হাসান মামুন

শীতকালীন সবজি ওঠার সময়টায় এর দাম একটু বেশি থাকবেই। তবে এবার যে হারে দাম বেড়েছে, সেটা কখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ভোক্তার। সবজির মধ্যে পেঁপেই মোটামুটি সহজলভ্য। এটা সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সবজি আলুর চেয়ে সস্তা এখন।
২১ অক্টোবরের আজকের পত্রিকায় লেখা হয়েছে, ‘আলু, মুলা, পেঁপে ছাড়া সব সবজি ১০০ টাকার ওপর!’ কাঁচা মরিচকে সবজি বিবেচনা করলে অবশ্য বলতে হয়, এর কেজিপ্রতি দাম ২০০ টাকার বেশি। অবশ্য খুচরা ক্রেতারা এক কেজি কাঁচা মরিচ কমই কেনেন। এর দাম তো মাঝে রেকর্ড করেছিল। কাঁচা মরিচ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয় তখন। কাঁচা মরিচও যে আমদানি করতে হতে পারে, সেটা এখন অনেকেই জানেন। এসব কৃষিপণ্যেও আমরা সব সময় ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ থাকি না। দেশে কমপক্ষে ১৭ কোটি মানুষ। তাদের সবজি পরিভোগ কত! এর উৎপাদনও বেড়েছে। সময়ে-সময়ে বাজার অস্থির হলে সবজি নিয়ে পৃথক প্রতিবেদনও হয়ে থাকে।
আজকের পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে একজন রিকশাচালকের যে উক্তি রয়েছে, তা পড়ে সংবেদনশীল মানুষ মাত্রই বেদনার্ত হবেন। তিনি বলেছেন, প্রায় সব সবজির দাম একযোগে বাড়ার সময়টায় ভাতের সঙ্গে শুধু পেঁপেভর্তা জুটছে তাঁদের। তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘কয়দিন পর পেঁপেডাও খাইতে পারমু কি না, ভাবতিছি!’ তাঁকে আশ্বস্ত করে বলা যায়, সবজির দাম সামনে কমবে।
কত দিনে আর কতটা কমবে, সেটা অবশ্য বলা যাবে না। তবে এ পরিস্থিতি থাকবে না সবজির সরবরাহ বাড়লে। কিছুদিন আগে কদিন টানা ও ভারী বৃষ্টি হয়েছে দেশে। তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যার শঙ্কাও ছিল। সেই বিপদ আপাতত কেটেছে। তবে ভারী বৃষ্টিতে জমিতে সবজির ক্ষতি কম হয়নি। রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজির ‘আমদানি’ কম।
সবজি সেই অর্থে আমদানি করতে হয় না আমাদের। তবে মাঝে আলুর দাম কিছুতেই কমাতে না পেরে ‘সীমিতভাবে’ এটা আমদানির প্রস্তাব করেছিল ভোক্তা অধিদপ্তর। আলুসহ তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য জানাই ছিল, উদ্যোগটি ব্যর্থ হবে। বাজার অর্থনীতিতে এভাবে দাম বেঁধে দিলে অনেক ক্ষেত্রে উল্টো ফল হয়। সেটা না হলেও বাজার তার নিয়মেই চলছে। ডিম, পেঁয়াজের পাশাপাশি আলুর দাম একটুও কমেনি; বরং বাড়তির দিকে। আজকের পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে এ কথাটাও রয়েছে, অন্যান্য সবজির দাম বেশি বলে আলুর চাহিদা বেশি। তাই এর দাম আরও বাড়তেও পারে।
পণ্যবাজারে এসব পর্যবেক্ষণ জরুরি। সঠিক পর্যবেক্ষণের জন্য অবশ্য উপযুক্ত তথ্য-উপাত্ত থাকতে হয়। এই সমালোচনা বাড়ছে যে সরকারের বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কম। এর ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া কঠিন। যেমন আলুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার সময় এর উৎপাদন নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছিল, তার সঙ্গে একমত হচ্ছিলেন না হিমাগারের মালিকেরা। তাঁরা বলছিলেন, আলুর উৎপাদন এবার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। সে কারণে হিমাগারগুলোর একাংশ রয়ে গেছে ফাঁকা। শেষে ভোক্তা অধিদপ্তর আলু আমদানির যে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায়, এতে কি ব্যবসায়ীদের বক্তব্যই সত্য বলে বিবেচিত হবে না?
এখন সবজির দাম বেশি থাকলে আলুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এর দাম বাড়তে বাড়তে কেজিপ্রতি ৬০ টাকাও হয়ে যেতে পারে। এদিকে আলু আমদানি বোধ হয় হতে যাচ্ছে না। তবে ‘আগাম আলু’ উৎপাদনে লেগে পড়েছেন কৃষক। ভালো দাম পাওয়ার আশা তাঁদের। এখন সেই আলু যত দ্রুত বাজারে আসে, ততই ভালো। হিমাগারে রাখা আলুর দাম তখন হয়তো আর বাড়বে না। কোনো পণ্যের দাম আর বাড়তে না দেওয়াটাও সংশ্লিষ্টদের সাফল্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এর আগে ইলিশের বাড়তে থাকা দাম নিয়ে এখানে লিখেছিলাম। প্রজনন মৌসুম বিবেচনায় ইলিশ ধরা এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, বাজারে ইলিশ না থাকায় মাছের দাম কি আরও বেড়েছে? এ বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন চোখে পড়েনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
এমনও হতে পারে, আগে ইলিশের মৌসুমে মাছের বাজারে এর যে একটা প্রভাব থাকত–এখন সেটা আর নেই। কারণ ইলিশ ‘অভিজাত মাছ’ হয়ে উঠেছে। এর ক্রেতাগোষ্ঠী আলাদা। সাধারণ মানুষ যেসব মাছ কেনে, সেগুলোর দাম বাজারে ইলিশ থাকাকালেও বাড়ন্ত। এখনো সে রকমই। চাষের পাঙাশ, তেলাপিয়া, কই প্রভৃতির কথা বলছি। এসবের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে ওঠাটা পৃথক খবর হয়েছিল মাঝে।
অক্টোবরের শেষদিকে এসে ওগুলোর দাম কমার কারণ নেই। কমেছে বলে খবরও মিলছে না। দেশে রুই-কাতলার উৎপাদনও ভালো। কিছু আমদানিও হয়ে থাকে প্রতিবেশী দেশ থেকে। সেগুলোও চাষের মাছ। মাছ চাষে খরচ কিন্তু বেড়েছে। প্রধানত বেড়েছে ফিডের দাম। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বাড়ায়ও মাছের দাম বেড়েছে। সঙ্গে অদৃশ্য আর কম আলোচিত কারণও কি নেই?
নতুন আলু বাজারে এলে এর দাম কিছুটা কমবে কিংবা ঊর্ধ্বগতি রোধ হবে। অন্যান্য সবজির বেলায়ও একই কথা। আলুর পর সবচেয়ে বেশি নাকি বিক্রি হয় বেগুন। বেগুনসহ নানা রকম সবজি ফলিয়ে কৃষক নাম করে ফেলেছেন। কিন্তু ‘ভালো দাম’ পাচ্ছেন কি না, সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। সহযোগী একটি দৈনিকের প্রতিবেদক সবজির খবর দিতে গিয়ে লিখছেন, কৃষক দাম পাচ্ছেন। যাঁরা জমি থেকেই সবজি তুলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীর হাতে, তাঁরাও কি ভালো দাম পাচ্ছেন? নাকি মোকামে এনে যাঁরা বিক্রি করছেন, তাঁরা? এসব খবর পরিষ্কারভাবে পেলে ভালো হয়।
যারা শহর-বন্দরে কৃষিপণ্য কিনি–তারা তো চাই, এর উৎপাদক যেন চড়া দামের ন্যায্য হিস্যা পান। তাহলে তাঁর জীবনমান ভালো হবে। পরবর্তী উৎপাদনেও উৎসাহ পাবেন কৃষক। তাঁদের তো উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। যাতায়াতব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় কৃষিপণ্যের দামে ব্যাপক তারতম্যটা এখন কমে আসার কথা। আরও ভালো হতো উৎপাদিত পণ্য অধিক দামের আশায় ধরে রাখার ক্ষেত্রে কৃষকের সক্ষমতা বাড়লে। সেই উদ্যোগ প্রয়োজন। আলুর মতো পণ্যের সংরক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণের কিছু আলাপ তো মাঝে শোনা গিয়েছিল।
সবজির দাম এবার এতটা বাড়ল কেন, তার ব্যাখ্যা অবশ্য প্রয়োজন। কোন উপাদানটি এতে বেশি ‘অবদান’ রেখেছে, সেটা খতিয়ে দেখা চাই। চট করে ‘সিন্ডিকেট’কে অভিযুক্ত করার একটা প্রবণতা গড়ে উঠেছে দেশে। অতিমুনাফার প্রবণতা আর সিন্ডিকেটবাজি তো এক নয়। বহু বিক্রেতার বাজারে সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার বিষয়টি তাত্ত্বিকভাবে প্রতিষ্ঠা করাও কঠিন। এটা অবশ্য থাকতে পারে ভোজ্যতেল, চিনি, আটা-ময়দার বাজারে। ভোজ্যতেল ও আটা-ময়দার দাম কিন্তু কিছুটা কমে এসেছে।
এগুলো সবজির মতো দেশে উৎপাদিত নয়। প্রধানত আমদানি হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে এখানেও কমার কথা। কিন্তু সেভাবে কমছে কোথায়! এই অসংগতি নিয়েও মাঝে প্রতিবেদন হয়েছিল। ওই সব পণ্যের হাতে গোনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বসেও দাম ‘যৌক্তিক’ করতে পারেনি ট্যারিফ কমিশন। এসব ক্ষেত্রে ‘সিন্ডিকেট’ আছে বলা যেতে পারে। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী তো তাদের বিষয়ে কঠোর হতে চাইছেন না। তাতে পণ্যবাজার নাকি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে!
যে ক্রেতা উদ্বিগ্ন হয়ে বলেছেন, সামনে পেঁপেটাও কিনতে পারবেন কি না–তাঁর বক্তব্য কিন্তু সরকারের কাজে অনাস্থার একটা প্রকাশ। নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবে বাড়লেও এতটা অনাস্থা বোধ হয় জাগত না। হাতে হাতে সেলফোন থাকার সময়টায় লোকে কিন্তু আশপাশের দেশ আর পরিচিত বিশ্বের খবর পেয়ে যায় মুহূর্তেই।
ঘরের পাশে কলকাতায় কত দামে গরু-মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে, সে খবর মানুষ দ্রুতই পেয়ে যায়–যখন তার পাত থেকে এটা উধাও অনেক দিন ধরে। বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই ‘ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে’ এমনটা ঘটছে বলে বয়ানে সে আর বিশ্বাস রাখতে পারছে না। গভীর সংকটে নিপতিত শ্রীলঙ্কাও যখন ঘুরে দাঁড়ায় দ্রুত, তখনো তার মনে সহজেই প্রশ্ন জাগে এ দেশে বাজার পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হচ্ছে দেখে।
সমস্যাটা তাঁদের বেশি, যাঁরা বেড়ে চলা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলেয়ে আয় বাড়াতে পারছেন না। মজুরি বাড়ছে না, তা নয়। তবে মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সরকারের তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ‘ইউরোপীয় মানের’ জীবন কাটাচ্ছেন এ দেশে। সেটা বেঠিক নয়।
চড়তে থাকা পণ্যবাজার থেকে ফায়দা তুলে নেওয়া জনগোষ্ঠীও এর মধ্যে আছে। তাদের সংখ্যাটা দুনিয়ার কোনো কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। কিন্তু এরাই তো বাংলাদেশ নয়। এদের বাইরে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রয়েছে, তাদের নিত্যদিনের ভোগান্তিও গভীর বিবেচনার বিষয়। পণ্যবাজারে অন্তত স্বাভাবিকতা দেখতে পাওয়ার অধিকার রয়েছে প্রত্যেক নাগরিকের।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

শীতকালীন সবজি ওঠার সময়টায় এর দাম একটু বেশি থাকবেই। তবে এবার যে হারে দাম বেড়েছে, সেটা কখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ভোক্তার। সবজির মধ্যে পেঁপেই মোটামুটি সহজলভ্য। এটা সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সবজি আলুর চেয়ে সস্তা এখন।
২১ অক্টোবরের আজকের পত্রিকায় লেখা হয়েছে, ‘আলু, মুলা, পেঁপে ছাড়া সব সবজি ১০০ টাকার ওপর!’ কাঁচা মরিচকে সবজি বিবেচনা করলে অবশ্য বলতে হয়, এর কেজিপ্রতি দাম ২০০ টাকার বেশি। অবশ্য খুচরা ক্রেতারা এক কেজি কাঁচা মরিচ কমই কেনেন। এর দাম তো মাঝে রেকর্ড করেছিল। কাঁচা মরিচ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয় তখন। কাঁচা মরিচও যে আমদানি করতে হতে পারে, সেটা এখন অনেকেই জানেন। এসব কৃষিপণ্যেও আমরা সব সময় ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ থাকি না। দেশে কমপক্ষে ১৭ কোটি মানুষ। তাদের সবজি পরিভোগ কত! এর উৎপাদনও বেড়েছে। সময়ে-সময়ে বাজার অস্থির হলে সবজি নিয়ে পৃথক প্রতিবেদনও হয়ে থাকে।
আজকের পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে একজন রিকশাচালকের যে উক্তি রয়েছে, তা পড়ে সংবেদনশীল মানুষ মাত্রই বেদনার্ত হবেন। তিনি বলেছেন, প্রায় সব সবজির দাম একযোগে বাড়ার সময়টায় ভাতের সঙ্গে শুধু পেঁপেভর্তা জুটছে তাঁদের। তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘কয়দিন পর পেঁপেডাও খাইতে পারমু কি না, ভাবতিছি!’ তাঁকে আশ্বস্ত করে বলা যায়, সবজির দাম সামনে কমবে।
কত দিনে আর কতটা কমবে, সেটা অবশ্য বলা যাবে না। তবে এ পরিস্থিতি থাকবে না সবজির সরবরাহ বাড়লে। কিছুদিন আগে কদিন টানা ও ভারী বৃষ্টি হয়েছে দেশে। তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যার শঙ্কাও ছিল। সেই বিপদ আপাতত কেটেছে। তবে ভারী বৃষ্টিতে জমিতে সবজির ক্ষতি কম হয়নি। রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজির ‘আমদানি’ কম।
সবজি সেই অর্থে আমদানি করতে হয় না আমাদের। তবে মাঝে আলুর দাম কিছুতেই কমাতে না পেরে ‘সীমিতভাবে’ এটা আমদানির প্রস্তাব করেছিল ভোক্তা অধিদপ্তর। আলুসহ তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য জানাই ছিল, উদ্যোগটি ব্যর্থ হবে। বাজার অর্থনীতিতে এভাবে দাম বেঁধে দিলে অনেক ক্ষেত্রে উল্টো ফল হয়। সেটা না হলেও বাজার তার নিয়মেই চলছে। ডিম, পেঁয়াজের পাশাপাশি আলুর দাম একটুও কমেনি; বরং বাড়তির দিকে। আজকের পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে এ কথাটাও রয়েছে, অন্যান্য সবজির দাম বেশি বলে আলুর চাহিদা বেশি। তাই এর দাম আরও বাড়তেও পারে।
পণ্যবাজারে এসব পর্যবেক্ষণ জরুরি। সঠিক পর্যবেক্ষণের জন্য অবশ্য উপযুক্ত তথ্য-উপাত্ত থাকতে হয়। এই সমালোচনা বাড়ছে যে সরকারের বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কম। এর ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া কঠিন। যেমন আলুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার সময় এর উৎপাদন নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছিল, তার সঙ্গে একমত হচ্ছিলেন না হিমাগারের মালিকেরা। তাঁরা বলছিলেন, আলুর উৎপাদন এবার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। সে কারণে হিমাগারগুলোর একাংশ রয়ে গেছে ফাঁকা। শেষে ভোক্তা অধিদপ্তর আলু আমদানির যে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায়, এতে কি ব্যবসায়ীদের বক্তব্যই সত্য বলে বিবেচিত হবে না?
এখন সবজির দাম বেশি থাকলে আলুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এর দাম বাড়তে বাড়তে কেজিপ্রতি ৬০ টাকাও হয়ে যেতে পারে। এদিকে আলু আমদানি বোধ হয় হতে যাচ্ছে না। তবে ‘আগাম আলু’ উৎপাদনে লেগে পড়েছেন কৃষক। ভালো দাম পাওয়ার আশা তাঁদের। এখন সেই আলু যত দ্রুত বাজারে আসে, ততই ভালো। হিমাগারে রাখা আলুর দাম তখন হয়তো আর বাড়বে না। কোনো পণ্যের দাম আর বাড়তে না দেওয়াটাও সংশ্লিষ্টদের সাফল্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এর আগে ইলিশের বাড়তে থাকা দাম নিয়ে এখানে লিখেছিলাম। প্রজনন মৌসুম বিবেচনায় ইলিশ ধরা এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, বাজারে ইলিশ না থাকায় মাছের দাম কি আরও বেড়েছে? এ বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন চোখে পড়েনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
এমনও হতে পারে, আগে ইলিশের মৌসুমে মাছের বাজারে এর যে একটা প্রভাব থাকত–এখন সেটা আর নেই। কারণ ইলিশ ‘অভিজাত মাছ’ হয়ে উঠেছে। এর ক্রেতাগোষ্ঠী আলাদা। সাধারণ মানুষ যেসব মাছ কেনে, সেগুলোর দাম বাজারে ইলিশ থাকাকালেও বাড়ন্ত। এখনো সে রকমই। চাষের পাঙাশ, তেলাপিয়া, কই প্রভৃতির কথা বলছি। এসবের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে ওঠাটা পৃথক খবর হয়েছিল মাঝে।
অক্টোবরের শেষদিকে এসে ওগুলোর দাম কমার কারণ নেই। কমেছে বলে খবরও মিলছে না। দেশে রুই-কাতলার উৎপাদনও ভালো। কিছু আমদানিও হয়ে থাকে প্রতিবেশী দেশ থেকে। সেগুলোও চাষের মাছ। মাছ চাষে খরচ কিন্তু বেড়েছে। প্রধানত বেড়েছে ফিডের দাম। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বাড়ায়ও মাছের দাম বেড়েছে। সঙ্গে অদৃশ্য আর কম আলোচিত কারণও কি নেই?
নতুন আলু বাজারে এলে এর দাম কিছুটা কমবে কিংবা ঊর্ধ্বগতি রোধ হবে। অন্যান্য সবজির বেলায়ও একই কথা। আলুর পর সবচেয়ে বেশি নাকি বিক্রি হয় বেগুন। বেগুনসহ নানা রকম সবজি ফলিয়ে কৃষক নাম করে ফেলেছেন। কিন্তু ‘ভালো দাম’ পাচ্ছেন কি না, সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। সহযোগী একটি দৈনিকের প্রতিবেদক সবজির খবর দিতে গিয়ে লিখছেন, কৃষক দাম পাচ্ছেন। যাঁরা জমি থেকেই সবজি তুলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীর হাতে, তাঁরাও কি ভালো দাম পাচ্ছেন? নাকি মোকামে এনে যাঁরা বিক্রি করছেন, তাঁরা? এসব খবর পরিষ্কারভাবে পেলে ভালো হয়।
যারা শহর-বন্দরে কৃষিপণ্য কিনি–তারা তো চাই, এর উৎপাদক যেন চড়া দামের ন্যায্য হিস্যা পান। তাহলে তাঁর জীবনমান ভালো হবে। পরবর্তী উৎপাদনেও উৎসাহ পাবেন কৃষক। তাঁদের তো উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। যাতায়াতব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় কৃষিপণ্যের দামে ব্যাপক তারতম্যটা এখন কমে আসার কথা। আরও ভালো হতো উৎপাদিত পণ্য অধিক দামের আশায় ধরে রাখার ক্ষেত্রে কৃষকের সক্ষমতা বাড়লে। সেই উদ্যোগ প্রয়োজন। আলুর মতো পণ্যের সংরক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণের কিছু আলাপ তো মাঝে শোনা গিয়েছিল।
সবজির দাম এবার এতটা বাড়ল কেন, তার ব্যাখ্যা অবশ্য প্রয়োজন। কোন উপাদানটি এতে বেশি ‘অবদান’ রেখেছে, সেটা খতিয়ে দেখা চাই। চট করে ‘সিন্ডিকেট’কে অভিযুক্ত করার একটা প্রবণতা গড়ে উঠেছে দেশে। অতিমুনাফার প্রবণতা আর সিন্ডিকেটবাজি তো এক নয়। বহু বিক্রেতার বাজারে সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার বিষয়টি তাত্ত্বিকভাবে প্রতিষ্ঠা করাও কঠিন। এটা অবশ্য থাকতে পারে ভোজ্যতেল, চিনি, আটা-ময়দার বাজারে। ভোজ্যতেল ও আটা-ময়দার দাম কিন্তু কিছুটা কমে এসেছে।
এগুলো সবজির মতো দেশে উৎপাদিত নয়। প্রধানত আমদানি হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে এখানেও কমার কথা। কিন্তু সেভাবে কমছে কোথায়! এই অসংগতি নিয়েও মাঝে প্রতিবেদন হয়েছিল। ওই সব পণ্যের হাতে গোনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বসেও দাম ‘যৌক্তিক’ করতে পারেনি ট্যারিফ কমিশন। এসব ক্ষেত্রে ‘সিন্ডিকেট’ আছে বলা যেতে পারে। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী তো তাদের বিষয়ে কঠোর হতে চাইছেন না। তাতে পণ্যবাজার নাকি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে!
যে ক্রেতা উদ্বিগ্ন হয়ে বলেছেন, সামনে পেঁপেটাও কিনতে পারবেন কি না–তাঁর বক্তব্য কিন্তু সরকারের কাজে অনাস্থার একটা প্রকাশ। নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবে বাড়লেও এতটা অনাস্থা বোধ হয় জাগত না। হাতে হাতে সেলফোন থাকার সময়টায় লোকে কিন্তু আশপাশের দেশ আর পরিচিত বিশ্বের খবর পেয়ে যায় মুহূর্তেই।
ঘরের পাশে কলকাতায় কত দামে গরু-মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে, সে খবর মানুষ দ্রুতই পেয়ে যায়–যখন তার পাত থেকে এটা উধাও অনেক দিন ধরে। বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই ‘ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে’ এমনটা ঘটছে বলে বয়ানে সে আর বিশ্বাস রাখতে পারছে না। গভীর সংকটে নিপতিত শ্রীলঙ্কাও যখন ঘুরে দাঁড়ায় দ্রুত, তখনো তার মনে সহজেই প্রশ্ন জাগে এ দেশে বাজার পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হচ্ছে দেখে।
সমস্যাটা তাঁদের বেশি, যাঁরা বেড়ে চলা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলেয়ে আয় বাড়াতে পারছেন না। মজুরি বাড়ছে না, তা নয়। তবে মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সরকারের তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ‘ইউরোপীয় মানের’ জীবন কাটাচ্ছেন এ দেশে। সেটা বেঠিক নয়।
চড়তে থাকা পণ্যবাজার থেকে ফায়দা তুলে নেওয়া জনগোষ্ঠীও এর মধ্যে আছে। তাদের সংখ্যাটা দুনিয়ার কোনো কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। কিন্তু এরাই তো বাংলাদেশ নয়। এদের বাইরে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রয়েছে, তাদের নিত্যদিনের ভোগান্তিও গভীর বিবেচনার বিষয়। পণ্যবাজারে অন্তত স্বাভাবিকতা দেখতে পাওয়ার অধিকার রয়েছে প্রত্যেক নাগরিকের।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক
হাসান মামুন

শীতকালীন সবজি ওঠার সময়টায় এর দাম একটু বেশি থাকবেই। তবে এবার যে হারে দাম বেড়েছে, সেটা কখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ভোক্তার। সবজির মধ্যে পেঁপেই মোটামুটি সহজলভ্য। এটা সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সবজি আলুর চেয়ে সস্তা এখন।
২১ অক্টোবরের আজকের পত্রিকায় লেখা হয়েছে, ‘আলু, মুলা, পেঁপে ছাড়া সব সবজি ১০০ টাকার ওপর!’ কাঁচা মরিচকে সবজি বিবেচনা করলে অবশ্য বলতে হয়, এর কেজিপ্রতি দাম ২০০ টাকার বেশি। অবশ্য খুচরা ক্রেতারা এক কেজি কাঁচা মরিচ কমই কেনেন। এর দাম তো মাঝে রেকর্ড করেছিল। কাঁচা মরিচ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয় তখন। কাঁচা মরিচও যে আমদানি করতে হতে পারে, সেটা এখন অনেকেই জানেন। এসব কৃষিপণ্যেও আমরা সব সময় ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ থাকি না। দেশে কমপক্ষে ১৭ কোটি মানুষ। তাদের সবজি পরিভোগ কত! এর উৎপাদনও বেড়েছে। সময়ে-সময়ে বাজার অস্থির হলে সবজি নিয়ে পৃথক প্রতিবেদনও হয়ে থাকে।
আজকের পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে একজন রিকশাচালকের যে উক্তি রয়েছে, তা পড়ে সংবেদনশীল মানুষ মাত্রই বেদনার্ত হবেন। তিনি বলেছেন, প্রায় সব সবজির দাম একযোগে বাড়ার সময়টায় ভাতের সঙ্গে শুধু পেঁপেভর্তা জুটছে তাঁদের। তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘কয়দিন পর পেঁপেডাও খাইতে পারমু কি না, ভাবতিছি!’ তাঁকে আশ্বস্ত করে বলা যায়, সবজির দাম সামনে কমবে।
কত দিনে আর কতটা কমবে, সেটা অবশ্য বলা যাবে না। তবে এ পরিস্থিতি থাকবে না সবজির সরবরাহ বাড়লে। কিছুদিন আগে কদিন টানা ও ভারী বৃষ্টি হয়েছে দেশে। তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যার শঙ্কাও ছিল। সেই বিপদ আপাতত কেটেছে। তবে ভারী বৃষ্টিতে জমিতে সবজির ক্ষতি কম হয়নি। রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজির ‘আমদানি’ কম।
সবজি সেই অর্থে আমদানি করতে হয় না আমাদের। তবে মাঝে আলুর দাম কিছুতেই কমাতে না পেরে ‘সীমিতভাবে’ এটা আমদানির প্রস্তাব করেছিল ভোক্তা অধিদপ্তর। আলুসহ তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য জানাই ছিল, উদ্যোগটি ব্যর্থ হবে। বাজার অর্থনীতিতে এভাবে দাম বেঁধে দিলে অনেক ক্ষেত্রে উল্টো ফল হয়। সেটা না হলেও বাজার তার নিয়মেই চলছে। ডিম, পেঁয়াজের পাশাপাশি আলুর দাম একটুও কমেনি; বরং বাড়তির দিকে। আজকের পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে এ কথাটাও রয়েছে, অন্যান্য সবজির দাম বেশি বলে আলুর চাহিদা বেশি। তাই এর দাম আরও বাড়তেও পারে।
পণ্যবাজারে এসব পর্যবেক্ষণ জরুরি। সঠিক পর্যবেক্ষণের জন্য অবশ্য উপযুক্ত তথ্য-উপাত্ত থাকতে হয়। এই সমালোচনা বাড়ছে যে সরকারের বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কম। এর ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া কঠিন। যেমন আলুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার সময় এর উৎপাদন নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছিল, তার সঙ্গে একমত হচ্ছিলেন না হিমাগারের মালিকেরা। তাঁরা বলছিলেন, আলুর উৎপাদন এবার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। সে কারণে হিমাগারগুলোর একাংশ রয়ে গেছে ফাঁকা। শেষে ভোক্তা অধিদপ্তর আলু আমদানির যে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায়, এতে কি ব্যবসায়ীদের বক্তব্যই সত্য বলে বিবেচিত হবে না?
এখন সবজির দাম বেশি থাকলে আলুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এর দাম বাড়তে বাড়তে কেজিপ্রতি ৬০ টাকাও হয়ে যেতে পারে। এদিকে আলু আমদানি বোধ হয় হতে যাচ্ছে না। তবে ‘আগাম আলু’ উৎপাদনে লেগে পড়েছেন কৃষক। ভালো দাম পাওয়ার আশা তাঁদের। এখন সেই আলু যত দ্রুত বাজারে আসে, ততই ভালো। হিমাগারে রাখা আলুর দাম তখন হয়তো আর বাড়বে না। কোনো পণ্যের দাম আর বাড়তে না দেওয়াটাও সংশ্লিষ্টদের সাফল্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এর আগে ইলিশের বাড়তে থাকা দাম নিয়ে এখানে লিখেছিলাম। প্রজনন মৌসুম বিবেচনায় ইলিশ ধরা এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, বাজারে ইলিশ না থাকায় মাছের দাম কি আরও বেড়েছে? এ বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন চোখে পড়েনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
এমনও হতে পারে, আগে ইলিশের মৌসুমে মাছের বাজারে এর যে একটা প্রভাব থাকত–এখন সেটা আর নেই। কারণ ইলিশ ‘অভিজাত মাছ’ হয়ে উঠেছে। এর ক্রেতাগোষ্ঠী আলাদা। সাধারণ মানুষ যেসব মাছ কেনে, সেগুলোর দাম বাজারে ইলিশ থাকাকালেও বাড়ন্ত। এখনো সে রকমই। চাষের পাঙাশ, তেলাপিয়া, কই প্রভৃতির কথা বলছি। এসবের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে ওঠাটা পৃথক খবর হয়েছিল মাঝে।
অক্টোবরের শেষদিকে এসে ওগুলোর দাম কমার কারণ নেই। কমেছে বলে খবরও মিলছে না। দেশে রুই-কাতলার উৎপাদনও ভালো। কিছু আমদানিও হয়ে থাকে প্রতিবেশী দেশ থেকে। সেগুলোও চাষের মাছ। মাছ চাষে খরচ কিন্তু বেড়েছে। প্রধানত বেড়েছে ফিডের দাম। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বাড়ায়ও মাছের দাম বেড়েছে। সঙ্গে অদৃশ্য আর কম আলোচিত কারণও কি নেই?
নতুন আলু বাজারে এলে এর দাম কিছুটা কমবে কিংবা ঊর্ধ্বগতি রোধ হবে। অন্যান্য সবজির বেলায়ও একই কথা। আলুর পর সবচেয়ে বেশি নাকি বিক্রি হয় বেগুন। বেগুনসহ নানা রকম সবজি ফলিয়ে কৃষক নাম করে ফেলেছেন। কিন্তু ‘ভালো দাম’ পাচ্ছেন কি না, সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। সহযোগী একটি দৈনিকের প্রতিবেদক সবজির খবর দিতে গিয়ে লিখছেন, কৃষক দাম পাচ্ছেন। যাঁরা জমি থেকেই সবজি তুলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীর হাতে, তাঁরাও কি ভালো দাম পাচ্ছেন? নাকি মোকামে এনে যাঁরা বিক্রি করছেন, তাঁরা? এসব খবর পরিষ্কারভাবে পেলে ভালো হয়।
যারা শহর-বন্দরে কৃষিপণ্য কিনি–তারা তো চাই, এর উৎপাদক যেন চড়া দামের ন্যায্য হিস্যা পান। তাহলে তাঁর জীবনমান ভালো হবে। পরবর্তী উৎপাদনেও উৎসাহ পাবেন কৃষক। তাঁদের তো উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। যাতায়াতব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় কৃষিপণ্যের দামে ব্যাপক তারতম্যটা এখন কমে আসার কথা। আরও ভালো হতো উৎপাদিত পণ্য অধিক দামের আশায় ধরে রাখার ক্ষেত্রে কৃষকের সক্ষমতা বাড়লে। সেই উদ্যোগ প্রয়োজন। আলুর মতো পণ্যের সংরক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণের কিছু আলাপ তো মাঝে শোনা গিয়েছিল।
সবজির দাম এবার এতটা বাড়ল কেন, তার ব্যাখ্যা অবশ্য প্রয়োজন। কোন উপাদানটি এতে বেশি ‘অবদান’ রেখেছে, সেটা খতিয়ে দেখা চাই। চট করে ‘সিন্ডিকেট’কে অভিযুক্ত করার একটা প্রবণতা গড়ে উঠেছে দেশে। অতিমুনাফার প্রবণতা আর সিন্ডিকেটবাজি তো এক নয়। বহু বিক্রেতার বাজারে সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার বিষয়টি তাত্ত্বিকভাবে প্রতিষ্ঠা করাও কঠিন। এটা অবশ্য থাকতে পারে ভোজ্যতেল, চিনি, আটা-ময়দার বাজারে। ভোজ্যতেল ও আটা-ময়দার দাম কিন্তু কিছুটা কমে এসেছে।
এগুলো সবজির মতো দেশে উৎপাদিত নয়। প্রধানত আমদানি হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে এখানেও কমার কথা। কিন্তু সেভাবে কমছে কোথায়! এই অসংগতি নিয়েও মাঝে প্রতিবেদন হয়েছিল। ওই সব পণ্যের হাতে গোনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বসেও দাম ‘যৌক্তিক’ করতে পারেনি ট্যারিফ কমিশন। এসব ক্ষেত্রে ‘সিন্ডিকেট’ আছে বলা যেতে পারে। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী তো তাদের বিষয়ে কঠোর হতে চাইছেন না। তাতে পণ্যবাজার নাকি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে!
যে ক্রেতা উদ্বিগ্ন হয়ে বলেছেন, সামনে পেঁপেটাও কিনতে পারবেন কি না–তাঁর বক্তব্য কিন্তু সরকারের কাজে অনাস্থার একটা প্রকাশ। নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবে বাড়লেও এতটা অনাস্থা বোধ হয় জাগত না। হাতে হাতে সেলফোন থাকার সময়টায় লোকে কিন্তু আশপাশের দেশ আর পরিচিত বিশ্বের খবর পেয়ে যায় মুহূর্তেই।
ঘরের পাশে কলকাতায় কত দামে গরু-মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে, সে খবর মানুষ দ্রুতই পেয়ে যায়–যখন তার পাত থেকে এটা উধাও অনেক দিন ধরে। বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই ‘ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে’ এমনটা ঘটছে বলে বয়ানে সে আর বিশ্বাস রাখতে পারছে না। গভীর সংকটে নিপতিত শ্রীলঙ্কাও যখন ঘুরে দাঁড়ায় দ্রুত, তখনো তার মনে সহজেই প্রশ্ন জাগে এ দেশে বাজার পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হচ্ছে দেখে।
সমস্যাটা তাঁদের বেশি, যাঁরা বেড়ে চলা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলেয়ে আয় বাড়াতে পারছেন না। মজুরি বাড়ছে না, তা নয়। তবে মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সরকারের তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ‘ইউরোপীয় মানের’ জীবন কাটাচ্ছেন এ দেশে। সেটা বেঠিক নয়।
চড়তে থাকা পণ্যবাজার থেকে ফায়দা তুলে নেওয়া জনগোষ্ঠীও এর মধ্যে আছে। তাদের সংখ্যাটা দুনিয়ার কোনো কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। কিন্তু এরাই তো বাংলাদেশ নয়। এদের বাইরে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রয়েছে, তাদের নিত্যদিনের ভোগান্তিও গভীর বিবেচনার বিষয়। পণ্যবাজারে অন্তত স্বাভাবিকতা দেখতে পাওয়ার অধিকার রয়েছে প্রত্যেক নাগরিকের।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

শীতকালীন সবজি ওঠার সময়টায় এর দাম একটু বেশি থাকবেই। তবে এবার যে হারে দাম বেড়েছে, সেটা কখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ভোক্তার। সবজির মধ্যে পেঁপেই মোটামুটি সহজলভ্য। এটা সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সবজি আলুর চেয়ে সস্তা এখন।
২১ অক্টোবরের আজকের পত্রিকায় লেখা হয়েছে, ‘আলু, মুলা, পেঁপে ছাড়া সব সবজি ১০০ টাকার ওপর!’ কাঁচা মরিচকে সবজি বিবেচনা করলে অবশ্য বলতে হয়, এর কেজিপ্রতি দাম ২০০ টাকার বেশি। অবশ্য খুচরা ক্রেতারা এক কেজি কাঁচা মরিচ কমই কেনেন। এর দাম তো মাঝে রেকর্ড করেছিল। কাঁচা মরিচ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয় তখন। কাঁচা মরিচও যে আমদানি করতে হতে পারে, সেটা এখন অনেকেই জানেন। এসব কৃষিপণ্যেও আমরা সব সময় ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ থাকি না। দেশে কমপক্ষে ১৭ কোটি মানুষ। তাদের সবজি পরিভোগ কত! এর উৎপাদনও বেড়েছে। সময়ে-সময়ে বাজার অস্থির হলে সবজি নিয়ে পৃথক প্রতিবেদনও হয়ে থাকে।
আজকের পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে একজন রিকশাচালকের যে উক্তি রয়েছে, তা পড়ে সংবেদনশীল মানুষ মাত্রই বেদনার্ত হবেন। তিনি বলেছেন, প্রায় সব সবজির দাম একযোগে বাড়ার সময়টায় ভাতের সঙ্গে শুধু পেঁপেভর্তা জুটছে তাঁদের। তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘কয়দিন পর পেঁপেডাও খাইতে পারমু কি না, ভাবতিছি!’ তাঁকে আশ্বস্ত করে বলা যায়, সবজির দাম সামনে কমবে।
কত দিনে আর কতটা কমবে, সেটা অবশ্য বলা যাবে না। তবে এ পরিস্থিতি থাকবে না সবজির সরবরাহ বাড়লে। কিছুদিন আগে কদিন টানা ও ভারী বৃষ্টি হয়েছে দেশে। তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যার শঙ্কাও ছিল। সেই বিপদ আপাতত কেটেছে। তবে ভারী বৃষ্টিতে জমিতে সবজির ক্ষতি কম হয়নি। রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজির ‘আমদানি’ কম।
সবজি সেই অর্থে আমদানি করতে হয় না আমাদের। তবে মাঝে আলুর দাম কিছুতেই কমাতে না পেরে ‘সীমিতভাবে’ এটা আমদানির প্রস্তাব করেছিল ভোক্তা অধিদপ্তর। আলুসহ তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য জানাই ছিল, উদ্যোগটি ব্যর্থ হবে। বাজার অর্থনীতিতে এভাবে দাম বেঁধে দিলে অনেক ক্ষেত্রে উল্টো ফল হয়। সেটা না হলেও বাজার তার নিয়মেই চলছে। ডিম, পেঁয়াজের পাশাপাশি আলুর দাম একটুও কমেনি; বরং বাড়তির দিকে। আজকের পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে এ কথাটাও রয়েছে, অন্যান্য সবজির দাম বেশি বলে আলুর চাহিদা বেশি। তাই এর দাম আরও বাড়তেও পারে।
পণ্যবাজারে এসব পর্যবেক্ষণ জরুরি। সঠিক পর্যবেক্ষণের জন্য অবশ্য উপযুক্ত তথ্য-উপাত্ত থাকতে হয়। এই সমালোচনা বাড়ছে যে সরকারের বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কম। এর ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া কঠিন। যেমন আলুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার সময় এর উৎপাদন নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছিল, তার সঙ্গে একমত হচ্ছিলেন না হিমাগারের মালিকেরা। তাঁরা বলছিলেন, আলুর উৎপাদন এবার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। সে কারণে হিমাগারগুলোর একাংশ রয়ে গেছে ফাঁকা। শেষে ভোক্তা অধিদপ্তর আলু আমদানির যে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায়, এতে কি ব্যবসায়ীদের বক্তব্যই সত্য বলে বিবেচিত হবে না?
এখন সবজির দাম বেশি থাকলে আলুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এর দাম বাড়তে বাড়তে কেজিপ্রতি ৬০ টাকাও হয়ে যেতে পারে। এদিকে আলু আমদানি বোধ হয় হতে যাচ্ছে না। তবে ‘আগাম আলু’ উৎপাদনে লেগে পড়েছেন কৃষক। ভালো দাম পাওয়ার আশা তাঁদের। এখন সেই আলু যত দ্রুত বাজারে আসে, ততই ভালো। হিমাগারে রাখা আলুর দাম তখন হয়তো আর বাড়বে না। কোনো পণ্যের দাম আর বাড়তে না দেওয়াটাও সংশ্লিষ্টদের সাফল্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এর আগে ইলিশের বাড়তে থাকা দাম নিয়ে এখানে লিখেছিলাম। প্রজনন মৌসুম বিবেচনায় ইলিশ ধরা এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, বাজারে ইলিশ না থাকায় মাছের দাম কি আরও বেড়েছে? এ বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন চোখে পড়েনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
এমনও হতে পারে, আগে ইলিশের মৌসুমে মাছের বাজারে এর যে একটা প্রভাব থাকত–এখন সেটা আর নেই। কারণ ইলিশ ‘অভিজাত মাছ’ হয়ে উঠেছে। এর ক্রেতাগোষ্ঠী আলাদা। সাধারণ মানুষ যেসব মাছ কেনে, সেগুলোর দাম বাজারে ইলিশ থাকাকালেও বাড়ন্ত। এখনো সে রকমই। চাষের পাঙাশ, তেলাপিয়া, কই প্রভৃতির কথা বলছি। এসবের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে ওঠাটা পৃথক খবর হয়েছিল মাঝে।
অক্টোবরের শেষদিকে এসে ওগুলোর দাম কমার কারণ নেই। কমেছে বলে খবরও মিলছে না। দেশে রুই-কাতলার উৎপাদনও ভালো। কিছু আমদানিও হয়ে থাকে প্রতিবেশী দেশ থেকে। সেগুলোও চাষের মাছ। মাছ চাষে খরচ কিন্তু বেড়েছে। প্রধানত বেড়েছে ফিডের দাম। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বাড়ায়ও মাছের দাম বেড়েছে। সঙ্গে অদৃশ্য আর কম আলোচিত কারণও কি নেই?
নতুন আলু বাজারে এলে এর দাম কিছুটা কমবে কিংবা ঊর্ধ্বগতি রোধ হবে। অন্যান্য সবজির বেলায়ও একই কথা। আলুর পর সবচেয়ে বেশি নাকি বিক্রি হয় বেগুন। বেগুনসহ নানা রকম সবজি ফলিয়ে কৃষক নাম করে ফেলেছেন। কিন্তু ‘ভালো দাম’ পাচ্ছেন কি না, সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। সহযোগী একটি দৈনিকের প্রতিবেদক সবজির খবর দিতে গিয়ে লিখছেন, কৃষক দাম পাচ্ছেন। যাঁরা জমি থেকেই সবজি তুলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীর হাতে, তাঁরাও কি ভালো দাম পাচ্ছেন? নাকি মোকামে এনে যাঁরা বিক্রি করছেন, তাঁরা? এসব খবর পরিষ্কারভাবে পেলে ভালো হয়।
যারা শহর-বন্দরে কৃষিপণ্য কিনি–তারা তো চাই, এর উৎপাদক যেন চড়া দামের ন্যায্য হিস্যা পান। তাহলে তাঁর জীবনমান ভালো হবে। পরবর্তী উৎপাদনেও উৎসাহ পাবেন কৃষক। তাঁদের তো উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। যাতায়াতব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় কৃষিপণ্যের দামে ব্যাপক তারতম্যটা এখন কমে আসার কথা। আরও ভালো হতো উৎপাদিত পণ্য অধিক দামের আশায় ধরে রাখার ক্ষেত্রে কৃষকের সক্ষমতা বাড়লে। সেই উদ্যোগ প্রয়োজন। আলুর মতো পণ্যের সংরক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণের কিছু আলাপ তো মাঝে শোনা গিয়েছিল।
সবজির দাম এবার এতটা বাড়ল কেন, তার ব্যাখ্যা অবশ্য প্রয়োজন। কোন উপাদানটি এতে বেশি ‘অবদান’ রেখেছে, সেটা খতিয়ে দেখা চাই। চট করে ‘সিন্ডিকেট’কে অভিযুক্ত করার একটা প্রবণতা গড়ে উঠেছে দেশে। অতিমুনাফার প্রবণতা আর সিন্ডিকেটবাজি তো এক নয়। বহু বিক্রেতার বাজারে সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার বিষয়টি তাত্ত্বিকভাবে প্রতিষ্ঠা করাও কঠিন। এটা অবশ্য থাকতে পারে ভোজ্যতেল, চিনি, আটা-ময়দার বাজারে। ভোজ্যতেল ও আটা-ময়দার দাম কিন্তু কিছুটা কমে এসেছে।
এগুলো সবজির মতো দেশে উৎপাদিত নয়। প্রধানত আমদানি হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে এখানেও কমার কথা। কিন্তু সেভাবে কমছে কোথায়! এই অসংগতি নিয়েও মাঝে প্রতিবেদন হয়েছিল। ওই সব পণ্যের হাতে গোনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বসেও দাম ‘যৌক্তিক’ করতে পারেনি ট্যারিফ কমিশন। এসব ক্ষেত্রে ‘সিন্ডিকেট’ আছে বলা যেতে পারে। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী তো তাদের বিষয়ে কঠোর হতে চাইছেন না। তাতে পণ্যবাজার নাকি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে!
যে ক্রেতা উদ্বিগ্ন হয়ে বলেছেন, সামনে পেঁপেটাও কিনতে পারবেন কি না–তাঁর বক্তব্য কিন্তু সরকারের কাজে অনাস্থার একটা প্রকাশ। নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবে বাড়লেও এতটা অনাস্থা বোধ হয় জাগত না। হাতে হাতে সেলফোন থাকার সময়টায় লোকে কিন্তু আশপাশের দেশ আর পরিচিত বিশ্বের খবর পেয়ে যায় মুহূর্তেই।
ঘরের পাশে কলকাতায় কত দামে গরু-মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে, সে খবর মানুষ দ্রুতই পেয়ে যায়–যখন তার পাত থেকে এটা উধাও অনেক দিন ধরে। বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই ‘ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে’ এমনটা ঘটছে বলে বয়ানে সে আর বিশ্বাস রাখতে পারছে না। গভীর সংকটে নিপতিত শ্রীলঙ্কাও যখন ঘুরে দাঁড়ায় দ্রুত, তখনো তার মনে সহজেই প্রশ্ন জাগে এ দেশে বাজার পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হচ্ছে দেখে।
সমস্যাটা তাঁদের বেশি, যাঁরা বেড়ে চলা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলেয়ে আয় বাড়াতে পারছেন না। মজুরি বাড়ছে না, তা নয়। তবে মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সরকারের তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ‘ইউরোপীয় মানের’ জীবন কাটাচ্ছেন এ দেশে। সেটা বেঠিক নয়।
চড়তে থাকা পণ্যবাজার থেকে ফায়দা তুলে নেওয়া জনগোষ্ঠীও এর মধ্যে আছে। তাদের সংখ্যাটা দুনিয়ার কোনো কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। কিন্তু এরাই তো বাংলাদেশ নয়। এদের বাইরে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রয়েছে, তাদের নিত্যদিনের ভোগান্তিও গভীর বিবেচনার বিষয়। পণ্যবাজারে অন্তত স্বাভাবিকতা দেখতে পাওয়ার অধিকার রয়েছে প্রত্যেক নাগরিকের।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

শীতকালীন সবজি ওঠার সময়টায় এর দাম একটু বেশি থাকবেই। তবে এবার যে হারে দাম বেড়েছে, সেটা কখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ভোক্তার। সবজির মধ্যে পেঁপেই মোটামুটি সহজলভ্য। এটা সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সবজি আলুর চেয়ে সস্তা এখন।
২৩ অক্টোবর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

শীতকালীন সবজি ওঠার সময়টায় এর দাম একটু বেশি থাকবেই। তবে এবার যে হারে দাম বেড়েছে, সেটা কখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ভোক্তার। সবজির মধ্যে পেঁপেই মোটামুটি সহজলভ্য। এটা সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সবজি আলুর চেয়ে সস্তা এখন।
২৩ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

শীতকালীন সবজি ওঠার সময়টায় এর দাম একটু বেশি থাকবেই। তবে এবার যে হারে দাম বেড়েছে, সেটা কখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ভোক্তার। সবজির মধ্যে পেঁপেই মোটামুটি সহজলভ্য। এটা সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সবজি আলুর চেয়ে সস্তা এখন।
২৩ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

শীতকালীন সবজি ওঠার সময়টায় এর দাম একটু বেশি থাকবেই। তবে এবার যে হারে দাম বেড়েছে, সেটা কখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ভোক্তার। সবজির মধ্যে পেঁপেই মোটামুটি সহজলভ্য। এটা সবচেয়ে বেশি বিক্রীত সবজি আলুর চেয়ে সস্তা এখন।
২৩ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫