
জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম। নিজের ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার পেছনে কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়ের ভূমিকা ছিল বলেও দাবি করেছেন জাহানারা। বছর দুয়েক আগে মঞ্জুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন সাবেক অধিনায়ক রুমানা আহমেদও। কাল রাতে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাহানারার বিস্ফোরক অভিযোগসহ বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের করুণ চিত্র তুলে ধরলেন রুমানা। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস।
রানা আব্বাস, ঢাকা

প্রশ্ন: জাহানারা আলমের বিস্ফোরক অভিযোগের পর যে প্রশ্ন সামনে চলে আসছে, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের ভেতরের ছবিটা তাহলে এতটাই করুণ?
রুমানা আহমেদ: এতটা খারাপ হতো না, যদি কথাগুলো তারা শুনত। যদি আমাদের বিষয়গুলো তারা দেখত, তাহলে এতটা খারাপ হতো না। অভিভাবকের কাছে সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। জাস্ট শোনার দরকার শুনেছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার করা হয়নি। আমাদের কষ্টগুলো দেখেনি, এটা কোন ধরনের সংস্কৃতি?
প্রশ্ন: জাহানারা যেসব অভিযোগ সামনে এনেছে, সেগুলো নিয়ে আপনার মতামত কী?
রুমানা: এর মধ্যে দুই-একটি হালকা বিষয় আছে, যেমন—সালমাকে সাল্লু বলে ডেকেছে জ্যোতি। হয়তো খারাপ লাগা থেকে বলেছে জাহানারা। এগুলো বড় কোনো অভিযোগ না। তবে বেশির ভাগ অভিযোগ ভ্যালিড। এটা শুধু আমাদের কথা না, অনেকেরই। বর্তমানে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা কেউ মুখ খুলতে চাইবে না। কারণ, তারা চুক্তিবদ্ধ, ক্যারিয়ার নষ্ট করতে চাইবে না। কিন্তু এর বাইরে অনেক ক্রিকেটার আছে তারা বলতে পারে।
প্রশ্ন: যদ্দূর জানি, আপনি এসব ব্যাপারে যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন, কথা বলেছেন।
রুমানা: আমি বরাবরই সোচ্চার ছিলাম, প্রতিবাদ করেছি। তাতে আমি ভুগেছি। আমাকে দল থেকে যেভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা তো দেখেছেনই। বোর্ডের চোখে গুড ফর নাথিং হয়েছি! আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে, যেন দেশের নারী ক্রিকেটে আমার কোনো অবদানই নেই!

প্রশ্ন: জাহানারার অভিযোগের পর স্বাভাবিকভাবে যে প্রশ্ন আসবে, এ রকম আরও কত ভিকটিম আছে দলে?
রুমানা: দলে এমন অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা নিজের ক্যারিয়ারের কথা বেশি চিন্তা করে, তারা সহজে বলবে না। তারা (ভিকটিম হলেও) মন খারাপ করে, সিনিয়রদের সঙ্গে শেয়ার করে যে আপু আমার সঙ্গে এমন হয়েছে...এই বিষয়টা ওভাবে সামনে আসে না বা আসেনি। জাহানারার প্রথম কথাগুলো কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। একজন সিনিয়র ক্রিকেটার যে লম্বা সময় সার্ভিস দিয়েছে, তার কথাগুলো শোনা উচিত ছিল, গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।
প্রশ্ন: নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর আচরণগত সমস্যার কথা দুই বছর আগেই কিছুটা প্রকাশ্যে এসেছিল। এখন তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, এটা তো ভয়ংকর!
রুমানা: ওনার একটা বাজে অভ্যাস ছিল। জুনিয়র-সিনিয়র (নারী ক্রিকেটারদের) যাকেই জিজ্ঞেস করবেন, বলবে, তিনি টাচ করে কথা বলতে পছন্দ করতেন।
প্রশ্ন: ওই সময় আপনারা তাঁর বিরুদ্ধে সবাই অভিযোগ করেননি?
রুমানা: কার কাছে অভিযোগ দেব? যাকে (নারী বিভাগের ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ) দেব, তিনি তো ওনার কলিজার টুকরা ছিল! অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের কেন দল থেকে সরাল, বলতে পারেন? কোন পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আমাকে বাদ দিল? আমি নিয়মিত পারফর্ম করেছি, আমাকে দলে রাখল না অথচ একজন আনফিট মেয়েকে নিয়ে গেল খেলাতে। কারণ জানতে চাইলে তৌহিদ ভাই আমার সঙ্গে মশকারা করেন। হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি মারা গেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আর কিছু বলব না। তবে তিনি আমাদের জন্য ভালো কিছু করে যাননি। আমাদের গুহায় ফেলে দিয়েছেন, আমাদের পরিশ্রম মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে গেছেন।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের অন্ধকার দিক যেভাবে উন্মোচিত হচ্ছে, মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য এটা বিরাট ধাক্কা।
রুমানা: এভাবেই তো চলছে। জাহানারা সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে মুখ খুলেছে। কিন্তু যারা জুনিয়র ক্রিকেটার, অ্যাবিউজ হবে, ওরা কি মুখ খুলতে পারবে? অনেক জুনিয়র ক্রিকেটার তো অ্যাবিউজ হলে বুঝতেও পারবে না। দলে এখন এতটাই ক্রিকেটারের সংকট, দুধের শিশুকেও নিতে হচ্ছে!
প্রশ্ন: অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ এসেছে।
রুমানা: এই মুহূর্তে জ্যোতির ব্যাপারে কিছু বলব না। চাইছি সরাসরি সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে। তবে যা রটে সেটার পুরোপুরি না হলেও অধিকাংশ তো ঘটে।
প্রশ্ন: নারী দলে একজন মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। দল একটা পরিবারের মতো। নিজের পরিবারের মধ্যে কেউ যদি নিরাপদ বোধ না করে, নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে—এটা ভয়াবহ পরিস্থিতি বলতে হবে। এ পরিবেশে একজন ক্রিকেটার কীভাবে স্বস্তিতে খেলবেন?
রুমানা: শান্তিতে তো খেলতে পারিনি। ২০২১ সাল থেকে আমি, জাহানারা বিসিবির প্র্যাকটিস ফ্যাসিলিটিজ থেকে বঞ্চিত। খেলেছি নিজেদের প্রতিভা আর পরিশ্রমের জোরে। এমনও হয়েছে, ম্যাচে তিনি (মঞ্জু) আমাকে পুরোপুরি বোলিং করাননি, বলও দেননি।

প্রশ্ন: মঞ্জু এসব করতেন কোন চিন্তা থেকে?
রুমানা: তাঁর লক্ষ্যই ছিল সিনিয়রদের বাদ দেওয়া। কারণ, সিনিয়ররা ওনার বিষয়গুলো ধরে ফেলছিল, মুখ খুলছিল। শুধু ক্রিকেটারদের সঙ্গেই নয়, তখন ফিজিও সুরাইয়া ম্যাডামকে বাদ দিয়েছিলেন। ফিজিও ম্যাডাম যদি বলতেন, জ্যোতি আনফিট, এই ম্যাচটা খেলানো যাবে না। তিনি (মঞ্জু) তবু জোর করে ওকে খেলাতেন। ভিডিও অ্যানালিস্ট শাওন ভাইকে বাদ দিয়ে নিজের বন্ধু রাশেদ স্যারকে আনলেন। রাশেদ স্যার আমাদের সহযোগিতা করেননি। (মঞ্জু) আনকোরা ট্রেনার রাসেলকে নিয়ে বিশ্বকাপে গেলেন, যাতে ওনার হাত-পা টেপাতে পারেন।
প্রশ্ন: আপনি নিজে কখনো মঞ্জুর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেছেন?
রুমানা: হ্যাঁ, ওনার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেছি। এটাকে তারা (বিসিবি) কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। একবার মনে হয় আপনাদের খেয়াল আছে, (ফেসবুকে) লিখেছিলাম নো মোর ক্রিকেট! টানা তিন-চারটা সিরিজ দলের বাইরে থাকায় ভেঙে পড়েছিলাম। তখন সিইওকে (নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) ফোন দিয়ে বলেছিলাম, আপনার সঙ্গে বসতে চাই। আমার পারফরম্যান্স দেখেন। তিনি ওই সময়ে বললেন, ঠিক আছে সামনে প্রিমিয়ার লিগ আছে, ওখানে প্রমাণ করো। সিইও স্যার তৌহিদ ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলেন, পরের টুর্নামেন্ট কত দিন পর? তৌহিদ ভাই বললেন, সাত মাস পর। সিইও স্যার বললেন, ও এই সাত মাস অপেক্ষা করবে? সে তো ভালো খেলোয়াড়। তৌহিদ ভাই বললেন, আমাদের দল হয়ে গেছে। ওই সময়ে বোর্ড রুমে বসে নির্বাচক (সাজ্জাদ আহমেদ) শিপন ভাইও অনেক অপমান করলেন। আমাকে বলেন, তুমি দেশের জন্য কী করেছ? তুমি মডার্ন ক্রিকেট খেলেছ? তুমি কি ১০ ওভার বোলিং করার যোগ্য? আমি বললাম, আপনি আমার রেকর্ড-পরিসংখ্যান দেখেন। তিনি পরামর্শ দিলেন, ক্লাব ক্রিকেটে ছোট দলে খেলতে। ভারতের হারমানপ্রীতের বয়স কি আমার চেয়ে কম? তাদের কি দল থেকে আমাদের মতো ছাঁটাই করা হয়েছে?
প্রশ্ন: একজন খেলোয়াড় তো সারা জীবন খেলবেন না, তবে সবাই চায় শেষটা হোক সম্মানের সঙ্গে।
রুমানা: দেখুন, আমার দায়িত্ব না একজন জুনিয়র খেলোয়াড়কে লালন-পালন করা। আমার দায়িত্ব দেশকে সেরাটা দেওয়া। কদিন আগে শেষ হওয়া বিশ্বকাপে দেখুন, অন্য দলগুলো তাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের কী সম্মানের সঙ্গে বিদায় দিয়েছে। আমাদের দেশে কোনো সিনিয়রকে এই সম্মান দেওয়া হয়? আমরা কদিন খেলব? সিনিয়রদের হুট করে ঝেড়ে ফেলে জাতীয় দল কি শিক্ষানবিশদের শেখানোর জায়গা করা যায়?
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে সিনিয়রদের শেষ দিক আর জুনিয়রদের উঠে আসার যে ট্রানজিশনাল সময়, সেটা খুব একটা মসৃণ হয় না।
রুমানা: বোর্ডের কাছে কখনো দাবি করিনি—সিনিয়র বলেই দলে রাখেন। আমাকে রাখবেন পারফরম্যান্স দেখে। যোগ্যতা দেখে।
প্রশ্ন: যেসব নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে, আপনারা কি কখনো আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবেননি?
রুমানা: সে চেষ্টা করিনি, ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আর নিজের মতো পরিশ্রম করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন: তবে এটা ঠিক, আপনারা কি বিসিবিকে জানিয়েছেন?
রুমানা: হ্যাঁ, আমাদের অভিভাবক বিসিবি। বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানালে তাঁরা বিষয়টি মানুষের সামনে অন্যভাবে উপস্থাপন করেন। ধরুন, তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, রুমানাকে কেন দলে রাখা হয়নি, তার পারফরম্যান্স তো ভালো। তখন তাঁরা উত্তর দেবেন, রুমানা আনফিট। কিন্তু যে পারফর্ম করে, সে আনফিট হয় কী করে? একদিন আমাকে বোর্ড রুমে বলা হলো, তুমি ক্রিকেট ছেড়ে অন্য কিছু করার চিন্তা করো। বললাম, এখনো আমার ধ্যানজ্ঞান সব ক্রিকেটজুড়ে। ক্রিকেটের জন্য জীবনে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করেছি। ফ্যামিলি ছেড়ে দিনের পর দিন ঢাকায় প্র্যাকটিস করেছি। যদি পারফর্ম না করতে পারতাম, মেনে নিতাম।
প্রশ্ন: জাহানারার বিস্ফোরক সব অভিযোগের পর বিসিবি তদন্ত কমিটি গঠন করছে। তাদের এই তদন্তের ওপর কতটা আস্থা রাখছেন?
রুমানা: বোর্ডের প্রথম সাপোর্ট থাকবে (অধিনায়ক) জ্যোতির ওপর। শুরুতে দেখেছেন, ওকে আগলে রাখার চেষ্টা করেছে, বোর্ড অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। জাহানারার অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা থাকতে পারে যে এসব ঘটেনি, কেউ দেখেনি। মঞ্জু ভাইয়ের ডান হাত ছিল জ্যোতি। এখন জ্যোতি তো মঞ্জু ভাইকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু বলবে না, সে বর্তমানে অধিনায়ক। আমি মনে করি, সুষ্ঠু তদন্ত করতে দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলতে হবে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকলে হবে না।
প্রশ্ন: আপনি ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের নির্বাহী কমিটির সদস্য। নারী ক্রিকেটারদের নিরাপদ ক্যারিয়ার গঠনে আপনাদের চাওয়া কী থাকবে?
রুমানা: এরই মধ্যে কোয়াবের সভাপতি মিঠুন ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে, জোরালো আওয়াজ তোলা হবে।
আরও পড়ুন:
প্রশ্ন: জাহানারা আলমের বিস্ফোরক অভিযোগের পর যে প্রশ্ন সামনে চলে আসছে, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের ভেতরের ছবিটা তাহলে এতটাই করুণ?
রুমানা আহমেদ: এতটা খারাপ হতো না, যদি কথাগুলো তারা শুনত। যদি আমাদের বিষয়গুলো তারা দেখত, তাহলে এতটা খারাপ হতো না। অভিভাবকের কাছে সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। জাস্ট শোনার দরকার শুনেছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার করা হয়নি। আমাদের কষ্টগুলো দেখেনি, এটা কোন ধরনের সংস্কৃতি?
প্রশ্ন: জাহানারা যেসব অভিযোগ সামনে এনেছে, সেগুলো নিয়ে আপনার মতামত কী?
রুমানা: এর মধ্যে দুই-একটি হালকা বিষয় আছে, যেমন—সালমাকে সাল্লু বলে ডেকেছে জ্যোতি। হয়তো খারাপ লাগা থেকে বলেছে জাহানারা। এগুলো বড় কোনো অভিযোগ না। তবে বেশির ভাগ অভিযোগ ভ্যালিড। এটা শুধু আমাদের কথা না, অনেকেরই। বর্তমানে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা কেউ মুখ খুলতে চাইবে না। কারণ, তারা চুক্তিবদ্ধ, ক্যারিয়ার নষ্ট করতে চাইবে না। কিন্তু এর বাইরে অনেক ক্রিকেটার আছে তারা বলতে পারে।
প্রশ্ন: যদ্দূর জানি, আপনি এসব ব্যাপারে যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন, কথা বলেছেন।
রুমানা: আমি বরাবরই সোচ্চার ছিলাম, প্রতিবাদ করেছি। তাতে আমি ভুগেছি। আমাকে দল থেকে যেভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা তো দেখেছেনই। বোর্ডের চোখে গুড ফর নাথিং হয়েছি! আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে, যেন দেশের নারী ক্রিকেটে আমার কোনো অবদানই নেই!

প্রশ্ন: জাহানারার অভিযোগের পর স্বাভাবিকভাবে যে প্রশ্ন আসবে, এ রকম আরও কত ভিকটিম আছে দলে?
রুমানা: দলে এমন অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা নিজের ক্যারিয়ারের কথা বেশি চিন্তা করে, তারা সহজে বলবে না। তারা (ভিকটিম হলেও) মন খারাপ করে, সিনিয়রদের সঙ্গে শেয়ার করে যে আপু আমার সঙ্গে এমন হয়েছে...এই বিষয়টা ওভাবে সামনে আসে না বা আসেনি। জাহানারার প্রথম কথাগুলো কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। একজন সিনিয়র ক্রিকেটার যে লম্বা সময় সার্ভিস দিয়েছে, তার কথাগুলো শোনা উচিত ছিল, গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।
প্রশ্ন: নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর আচরণগত সমস্যার কথা দুই বছর আগেই কিছুটা প্রকাশ্যে এসেছিল। এখন তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, এটা তো ভয়ংকর!
রুমানা: ওনার একটা বাজে অভ্যাস ছিল। জুনিয়র-সিনিয়র (নারী ক্রিকেটারদের) যাকেই জিজ্ঞেস করবেন, বলবে, তিনি টাচ করে কথা বলতে পছন্দ করতেন।
প্রশ্ন: ওই সময় আপনারা তাঁর বিরুদ্ধে সবাই অভিযোগ করেননি?
রুমানা: কার কাছে অভিযোগ দেব? যাকে (নারী বিভাগের ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ) দেব, তিনি তো ওনার কলিজার টুকরা ছিল! অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের কেন দল থেকে সরাল, বলতে পারেন? কোন পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আমাকে বাদ দিল? আমি নিয়মিত পারফর্ম করেছি, আমাকে দলে রাখল না অথচ একজন আনফিট মেয়েকে নিয়ে গেল খেলাতে। কারণ জানতে চাইলে তৌহিদ ভাই আমার সঙ্গে মশকারা করেন। হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি মারা গেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আর কিছু বলব না। তবে তিনি আমাদের জন্য ভালো কিছু করে যাননি। আমাদের গুহায় ফেলে দিয়েছেন, আমাদের পরিশ্রম মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে গেছেন।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের অন্ধকার দিক যেভাবে উন্মোচিত হচ্ছে, মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য এটা বিরাট ধাক্কা।
রুমানা: এভাবেই তো চলছে। জাহানারা সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে মুখ খুলেছে। কিন্তু যারা জুনিয়র ক্রিকেটার, অ্যাবিউজ হবে, ওরা কি মুখ খুলতে পারবে? অনেক জুনিয়র ক্রিকেটার তো অ্যাবিউজ হলে বুঝতেও পারবে না। দলে এখন এতটাই ক্রিকেটারের সংকট, দুধের শিশুকেও নিতে হচ্ছে!
প্রশ্ন: অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ এসেছে।
রুমানা: এই মুহূর্তে জ্যোতির ব্যাপারে কিছু বলব না। চাইছি সরাসরি সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে। তবে যা রটে সেটার পুরোপুরি না হলেও অধিকাংশ তো ঘটে।
প্রশ্ন: নারী দলে একজন মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। দল একটা পরিবারের মতো। নিজের পরিবারের মধ্যে কেউ যদি নিরাপদ বোধ না করে, নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে—এটা ভয়াবহ পরিস্থিতি বলতে হবে। এ পরিবেশে একজন ক্রিকেটার কীভাবে স্বস্তিতে খেলবেন?
রুমানা: শান্তিতে তো খেলতে পারিনি। ২০২১ সাল থেকে আমি, জাহানারা বিসিবির প্র্যাকটিস ফ্যাসিলিটিজ থেকে বঞ্চিত। খেলেছি নিজেদের প্রতিভা আর পরিশ্রমের জোরে। এমনও হয়েছে, ম্যাচে তিনি (মঞ্জু) আমাকে পুরোপুরি বোলিং করাননি, বলও দেননি।

প্রশ্ন: মঞ্জু এসব করতেন কোন চিন্তা থেকে?
রুমানা: তাঁর লক্ষ্যই ছিল সিনিয়রদের বাদ দেওয়া। কারণ, সিনিয়ররা ওনার বিষয়গুলো ধরে ফেলছিল, মুখ খুলছিল। শুধু ক্রিকেটারদের সঙ্গেই নয়, তখন ফিজিও সুরাইয়া ম্যাডামকে বাদ দিয়েছিলেন। ফিজিও ম্যাডাম যদি বলতেন, জ্যোতি আনফিট, এই ম্যাচটা খেলানো যাবে না। তিনি (মঞ্জু) তবু জোর করে ওকে খেলাতেন। ভিডিও অ্যানালিস্ট শাওন ভাইকে বাদ দিয়ে নিজের বন্ধু রাশেদ স্যারকে আনলেন। রাশেদ স্যার আমাদের সহযোগিতা করেননি। (মঞ্জু) আনকোরা ট্রেনার রাসেলকে নিয়ে বিশ্বকাপে গেলেন, যাতে ওনার হাত-পা টেপাতে পারেন।
প্রশ্ন: আপনি নিজে কখনো মঞ্জুর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেছেন?
রুমানা: হ্যাঁ, ওনার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেছি। এটাকে তারা (বিসিবি) কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। একবার মনে হয় আপনাদের খেয়াল আছে, (ফেসবুকে) লিখেছিলাম নো মোর ক্রিকেট! টানা তিন-চারটা সিরিজ দলের বাইরে থাকায় ভেঙে পড়েছিলাম। তখন সিইওকে (নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) ফোন দিয়ে বলেছিলাম, আপনার সঙ্গে বসতে চাই। আমার পারফরম্যান্স দেখেন। তিনি ওই সময়ে বললেন, ঠিক আছে সামনে প্রিমিয়ার লিগ আছে, ওখানে প্রমাণ করো। সিইও স্যার তৌহিদ ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলেন, পরের টুর্নামেন্ট কত দিন পর? তৌহিদ ভাই বললেন, সাত মাস পর। সিইও স্যার বললেন, ও এই সাত মাস অপেক্ষা করবে? সে তো ভালো খেলোয়াড়। তৌহিদ ভাই বললেন, আমাদের দল হয়ে গেছে। ওই সময়ে বোর্ড রুমে বসে নির্বাচক (সাজ্জাদ আহমেদ) শিপন ভাইও অনেক অপমান করলেন। আমাকে বলেন, তুমি দেশের জন্য কী করেছ? তুমি মডার্ন ক্রিকেট খেলেছ? তুমি কি ১০ ওভার বোলিং করার যোগ্য? আমি বললাম, আপনি আমার রেকর্ড-পরিসংখ্যান দেখেন। তিনি পরামর্শ দিলেন, ক্লাব ক্রিকেটে ছোট দলে খেলতে। ভারতের হারমানপ্রীতের বয়স কি আমার চেয়ে কম? তাদের কি দল থেকে আমাদের মতো ছাঁটাই করা হয়েছে?
প্রশ্ন: একজন খেলোয়াড় তো সারা জীবন খেলবেন না, তবে সবাই চায় শেষটা হোক সম্মানের সঙ্গে।
রুমানা: দেখুন, আমার দায়িত্ব না একজন জুনিয়র খেলোয়াড়কে লালন-পালন করা। আমার দায়িত্ব দেশকে সেরাটা দেওয়া। কদিন আগে শেষ হওয়া বিশ্বকাপে দেখুন, অন্য দলগুলো তাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের কী সম্মানের সঙ্গে বিদায় দিয়েছে। আমাদের দেশে কোনো সিনিয়রকে এই সম্মান দেওয়া হয়? আমরা কদিন খেলব? সিনিয়রদের হুট করে ঝেড়ে ফেলে জাতীয় দল কি শিক্ষানবিশদের শেখানোর জায়গা করা যায়?
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে সিনিয়রদের শেষ দিক আর জুনিয়রদের উঠে আসার যে ট্রানজিশনাল সময়, সেটা খুব একটা মসৃণ হয় না।
রুমানা: বোর্ডের কাছে কখনো দাবি করিনি—সিনিয়র বলেই দলে রাখেন। আমাকে রাখবেন পারফরম্যান্স দেখে। যোগ্যতা দেখে।
প্রশ্ন: যেসব নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে, আপনারা কি কখনো আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবেননি?
রুমানা: সে চেষ্টা করিনি, ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আর নিজের মতো পরিশ্রম করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন: তবে এটা ঠিক, আপনারা কি বিসিবিকে জানিয়েছেন?
রুমানা: হ্যাঁ, আমাদের অভিভাবক বিসিবি। বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানালে তাঁরা বিষয়টি মানুষের সামনে অন্যভাবে উপস্থাপন করেন। ধরুন, তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, রুমানাকে কেন দলে রাখা হয়নি, তার পারফরম্যান্স তো ভালো। তখন তাঁরা উত্তর দেবেন, রুমানা আনফিট। কিন্তু যে পারফর্ম করে, সে আনফিট হয় কী করে? একদিন আমাকে বোর্ড রুমে বলা হলো, তুমি ক্রিকেট ছেড়ে অন্য কিছু করার চিন্তা করো। বললাম, এখনো আমার ধ্যানজ্ঞান সব ক্রিকেটজুড়ে। ক্রিকেটের জন্য জীবনে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করেছি। ফ্যামিলি ছেড়ে দিনের পর দিন ঢাকায় প্র্যাকটিস করেছি। যদি পারফর্ম না করতে পারতাম, মেনে নিতাম।
প্রশ্ন: জাহানারার বিস্ফোরক সব অভিযোগের পর বিসিবি তদন্ত কমিটি গঠন করছে। তাদের এই তদন্তের ওপর কতটা আস্থা রাখছেন?
রুমানা: বোর্ডের প্রথম সাপোর্ট থাকবে (অধিনায়ক) জ্যোতির ওপর। শুরুতে দেখেছেন, ওকে আগলে রাখার চেষ্টা করেছে, বোর্ড অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। জাহানারার অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা থাকতে পারে যে এসব ঘটেনি, কেউ দেখেনি। মঞ্জু ভাইয়ের ডান হাত ছিল জ্যোতি। এখন জ্যোতি তো মঞ্জু ভাইকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু বলবে না, সে বর্তমানে অধিনায়ক। আমি মনে করি, সুষ্ঠু তদন্ত করতে দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলতে হবে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকলে হবে না।
প্রশ্ন: আপনি ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের নির্বাহী কমিটির সদস্য। নারী ক্রিকেটারদের নিরাপদ ক্যারিয়ার গঠনে আপনাদের চাওয়া কী থাকবে?
রুমানা: এরই মধ্যে কোয়াবের সভাপতি মিঠুন ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে, জোরালো আওয়াজ তোলা হবে।
আরও পড়ুন:

জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম। নিজের ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার পেছনে কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়ের ভূমিকা ছিল বলেও দাবি করেছেন জাহানারা। বছর দুয়েক আগে মঞ্জুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন সাবেক অধিনায়ক রুমানা আহমেদও। কাল রাতে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাহানারার বিস্ফোরক অভিযোগসহ বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের করুণ চিত্র তুলে ধরলেন রুমানা। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস।
রানা আব্বাস, ঢাকা

প্রশ্ন: জাহানারা আলমের বিস্ফোরক অভিযোগের পর যে প্রশ্ন সামনে চলে আসছে, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের ভেতরের ছবিটা তাহলে এতটাই করুণ?
রুমানা আহমেদ: এতটা খারাপ হতো না, যদি কথাগুলো তারা শুনত। যদি আমাদের বিষয়গুলো তারা দেখত, তাহলে এতটা খারাপ হতো না। অভিভাবকের কাছে সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। জাস্ট শোনার দরকার শুনেছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার করা হয়নি। আমাদের কষ্টগুলো দেখেনি, এটা কোন ধরনের সংস্কৃতি?
প্রশ্ন: জাহানারা যেসব অভিযোগ সামনে এনেছে, সেগুলো নিয়ে আপনার মতামত কী?
রুমানা: এর মধ্যে দুই-একটি হালকা বিষয় আছে, যেমন—সালমাকে সাল্লু বলে ডেকেছে জ্যোতি। হয়তো খারাপ লাগা থেকে বলেছে জাহানারা। এগুলো বড় কোনো অভিযোগ না। তবে বেশির ভাগ অভিযোগ ভ্যালিড। এটা শুধু আমাদের কথা না, অনেকেরই। বর্তমানে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা কেউ মুখ খুলতে চাইবে না। কারণ, তারা চুক্তিবদ্ধ, ক্যারিয়ার নষ্ট করতে চাইবে না। কিন্তু এর বাইরে অনেক ক্রিকেটার আছে তারা বলতে পারে।
প্রশ্ন: যদ্দূর জানি, আপনি এসব ব্যাপারে যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন, কথা বলেছেন।
রুমানা: আমি বরাবরই সোচ্চার ছিলাম, প্রতিবাদ করেছি। তাতে আমি ভুগেছি। আমাকে দল থেকে যেভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা তো দেখেছেনই। বোর্ডের চোখে গুড ফর নাথিং হয়েছি! আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে, যেন দেশের নারী ক্রিকেটে আমার কোনো অবদানই নেই!

প্রশ্ন: জাহানারার অভিযোগের পর স্বাভাবিকভাবে যে প্রশ্ন আসবে, এ রকম আরও কত ভিকটিম আছে দলে?
রুমানা: দলে এমন অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা নিজের ক্যারিয়ারের কথা বেশি চিন্তা করে, তারা সহজে বলবে না। তারা (ভিকটিম হলেও) মন খারাপ করে, সিনিয়রদের সঙ্গে শেয়ার করে যে আপু আমার সঙ্গে এমন হয়েছে...এই বিষয়টা ওভাবে সামনে আসে না বা আসেনি। জাহানারার প্রথম কথাগুলো কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। একজন সিনিয়র ক্রিকেটার যে লম্বা সময় সার্ভিস দিয়েছে, তার কথাগুলো শোনা উচিত ছিল, গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।
প্রশ্ন: নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর আচরণগত সমস্যার কথা দুই বছর আগেই কিছুটা প্রকাশ্যে এসেছিল। এখন তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, এটা তো ভয়ংকর!
রুমানা: ওনার একটা বাজে অভ্যাস ছিল। জুনিয়র-সিনিয়র (নারী ক্রিকেটারদের) যাকেই জিজ্ঞেস করবেন, বলবে, তিনি টাচ করে কথা বলতে পছন্দ করতেন।
প্রশ্ন: ওই সময় আপনারা তাঁর বিরুদ্ধে সবাই অভিযোগ করেননি?
রুমানা: কার কাছে অভিযোগ দেব? যাকে (নারী বিভাগের ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ) দেব, তিনি তো ওনার কলিজার টুকরা ছিল! অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের কেন দল থেকে সরাল, বলতে পারেন? কোন পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আমাকে বাদ দিল? আমি নিয়মিত পারফর্ম করেছি, আমাকে দলে রাখল না অথচ একজন আনফিট মেয়েকে নিয়ে গেল খেলাতে। কারণ জানতে চাইলে তৌহিদ ভাই আমার সঙ্গে মশকারা করেন। হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি মারা গেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আর কিছু বলব না। তবে তিনি আমাদের জন্য ভালো কিছু করে যাননি। আমাদের গুহায় ফেলে দিয়েছেন, আমাদের পরিশ্রম মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে গেছেন।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের অন্ধকার দিক যেভাবে উন্মোচিত হচ্ছে, মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য এটা বিরাট ধাক্কা।
রুমানা: এভাবেই তো চলছে। জাহানারা সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে মুখ খুলেছে। কিন্তু যারা জুনিয়র ক্রিকেটার, অ্যাবিউজ হবে, ওরা কি মুখ খুলতে পারবে? অনেক জুনিয়র ক্রিকেটার তো অ্যাবিউজ হলে বুঝতেও পারবে না। দলে এখন এতটাই ক্রিকেটারের সংকট, দুধের শিশুকেও নিতে হচ্ছে!
প্রশ্ন: অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ এসেছে।
রুমানা: এই মুহূর্তে জ্যোতির ব্যাপারে কিছু বলব না। চাইছি সরাসরি সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে। তবে যা রটে সেটার পুরোপুরি না হলেও অধিকাংশ তো ঘটে।
প্রশ্ন: নারী দলে একজন মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। দল একটা পরিবারের মতো। নিজের পরিবারের মধ্যে কেউ যদি নিরাপদ বোধ না করে, নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে—এটা ভয়াবহ পরিস্থিতি বলতে হবে। এ পরিবেশে একজন ক্রিকেটার কীভাবে স্বস্তিতে খেলবেন?
রুমানা: শান্তিতে তো খেলতে পারিনি। ২০২১ সাল থেকে আমি, জাহানারা বিসিবির প্র্যাকটিস ফ্যাসিলিটিজ থেকে বঞ্চিত। খেলেছি নিজেদের প্রতিভা আর পরিশ্রমের জোরে। এমনও হয়েছে, ম্যাচে তিনি (মঞ্জু) আমাকে পুরোপুরি বোলিং করাননি, বলও দেননি।

প্রশ্ন: মঞ্জু এসব করতেন কোন চিন্তা থেকে?
রুমানা: তাঁর লক্ষ্যই ছিল সিনিয়রদের বাদ দেওয়া। কারণ, সিনিয়ররা ওনার বিষয়গুলো ধরে ফেলছিল, মুখ খুলছিল। শুধু ক্রিকেটারদের সঙ্গেই নয়, তখন ফিজিও সুরাইয়া ম্যাডামকে বাদ দিয়েছিলেন। ফিজিও ম্যাডাম যদি বলতেন, জ্যোতি আনফিট, এই ম্যাচটা খেলানো যাবে না। তিনি (মঞ্জু) তবু জোর করে ওকে খেলাতেন। ভিডিও অ্যানালিস্ট শাওন ভাইকে বাদ দিয়ে নিজের বন্ধু রাশেদ স্যারকে আনলেন। রাশেদ স্যার আমাদের সহযোগিতা করেননি। (মঞ্জু) আনকোরা ট্রেনার রাসেলকে নিয়ে বিশ্বকাপে গেলেন, যাতে ওনার হাত-পা টেপাতে পারেন।
প্রশ্ন: আপনি নিজে কখনো মঞ্জুর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেছেন?
রুমানা: হ্যাঁ, ওনার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেছি। এটাকে তারা (বিসিবি) কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। একবার মনে হয় আপনাদের খেয়াল আছে, (ফেসবুকে) লিখেছিলাম নো মোর ক্রিকেট! টানা তিন-চারটা সিরিজ দলের বাইরে থাকায় ভেঙে পড়েছিলাম। তখন সিইওকে (নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) ফোন দিয়ে বলেছিলাম, আপনার সঙ্গে বসতে চাই। আমার পারফরম্যান্স দেখেন। তিনি ওই সময়ে বললেন, ঠিক আছে সামনে প্রিমিয়ার লিগ আছে, ওখানে প্রমাণ করো। সিইও স্যার তৌহিদ ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলেন, পরের টুর্নামেন্ট কত দিন পর? তৌহিদ ভাই বললেন, সাত মাস পর। সিইও স্যার বললেন, ও এই সাত মাস অপেক্ষা করবে? সে তো ভালো খেলোয়াড়। তৌহিদ ভাই বললেন, আমাদের দল হয়ে গেছে। ওই সময়ে বোর্ড রুমে বসে নির্বাচক (সাজ্জাদ আহমেদ) শিপন ভাইও অনেক অপমান করলেন। আমাকে বলেন, তুমি দেশের জন্য কী করেছ? তুমি মডার্ন ক্রিকেট খেলেছ? তুমি কি ১০ ওভার বোলিং করার যোগ্য? আমি বললাম, আপনি আমার রেকর্ড-পরিসংখ্যান দেখেন। তিনি পরামর্শ দিলেন, ক্লাব ক্রিকেটে ছোট দলে খেলতে। ভারতের হারমানপ্রীতের বয়স কি আমার চেয়ে কম? তাদের কি দল থেকে আমাদের মতো ছাঁটাই করা হয়েছে?
প্রশ্ন: একজন খেলোয়াড় তো সারা জীবন খেলবেন না, তবে সবাই চায় শেষটা হোক সম্মানের সঙ্গে।
রুমানা: দেখুন, আমার দায়িত্ব না একজন জুনিয়র খেলোয়াড়কে লালন-পালন করা। আমার দায়িত্ব দেশকে সেরাটা দেওয়া। কদিন আগে শেষ হওয়া বিশ্বকাপে দেখুন, অন্য দলগুলো তাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের কী সম্মানের সঙ্গে বিদায় দিয়েছে। আমাদের দেশে কোনো সিনিয়রকে এই সম্মান দেওয়া হয়? আমরা কদিন খেলব? সিনিয়রদের হুট করে ঝেড়ে ফেলে জাতীয় দল কি শিক্ষানবিশদের শেখানোর জায়গা করা যায়?
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে সিনিয়রদের শেষ দিক আর জুনিয়রদের উঠে আসার যে ট্রানজিশনাল সময়, সেটা খুব একটা মসৃণ হয় না।
রুমানা: বোর্ডের কাছে কখনো দাবি করিনি—সিনিয়র বলেই দলে রাখেন। আমাকে রাখবেন পারফরম্যান্স দেখে। যোগ্যতা দেখে।
প্রশ্ন: যেসব নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে, আপনারা কি কখনো আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবেননি?
রুমানা: সে চেষ্টা করিনি, ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আর নিজের মতো পরিশ্রম করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন: তবে এটা ঠিক, আপনারা কি বিসিবিকে জানিয়েছেন?
রুমানা: হ্যাঁ, আমাদের অভিভাবক বিসিবি। বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানালে তাঁরা বিষয়টি মানুষের সামনে অন্যভাবে উপস্থাপন করেন। ধরুন, তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, রুমানাকে কেন দলে রাখা হয়নি, তার পারফরম্যান্স তো ভালো। তখন তাঁরা উত্তর দেবেন, রুমানা আনফিট। কিন্তু যে পারফর্ম করে, সে আনফিট হয় কী করে? একদিন আমাকে বোর্ড রুমে বলা হলো, তুমি ক্রিকেট ছেড়ে অন্য কিছু করার চিন্তা করো। বললাম, এখনো আমার ধ্যানজ্ঞান সব ক্রিকেটজুড়ে। ক্রিকেটের জন্য জীবনে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করেছি। ফ্যামিলি ছেড়ে দিনের পর দিন ঢাকায় প্র্যাকটিস করেছি। যদি পারফর্ম না করতে পারতাম, মেনে নিতাম।
প্রশ্ন: জাহানারার বিস্ফোরক সব অভিযোগের পর বিসিবি তদন্ত কমিটি গঠন করছে। তাদের এই তদন্তের ওপর কতটা আস্থা রাখছেন?
রুমানা: বোর্ডের প্রথম সাপোর্ট থাকবে (অধিনায়ক) জ্যোতির ওপর। শুরুতে দেখেছেন, ওকে আগলে রাখার চেষ্টা করেছে, বোর্ড অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। জাহানারার অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা থাকতে পারে যে এসব ঘটেনি, কেউ দেখেনি। মঞ্জু ভাইয়ের ডান হাত ছিল জ্যোতি। এখন জ্যোতি তো মঞ্জু ভাইকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু বলবে না, সে বর্তমানে অধিনায়ক। আমি মনে করি, সুষ্ঠু তদন্ত করতে দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলতে হবে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকলে হবে না।
প্রশ্ন: আপনি ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের নির্বাহী কমিটির সদস্য। নারী ক্রিকেটারদের নিরাপদ ক্যারিয়ার গঠনে আপনাদের চাওয়া কী থাকবে?
রুমানা: এরই মধ্যে কোয়াবের সভাপতি মিঠুন ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে, জোরালো আওয়াজ তোলা হবে।
আরও পড়ুন:
প্রশ্ন: জাহানারা আলমের বিস্ফোরক অভিযোগের পর যে প্রশ্ন সামনে চলে আসছে, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের ভেতরের ছবিটা তাহলে এতটাই করুণ?
রুমানা আহমেদ: এতটা খারাপ হতো না, যদি কথাগুলো তারা শুনত। যদি আমাদের বিষয়গুলো তারা দেখত, তাহলে এতটা খারাপ হতো না। অভিভাবকের কাছে সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। জাস্ট শোনার দরকার শুনেছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার করা হয়নি। আমাদের কষ্টগুলো দেখেনি, এটা কোন ধরনের সংস্কৃতি?
প্রশ্ন: জাহানারা যেসব অভিযোগ সামনে এনেছে, সেগুলো নিয়ে আপনার মতামত কী?
রুমানা: এর মধ্যে দুই-একটি হালকা বিষয় আছে, যেমন—সালমাকে সাল্লু বলে ডেকেছে জ্যোতি। হয়তো খারাপ লাগা থেকে বলেছে জাহানারা। এগুলো বড় কোনো অভিযোগ না। তবে বেশির ভাগ অভিযোগ ভ্যালিড। এটা শুধু আমাদের কথা না, অনেকেরই। বর্তমানে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা কেউ মুখ খুলতে চাইবে না। কারণ, তারা চুক্তিবদ্ধ, ক্যারিয়ার নষ্ট করতে চাইবে না। কিন্তু এর বাইরে অনেক ক্রিকেটার আছে তারা বলতে পারে।
প্রশ্ন: যদ্দূর জানি, আপনি এসব ব্যাপারে যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন, কথা বলেছেন।
রুমানা: আমি বরাবরই সোচ্চার ছিলাম, প্রতিবাদ করেছি। তাতে আমি ভুগেছি। আমাকে দল থেকে যেভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা তো দেখেছেনই। বোর্ডের চোখে গুড ফর নাথিং হয়েছি! আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে, যেন দেশের নারী ক্রিকেটে আমার কোনো অবদানই নেই!

প্রশ্ন: জাহানারার অভিযোগের পর স্বাভাবিকভাবে যে প্রশ্ন আসবে, এ রকম আরও কত ভিকটিম আছে দলে?
রুমানা: দলে এমন অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা নিজের ক্যারিয়ারের কথা বেশি চিন্তা করে, তারা সহজে বলবে না। তারা (ভিকটিম হলেও) মন খারাপ করে, সিনিয়রদের সঙ্গে শেয়ার করে যে আপু আমার সঙ্গে এমন হয়েছে...এই বিষয়টা ওভাবে সামনে আসে না বা আসেনি। জাহানারার প্রথম কথাগুলো কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। একজন সিনিয়র ক্রিকেটার যে লম্বা সময় সার্ভিস দিয়েছে, তার কথাগুলো শোনা উচিত ছিল, গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।
প্রশ্ন: নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর আচরণগত সমস্যার কথা দুই বছর আগেই কিছুটা প্রকাশ্যে এসেছিল। এখন তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, এটা তো ভয়ংকর!
রুমানা: ওনার একটা বাজে অভ্যাস ছিল। জুনিয়র-সিনিয়র (নারী ক্রিকেটারদের) যাকেই জিজ্ঞেস করবেন, বলবে, তিনি টাচ করে কথা বলতে পছন্দ করতেন।
প্রশ্ন: ওই সময় আপনারা তাঁর বিরুদ্ধে সবাই অভিযোগ করেননি?
রুমানা: কার কাছে অভিযোগ দেব? যাকে (নারী বিভাগের ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ) দেব, তিনি তো ওনার কলিজার টুকরা ছিল! অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের কেন দল থেকে সরাল, বলতে পারেন? কোন পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আমাকে বাদ দিল? আমি নিয়মিত পারফর্ম করেছি, আমাকে দলে রাখল না অথচ একজন আনফিট মেয়েকে নিয়ে গেল খেলাতে। কারণ জানতে চাইলে তৌহিদ ভাই আমার সঙ্গে মশকারা করেন। হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি মারা গেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আর কিছু বলব না। তবে তিনি আমাদের জন্য ভালো কিছু করে যাননি। আমাদের গুহায় ফেলে দিয়েছেন, আমাদের পরিশ্রম মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে গেছেন।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের অন্ধকার দিক যেভাবে উন্মোচিত হচ্ছে, মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য এটা বিরাট ধাক্কা।
রুমানা: এভাবেই তো চলছে। জাহানারা সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে মুখ খুলেছে। কিন্তু যারা জুনিয়র ক্রিকেটার, অ্যাবিউজ হবে, ওরা কি মুখ খুলতে পারবে? অনেক জুনিয়র ক্রিকেটার তো অ্যাবিউজ হলে বুঝতেও পারবে না। দলে এখন এতটাই ক্রিকেটারের সংকট, দুধের শিশুকেও নিতে হচ্ছে!
প্রশ্ন: অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ এসেছে।
রুমানা: এই মুহূর্তে জ্যোতির ব্যাপারে কিছু বলব না। চাইছি সরাসরি সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে। তবে যা রটে সেটার পুরোপুরি না হলেও অধিকাংশ তো ঘটে।
প্রশ্ন: নারী দলে একজন মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। দল একটা পরিবারের মতো। নিজের পরিবারের মধ্যে কেউ যদি নিরাপদ বোধ না করে, নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে—এটা ভয়াবহ পরিস্থিতি বলতে হবে। এ পরিবেশে একজন ক্রিকেটার কীভাবে স্বস্তিতে খেলবেন?
রুমানা: শান্তিতে তো খেলতে পারিনি। ২০২১ সাল থেকে আমি, জাহানারা বিসিবির প্র্যাকটিস ফ্যাসিলিটিজ থেকে বঞ্চিত। খেলেছি নিজেদের প্রতিভা আর পরিশ্রমের জোরে। এমনও হয়েছে, ম্যাচে তিনি (মঞ্জু) আমাকে পুরোপুরি বোলিং করাননি, বলও দেননি।

প্রশ্ন: মঞ্জু এসব করতেন কোন চিন্তা থেকে?
রুমানা: তাঁর লক্ষ্যই ছিল সিনিয়রদের বাদ দেওয়া। কারণ, সিনিয়ররা ওনার বিষয়গুলো ধরে ফেলছিল, মুখ খুলছিল। শুধু ক্রিকেটারদের সঙ্গেই নয়, তখন ফিজিও সুরাইয়া ম্যাডামকে বাদ দিয়েছিলেন। ফিজিও ম্যাডাম যদি বলতেন, জ্যোতি আনফিট, এই ম্যাচটা খেলানো যাবে না। তিনি (মঞ্জু) তবু জোর করে ওকে খেলাতেন। ভিডিও অ্যানালিস্ট শাওন ভাইকে বাদ দিয়ে নিজের বন্ধু রাশেদ স্যারকে আনলেন। রাশেদ স্যার আমাদের সহযোগিতা করেননি। (মঞ্জু) আনকোরা ট্রেনার রাসেলকে নিয়ে বিশ্বকাপে গেলেন, যাতে ওনার হাত-পা টেপাতে পারেন।
প্রশ্ন: আপনি নিজে কখনো মঞ্জুর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেছেন?
রুমানা: হ্যাঁ, ওনার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেছি। এটাকে তারা (বিসিবি) কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। একবার মনে হয় আপনাদের খেয়াল আছে, (ফেসবুকে) লিখেছিলাম নো মোর ক্রিকেট! টানা তিন-চারটা সিরিজ দলের বাইরে থাকায় ভেঙে পড়েছিলাম। তখন সিইওকে (নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) ফোন দিয়ে বলেছিলাম, আপনার সঙ্গে বসতে চাই। আমার পারফরম্যান্স দেখেন। তিনি ওই সময়ে বললেন, ঠিক আছে সামনে প্রিমিয়ার লিগ আছে, ওখানে প্রমাণ করো। সিইও স্যার তৌহিদ ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলেন, পরের টুর্নামেন্ট কত দিন পর? তৌহিদ ভাই বললেন, সাত মাস পর। সিইও স্যার বললেন, ও এই সাত মাস অপেক্ষা করবে? সে তো ভালো খেলোয়াড়। তৌহিদ ভাই বললেন, আমাদের দল হয়ে গেছে। ওই সময়ে বোর্ড রুমে বসে নির্বাচক (সাজ্জাদ আহমেদ) শিপন ভাইও অনেক অপমান করলেন। আমাকে বলেন, তুমি দেশের জন্য কী করেছ? তুমি মডার্ন ক্রিকেট খেলেছ? তুমি কি ১০ ওভার বোলিং করার যোগ্য? আমি বললাম, আপনি আমার রেকর্ড-পরিসংখ্যান দেখেন। তিনি পরামর্শ দিলেন, ক্লাব ক্রিকেটে ছোট দলে খেলতে। ভারতের হারমানপ্রীতের বয়স কি আমার চেয়ে কম? তাদের কি দল থেকে আমাদের মতো ছাঁটাই করা হয়েছে?
প্রশ্ন: একজন খেলোয়াড় তো সারা জীবন খেলবেন না, তবে সবাই চায় শেষটা হোক সম্মানের সঙ্গে।
রুমানা: দেখুন, আমার দায়িত্ব না একজন জুনিয়র খেলোয়াড়কে লালন-পালন করা। আমার দায়িত্ব দেশকে সেরাটা দেওয়া। কদিন আগে শেষ হওয়া বিশ্বকাপে দেখুন, অন্য দলগুলো তাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের কী সম্মানের সঙ্গে বিদায় দিয়েছে। আমাদের দেশে কোনো সিনিয়রকে এই সম্মান দেওয়া হয়? আমরা কদিন খেলব? সিনিয়রদের হুট করে ঝেড়ে ফেলে জাতীয় দল কি শিক্ষানবিশদের শেখানোর জায়গা করা যায়?
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে সিনিয়রদের শেষ দিক আর জুনিয়রদের উঠে আসার যে ট্রানজিশনাল সময়, সেটা খুব একটা মসৃণ হয় না।
রুমানা: বোর্ডের কাছে কখনো দাবি করিনি—সিনিয়র বলেই দলে রাখেন। আমাকে রাখবেন পারফরম্যান্স দেখে। যোগ্যতা দেখে।
প্রশ্ন: যেসব নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে, আপনারা কি কখনো আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবেননি?
রুমানা: সে চেষ্টা করিনি, ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আর নিজের মতো পরিশ্রম করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন: তবে এটা ঠিক, আপনারা কি বিসিবিকে জানিয়েছেন?
রুমানা: হ্যাঁ, আমাদের অভিভাবক বিসিবি। বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানালে তাঁরা বিষয়টি মানুষের সামনে অন্যভাবে উপস্থাপন করেন। ধরুন, তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, রুমানাকে কেন দলে রাখা হয়নি, তার পারফরম্যান্স তো ভালো। তখন তাঁরা উত্তর দেবেন, রুমানা আনফিট। কিন্তু যে পারফর্ম করে, সে আনফিট হয় কী করে? একদিন আমাকে বোর্ড রুমে বলা হলো, তুমি ক্রিকেট ছেড়ে অন্য কিছু করার চিন্তা করো। বললাম, এখনো আমার ধ্যানজ্ঞান সব ক্রিকেটজুড়ে। ক্রিকেটের জন্য জীবনে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করেছি। ফ্যামিলি ছেড়ে দিনের পর দিন ঢাকায় প্র্যাকটিস করেছি। যদি পারফর্ম না করতে পারতাম, মেনে নিতাম।
প্রশ্ন: জাহানারার বিস্ফোরক সব অভিযোগের পর বিসিবি তদন্ত কমিটি গঠন করছে। তাদের এই তদন্তের ওপর কতটা আস্থা রাখছেন?
রুমানা: বোর্ডের প্রথম সাপোর্ট থাকবে (অধিনায়ক) জ্যোতির ওপর। শুরুতে দেখেছেন, ওকে আগলে রাখার চেষ্টা করেছে, বোর্ড অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। জাহানারার অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা থাকতে পারে যে এসব ঘটেনি, কেউ দেখেনি। মঞ্জু ভাইয়ের ডান হাত ছিল জ্যোতি। এখন জ্যোতি তো মঞ্জু ভাইকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু বলবে না, সে বর্তমানে অধিনায়ক। আমি মনে করি, সুষ্ঠু তদন্ত করতে দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলতে হবে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকলে হবে না।
প্রশ্ন: আপনি ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের নির্বাহী কমিটির সদস্য। নারী ক্রিকেটারদের নিরাপদ ক্যারিয়ার গঠনে আপনাদের চাওয়া কী থাকবে?
রুমানা: এরই মধ্যে কোয়াবের সভাপতি মিঠুন ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে, জোরালো আওয়াজ তোলা হবে।
আরও পড়ুন:

এসএ টি–টোয়েন্টির নিলাম থেকে তাইজুল ইসলামকে দলে টেনেছিল ডারবান সুপার জায়ান্টস। তাতে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। তাঁর সে অপেক্ষা সহসা ফুরাচ্ছে না।
১ ঘণ্টা আগেজাহানারার যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে ইতিমধ্যে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবার আলোচিত ইস্যুতে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে পাশে পেলেন বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক অধিনায়ক। জাহানারা আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
৩ ঘণ্টা আগে
ফিফটি করে অন্যান্য ব্যাটারদের মতোই উদ্যাপন করতে গিয়েছিলেন ব্রায়ান চারি। কিন্তু সেই উদ্যাপনই বিপদ হলো তাঁর জন্য। নিজের ভুলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়েনর পথ ধরতে হয়েছে এই ব্যাটারকে।
৪ ঘণ্টা আগে
বগুড়ায় ২৮ অক্টোবর সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পর জিততেই যেন ভুলে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জেতা যেন দূরে থাক, আফগানদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছে না আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। সবশেষ দুই ওয়ানডেতে আফগান যুবাদের কাছে বাজেভাবে হারলেন তামিমরা।
৫ ঘণ্টা আগেক্রীড়া ডেস্ক

এসএ টি–টোয়েন্টির নিলাম থেকে তাইজুল ইসলামকে দলে টেনেছিল ডারবান সুপার জায়ান্টস। তাতে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। তাঁর সে অপেক্ষা সহসা ফুরাচ্ছে না।
বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এসএ টি–টোয়েন্টিতে দল পেয়েছিলেন তাইজুল। কিন্তু এই স্পিনারের পরিবর্তে নিউজিল্যান্ডের তারকা ব্যাটার কেইন উইলিয়ামসনকে দলে নিয়েছে ডারবান। এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ক্রিকেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএনক্রিকইনফো।
সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত এসএ টি–টোয়েন্টির নিলাম থেকে ৫ লাখ র্যান্ডে তাইজুলকে নিয়েছিল ডারবান। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এসএ টি–টোয়েন্টির চতুর্থ আসরেও কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারের অভিষেক হচ্ছে না। যদিও তাইজুলের পরিবর্তে উইলিয়ামসনে নেওয়ার কারণ জানায়নি ক্রিকইনফো।
ডারবান দিয়ে গত আসরেই এসএ টি–টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় উইলিয়ামসনের। সে আসরে ৮ ম্যাচে ৪৬.৬০ গড়ে ২৩৩ রান করেন এই ব্যাটার। স্ট্রাইকরেট ১১৮.৮৭। উইলিয়ামসন ব্যাট হাতে ভালো করলেও মৌসুমটা খুবই বাজেভাবে শেষ হয় ডারবানের। টেবিলের তলানীতে থেকে আসর শেষ করে তারা।
দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার পরও উইলিয়ামসনকে ছেড়ে দেয় ডারবান। ফের তাঁকে দলে ভেড়াল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। গত আসরের ব্যর্থতা কাটিয়ে নতুন করে দল সাজাচ্ছে ডারবান। উইলিয়ামসন ছাড়াও তাদের দলে আছেন জস বাটলার, সুনিল নারিন, নূর আহমেদের মতো ক্রিকেটাররা।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন উইলিয়ামসন। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিতে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (এনজেডসি) সঙ্গে বেছে বেছে সিরিজ খেলার চুক্তি করেছেন। চলতি বছর ইংল্যান্ড একাধিক টুর্নামেন্ট খেলেছেন কিউইদের সাবেক অধিনায়ক। গত মাসে আইপিএলের দল লখনৌ সুপার জায়ান্টসের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজের দায়িত্ব পেয়েছেন উইলিয়ামসন।

এসএ টি–টোয়েন্টির নিলাম থেকে তাইজুল ইসলামকে দলে টেনেছিল ডারবান সুপার জায়ান্টস। তাতে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। তাঁর সে অপেক্ষা সহসা ফুরাচ্ছে না।
বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এসএ টি–টোয়েন্টিতে দল পেয়েছিলেন তাইজুল। কিন্তু এই স্পিনারের পরিবর্তে নিউজিল্যান্ডের তারকা ব্যাটার কেইন উইলিয়ামসনকে দলে নিয়েছে ডারবান। এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ক্রিকেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএনক্রিকইনফো।
সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত এসএ টি–টোয়েন্টির নিলাম থেকে ৫ লাখ র্যান্ডে তাইজুলকে নিয়েছিল ডারবান। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এসএ টি–টোয়েন্টির চতুর্থ আসরেও কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারের অভিষেক হচ্ছে না। যদিও তাইজুলের পরিবর্তে উইলিয়ামসনে নেওয়ার কারণ জানায়নি ক্রিকইনফো।
ডারবান দিয়ে গত আসরেই এসএ টি–টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় উইলিয়ামসনের। সে আসরে ৮ ম্যাচে ৪৬.৬০ গড়ে ২৩৩ রান করেন এই ব্যাটার। স্ট্রাইকরেট ১১৮.৮৭। উইলিয়ামসন ব্যাট হাতে ভালো করলেও মৌসুমটা খুবই বাজেভাবে শেষ হয় ডারবানের। টেবিলের তলানীতে থেকে আসর শেষ করে তারা।
দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার পরও উইলিয়ামসনকে ছেড়ে দেয় ডারবান। ফের তাঁকে দলে ভেড়াল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। গত আসরের ব্যর্থতা কাটিয়ে নতুন করে দল সাজাচ্ছে ডারবান। উইলিয়ামসন ছাড়াও তাদের দলে আছেন জস বাটলার, সুনিল নারিন, নূর আহমেদের মতো ক্রিকেটাররা।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন উইলিয়ামসন। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিতে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (এনজেডসি) সঙ্গে বেছে বেছে সিরিজ খেলার চুক্তি করেছেন। চলতি বছর ইংল্যান্ড একাধিক টুর্নামেন্ট খেলেছেন কিউইদের সাবেক অধিনায়ক। গত মাসে আইপিএলের দল লখনৌ সুপার জায়ান্টসের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজের দায়িত্ব পেয়েছেন উইলিয়ামসন।

জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম। নিজের ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার পেছনে কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়ের ভূমিকা ছিল বলেও দাবি করেছেন জাহানারা।
৬ ঘণ্টা আগেজাহানারার যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে ইতিমধ্যে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবার আলোচিত ইস্যুতে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে পাশে পেলেন বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক অধিনায়ক। জাহানারা আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
৩ ঘণ্টা আগে
ফিফটি করে অন্যান্য ব্যাটারদের মতোই উদ্যাপন করতে গিয়েছিলেন ব্রায়ান চারি। কিন্তু সেই উদ্যাপনই বিপদ হলো তাঁর জন্য। নিজের ভুলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়েনর পথ ধরতে হয়েছে এই ব্যাটারকে।
৪ ঘণ্টা আগে
বগুড়ায় ২৮ অক্টোবর সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পর জিততেই যেন ভুলে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জেতা যেন দূরে থাক, আফগানদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছে না আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। সবশেষ দুই ওয়ানডেতে আফগান যুবাদের কাছে বাজেভাবে হারলেন তামিমরা।
৫ ঘণ্টা আগেক্রীড়া ডেস্ক
জাহানারার যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে ইতিমধ্যে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবার আলোচিত ইস্যুতে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে পাশে পেলেন বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক অধিনায়ক। জাহানারা আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
গতকাল এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলে খেলার সময় তৎকালীন নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম এবং বিসিবির নারী বিভাগের প্রয়াত সাবেক ইনচার্জ তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সরাসরি যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন জাহানারা।
বাংলাদেশ নারী দলের হয়ে ১৩৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারের ওই সাক্ষাৎকারের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভক্তরা। অনেকে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন। আলোচিত ইস্যুতে আজ বার্তা দিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তামিম ইকবাল। সবশেষ বিষয়টি নিয়ে কথা বললেন আসিফ মাহমুদ।
আজ এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের দপ্তর থেকে ইতিমধ্যে ভুক্তভোগীর (জাহানারা আলম) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এটা যেহেতু ফৌজদারি অপরাধ। তাই তিনি যদি আইনি ব্যবস্থা নিতে চান, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। যেন দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পান—আমরা সেটা নিশ্চিত করব।’
এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করে কেউ ছাড় পাবেন না বলেও জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘এসব কথা এবারই প্রথম শুনতে পেলাম—বিষয়টি এমন নয়। অন্যান্য খেলা থেকেও এমন অনেক অভিযোগ আসে। এই ধরনের কাজ করে কেউ যেন পার পেয়ে না যায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’
জাহানারার যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে ইতিমধ্যে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবার আলোচিত ইস্যুতে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে পাশে পেলেন বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক অধিনায়ক। জাহানারা আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
গতকাল এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলে খেলার সময় তৎকালীন নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম এবং বিসিবির নারী বিভাগের প্রয়াত সাবেক ইনচার্জ তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সরাসরি যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন জাহানারা।
বাংলাদেশ নারী দলের হয়ে ১৩৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারের ওই সাক্ষাৎকারের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভক্তরা। অনেকে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন। আলোচিত ইস্যুতে আজ বার্তা দিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তামিম ইকবাল। সবশেষ বিষয়টি নিয়ে কথা বললেন আসিফ মাহমুদ।
আজ এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের দপ্তর থেকে ইতিমধ্যে ভুক্তভোগীর (জাহানারা আলম) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এটা যেহেতু ফৌজদারি অপরাধ। তাই তিনি যদি আইনি ব্যবস্থা নিতে চান, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। যেন দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পান—আমরা সেটা নিশ্চিত করব।’
এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করে কেউ ছাড় পাবেন না বলেও জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘এসব কথা এবারই প্রথম শুনতে পেলাম—বিষয়টি এমন নয়। অন্যান্য খেলা থেকেও এমন অনেক অভিযোগ আসে। এই ধরনের কাজ করে কেউ যেন পার পেয়ে না যায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’

জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম। নিজের ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার পেছনে কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়ের ভূমিকা ছিল বলেও দাবি করেছেন জাহানারা।
৬ ঘণ্টা আগে
এসএ টি–টোয়েন্টির নিলাম থেকে তাইজুল ইসলামকে দলে টেনেছিল ডারবান সুপার জায়ান্টস। তাতে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। তাঁর সে অপেক্ষা সহসা ফুরাচ্ছে না।
১ ঘণ্টা আগে
ফিফটি করে অন্যান্য ব্যাটারদের মতোই উদ্যাপন করতে গিয়েছিলেন ব্রায়ান চারি। কিন্তু সেই উদ্যাপনই বিপদ হলো তাঁর জন্য। নিজের ভুলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়েনর পথ ধরতে হয়েছে এই ব্যাটারকে।
৪ ঘণ্টা আগে
বগুড়ায় ২৮ অক্টোবর সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পর জিততেই যেন ভুলে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জেতা যেন দূরে থাক, আফগানদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছে না আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। সবশেষ দুই ওয়ানডেতে আফগান যুবাদের কাছে বাজেভাবে হারলেন তামিমরা।
৫ ঘণ্টা আগেক্রীড়া ডেস্ক

ফিফটি করে অন্যান্য ব্যাটারদের মতোই উদ্যাপন করতে গিয়েছিলেন ব্রায়ান চারি। কিন্তু সেই উদ্যাপনই বিপদ হলো তাঁর জন্য। নিজের ভুলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়েনর পথ ধরতে হয়েছে এই ব্যাটারকে।
ঘটনাটি ঘটেছে জিম্বাবুয়ের লোগান কাপে। বুলাওয়েতে মেগা মার্কেট মাউন্টেনিয়ার্সের বিপক্ষে ম্যাচে রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় টাস্কার্সের চারিকে। প্রথম ইনিংসের ডেফিনেট মাওয়াদজির করা ৫২ তম ওভারের ঘটনা। ৪৯ রানে ব্যাট করছিলেন চারি। শেষ বলে প্যাডেল সুইপ খেলে দুই রান নেন তিনি।
স্ট্রাইক প্রান্তে এসে ব্যাট মাটিতে রাখেন চারি। এরপর ব্যাট উপরে তুলে উদ্যাপন শুরু করেন। নন-স্ট্রাইকার তাফারা মুপারিওয়ার সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছিলেন চারি। তখনো বলটি সম্পন্ন হয়নি। চারি ক্রিজ ছেড়ে যেতেই টিমিসেন মারুমার থ্রো পেয়ে স্টাম্পিং করেন উইকেটরক্ষক জয়লর্ড গাম্বি।
পরিস্থিতি বুঝতে পেরে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিলেন চারি। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। ৫১ রান করার পথে ছয়টি চার এবং একটি ছক্কা মারেন চারি। সাজঘরে ফেরার সময় স্বাভাবিকভাবেই হতাশার ছাপ ছিল তাঁর চোখে মুখে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এটা চারির ২৮ তম ফিফটি।
জিম্বাবুয়ের হয়ে তিন সংস্করণেই খেলার অভিজ্ঞতা আছে চারির। ২০১৪ সালের নভেম্বরে খুলনায় বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। ২০২০ সালের নভেম্বরে দেশের জার্সিতে সবশেষ ম্যাচটি খেলেন এই ক্রিকেটার। ৭ টেস্ট, ১৪ ওয়ানডের পাশাপাশি তিনটি টি–টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। টেস্টে করেছেন ২৫৪ রান। এছাড়া ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে চারির সংগ্রহ যথাক্রমে ১৮৬ ও ২১ রান।

ফিফটি করে অন্যান্য ব্যাটারদের মতোই উদ্যাপন করতে গিয়েছিলেন ব্রায়ান চারি। কিন্তু সেই উদ্যাপনই বিপদ হলো তাঁর জন্য। নিজের ভুলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়েনর পথ ধরতে হয়েছে এই ব্যাটারকে।
ঘটনাটি ঘটেছে জিম্বাবুয়ের লোগান কাপে। বুলাওয়েতে মেগা মার্কেট মাউন্টেনিয়ার্সের বিপক্ষে ম্যাচে রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় টাস্কার্সের চারিকে। প্রথম ইনিংসের ডেফিনেট মাওয়াদজির করা ৫২ তম ওভারের ঘটনা। ৪৯ রানে ব্যাট করছিলেন চারি। শেষ বলে প্যাডেল সুইপ খেলে দুই রান নেন তিনি।
স্ট্রাইক প্রান্তে এসে ব্যাট মাটিতে রাখেন চারি। এরপর ব্যাট উপরে তুলে উদ্যাপন শুরু করেন। নন-স্ট্রাইকার তাফারা মুপারিওয়ার সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছিলেন চারি। তখনো বলটি সম্পন্ন হয়নি। চারি ক্রিজ ছেড়ে যেতেই টিমিসেন মারুমার থ্রো পেয়ে স্টাম্পিং করেন উইকেটরক্ষক জয়লর্ড গাম্বি।
পরিস্থিতি বুঝতে পেরে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিলেন চারি। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। ৫১ রান করার পথে ছয়টি চার এবং একটি ছক্কা মারেন চারি। সাজঘরে ফেরার সময় স্বাভাবিকভাবেই হতাশার ছাপ ছিল তাঁর চোখে মুখে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এটা চারির ২৮ তম ফিফটি।
জিম্বাবুয়ের হয়ে তিন সংস্করণেই খেলার অভিজ্ঞতা আছে চারির। ২০১৪ সালের নভেম্বরে খুলনায় বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। ২০২০ সালের নভেম্বরে দেশের জার্সিতে সবশেষ ম্যাচটি খেলেন এই ক্রিকেটার। ৭ টেস্ট, ১৪ ওয়ানডের পাশাপাশি তিনটি টি–টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। টেস্টে করেছেন ২৫৪ রান। এছাড়া ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে চারির সংগ্রহ যথাক্রমে ১৮৬ ও ২১ রান।

জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম। নিজের ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার পেছনে কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়ের ভূমিকা ছিল বলেও দাবি করেছেন জাহানারা।
৬ ঘণ্টা আগে
এসএ টি–টোয়েন্টির নিলাম থেকে তাইজুল ইসলামকে দলে টেনেছিল ডারবান সুপার জায়ান্টস। তাতে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। তাঁর সে অপেক্ষা সহসা ফুরাচ্ছে না।
১ ঘণ্টা আগেজাহানারার যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে ইতিমধ্যে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবার আলোচিত ইস্যুতে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে পাশে পেলেন বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক অধিনায়ক। জাহানারা আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
৩ ঘণ্টা আগে
বগুড়ায় ২৮ অক্টোবর সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পর জিততেই যেন ভুলে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জেতা যেন দূরে থাক, আফগানদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছে না আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। সবশেষ দুই ওয়ানডেতে আফগান যুবাদের কাছে বাজেভাবে হারলেন তামিমরা।
৫ ঘণ্টা আগেক্রীড়া ডেস্ক

বগুড়ায় ২৮ অক্টোবর সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পর জিততেই যেন ভুলে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জেতা যেন দূরে থাক, আফগানদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছে না আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। সবশেষ দুই ওয়ানডেতে আফগান যুবাদের কাছে বাজেভাবে হারলেন তামিমরা।
ডাকওয়ার্থ লুইস এন্ড স্টার্ন মেথডে প্রথম ওয়ানডেতে ৫ রানে জয়ের পর বাংলাদেশের যুবারা সিরিজে আর জয়ই পায়নি। সেই বগুড়ায় এরপর সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে মাঠে গড়ানোর আগেই পরিত্যক্ত হয়েছে। ভেন্যু বদলে এরপর সিরিজের তিন ওয়ানডে চলে যায় রাজশাহীতে। কিন্তু নতুন ভেন্যুতে এসে দাঁড়াতেই পারছে না বাংলাদেশ। পরশু তৃতীয় ওয়ানডেতে আফগানরা জিতেছে ১০২ রানে। সেই রাজশাহীতে আজ চতুর্থ ওয়ানডেতে ৪৭ রানে হেরে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে তামিমের বাংলাদেশ। ১০০ রানের আগে গুটিয়ে যাওয়ার মতো যে লজ্জাজনক অবস্থায় পড়তে গিয়েছিল বাংলাদেশ, সেই অবস্থা থেকেই শুধু উদ্ধার হয়েছে স্বাগতিকেরা।
২৫৯ রানের লক্ষ্যে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটাররা চোখে সর্ষেফুল দেখতে থাকেন আফগানিস্তানের আগুনে বোলিংয়ে। ৭.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ৪০ রানে পরিণত হয় স্বাগতিকেরা। কত দ্রুত ম্যাচ জিততে পারে, আফগানরা ছিল সেই অপেক্ষাতেই। কিন্তু সফরকারীদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান দেবাশীষ সরকার দেবা ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। সপ্তম উইকেটে ১০০ রানের জুটি গড়েন দেবাশীষ-আব্দুল্লাহ। ৩৩তম ওভারের প্রথম বলে দেবাশীষকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নুরিস্তানি ওমরজাই। আট নম্বরে নেমে ৬১ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৫১ রান করেন দেবাশীষ।
দেবাশীষ আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৩২.১ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৮ রান। হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ১০৭ বলে ১১১ রানের সমীকরণ মেলানোর সম্ভাবনা তখনো টিকে ছিল স্বাগতিকদের সামনে। উইকেটে একমাত্র আশার প্রদীপ হয়ে ছিলেন আব্দুল্লাহ। তবে ৬.২২ রানরেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনি সেভাবে খেলতে পারেননি। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে আব্দুল্লাহ স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েছেন নাজিফুল্লাহ আমিরিকে তুলে মারতে গিয়ে। ১৬০ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় আব্দুল্লাহ করেন ৯৫ রান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ আটকে যায় ৯ উইকেটে ২১১ রানে। আফগানিস্তানের আব্দুল আজিজ খান ৬.২ ওভারে ২৮ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ চতুর্থ ওয়ানডেতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক মাহবুব খান। ইনিংস সর্বোচ্চ ১১২ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। ১১৬ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১০ চার ও ৪ ছক্কা। পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে ২৫৮ রানে গুটিয়ে যায় আফগানরা। যেখানে ২৭ রান যোগ করতে শেষ ৬ উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের ইকবাল হোসেন ইমন ৯.৩ ওভারে ৫১ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট। পরশু রাজশাহীতে সিরিজের পঞ্চম তথা শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান।

বগুড়ায় ২৮ অক্টোবর সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পর জিততেই যেন ভুলে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জেতা যেন দূরে থাক, আফগানদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছে না আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। সবশেষ দুই ওয়ানডেতে আফগান যুবাদের কাছে বাজেভাবে হারলেন তামিমরা।
ডাকওয়ার্থ লুইস এন্ড স্টার্ন মেথডে প্রথম ওয়ানডেতে ৫ রানে জয়ের পর বাংলাদেশের যুবারা সিরিজে আর জয়ই পায়নি। সেই বগুড়ায় এরপর সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে মাঠে গড়ানোর আগেই পরিত্যক্ত হয়েছে। ভেন্যু বদলে এরপর সিরিজের তিন ওয়ানডে চলে যায় রাজশাহীতে। কিন্তু নতুন ভেন্যুতে এসে দাঁড়াতেই পারছে না বাংলাদেশ। পরশু তৃতীয় ওয়ানডেতে আফগানরা জিতেছে ১০২ রানে। সেই রাজশাহীতে আজ চতুর্থ ওয়ানডেতে ৪৭ রানে হেরে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে তামিমের বাংলাদেশ। ১০০ রানের আগে গুটিয়ে যাওয়ার মতো যে লজ্জাজনক অবস্থায় পড়তে গিয়েছিল বাংলাদেশ, সেই অবস্থা থেকেই শুধু উদ্ধার হয়েছে স্বাগতিকেরা।
২৫৯ রানের লক্ষ্যে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটাররা চোখে সর্ষেফুল দেখতে থাকেন আফগানিস্তানের আগুনে বোলিংয়ে। ৭.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ৪০ রানে পরিণত হয় স্বাগতিকেরা। কত দ্রুত ম্যাচ জিততে পারে, আফগানরা ছিল সেই অপেক্ষাতেই। কিন্তু সফরকারীদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান দেবাশীষ সরকার দেবা ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। সপ্তম উইকেটে ১০০ রানের জুটি গড়েন দেবাশীষ-আব্দুল্লাহ। ৩৩তম ওভারের প্রথম বলে দেবাশীষকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নুরিস্তানি ওমরজাই। আট নম্বরে নেমে ৬১ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৫১ রান করেন দেবাশীষ।
দেবাশীষ আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৩২.১ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৮ রান। হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ১০৭ বলে ১১১ রানের সমীকরণ মেলানোর সম্ভাবনা তখনো টিকে ছিল স্বাগতিকদের সামনে। উইকেটে একমাত্র আশার প্রদীপ হয়ে ছিলেন আব্দুল্লাহ। তবে ৬.২২ রানরেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনি সেভাবে খেলতে পারেননি। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে আব্দুল্লাহ স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েছেন নাজিফুল্লাহ আমিরিকে তুলে মারতে গিয়ে। ১৬০ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় আব্দুল্লাহ করেন ৯৫ রান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ আটকে যায় ৯ উইকেটে ২১১ রানে। আফগানিস্তানের আব্দুল আজিজ খান ৬.২ ওভারে ২৮ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ চতুর্থ ওয়ানডেতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক মাহবুব খান। ইনিংস সর্বোচ্চ ১১২ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। ১১৬ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১০ চার ও ৪ ছক্কা। পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে ২৫৮ রানে গুটিয়ে যায় আফগানরা। যেখানে ২৭ রান যোগ করতে শেষ ৬ উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের ইকবাল হোসেন ইমন ৯.৩ ওভারে ৫১ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট। পরশু রাজশাহীতে সিরিজের পঞ্চম তথা শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান।

জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম। নিজের ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার পেছনে কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়ের ভূমিকা ছিল বলেও দাবি করেছেন জাহানারা।
৬ ঘণ্টা আগে
এসএ টি–টোয়েন্টির নিলাম থেকে তাইজুল ইসলামকে দলে টেনেছিল ডারবান সুপার জায়ান্টস। তাতে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। তাঁর সে অপেক্ষা সহসা ফুরাচ্ছে না।
১ ঘণ্টা আগেজাহানারার যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে ইতিমধ্যে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবার আলোচিত ইস্যুতে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে পাশে পেলেন বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক অধিনায়ক। জাহানারা আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
৩ ঘণ্টা আগে
ফিফটি করে অন্যান্য ব্যাটারদের মতোই উদ্যাপন করতে গিয়েছিলেন ব্রায়ান চারি। কিন্তু সেই উদ্যাপনই বিপদ হলো তাঁর জন্য। নিজের ভুলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়েনর পথ ধরতে হয়েছে এই ব্যাটারকে।
৪ ঘণ্টা আগে