই মোতাবেক শ্রমিক-কর্মচারীরা মজুরি না পাওয়ায় তাঁদের প্রকৃত মজুরি ও ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এই সংকট নিরসনের জন্য বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা আজ অত্যন্ত জরুরি, যেটা আগে একসময় চালু ছিল। শ্রমিক-কর্মচারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কারখানা ও শিল্পাঞ্চলভিত্তিক আবাসন, হাসপাতাল ও বিদ্যালয় স্থাপন করে সেখানে স্বল্পমূল্যে অথবা বিনা মূল্যে বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারঘোষিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল, চিনিকল, সুতা, বস্ত্রকলসহ বৃহৎ শিল্পকারখানাগুলো আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু করতে হবে। কর্মস্থলে সব ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতা রোধে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বর্তমানে রোবটিকস, আইওটি, ন্যানো প্রযুক্তি, ডেটা সায়েন্স ইত্যাদি প্রযুক্তির ফলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে চলে এসেছে। বাংলাদেশে এর প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়বে। তবে সবচেয়ে বেশি পড়বে শ্রমবাজারে। অটোমেশন প্রযুক্তির ফলে শিল্পকারখানা হয়ে পড়বে ক্রমেই যন্ত্রনির্ভর। ফলে বিপুল পরিমাণ মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। প্রযুক্তিভিত্তিক এই শিল্পবিপ্লবে প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে নানাবিধ কর্মক্ষেত্রে। চতুর্থ বিপ্লব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য পেতে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। শুধু দেশেই নয়, যারা বিদেশে কাজ করছেন, তাঁদেরও যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে। তাই শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে এই চতুর্থ বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে।
কিন্তু শ্রমিকশ্রেণি যে শুধু উৎপাদনব্যবস্থারই অংশ নন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনেরও অন্যতম কারিগর—এটা আমাদের দেশের মালিকশ্রেণি মানতে চায় না। আমাদের দেশে এখনো মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক বিরাজ করে, যা কোনোভাবেই শিল্প বিকাশের জন্য অনুকূল বা সহায়ক পরিবেশ হতে পারে না। শ্রমজীবী মানুষের অবদানের জন্যই শিল্প ও কৃষিবিপ্লব হয়েছে। আমাদের দেশের শ্রমিকেরা দক্ষ ও মেধাবী, এটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তাই শ্রমিকদের আস্থায় নিয়ে তাঁদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে সারা বিশ্বে যেভাবে শিল্প বিকশিত হয়েছে, আমাদের দেশেও সেভাবে শিল্পের বিকাশ সম্ভব। দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের ওপর মানুষের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ একটি শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে মে দিবসের তাৎপর্য এ দেশে বিকশিত হবে, গড়ে উঠবে সোনার বাংলাদেশ। জয় হোক মেহনতি মানুষের।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র

মহান মে দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মারক হিসেবে ১ মে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ পালিত হয়। উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকেরা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাতেন। ১৮৭৭ সালে ন্যায্য মজুরি, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস ও অন্যান্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রমিকেরা ব্যাপক ধর্মঘট পালন করেছিলেন। এই ন্যায্য আন্দোলনের বিরুদ্ধে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়। গুলিতে ১৮৮৪ সাল পর্যন্ত ৩০০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে অনেক শ্রমজীবী মানুষ নিপীড়নের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলেন দুর্বার আন্দোলন। সেই দিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ হাজার ৫৬২টি শিল্পকারখানাসহ সব শিল্পাঞ্চলে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন শ্রমিকেরা।
শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটের শ্রমিকদের আত্মত্যাগ ও রক্তস্নাত প্রতিরোধযুদ্ধে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দৈনিক কাজের সময় ৮ ঘণ্টা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ঐতিহাসিক বিজয় হয়। ১৮৮৯ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে ‘শ্রমিক দিবস’ ঘোষণা দেওয়া হয়।
শ্রমিকদের রক্তরাঙা পতাকা হাতে নিয়ে ১৩৭ বছর ধরে দুনিয়াব্যাপী শ্রমিকেরা ন্যায্য অধিকার আদায় ও শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রাম করে আসছেন। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিবিপ্লব ও অন্যান্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধার উৎকর্ষের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক উন্নয়ন ঘটলেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি আমাদের দেশের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশে এখনো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কর্মঘণ্টা ও নিরাপদ কর্মস্থলের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক—কোনো ক্ষেত্রেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
মুক্তবাজার অর্থনীতি ও নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বেশির ভাগ শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা নেই। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করা হয় না। তাঁদের ছুটি দেওয়া হয় না। একজন শ্রমিক হিসেবে নারী শ্রমিক শ্রম আইন অনুযায়ী সব অধিকারের সমান অংশীদার হলেও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। নারী শ্রমিক-অধ্যুষিত গার্মেন্টস, অন্যান্য ক্ষুদ্র শিল্প ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে স্বল্প মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিম্ন পদমর্যাদা, খণ্ডকালীন নিয়োগ, যখন-তখন ছাঁটাই এবং কর্মঘণ্টার অধিক কাজ করানো হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র থেকে সাপ্তাহিক ছুটি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, সুপেয় পানির অভাব, যৌন হয়রানিসহ অনেক সমস্যা তাঁদের প্রতিনিয়ত ভোগ করতে হয়। সমকাজে সমমজুরি ও নারী-পুরুষের মজুরিবৈষম্য তো রয়েছেই। কৃষি ও গৃহস্থালির কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকলেও তাঁদের কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। গৃহকর্মে নিয়োজিত নারীরা সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। ভাত-কাপড়, মাথা গোঁজার ঠাঁই, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষের বিশাল অংশ এখনো এই অধিকার থেকে বঞ্চিত। প্রয়োজনীয় ক্যালরি ও পুষ্টির অভাবে ন্যূনতম মানসম্মত খাবার খেতে না পারায় শ্রমিক, কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণের কোনো পথ খুঁজে পান না। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি চরমভাবে উপেক্ষিত। শ্রমিকেরা কাজ করতে গিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসতে পারবেন কি না, তার নিশ্চয়তা নেই।
আমাদের দেশের সিংহভাগ শ্রমিক নির্মাণ, গার্মেন্টস, পরিবহন, চাতাল, ওয়েল্ডিং, শিপ ব্রেকিংসহ অসংগঠিত সেক্টরে কাজ করেন। এসব কারখানা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের যে মজুরি দেওয়া হয় তা দিয়ে কোনোভাবেই পরিবার-পরিজনসহ জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব নয়। সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব সেক্টরে মজুরিবৈষম্য বিরাজমান।
দেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষসহ নিম্ন আয়ের সাধারণ জনগণ এক সংকটময় অবস্থায় দিন যাপন করছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির দাপট এবং মুনাফাখোর ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে কয়েক বছর ধরে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি বর্তমানে এমন অবস্থায় এসে পৌঁছেছে যে শ্রমিক, তা কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। একদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি বাড়েনি, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ জীবনধারণ ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রকৃত মজুরি কমে গিয়ে তাঁদের এক অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আগে আমাদের দেশে রেশন প্রথা ও মহার্ঘ ভাতা প্রথা চালু ছিল। এমতাবস্থায় শ্রমিক-কর্মচারী তথা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য, বিশেষ করে গার্মেন্টস, নির্মাণ, পরিবহন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চা-শ্রমিক, রিকশাশ্রমিক, হকার, চাতাল, ওয়েল্ডিং ও গৃহশ্রমিকদের জন্য রেশন প্রথার মাধ্যমে সস্তা ও সুলভ মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন চাল, ডাল, তেল, চিনি সরবরাহ করতে হবে। একই সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই মোতাবেক শ্রমিক-কর্মচারীরা মজুরি না পাওয়ায় তাঁদের প্রকৃত মজুরি ও ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এই সংকট নিরসনের জন্য বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা আজ অত্যন্ত জরুরি, যেটা আগে একসময় চালু ছিল। শ্রমিক-কর্মচারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কারখানা ও শিল্পাঞ্চলভিত্তিক আবাসন, হাসপাতাল ও বিদ্যালয় স্থাপন করে সেখানে স্বল্পমূল্যে অথবা বিনা মূল্যে বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারঘোষিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল, চিনিকল, সুতা, বস্ত্রকলসহ বৃহৎ শিল্পকারখানাগুলো আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু করতে হবে। কর্মস্থলে সব ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতা রোধে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বর্তমানে রোবটিকস, আইওটি, ন্যানো প্রযুক্তি, ডেটা সায়েন্স ইত্যাদি প্রযুক্তির ফলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে চলে এসেছে। বাংলাদেশে এর প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়বে। তবে সবচেয়ে বেশি পড়বে শ্রমবাজারে। অটোমেশন প্রযুক্তির ফলে শিল্পকারখানা হয়ে পড়বে ক্রমেই যন্ত্রনির্ভর। ফলে বিপুল পরিমাণ মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। প্রযুক্তিভিত্তিক এই শিল্পবিপ্লবে প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে নানাবিধ কর্মক্ষেত্রে। চতুর্থ বিপ্লব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য পেতে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। শুধু দেশেই নয়, যারা বিদেশে কাজ করছেন, তাঁদেরও যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে। তাই শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে এই চতুর্থ বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে।
কিন্তু শ্রমিকশ্রেণি যে শুধু উৎপাদনব্যবস্থারই অংশ নন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনেরও অন্যতম কারিগর—এটা আমাদের দেশের মালিকশ্রেণি মানতে চায় না। আমাদের দেশে এখনো মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক বিরাজ করে, যা কোনোভাবেই শিল্প বিকাশের জন্য অনুকূল বা সহায়ক পরিবেশ হতে পারে না। শ্রমজীবী মানুষের অবদানের জন্যই শিল্প ও কৃষিবিপ্লব হয়েছে। আমাদের দেশের শ্রমিকেরা দক্ষ ও মেধাবী, এটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তাই শ্রমিকদের আস্থায় নিয়ে তাঁদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে সারা বিশ্বে যেভাবে শিল্প বিকশিত হয়েছে, আমাদের দেশেও সেভাবে শিল্পের বিকাশ সম্ভব। দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের ওপর মানুষের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ একটি শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে মে দিবসের তাৎপর্য এ দেশে বিকশিত হবে, গড়ে উঠবে সোনার বাংলাদেশ। জয় হোক মেহনতি মানুষের।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

মহান মে দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মারক হিসেবে ১ মে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ পালিত হয়। উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকেরা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাতেন। ১৮৭৭
০১ মে ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

মহান মে দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মারক হিসেবে ১ মে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ পালিত হয়। উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকেরা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাতেন। ১৮৭৭
০১ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

মহান মে দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মারক হিসেবে ১ মে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ পালিত হয়। উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকেরা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাতেন। ১৮৭৭
০১ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

মহান মে দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মারক হিসেবে ১ মে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ পালিত হয়। উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকেরা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাতেন। ১৮৭৭
০১ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫