৫০০ টাকার জন্য বন্ধুর স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নে সুফিয়া (১৮) নামের এক গৃহবধূ হত্যার দুই সপ্তাহের মধ্যেই এর রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আরিফুল ইসলাম (১৯) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, মাত্র ৫০০ টাকার জন্য আরিফুল তাঁর বন্ধুর স্ত্রী সুফিয়াকে গলা টিপে হত্যা করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন। এর আগে গত সোমবার আরিফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বুধবার তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নিহত সুফিয়া শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের মেয়ে। গ্রেপ্তার আরিফুল ইসলাম (১৯) ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার হাসের আলগী গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, পোশাক কারখানায় একসঙ্গে চাকরি করার সময় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে আশিকুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুফিয়ার। পরে প্রথম স্বামী মোকাররমকে তালাক দিয়ে আশিকুরকে বিয়ে করেন সুফিয়া। বিয়ের পর সুফিয়া আর আশিকুর শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে স্ত্রী সুফিয়াকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে যান আশিকুর। রাত ১০টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে ঘরের ভেতর নিস্তেজ অবস্থায় সুফিয়াকে পড়ে থাকতে দেখেন। সুফিয়াকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ছানোয়ার হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড মনে হওয়ায় নিহতের ভাই সোহেল শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। পুলিশ এ ঘটনায় আশিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পরে সোমবার শ্রীপুর পৌরসভার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকা থেকে আশিকুরের বন্ধু আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আরিফুল।

আসামির স্বীকারোক্তির বরাতে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, বেকার আরিফুল চাকরির সন্ধানে ঢাকা যেতে স্থানীয় কয়েকজনের কাছে যাতায়াত ভাড়া বাবদ ৫০০ টাকা ধার চেয়েও পাননি। ধার না পেয়ে তিনি বন্ধু আশিকুরের বাসায় চুরির সিদ্ধান্ত নেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওই বাসায় গিয়ে সুফিয়ার স্বর্ণালংকার রাখার হাত ব্যাগ চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আরিফুল।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এ সময় সুফিয়া বাথরুম থেকে বের হয়ে আরিফুলকে ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখে বঁটি দিয়ে কোপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। আরিফুল নিজেকে সামলে নিয়ে সুফিয়াকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে স্বর্ণালংকার ভর্তি ওই ব্যাগ নিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যান তিনি। যাওয়ার পথে ব্যাগে থাকা কানের এক জোড়া সোনার দুল ও রুপার এক জোড়া নূপুর শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বখণ্ড এলাকার একটি জুয়েলার্সে বন্ধক রেখে ৭ হাজার টাকা নিয়ে যান তিনি।