Ajker Patrika

চারণভূমিতে ‘গাড়লে’র খামার

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ২৩
চারণভূমিতে ‘গাড়লে’র খামার

যমুনার চরে শংকর জাতের ভেড়া ‘গাড়ল’ পালন করে সফল হয়েছেন আশরাফ আলী। তাও একেবারে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে।

এদিকে গাড়ল লালন-পালনে জড়িত থেকে কয়েকজনের বেকারত্ব ঘুচেছে।

চরাঞ্চলে গাড়ল ও ভেড়ার খামার করে লাভের মুখ দেখছেন বগুড়া সারিয়াকান্দির অবসরপ্রাপ্ত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ আলী।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র কালিতলা গ্রোয়েনবাঁধ। সেখান থেকে বর্ষাকালে নৌকা এবং শুকনা মৌসুমে মোটরসাইকেলে দুই কিলোমিটার দূরে পূর্বের দিকে গেলে বাটির চরে দেখা মিলবে আশরাফ আলীর গাড়ল ও ভেড়ার খামার। সেখানে গাড়ল ও ভেড়াগুলোর সারিবদ্ধভাবে পুট পুট শব্দ করে ঘাস খাওয়ার দৃশ্য খুবই চমৎকার।

খামারি আশরাফ আলীর ছেলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুস সাদাত বলেন, ‘বিদেশি একটি জার্নালে প্রকাশিত গাড়লের রক্তের সঙ্গে মানুষের রক্তের মিল আছে—এ রকম একটি খবর দেখতে পাই। দেখার পর মনে করি গাড়লের ভবিষ্যৎ চাহিদা অনেক বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি বাবাকে বলাতে বাবা গাড়লের খামার করার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠেন।’

আশরাফ আলী জানান, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর বাড়িতে বসে না থেকে আমার ছেলের পরামর্শে মাত্র ছয় মাস আগে বিভিন্ন বয়সের মাত্র ২৫টি গাড়ল দিয়ে খামার শুরু করেছিলাম। ২৫টি গাড়ল থেকে মাত্র ৮ মাসেই খামারে গাড়লের সংখ্যা হয়েছে ৬২টি। অল্প সময়েই আমি লাভের মুখ দেখতে পেরেছি।’

খামারটি লাভজনক মনে হওয়ায় কয়েক দিন আগে আরও ৩০টি গাড়ল খামারে তুলেছেন। এখন তাঁর খামারে মোট ৯২টি গাড়ল আছে।

সুস্বাদু হিসেবে বাজারে গাড়লের মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে বাজারে গাড়লের পাঁঠার মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েক মাসে তিনি ৩-৪ মাসের মাদি গাড়ল ৬ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছেন।

আশরাফ আলী বলেন, মাদি গাড়লের বয়স ৮ মাস পূর্ণ হলে এরা বাচ্চা দেওয়া শুরু করে। এরা সাধারণত ছাগল বা ভেড়ার মতো সব ধরনের খাবারই খেয়ে থাকে বলে সহজে এদের পালন করা যায়।

গাড়লের খামারের কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় অনেক ক্রেতা গাড়ল কিনতে অর্ডার দিয়েছেন। এতগুলো গাড়ল লালন-পালনে তাঁর প্রতি মাসে ১৫-১৬ হাজার টাকা ব্যয় হয় বলে জানান তিনি।

এদিকে গাড়ল লালন-পালনে জড়িত থেকে কয়েকজনের বেকার সমস্যার সমাধান হয়েছে। উপজেলার ধাপগ্রামের ছাত্র রবিন মিয়া খামারের শুরু থেকেই এ কাজের সঙ্গে যুক্ত। রবিন মিয়া বলেন, ‘লেখাপড়ার পাশাপাশি খামারে গাড়লের পরিচর্যা করি। প্রতি মাসে যে উপার্জন করি, তা দিয়ে আমার লেখাপড়ার খরচ চালিয়েও মা-বাবার সংসারে কিছু দিতে পারি।’

খামার পরিচ্ছন্নতা কাজে যুক্ত বৃদ্ধ জবেদ আলী। তিনি বলেন, এ থেকে যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার কোনোমতে চলে যায়।

সারিয়াকান্দি পশুসম্পদ কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকি বলেন, উপজেলায় এ পর্যন্ত দুটি গাড়লের খামার বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে। এর মধ্যে একটি রেজিস্ট্রিকৃত। তা ছাড়া সারা উপজেলায় বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি করে গাড়ল অনেকেই শখের বসে পালন করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সারিয়াকান্দি পশুসম্পদ কার্যালয়ের সারিয়াকান্দি সদরের মাঠকর্মী রেজাউল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারিয়াকান্দিতে গাড়ল পালনের সম্ভাবনা খুবই বেশি। সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে গাড়ল পালন দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত