Ajker Patrika

দৌরাত্ম্য কমেনি নিষিদ্ধ যানের, বেড়েছে ভোগান্তি

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ৩৫
দৌরাত্ম্য কমেনি নিষিদ্ধ যানের, বেড়েছে ভোগান্তি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রশাসনের কাছে মুচলেকা দিয়েও দৌরাত্ম্য কমেনি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের। আগেই মতোই গ্রামীণ সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ এসব যানবাহন। অথচ এসব যানবাহনের নেই সড়কের চলার লাইসেন্স। মজবুত ব্রেক না থাকলেও যানবাহন গুলো চলে বেপরোয়া গতিতে। বিকট শব্দ করে চলা এই যানবাহনে বাজানো হয় হাইড্রোলিক হর্ন।

যানবাহনে বালু, মাটি, ধুলাসহ যাবতীয় মালামাল বহনের সময় থাকে না ঢাকনা। সড়কের ওপরে পড়ছে মালামালগুলো। এতে অন্যান্য যানবাহন ও মানুষের চলাচলে বাড়ছে ভোগান্তি। শব্দ ও বায়ুদূষণে অতিষ্ঠ গ্রামাঞ্চলের মানুষ।

এ নিয়ে গত ১২ জানুয়ারি আজকের পত্রিকায় ‘কুমারখালীতে নিষিদ্ধ যানবাহনে অতিষ্ঠ মানুষ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসন যানবাহনের মালিক ও চালকদের তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। এবং প্রয়োজনের তাগিদে মুচলেকা প্রদানের মাধ্যমে মৌখিকভাবে যানবাহনের চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু মুচলেকার কোনো শর্তই মানছেন না নিষিদ্ধ এসব যানের মালিক ও চালকেরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যানবাহনগুলো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জনসাধারণের প্রয়োজনের তাগিদে শর্ত সাপেক্ষে চলছে এসব যান। শর্ত না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্রে আরও জানা গেছে, চালক ও মালিকেরা অঙ্গীকার করেন যে, তাঁরা মুচলেকার পর হতে রাস্তার বা জনগণের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করবেন না। ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি ব্যবহার করব না। অনভিজ্ঞ লোকের কাছে গাড়ি চালাতে দেবেন না। অতিরিক্ত মাল বহন করবেন না। অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাব না। মাটি/কাদা/বালি বোঝায় করলে তা ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখবেন। রাস্তায় বালু/মাটি/কাদা ফেলবেন না। রাস্তায় মাটি/কাদা/বালি পড়লে নিজ দায়িত্বে সেগুলো পরিষ্কার করবেন। এ অঙ্গীকারনামার ব্যত্যয় ঘটলে তাঁদের ওপর অর্পিত যেকোনো আইনগত দণ্ডের বিরুদ্ধে তাঁদের বক্তব্য থাকবে না।

কিন্তু বাস্তবে চালক ও মালিক মুচলেকার কোনো শর্তই পালন করছেন না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এলাকাবাসী জানান, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যানবাহনগুলোর দৌরাত্ম্য কমেনি। তারা আগেই মতো হাইড্রোলিক হর্ন বাজিয়ে বেপরোয়া গতিতে সড়ক দাপাচ্ছে। মালামালগুলোর কোনো ঢাকনা থাকছে না। সড়কের ওপর মালামাল পড়ে অন্যান্য যানবাহন ও জনগণের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।

গত সপ্তাহে উপজেলার যদুবয়রা, পান্টি, বাগুলাট, চাপড়া, শিলাইদহ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, মাটি, কাঁদা মাটি, বালু, ধুলা, ইটসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে সড়কে চলছে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নিষিদ্ধ যান। হাইড্রোলিক হর্নের সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে বেপরোয়া গতি। মালামালের ওপরে কোনো ঢাকনা নেই। মালামালগুলো সড়কে পড়ছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে যদুবয়রা ইউনিয়নের জয়বাংলা বাজারে দেখা মেলে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের চেকপোস্ট। এ সময় কথা হয় যদুবয়রা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) আব্দুল কাদের জিলানীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিষিদ্ধ গাড়িগুলো জনগণের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই করে ঢাকনা না দিয়ে চলছে।’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের কোনো বৈধতা নেই। মহাসড়কে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো আছে।

ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘ইতিমধ্যে গাড়ি ও মালিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। শুধু প্রয়োজনের তাগিদে মুচলেকার মাধ্যমে মৌখিক অনুমতিতে চলছে। শর্ত ভাঙলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত