Ajker Patrika

নিরাপত্তা মৌলিক চাহিদা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২২, ০৩: ৩৯
নিরাপত্তা মৌলিক চাহিদা

প্রশ্ন: আমার বয়স ৩১ বছর, চাকরিজীবী। এক ছেলের সঙ্গে আমার আট বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ভালো পাত্রী পেয়ে একদিন হুট করে আমাকে না জানিয়েই সে বিয়ে করে। আমার এক বন্ধু তার বিয়ের খবর দেয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে, পরিবারের চাপে বিয়ে করেছে। যা-ই হোক, এক বছর ধরে নিজের মতো করে আমি পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। পরিবার আমার জন্য পাত্র দেখছে জানতে পেরে, সে বিভিন্নভাবে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ফোন করে জানিয়েছে, আমার কাছে ফিরতে চায়। তবে, কোনো ধরনের দায়িত্ব পালন না করার শর্তে। পরকীয়াকে সব সময় অনৈতিক কাজ হিসেবেই দেখেছি। এ ব্যাপারে অনড় থাকায় এখন সে ডিভোর্স দিয়ে আমাকে বিয়ে করতে চায়। আমি আসলে কিছু বুঝতে পারছি না। সে ফিরে এলে আমি তাকে আগের মতো ভালোবাসতে পারব বলে মনে হচ্ছে না। টান, অনুভূতি হয়তো এখনো আছে। কিন্তু তাকে আর বিশ্বাস করা যায় কি না, সেটা নিয়ে দ্বিধায় আছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, সিলেট

পরামর্শ
সম্পর্ককে আপনি কীভাবে দেখছেন তা নিয়ে ভাবুন, নিজেকে প্রশ্ন করুন। অন্যের প্রতি ভালো লাগা ও ভালোবাসার অনুভূতি তৈরি হয় কিন্তু সেগুলো কখনো চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতো চিরকাল একই থাকে না। যথাযথ পরিচর্যা করে একটি সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা অনেক দিন ধরে রাখা যায়। এরপরও সময়ের সঙ্গে ভালোবাসার ধরন এবং প্রকাশেও ভিন্নতা আসে। সেগুলোও বিবেচনায় রাখতে হয়।

আপনি যে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন, এর অর্থ আপনি বিয়ের মতো একটা সম্পর্কে জড়ানোর আগে ভাবছেন। এটি ভালো দিক। এখানে আপনার আবেগ জড়িত। আবার কঠিন বাস্তবতাও আপনাকে ভাবাচ্ছে। এই দুইয়ের মাঝে সমন্বয় করতে আপনি হিমশিম খাচ্ছেন। আরেকটু সময় নিয়ে বিষয়গুলো পর্যালোচনা করুন, আপনার আবেগের জায়গাগুলো চিহ্নিত করুন, চ্যালেঞ্জগুলো খেয়াল করুন, জীবনসঙ্গী হিসেবে আপনার কথিত প্রেমিক সামগ্রিকভাবে কেমন মানুষ, সেটাও বিবেচনায় আনুন। চিন্তাগুলো আরও গুছিয়ে নিতে একটি ডায়েরি বা কাগজে লিখে ফেলুন। দেখবেন, আপনি নিজেই হিসাব মিলিয়ে ফেলেছেন।

প্রশ্ন: আমার বয়স ৩২ বছর। চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকতে হয়। প্রতি তিন মাস অন্তর আমাকে বাসে করে বাড়ি যেতে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে পত্রপত্রিকায় নারী নির্যাতনের বিভিন্ন খবর দেখে আমি আতঙ্কিত; একটা বিষয় আমাকে অনেক বেশি চিন্তায় ফেলেছে সেটা হলো, আমাকে তো বাসে করে বাড়ি যেতে হবে। আমার সঙ্গে যদি এমন কিছু হয়? এ ধরনের ঘটনার পর মানসিকভাবে আমি শান্তি পাচ্ছি না। এই মানসিক পীড়ন থেকে উত্তরণের উপায় কী?

মৌমিতা, ঢাকা

পরামর্শ
নিরাপত্তার ব্যত্যয় ঘটলে যেকোনো মানুষ উদ্বিগ্ন হয়। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো অনেককেই উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। চলতি পথে নারীর নিরাপত্তাঝুঁকি আশঙ্কাজনক বেড়েছে। এ রকম প্রেক্ষাপটে আপনি যে মানসিক পীড়নে ভুগছেন তা বুঝতে পারছি। আপনি নিশ্চয় যাত্রাপথে আরও বেশি সজাগ থাকবেন। যেসব যানবাহন এবং যাত্রার সময়ে ঝুঁকি বেশি, সেগুলো বাদ দেওয়া ভালো। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে, সেসব নম্বর হাতের কাছে রাখতে পারেন।
নিজের শরীর ও মনকে শান্ত আর ধীর-স্থির রাখতে শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম খুবই কার্যকরী।

পরামর্শ দিয়েছেন: ড. আজহারুল ইসলাম, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট, সহযোগী অধ্যাপক, এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত