অরুণ কর্মকার

এক দুর্যোগপূর্ণ পৃথিবীতে এখন আমাদের বসবাস। এই দুর্যোগ প্রধানত প্রাকৃতিক। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের বেহিসাবি কর্মকাণ্ডের কারণেও দুর্যোগ নেমে আসে। তবে যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি প্রভৃতিও মানুষের জন্য অপরিসীম দুর্ভোগ এবং মানবিক সংকট সৃষ্টি করে দুর্যোগ। এ ছাড়া আমাদের সমাজ, রাষ্ট্রও সৃষ্টি করছে নানা রকম দুর্যোগ। এগুলোর সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কোনো সংস্রব নেই। এই শ্রেণির দুর্যোগকে আমি বলেছি, ‘অতিপ্রাকৃতিক’; অর্থাৎ প্রকৃতিবহির্ভূত। রাষ্ট্রক্ষমতার ছত্রচ্ছায়ায় রাজনীতির প্রশ্রয়ে ক্ষমতাবান ও বিত্তশালী হয়ে ওঠা কিছু মানুষ এই অতিপ্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি করে চলেছেন। এই শ্রেণির দুর্যোগের সংখ্যাও এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। ফলে সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে বাড়ছে মানুষের আস্থাহীনতা, হতাশা।
প্রথমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথায় আসি। এই পৃথিবীর সব প্রাণ প্রকৃতিরই সন্তান। এর মধ্যে মানুষ হচ্ছে একমাত্র, যারা নিজেদের কৃতকর্ম দিয়ে অনবরত প্রকৃতিকে ক্ষতবিক্ষত করতে করতে বেজায় বৈরী করে তুলছে। এই বৈরিতা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে কোনো কোনো বিজ্ঞানী ধারণা করছেন, পৃথিবীর পরিবেশ-প্রতিবেশ আর প্রাণধারণের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকবে। ফলে ঋতুর বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্য লোপ পাবে।প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে দুর্যোগের প্রচণ্ডতা (ইনটেনসিটি)। জনদুর্ভোগ বাড়বে। এভাবেই আমাদের এই গ্রহ পৌঁছে যাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
কয়েক দিন আগে হয়ে গেল ঘূর্ণিঝড় রিমাল—এ ধরনের একেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিপুল সম্পদ বিনষ্ট এবং অসংখ্য মানুষের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। ওই ঝড়ে বিধ্বস্ত বাড়িঘর কত দিনে এবং কতখানি পুনর্নির্মাণ সম্ভব হবে, তা অনিশ্চিত। ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা সব এলাকায় পুনঃস্থাপন করা এখনো সম্ভব হয়নি। অথচ বিদ্যুৎকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোয় মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট-সেবা সবই এখন পর্যন্ত অচল।
রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় যে আমাদের দেশে নতুন হলো, তা নয়। তারপরও এ ধরনের ঝড়ের মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়, যা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। এই যে এবার অস্বাভাবিক গরম এবং একটানা প্রায় মাসব্যাপী তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়া; কালবৈশাখীর স্বল্পতা, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি, এগুলোও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফল বলে মনে করা হয়। তবে ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’-এর মতো সব প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে দায়ী করা এবং এ ক্ষেত্রে আমাদের দায় নগণ্য বলে দায়িত্ব শেষ করা সঠিক নয়। কারণ আমাদের দেশের পরিবেশ-প্রতিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি আমরা নিজেরাই করেছি এবং করে চলেছি। বায়ু-পানি-মাটিদূষণ এবং বনাঞ্চল উজাড় করার মতো ভয়াবহ পরিবেশবিধ্বংসী কাজে পৃথিবীতে আমাদের জুড়ি মেলা ভার। এ বিষয়ে তথ্যভিত্তিক কোনো সমীক্ষা হলে পৃথিবীতে আমাদের দেশের অবস্থান শীর্ষ পর্যায়েই থাকবে। কাজেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরূপ প্রভাব আমাদের ওপর একটু বেশিই পড়ছে এবং পড়বে।
এই একই কথা বলা যায়, ‘অতিপ্রাকৃতিক’ দুর্যোগগুলোর বিষয়েও। এই শ্রেণির দুর্যোগের মধ্যে প্রধান হলো দুর্নীতি। আমাদের ও রাষ্ট্রের জন্য এখন সবচেয়ে বড় দুর্যোগ হয়ে উঠেছে দুর্নীতি। একসময় একটানা কয়েক বছর আমরা বৈশ্বিক দুর্নীতির সূচকে শীর্ষস্থানে ছিলাম। এরপর ওই সূচক অনুযায়ী, আমাদের অবস্থান কিছুটা উন্নত হলেও বাস্তবে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশ ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। গণমাধ্যম কিছুদিন পরপরই এমন একেকটি দুর্নীতির ঘটনা জনসমক্ষে উপস্থাপন করে, যা অভাবনীয়, অচিন্তনীয়। যেমন এখন জনসমক্ষে আছে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির কাহিনি।
প্রসঙ্গক্রমে একটি ছোট্ট ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণা করি। বেনজীর আহমেদকে আমি প্রথম যখন দেখি, তিনি তখন পুলিশের একজন সহকারী কমিশনার (এসি)। প্রয়াত সচিব কামরুল ইসলাম সিদ্দিক তখন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী। তিনি এলজিইডিতে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছিলেন ঢাকার নগর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে। নগর ব্যবস্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা ছাড়াও ট্রাফিক এবং অন্য আরও কিছু বিষয়ে পুলিশের বিশেষ ভূমিকা থাকে বলে ওই সেমিনারে পুলিশ বিভাগেরও (ডিএমপি) অংশগ্রহণ ছিল। পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সেখানে গিয়েছিলেন বেনজীর আহমেদ। আমি সেখানে আমন্ত্রিত ছিলাম সংবাদকর্মী হিসেবে। ওই সেমিনারে বেনজীর আহমেদের উপস্থাপনা, বক্তব্য, তাঁর শারীরিক ভাষা প্রভৃতি দেখে পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পর্কে আমার খুব উচ্চ ধারণা হয়েছিল, যা এখনো আছে।
তারপর পুলিশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে বেনজীর আহমেদ দায়িত্ব পালন করেছেন। রাষ্ট্রের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজে নেতৃত্ব দিয়ে প্রশংসা পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত আইজিপি হিসেবে অবসরে গেছেন। এখন বের হচ্ছে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী-কন্যার নামে অঢেল সম্পদের হিসাব-নিকাশ। আমি বিস্মিত হই এই ভেবে যে কর্তব্যকর্মে একনিষ্ঠ এ রকম একজন দক্ষ কর্মকর্তা (আমার মতে) এতটা দুর্নীতিবাজ কীভাবে হতে পারেন? তিনি এত সম্পদ অল্পদিনে করলেও নিশ্চয়ই এক দিনে করেননি। কয়েক বছরে করেছেন। সেই বছরগুলোতে তিনি আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। সম্পদ বিবরণী দিয়েছেন। সেখানে কি এই সব সম্পদের উল্লেখ আছে? যদি থাকে, তাহলে কেন তাঁকে তখন প্রশ্ন করা হয়নি যে একজন নির্দিষ্ট বেতন-ভাতা পাওয়া সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তাঁর এত সম্পদ অর্জিত হতে পারে? আর যদি উল্লেখ না থাকে, তাহলে তো সম্পদগুলো অবৈধই। অনেকে বলেন, গণমাধ্যম কেন অবসরে যাওয়ার পর এ ধরনের দুর্নীতির খবর পায় এবং অনুসন্ধান করে? তারা কি আগেভাগে জানে না বা জানতে পারে না? নাকি জানতে চায় না? আমার মনে হয়, গণমাধ্যমের জন্য আমাদের দেশে তথ্যপ্রবাহ এতটা উন্মুক্ত নয় যে এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় যেকোনো সময়ই জানা যেতে পারে।
বেনজীর আহমেদের পাশাপাশি জনসমক্ষে এসেছে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিষয়। তাঁর ভাইদের অপরাধজগতে বিচরণ সম্পর্কে দেশবাসী অবহিত ছিল। কিন্তু তাঁর সম্পর্কে যে দুর্নীতি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও রয়েছে, তা জানা গেল বেনজীর আহমেদের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সম্পর্কেও দুদক অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দেওয়ায়।
অতিপ্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে আরেকটি বিষয় হচ্ছে অপরাধ। দুর্নীতির মতোই আলোচিত অপরাধের ঘটনাবলিও গণমাধ্যম মাঝেমধ্যেই প্রকাশ করে থাকে। যেমন এখন আলোচিত হচ্ছে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকাণ্ড এবং সোনা চোরাচালান চক্রে তাঁর সংশ্লিষ্টতা। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদেরও রাষ্ট্রক্ষমতা এবং রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা দেখা যায়। তাহলে কি বলা যায় যে অতিপ্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকড় রাষ্ট্রক্ষমতা ও রাজনীতির গভীরে প্রোথিত? সে ক্ষেত্রে এই সব দুর্যোগ থেকে দেশবাসীর পরিত্রাণের কোনো উপায় আছে কি?
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

এক দুর্যোগপূর্ণ পৃথিবীতে এখন আমাদের বসবাস। এই দুর্যোগ প্রধানত প্রাকৃতিক। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের বেহিসাবি কর্মকাণ্ডের কারণেও দুর্যোগ নেমে আসে। তবে যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি প্রভৃতিও মানুষের জন্য অপরিসীম দুর্ভোগ এবং মানবিক সংকট সৃষ্টি করে দুর্যোগ। এ ছাড়া আমাদের সমাজ, রাষ্ট্রও সৃষ্টি করছে নানা রকম দুর্যোগ। এগুলোর সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কোনো সংস্রব নেই। এই শ্রেণির দুর্যোগকে আমি বলেছি, ‘অতিপ্রাকৃতিক’; অর্থাৎ প্রকৃতিবহির্ভূত। রাষ্ট্রক্ষমতার ছত্রচ্ছায়ায় রাজনীতির প্রশ্রয়ে ক্ষমতাবান ও বিত্তশালী হয়ে ওঠা কিছু মানুষ এই অতিপ্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি করে চলেছেন। এই শ্রেণির দুর্যোগের সংখ্যাও এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। ফলে সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে বাড়ছে মানুষের আস্থাহীনতা, হতাশা।
প্রথমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথায় আসি। এই পৃথিবীর সব প্রাণ প্রকৃতিরই সন্তান। এর মধ্যে মানুষ হচ্ছে একমাত্র, যারা নিজেদের কৃতকর্ম দিয়ে অনবরত প্রকৃতিকে ক্ষতবিক্ষত করতে করতে বেজায় বৈরী করে তুলছে। এই বৈরিতা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে কোনো কোনো বিজ্ঞানী ধারণা করছেন, পৃথিবীর পরিবেশ-প্রতিবেশ আর প্রাণধারণের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকবে। ফলে ঋতুর বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্য লোপ পাবে।প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে দুর্যোগের প্রচণ্ডতা (ইনটেনসিটি)। জনদুর্ভোগ বাড়বে। এভাবেই আমাদের এই গ্রহ পৌঁছে যাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
কয়েক দিন আগে হয়ে গেল ঘূর্ণিঝড় রিমাল—এ ধরনের একেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিপুল সম্পদ বিনষ্ট এবং অসংখ্য মানুষের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। ওই ঝড়ে বিধ্বস্ত বাড়িঘর কত দিনে এবং কতখানি পুনর্নির্মাণ সম্ভব হবে, তা অনিশ্চিত। ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা সব এলাকায় পুনঃস্থাপন করা এখনো সম্ভব হয়নি। অথচ বিদ্যুৎকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোয় মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট-সেবা সবই এখন পর্যন্ত অচল।
রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় যে আমাদের দেশে নতুন হলো, তা নয়। তারপরও এ ধরনের ঝড়ের মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়, যা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। এই যে এবার অস্বাভাবিক গরম এবং একটানা প্রায় মাসব্যাপী তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়া; কালবৈশাখীর স্বল্পতা, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি, এগুলোও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফল বলে মনে করা হয়। তবে ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’-এর মতো সব প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে দায়ী করা এবং এ ক্ষেত্রে আমাদের দায় নগণ্য বলে দায়িত্ব শেষ করা সঠিক নয়। কারণ আমাদের দেশের পরিবেশ-প্রতিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি আমরা নিজেরাই করেছি এবং করে চলেছি। বায়ু-পানি-মাটিদূষণ এবং বনাঞ্চল উজাড় করার মতো ভয়াবহ পরিবেশবিধ্বংসী কাজে পৃথিবীতে আমাদের জুড়ি মেলা ভার। এ বিষয়ে তথ্যভিত্তিক কোনো সমীক্ষা হলে পৃথিবীতে আমাদের দেশের অবস্থান শীর্ষ পর্যায়েই থাকবে। কাজেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরূপ প্রভাব আমাদের ওপর একটু বেশিই পড়ছে এবং পড়বে।
এই একই কথা বলা যায়, ‘অতিপ্রাকৃতিক’ দুর্যোগগুলোর বিষয়েও। এই শ্রেণির দুর্যোগের মধ্যে প্রধান হলো দুর্নীতি। আমাদের ও রাষ্ট্রের জন্য এখন সবচেয়ে বড় দুর্যোগ হয়ে উঠেছে দুর্নীতি। একসময় একটানা কয়েক বছর আমরা বৈশ্বিক দুর্নীতির সূচকে শীর্ষস্থানে ছিলাম। এরপর ওই সূচক অনুযায়ী, আমাদের অবস্থান কিছুটা উন্নত হলেও বাস্তবে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশ ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। গণমাধ্যম কিছুদিন পরপরই এমন একেকটি দুর্নীতির ঘটনা জনসমক্ষে উপস্থাপন করে, যা অভাবনীয়, অচিন্তনীয়। যেমন এখন জনসমক্ষে আছে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির কাহিনি।
প্রসঙ্গক্রমে একটি ছোট্ট ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণা করি। বেনজীর আহমেদকে আমি প্রথম যখন দেখি, তিনি তখন পুলিশের একজন সহকারী কমিশনার (এসি)। প্রয়াত সচিব কামরুল ইসলাম সিদ্দিক তখন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী। তিনি এলজিইডিতে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছিলেন ঢাকার নগর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে। নগর ব্যবস্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা ছাড়াও ট্রাফিক এবং অন্য আরও কিছু বিষয়ে পুলিশের বিশেষ ভূমিকা থাকে বলে ওই সেমিনারে পুলিশ বিভাগেরও (ডিএমপি) অংশগ্রহণ ছিল। পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সেখানে গিয়েছিলেন বেনজীর আহমেদ। আমি সেখানে আমন্ত্রিত ছিলাম সংবাদকর্মী হিসেবে। ওই সেমিনারে বেনজীর আহমেদের উপস্থাপনা, বক্তব্য, তাঁর শারীরিক ভাষা প্রভৃতি দেখে পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পর্কে আমার খুব উচ্চ ধারণা হয়েছিল, যা এখনো আছে।
তারপর পুলিশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে বেনজীর আহমেদ দায়িত্ব পালন করেছেন। রাষ্ট্রের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজে নেতৃত্ব দিয়ে প্রশংসা পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত আইজিপি হিসেবে অবসরে গেছেন। এখন বের হচ্ছে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী-কন্যার নামে অঢেল সম্পদের হিসাব-নিকাশ। আমি বিস্মিত হই এই ভেবে যে কর্তব্যকর্মে একনিষ্ঠ এ রকম একজন দক্ষ কর্মকর্তা (আমার মতে) এতটা দুর্নীতিবাজ কীভাবে হতে পারেন? তিনি এত সম্পদ অল্পদিনে করলেও নিশ্চয়ই এক দিনে করেননি। কয়েক বছরে করেছেন। সেই বছরগুলোতে তিনি আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। সম্পদ বিবরণী দিয়েছেন। সেখানে কি এই সব সম্পদের উল্লেখ আছে? যদি থাকে, তাহলে কেন তাঁকে তখন প্রশ্ন করা হয়নি যে একজন নির্দিষ্ট বেতন-ভাতা পাওয়া সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তাঁর এত সম্পদ অর্জিত হতে পারে? আর যদি উল্লেখ না থাকে, তাহলে তো সম্পদগুলো অবৈধই। অনেকে বলেন, গণমাধ্যম কেন অবসরে যাওয়ার পর এ ধরনের দুর্নীতির খবর পায় এবং অনুসন্ধান করে? তারা কি আগেভাগে জানে না বা জানতে পারে না? নাকি জানতে চায় না? আমার মনে হয়, গণমাধ্যমের জন্য আমাদের দেশে তথ্যপ্রবাহ এতটা উন্মুক্ত নয় যে এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় যেকোনো সময়ই জানা যেতে পারে।
বেনজীর আহমেদের পাশাপাশি জনসমক্ষে এসেছে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিষয়। তাঁর ভাইদের অপরাধজগতে বিচরণ সম্পর্কে দেশবাসী অবহিত ছিল। কিন্তু তাঁর সম্পর্কে যে দুর্নীতি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও রয়েছে, তা জানা গেল বেনজীর আহমেদের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সম্পর্কেও দুদক অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দেওয়ায়।
অতিপ্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে আরেকটি বিষয় হচ্ছে অপরাধ। দুর্নীতির মতোই আলোচিত অপরাধের ঘটনাবলিও গণমাধ্যম মাঝেমধ্যেই প্রকাশ করে থাকে। যেমন এখন আলোচিত হচ্ছে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকাণ্ড এবং সোনা চোরাচালান চক্রে তাঁর সংশ্লিষ্টতা। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদেরও রাষ্ট্রক্ষমতা এবং রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা দেখা যায়। তাহলে কি বলা যায় যে অতিপ্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকড় রাষ্ট্রক্ষমতা ও রাজনীতির গভীরে প্রোথিত? সে ক্ষেত্রে এই সব দুর্যোগ থেকে দেশবাসীর পরিত্রাণের কোনো উপায় আছে কি?
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এক দুর্যোগপূর্ণ পৃথিবীতে এখন আমাদের বসবাস। এই দুর্যোগ প্রধানত প্রাকৃতিক। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের বেহিসাবি কর্মকাণ্ডের কারণেও দুর্যোগ নেমে আসে। তবে যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি প্রভৃতিও মানুষের জন্য অপরিসীম দুর্ভোগ এবং মানবিক সংকট সৃষ্টি করে দুর্যোগ। এ ছাড়া আমাদের সমাজ, রাষ্ট্রও সৃষ্টি করছে নানা রকম দুর্যোগ।
০১ জুন ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এক দুর্যোগপূর্ণ পৃথিবীতে এখন আমাদের বসবাস। এই দুর্যোগ প্রধানত প্রাকৃতিক। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের বেহিসাবি কর্মকাণ্ডের কারণেও দুর্যোগ নেমে আসে। তবে যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি প্রভৃতিও মানুষের জন্য অপরিসীম দুর্ভোগ এবং মানবিক সংকট সৃষ্টি করে দুর্যোগ। এ ছাড়া আমাদের সমাজ, রাষ্ট্রও সৃষ্টি করছে নানা রকম দুর্যোগ।
০১ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এক দুর্যোগপূর্ণ পৃথিবীতে এখন আমাদের বসবাস। এই দুর্যোগ প্রধানত প্রাকৃতিক। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের বেহিসাবি কর্মকাণ্ডের কারণেও দুর্যোগ নেমে আসে। তবে যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি প্রভৃতিও মানুষের জন্য অপরিসীম দুর্ভোগ এবং মানবিক সংকট সৃষ্টি করে দুর্যোগ। এ ছাড়া আমাদের সমাজ, রাষ্ট্রও সৃষ্টি করছে নানা রকম দুর্যোগ।
০১ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এক দুর্যোগপূর্ণ পৃথিবীতে এখন আমাদের বসবাস। এই দুর্যোগ প্রধানত প্রাকৃতিক। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের বেহিসাবি কর্মকাণ্ডের কারণেও দুর্যোগ নেমে আসে। তবে যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি প্রভৃতিও মানুষের জন্য অপরিসীম দুর্ভোগ এবং মানবিক সংকট সৃষ্টি করে দুর্যোগ। এ ছাড়া আমাদের সমাজ, রাষ্ট্রও সৃষ্টি করছে নানা রকম দুর্যোগ।
০১ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫