Ajker Patrika

চালের দাম ও প্রধানমন্ত্রীর উক্তি

সম্পাদকীয়
চালের দাম ও প্রধানমন্ত্রীর উক্তি

দাম বাড়ার ঘটনাকে স্বাভাবিক বলে বর্ণনা করছিলেন, সে সময় প্রধানমন্ত্রীর বলা এ কথা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সার্বিকভাবে দেশের সাধারণ মানুষ চালের দামের কারণে যে হিমশিম খাচ্ছে, সেটাও প্রধানমন্ত্রীর বলা কথা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

যে খাদ্যপণ্যগুলোর ঘাটতি আছে আমাদের দেশে কিংবা যে পণ্যগুলো শুধুই আমদানিনির্ভর, সেই পণ্যগুলো আমদানি করতে হলে সত্যিই বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে। একদিকে ডলার-সংকট, অন্যদিকে উৎপাদনে ঘাটতি অনেক ক্ষেত্রেই জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করলে আর্থিক এই সীমাবদ্ধতার কথা বোঝা কঠিন হয় না। সারা বিশ্বেই বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর দাম নানাভাবে বেড়েছে, যা শুধু ভর্তুকি দিয়ে স্থির রাখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার—আমাদের দেশে পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়ার সঙ্গে সব সময় বিশ্ববাজারের দাম বাড়া-কমার কোনো সম্পর্ক থাকে না। বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে আমাদের দেশেও বাড়ে। কিন্তু বিশ্ববাজারে দাম কমলে সেই খবর যেন আমাদের কান পর্যন্ত এসে পৌঁছায় না। এটা যে মুনাফাখোরদের কাণ্ড, সে কথা যে কেউ বুঝতে পারে। ফলে ব্যবসাক্ষেত্রে আমাদের সততার দীনতা সেখানে প্রকাশমান।

আর চাল? প্রধানমন্ত্রী তো ঠিকই বলেছেন, চালের ভরা মৌসুমে দেশে উৎপাদিত চাল বাড়তি দরে যদি কিনতে হয় তাহলে বুঝতে হবে, এটি এ দেশেরই একশ্রেণির খারাপ মানুষের কাজ। এই খারাপ মানুষেরা বিভিন্নভাবে ব্যবসাক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে। তাঁরা তো বিশ্বের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে দাম বাড়াননি, তাঁরা শুধু নিজেদের আখের গোছানোর জন্যই জনগণের জীবনকে অতিষ্ঠ করে রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী এই বাজে মানুষদের ব্যাপারে মুখ খুলেছেন, এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। এখন দেখতে হবে প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা চতুর দলবাজদের সঙ্গে এই চালের সিন্ডিকেটের সম্পর্কটা কী। যাঁরা চালের দাম বাড়ানোর সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাঁরা যে দলেরই হোক না কেন, তাঁদের পাকড়াও করা এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয়। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে খোলা বার্তা দিয়েছেন। এখন দেখতে হবে প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিতটি তাঁর সরকারের সুযোগ্য লোকেরা ধরতে পেরেছেন কি না এবং তারই পথ ধরে ১৭ কোটি মানুষের দেশের প্রধান খাদ্য চালের দাম সংগত জায়গায় ফিরে আসে কি না। আর যদি চালের দাম ঠিক জায়গায় ফিরে আসে, তাহলে পেঁয়াজ, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও সহনশীল জায়গায় চলে আসতে পারে। জানিয়ে রাখি, নির্বাচনের আগে গরুর মাংসের দাম কমেছিল, সেটাও বেড়ে গেছে, সে খবর প্রধানমন্তীর দপ্তরে পৌঁছেছে কি?

আমরা নিশ্চিত, চালের দাম সহনশীল পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে পারলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে। শুরু হোক কাজটা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত