রুমা মোদক
বগুড়া-৪ আসনের উপনির্বাচনে মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরে গেছেন হিরো আলম। হিরো আলম নামটাই এই যে এর আর কোনো বিশেষণ লাগে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে নেচে-গেয়ে সিনেমা করে বউ পিটিয়ে তিনি হিরো। হিরো আলম নামটাই খ্যাত। তিনি কী কেন, এসবের বিশদ বিবরণ লাগে না।
এত দিন এসব আলোচনা, সমালোচনা, ফান, পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তির মধ্যেই ছিল। তাঁর ভুলভাল উচ্চারণ, অযৌক্তিক কথাবার্তা—সবকিছুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। ধাক্কাটা লাগল এবার। উপনির্বাচনে যখন তিনি প্রার্থী হলেন, শুধু প্রার্থী হলেন তা-ই নয়, সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেন, সংবাদ শিরোনাম হলেন।
নিম্ন মেধা আর নিম্ন রুচির মানুষ হিরো আলম। নিম্নবিত্তও বটে। এই নিম্নবিত্তের ফলে কিংবা বলা যায় নিম্নবিত্তের হয়েও এই পরিচিতি আর সোকল্ড জনপ্রিয়তা পাওয়ার ফলে অনেক অতিবিপ্লবী তাঁকে শ্রমজীবীর প্রতিনিধি ঘোষণা দিয়ে পক্ষে দাঁড়িয়ে গেলেন।
এই যে নিম্ন রুচি, নিম্ন মেধা নিয়ে রাজত্ব কায়েম করার সুযোগ তৈরি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে, যে যা খুশি বলতে পারে, যা খুশি লিখতে পারে। যার ইচ্ছা দেখে ভিউ বাড়াতে পারে। যে কাউকে হিরো বানিয়ে দিতে পারে। এর একটা ভালো দিক আছে। এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারে তারাও, যারা হয়তো স্বজনপ্রীতি বা নেপোটিজমের কারণে যথেষ্ট মেধা কিংবা প্রতিভা কিংবা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সাফল্যের দেখা পেত না।
কিন্তু মুশকিল হয় তখন, যখন সম্পাদনাহীন যেমন ইচ্ছে খেলার মাঠ এই সোশ্যাল মিডিয়ায় হিরো আলমের মতো মেধাহীন, রুচিহীনেরা রাজত্ব জাঁকিয়ে বসে। জনরুচির প্রতিনিধিত্ব দেশে-বিদেশে প্রায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলে। আমরা প্রলেতারিয়েতের দোহাই দিয়ে কিংবা শ্রমজীবীর প্রতিনিধিত্বের কথা বলে হুজুগে তাদের বিশ্ব মান নির্ধারক খোলা ময়দানে ছেড়ে দিই। এই ছেড়ে দেওয়ায় কেবল যে হিরো আলম তাঁর জাত চেনান, তা কিন্তু নয়। আমরাও আমাদের জনরুচির জাত চেনাই।
হিরো আলম সোশ্যাল মিডিয়ায় যা খুশি তা করতে পারেন, আমরাও দেখে তাঁর ভিউ বাড়িয়ে তাঁকে আয়-রোজগারের পথ খুলে দিতে পারি। কিন্তু তাঁকে কোনোভাবে, কোনো যুক্তিতে আমাদের প্রতিনিধি বানিয়ে পরিচিতি গড়ে তুলতে সহায়তা করতে পারি কি না, সেটাও একটা ভাবার বিষয়।
বলতে পারেন মেধা, প্রতিভা, রুচি সব আপেক্ষিক ব্যাপার। আপনার কাছে যা চূড়ান্ত, তা আমার কাছে নয়। আমার কাছে যা, তা আপনার কাছে নয়। এই দেশকালে যা সত্য, অন্য দেশকালে নয়। সত্যি তাই। কিন্তু তারপরও ‘কিন্তু’ থাকে। আপনার বাসায় লিভিংরুম থাকে, বেডরুম থাকে, কিচেন থাকে, বাথরুম থাকে। উন্নত বাসস্থানে স্টোররুমও থাকে। আপনি কাউকে বাসা দেখাতে এনে নিশ্চয়ই বাসার স্টোররুমটাকে মানঘর হিসেবে দেখাবেন না।
যে আপনি অতি প্রগতি বা বিপ্লবী হয়ে হিরো আলমকে সমর্থন দিচ্ছেন, আপনিও ঘরে যে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরিধান করেন, তা পরেই বিয়েবাড়ি যাবেন না। সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে বের হলে শহরের গ্রহণযোগ্য সুন্দর জায়গাটিতেই যাবেন।
প্রকৃতি নাকি কোনো শূন্যতা পছন্দ করে না। আমাদের রাজনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা এবং সংস্কৃতিতে নানা কারণে এক ভ্যাকুয়াম তৈরি হয়েছে। আমাদের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ, বন্ধুরা ঐক্যভ্রষ্ট। এই ভ্যাকুয়াম পূরণ করতে আমাদের হিরো হয়ে উঠেছেন হিরো আলমেরা। সচেতন হয়ে এই প্রচেষ্টা রুখে দিতে না পারলে হতাশাময় এক ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করে আছে আমাদের জন্য।
মানুষের সভ্যতার ইতিহাস ক্রমেই নিজেকে শাণিত করার ইতিহাস। নিজেকে ক্রমাগত উত্তরণের পথে পরিচালিত করার ইতিহাস। যাঁরা নিম্নবর্গের দোহাই দিয়ে তাঁকে আইডল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের কাছে আমার প্রশ্ন, বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনার সন্তান কোথায় পড়ে? গান শেখার জন্য তাকে কোথায় পাঠান—ছায়ানটে? নৃত্য শেখার জন্য বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে? সবাই নিজে সৎ হোন। এর সার্বিক প্রভাবই পড়বে সমাজে।
বগুড়া-৪ আসনের উপনির্বাচনে মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরে গেছেন হিরো আলম। হিরো আলম নামটাই এই যে এর আর কোনো বিশেষণ লাগে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে নেচে-গেয়ে সিনেমা করে বউ পিটিয়ে তিনি হিরো। হিরো আলম নামটাই খ্যাত। তিনি কী কেন, এসবের বিশদ বিবরণ লাগে না।
এত দিন এসব আলোচনা, সমালোচনা, ফান, পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তির মধ্যেই ছিল। তাঁর ভুলভাল উচ্চারণ, অযৌক্তিক কথাবার্তা—সবকিছুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। ধাক্কাটা লাগল এবার। উপনির্বাচনে যখন তিনি প্রার্থী হলেন, শুধু প্রার্থী হলেন তা-ই নয়, সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেন, সংবাদ শিরোনাম হলেন।
নিম্ন মেধা আর নিম্ন রুচির মানুষ হিরো আলম। নিম্নবিত্তও বটে। এই নিম্নবিত্তের ফলে কিংবা বলা যায় নিম্নবিত্তের হয়েও এই পরিচিতি আর সোকল্ড জনপ্রিয়তা পাওয়ার ফলে অনেক অতিবিপ্লবী তাঁকে শ্রমজীবীর প্রতিনিধি ঘোষণা দিয়ে পক্ষে দাঁড়িয়ে গেলেন।
এই যে নিম্ন রুচি, নিম্ন মেধা নিয়ে রাজত্ব কায়েম করার সুযোগ তৈরি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে, যে যা খুশি বলতে পারে, যা খুশি লিখতে পারে। যার ইচ্ছা দেখে ভিউ বাড়াতে পারে। যে কাউকে হিরো বানিয়ে দিতে পারে। এর একটা ভালো দিক আছে। এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারে তারাও, যারা হয়তো স্বজনপ্রীতি বা নেপোটিজমের কারণে যথেষ্ট মেধা কিংবা প্রতিভা কিংবা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সাফল্যের দেখা পেত না।
কিন্তু মুশকিল হয় তখন, যখন সম্পাদনাহীন যেমন ইচ্ছে খেলার মাঠ এই সোশ্যাল মিডিয়ায় হিরো আলমের মতো মেধাহীন, রুচিহীনেরা রাজত্ব জাঁকিয়ে বসে। জনরুচির প্রতিনিধিত্ব দেশে-বিদেশে প্রায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলে। আমরা প্রলেতারিয়েতের দোহাই দিয়ে কিংবা শ্রমজীবীর প্রতিনিধিত্বের কথা বলে হুজুগে তাদের বিশ্ব মান নির্ধারক খোলা ময়দানে ছেড়ে দিই। এই ছেড়ে দেওয়ায় কেবল যে হিরো আলম তাঁর জাত চেনান, তা কিন্তু নয়। আমরাও আমাদের জনরুচির জাত চেনাই।
হিরো আলম সোশ্যাল মিডিয়ায় যা খুশি তা করতে পারেন, আমরাও দেখে তাঁর ভিউ বাড়িয়ে তাঁকে আয়-রোজগারের পথ খুলে দিতে পারি। কিন্তু তাঁকে কোনোভাবে, কোনো যুক্তিতে আমাদের প্রতিনিধি বানিয়ে পরিচিতি গড়ে তুলতে সহায়তা করতে পারি কি না, সেটাও একটা ভাবার বিষয়।
বলতে পারেন মেধা, প্রতিভা, রুচি সব আপেক্ষিক ব্যাপার। আপনার কাছে যা চূড়ান্ত, তা আমার কাছে নয়। আমার কাছে যা, তা আপনার কাছে নয়। এই দেশকালে যা সত্য, অন্য দেশকালে নয়। সত্যি তাই। কিন্তু তারপরও ‘কিন্তু’ থাকে। আপনার বাসায় লিভিংরুম থাকে, বেডরুম থাকে, কিচেন থাকে, বাথরুম থাকে। উন্নত বাসস্থানে স্টোররুমও থাকে। আপনি কাউকে বাসা দেখাতে এনে নিশ্চয়ই বাসার স্টোররুমটাকে মানঘর হিসেবে দেখাবেন না।
যে আপনি অতি প্রগতি বা বিপ্লবী হয়ে হিরো আলমকে সমর্থন দিচ্ছেন, আপনিও ঘরে যে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরিধান করেন, তা পরেই বিয়েবাড়ি যাবেন না। সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে বের হলে শহরের গ্রহণযোগ্য সুন্দর জায়গাটিতেই যাবেন।
প্রকৃতি নাকি কোনো শূন্যতা পছন্দ করে না। আমাদের রাজনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা এবং সংস্কৃতিতে নানা কারণে এক ভ্যাকুয়াম তৈরি হয়েছে। আমাদের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ, বন্ধুরা ঐক্যভ্রষ্ট। এই ভ্যাকুয়াম পূরণ করতে আমাদের হিরো হয়ে উঠেছেন হিরো আলমেরা। সচেতন হয়ে এই প্রচেষ্টা রুখে দিতে না পারলে হতাশাময় এক ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করে আছে আমাদের জন্য।
মানুষের সভ্যতার ইতিহাস ক্রমেই নিজেকে শাণিত করার ইতিহাস। নিজেকে ক্রমাগত উত্তরণের পথে পরিচালিত করার ইতিহাস। যাঁরা নিম্নবর্গের দোহাই দিয়ে তাঁকে আইডল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের কাছে আমার প্রশ্ন, বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনার সন্তান কোথায় পড়ে? গান শেখার জন্য তাকে কোথায় পাঠান—ছায়ানটে? নৃত্য শেখার জন্য বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে? সবাই নিজে সৎ হোন। এর সার্বিক প্রভাবই পড়বে সমাজে।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪