Ajker Patrika

ফ্লাইটে প্রবাসীর মৃত্যু: বৈমানিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিমান

মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৩, ১২: ৩৬
ফ্লাইটে প্রবাসীর মৃত্যু: বৈমানিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিমান

ফ্লাইটে এক প্রবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় বৈমানিকের গাফিলতি প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ বিমান সেই বৈমানিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে গত বুধবার বৈমানিক দিলদার আহমেদ তোফায়েলকে চিঠি দিয়েছে বিমান প্রশাসন।

 বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (প্রশাসন) মো. ছিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি অনুযায়ী, গত ১৫ জানুয়ারি জেদ্দা থেকে ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৩৩৬ ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ তোফায়েল। ফ্লাইটটি টেকঅফের পর সৌদি আরব প্রবাসী যাত্রী কবীর আহমেদ অসুস্থ বোধ করলে কেবিন ইনচার্জ বিষয়টি পাইলট ইন কমান্ড হিসেবে দিলদার আহমেদকে বিষয়টি অবহিত করেন। দিলদার আহমেদ ফ্লাইটে কোনো চিকিৎসক আছেন কি না মাইক্রোফোনে জানতে চান। এরপর ককপিট ত্যাগ করে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বাংকে চলে যান। নিয়মানুযায়ী, সিঙ্গেল সেট ফ্লাইটে বাংকে বিশ্রাম নেওয়া নিয়মবহির্ভূত।

ক্যাপ্টেনের অনুপস্থিতিতে ফ্লাইটে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) ফ্লাইট অপারেশনস ইন্সপেক্টর ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান ক্যাপ্টেনের আসনে বসেন, যা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী একজন লাইসেন্সহীন বৈমানিক পারেন না।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, অসুস্থ যাত্রীর কথা জানার পরও ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ ককপিট ত্যাগ করে বিশ্রাম নিতে বাংকে চলে যান। তবে ফ্লাইটে উপস্থিত যাত্রী ডা. এ বি এম হারুন অসুস্থ যাত্রীকে দেখেন এবং অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপ হওয়ায় কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে অবতরণের পরামর্শ দেন। কিন্তু দিলদার আহমেদের অনুপস্থিতিতে ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে অবতরণ না করে ফ্লাইটটি সরাসরি ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করান, যা প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। ফ্লাইট অবতরণের পর দিলদার আহমেদ অসুস্থ যাত্রীকে রেখেই উড়োজাহাজ ত্যাগ করেন।

এসব বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর ৫৫ ধারা অনুযায়ী অসদাচরণের শামিল এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে চিঠিতে বলা হয়। এ অবস্থায় ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ তোফায়েলের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা চিঠি পাওয়ার ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

অন্যথায় বিধি মোতাবেক দিলদার আহমেদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার হবে বলে উল্লেখ করে বিমান প্রশাসন।

কবীর আহমেদ ১৯৯৬ সাল থেকে সৌদি আরবে কাজ করতেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৫ জানুয়ারির ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণের আগেই জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্স, অ্যাম্বুলিফট ব্যবস্থা রাখা ও মেডিকেল সাপোর্টের জন্য ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জানানো হয়। ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করে ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে। উড়োজাহাজটি অবতরণের পর বিমানবন্দরে ১৪ নম্বর বে-তে থামার জায়গা দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে অ্যাম্বুলিফট ও অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় কবীর আহমেদকে নামাতে দেরি হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর উড়োজাহাজ থেকে কবীর আহমেদকে নামিয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জানতে আজকের পত্রিকা থেকে যোগাযোগ করা হলে বিমানের চুক্তিভিত্তিক ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ তোফায়েলের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ১৬ জানুয়ারির পর তাঁকে আর কোনো ফ্লাইট দেওয়া হয়নি বলে বিমান কর্মকর্তারা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত