মামুনুর রশীদ

আশা ছিল একাত্তরের মার্চ মাস এবং তার গৌরবগাথা নিয়ে মাসব্যাপীই লেখালেখি করব। কিন্তু তা আর হলো না। একের পর এক বিস্ফোরণে মৃত্যু এবং পঞ্চগড়ের ধর্মভিত্তিক সংঘাত মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্বহীনতা এক চূড়ান্ত মাত্রায় চলে গেছে। আবার ওদিকে চট্টগ্রামে রেল ইঞ্জিনের ওপর বাস চালিয়ে দেওয়ায়ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বিস্ফোরণ এবং মৃত্যু যেন আমাদের নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কোনো ধর্ম আছে পৃথিবীতে, যেখানে বিভাজন নেই? খ্রিষ্টানধর্মে বিভক্তি আছে, বৌদ্ধধর্মে আছে, পৃথিবীতে আরও যত ধর্ম আছে, সব ধর্মেই নানাভাবে বিভক্তি আছে, ভিন্ন মতামতও আছে। আবার ধর্মে ধর্মেও আছে সংঘাত। এসবের মীমাংসা হাজার বছর ধরেও হয়নি। কিন্তু এসব নিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ, দাঙ্গা অব্যাহতভাবে চলছে। সাধারণ মানুষ এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না। কিছু উসকানিদাতা আছে, যারা এসবে অনুঘটকের কাজ করে থাকে। অদ্ভুত সব দাবি ওঠায় তারা। যেমন আহমদিয়া বা কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে! কে অমুসলিম ঘোষণা করবে? কোনো সরকারের পক্ষে কি এ দাবি মানা কোনো দিন সম্ভব? যে যার ধর্ম পালন করুক, এটা নিশ্চিত করাই তো সরকারের কাজ হওয়া উচিত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্ম নিয়ে বিভেদের পেছনে সম্পদ লুণ্ঠনের একটা বিষয় থাকে। না হলে এসব ঘটনায় মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় কেন? ভাঙচুর হয় কেন? লুটপাটের ঘটনাই বা কী করে ঘটে?
এসব ব্যাপারে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল একে অপরকে দোষারোপ করবে, জনগণ এসবের কোনোটাকেই বিশ্বাস করবে না। মাঝখান থেকে আসল অপরাধীরা নিরাপদে বসে তাদের ব্যবসাটি চালিয়ে যাবে। ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার না করার জন্য কোনো দলই কোনো দিন দৃঢ় অবস্থান নেয়নি। ভবিষ্যতেও নেবে বলে মনে হয় না।
বিস্ফোরণ ঘটছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, দুর্ঘটনায় মানুষ বেঘোরে প্রাণ দিচ্ছে—এসব নতুন কিছু নয়। দুর্ঘটনার সময় এবং তারপর দু-চার দিন এ নিয়ে কথাবার্তা হয়। আবার নতুন কোনো ডামাডোলে সেসব মানুষ ভুলেও যায়। বিস্মরণপ্রিয়তাই যেন একমাত্র ভরসা।
দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়, তারা প্রধানত দুর্বল, দরিদ্র মানুষ। বড় কোনো জায়গায় যাওয়ার ক্ষমতাও তাদের নেই। দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মীয়-স্বজনের আহাজারির ছবি সংবাদপত্রে ছাপা হয়। তারপর আর কোনো খোঁজ থাকে না। পত্রপত্রিকায় মাঝে মাঝে দু-চারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় বটে, কিন্তু সেগুলো কি কেউ দেখে? দাহ্য পদার্থ রাখা, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ কি না, এসব তদারকির দায়িত্ব যেসব প্রতিষ্ঠানের, তারা কি যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন? সীতাকুণ্ডে গ্যাস কারখানাগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিকঠাক আছে কি না, তা কি কোনো সংস্থা কখনো খতিয়ে দেখেছে? দেখলে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনাগুলো ঘটত না।
রাজনৈতিক নেতাদের এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময়ই নেই। তাঁদের প্রাত্যহিক জীবন বড়ই কর্মব্যস্ত। আর এখন তো সেলফোনের কল্যাণে তাঁদের হিসাব সেকেন্ডের। একটু অবসর নেই, কোথাও কোনো মনোযোগ দেওয়ার সময় নেই। ফোন করতে করতেই সময় শেষ। আর এই ফোনাফোনি দেশের বা মানুষের কোনো কল্যাণের নয়। একেবারেই যার যার অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়। তদবির, বড় লিডারকে ম্যানেজ করা, ছোট লিডারকে বশে রাখা এবং ক্যাডারদের কল্যাণে তাদের দিন কেটে যায়।
আমলারা একসময় ন্যায়বিচারের জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। অনেক দিন হলো সেসব পাট চুকে গেছে। প্রমোশন, পোস্টিং, অবসরের পরও কীভাবে চাকরিতে থাকা যায়—তার জন্য মরিয়া। ক্ষমতাসীন দলের প্রতি কে কতটা অনুগত, তা প্রমাণ করতে গিয়েই তাঁরা দিশেহারা।
তারপর আছে দুর্নীতি। দুর্নীতি বিষয়টিতে আর কোনো রাখঢাক নেই, তা এখন প্রকাশ্য। টাকা না হলে কোনো কাজ হবে না, এটা প্রায় সর্বস্বীকৃত। আমলা-রাজনীতিবিদদের অনেক দায়িত্ব। তাঁদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে লেখাপড়া করে। তাঁদের প্রচুর টাকা দরকার। একটা সেকেন্ড হোম করার তাগিদ সর্বক্ষণ তাড়া করছে।
বর্তমানে এই দৌড়ে নেমেছেন স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরাও। পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবদের হাতেও এখন টাকা আসার ব্যাপার আছে। আগে ভোটের একটা ব্যাপার ছিল, এখন তা-ও নেই। ক্ষমতাসীন দলের নমিনেশন পেলেই ভোট এখন ‘ম্যানেজ’ হয়ে যায়।
অথচ যাদের কথা এতক্ষণ বলা হলো, তাদের কাজটা কী? রাজনৈতিক দলের কর্মীদের কাজটাই-বা কী? কার ঘরে চাল নেই, খাবার নেই, অসুস্থতায় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই—তাঁদের কাজ হলো ওইসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো, খোঁজখবর নেওয়া। কিন্তু এই যে দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত চিকিৎসাব্যবস্থা, তার বিরুদ্ধেও কখনো তাঁদের সোচ্চার হতে দেখা গেছে? কীভাবে সরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমনকি চিকিৎসারত মুমূর্ষু রোগীদের সর্বস্বান্ত করছে—তার কোনো প্রতিবাদ তাঁরা করেছেন? বরং উল্টো রাজনৈতিক পরিচয়ে সেখান থেকে কিছু কামানো যায় কি না, তার ধান্দা করেন।
দেশের স্বাধীনতার জন্য একসময় আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে, মানুষ প্রাণ দিয়েছে, দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে, কিন্তু কিসের জন্য এই স্বাধীন দেশ, কার জন্য—সে হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন কি রাজনৈতিক দলগুলো কখনো অনুভব করেছে? শুভ যা কিছু কখনো হয়েছে, তা-ও নাগরিকদের উদ্যোগে।
মানুষের শেখার ব্যবস্থা শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিকে তা আরও পাকাপোক্ত হয়। উচ্চমাধ্যমিকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পরিপক্ব হয়ে মূল্যবোধে যুক্ত হতে থাকে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এসব নিয়ে গবেষণা করার কথা। কিন্তু প্রাথমিকেই শিশু শিখে যায়, তার শিক্ষকটি লেখাপড়ায় ভালো নন; কিন্তু লাখ লাখ টাকা দিয়ে চাকরিটি নিয়েছেন। মাধ্যমিকে গিয়ে এই অভিজ্ঞতাই সম্প্রসারিত হয়, উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে আরও একটা নোংরা চেহারা দেখে। লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত ডিগ্রি নিয়ে বেকারত্বের জীবন বেছে নেয়। শত শত ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পায় না। টাকার খেলায় বিপর্যস্ত হয়ে একটা রাজনৈতিক দলের ক্যাডার বনে গিয়ে কিছু টাকাপয়সার মালিক হওয়ার চেষ্টা করে। দুর্নীতি তখন হাতছানি দিয়ে ডাকে। তাই সুবুদ্ধি, দেশপ্রেম—এসব তার কাছে ধরা দেয় না। এ অবস্থাতেই কিছু লোক দায়িত্বপূর্ণ কিছু কাজও পেয়ে যায়। দুর্নীতির হাতছানি তখন সে অগ্রাহ্য করতে পারে না। দায়িত্বে অবহেলা করে। অসৎ হলে, দুর্নীতিবাজ হলে, সমাজ তাকে ঘৃণা করে না। ঘরে-বাইরে বেশ একটা সম্মান মেলে।
তাই বিস্ফোরণে মানুষ মারা গেলে অপরাধী আত্মরক্ষার সুযোগ খোঁজে। সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেল, চালক আর তাঁর সহকারী পালাল, মালিক প্রভাবশালী কারও তদবির নিয়ে হাজির হলো, ব্যস, মিটে গেল। কিছু টাকাপয়সার লেনদেন হলো, এতেই পরিসমাপ্তি ঘটল সবকিছুর। কে কাকে বোঝাবে যে আহমদিয়াদের ওপর আক্রমণ অন্যায্য, নিজের ধর্মটি ঠিকমতো পালন করো। বাড়িঘর ভাঙচুর, মারপিট, হত্যা—এসব ধর্মের অনুশাসন নয়। এ কাজটি যে রাজনৈতিক দলের, তা বোঝার চেষ্টা কোনো রাজনৈতিক দল করেনি। কারণ, যিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বটি হাতে পেয়েছেন, তিনিও তো ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ওই জায়গায় যাননি। তাঁরও যে নেতৃত্বের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা নেই, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা কোত্থেকে আসবে?
আমরা পঞ্চাশ-ষাটের দশকে ছাত্র হিসেবেও মানুষের শ্রদ্ধা পেয়েছি। খেয়ার মাঝিও ছাত্রদের কাছ থেকে ভাড়া নিতে চাইতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র পেলে তার কাছ থেকে দেশের কিসে কল্যাণ হবে, তা জানতে চাইতেন। একাত্তরের মার্চ মাসে এই অভিজ্ঞতা আমাদের বারবার হয়েছে। তখন ভালো ত্যাগী শিক্ষক যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন রাজনীতিবিদ; যাঁরা জানতেন শিক্ষাটাই আসল। এখান থেকেই মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। এখন কি সেখান থেকে কিছু তৈরি হওয়া সম্ভব?
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব

আশা ছিল একাত্তরের মার্চ মাস এবং তার গৌরবগাথা নিয়ে মাসব্যাপীই লেখালেখি করব। কিন্তু তা আর হলো না। একের পর এক বিস্ফোরণে মৃত্যু এবং পঞ্চগড়ের ধর্মভিত্তিক সংঘাত মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্বহীনতা এক চূড়ান্ত মাত্রায় চলে গেছে। আবার ওদিকে চট্টগ্রামে রেল ইঞ্জিনের ওপর বাস চালিয়ে দেওয়ায়ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বিস্ফোরণ এবং মৃত্যু যেন আমাদের নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কোনো ধর্ম আছে পৃথিবীতে, যেখানে বিভাজন নেই? খ্রিষ্টানধর্মে বিভক্তি আছে, বৌদ্ধধর্মে আছে, পৃথিবীতে আরও যত ধর্ম আছে, সব ধর্মেই নানাভাবে বিভক্তি আছে, ভিন্ন মতামতও আছে। আবার ধর্মে ধর্মেও আছে সংঘাত। এসবের মীমাংসা হাজার বছর ধরেও হয়নি। কিন্তু এসব নিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ, দাঙ্গা অব্যাহতভাবে চলছে। সাধারণ মানুষ এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না। কিছু উসকানিদাতা আছে, যারা এসবে অনুঘটকের কাজ করে থাকে। অদ্ভুত সব দাবি ওঠায় তারা। যেমন আহমদিয়া বা কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে! কে অমুসলিম ঘোষণা করবে? কোনো সরকারের পক্ষে কি এ দাবি মানা কোনো দিন সম্ভব? যে যার ধর্ম পালন করুক, এটা নিশ্চিত করাই তো সরকারের কাজ হওয়া উচিত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্ম নিয়ে বিভেদের পেছনে সম্পদ লুণ্ঠনের একটা বিষয় থাকে। না হলে এসব ঘটনায় মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় কেন? ভাঙচুর হয় কেন? লুটপাটের ঘটনাই বা কী করে ঘটে?
এসব ব্যাপারে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল একে অপরকে দোষারোপ করবে, জনগণ এসবের কোনোটাকেই বিশ্বাস করবে না। মাঝখান থেকে আসল অপরাধীরা নিরাপদে বসে তাদের ব্যবসাটি চালিয়ে যাবে। ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার না করার জন্য কোনো দলই কোনো দিন দৃঢ় অবস্থান নেয়নি। ভবিষ্যতেও নেবে বলে মনে হয় না।
বিস্ফোরণ ঘটছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, দুর্ঘটনায় মানুষ বেঘোরে প্রাণ দিচ্ছে—এসব নতুন কিছু নয়। দুর্ঘটনার সময় এবং তারপর দু-চার দিন এ নিয়ে কথাবার্তা হয়। আবার নতুন কোনো ডামাডোলে সেসব মানুষ ভুলেও যায়। বিস্মরণপ্রিয়তাই যেন একমাত্র ভরসা।
দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়, তারা প্রধানত দুর্বল, দরিদ্র মানুষ। বড় কোনো জায়গায় যাওয়ার ক্ষমতাও তাদের নেই। দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মীয়-স্বজনের আহাজারির ছবি সংবাদপত্রে ছাপা হয়। তারপর আর কোনো খোঁজ থাকে না। পত্রপত্রিকায় মাঝে মাঝে দু-চারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় বটে, কিন্তু সেগুলো কি কেউ দেখে? দাহ্য পদার্থ রাখা, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ কি না, এসব তদারকির দায়িত্ব যেসব প্রতিষ্ঠানের, তারা কি যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন? সীতাকুণ্ডে গ্যাস কারখানাগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিকঠাক আছে কি না, তা কি কোনো সংস্থা কখনো খতিয়ে দেখেছে? দেখলে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনাগুলো ঘটত না।
রাজনৈতিক নেতাদের এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময়ই নেই। তাঁদের প্রাত্যহিক জীবন বড়ই কর্মব্যস্ত। আর এখন তো সেলফোনের কল্যাণে তাঁদের হিসাব সেকেন্ডের। একটু অবসর নেই, কোথাও কোনো মনোযোগ দেওয়ার সময় নেই। ফোন করতে করতেই সময় শেষ। আর এই ফোনাফোনি দেশের বা মানুষের কোনো কল্যাণের নয়। একেবারেই যার যার অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়। তদবির, বড় লিডারকে ম্যানেজ করা, ছোট লিডারকে বশে রাখা এবং ক্যাডারদের কল্যাণে তাদের দিন কেটে যায়।
আমলারা একসময় ন্যায়বিচারের জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। অনেক দিন হলো সেসব পাট চুকে গেছে। প্রমোশন, পোস্টিং, অবসরের পরও কীভাবে চাকরিতে থাকা যায়—তার জন্য মরিয়া। ক্ষমতাসীন দলের প্রতি কে কতটা অনুগত, তা প্রমাণ করতে গিয়েই তাঁরা দিশেহারা।
তারপর আছে দুর্নীতি। দুর্নীতি বিষয়টিতে আর কোনো রাখঢাক নেই, তা এখন প্রকাশ্য। টাকা না হলে কোনো কাজ হবে না, এটা প্রায় সর্বস্বীকৃত। আমলা-রাজনীতিবিদদের অনেক দায়িত্ব। তাঁদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে লেখাপড়া করে। তাঁদের প্রচুর টাকা দরকার। একটা সেকেন্ড হোম করার তাগিদ সর্বক্ষণ তাড়া করছে।
বর্তমানে এই দৌড়ে নেমেছেন স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরাও। পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবদের হাতেও এখন টাকা আসার ব্যাপার আছে। আগে ভোটের একটা ব্যাপার ছিল, এখন তা-ও নেই। ক্ষমতাসীন দলের নমিনেশন পেলেই ভোট এখন ‘ম্যানেজ’ হয়ে যায়।
অথচ যাদের কথা এতক্ষণ বলা হলো, তাদের কাজটা কী? রাজনৈতিক দলের কর্মীদের কাজটাই-বা কী? কার ঘরে চাল নেই, খাবার নেই, অসুস্থতায় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই—তাঁদের কাজ হলো ওইসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো, খোঁজখবর নেওয়া। কিন্তু এই যে দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত চিকিৎসাব্যবস্থা, তার বিরুদ্ধেও কখনো তাঁদের সোচ্চার হতে দেখা গেছে? কীভাবে সরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমনকি চিকিৎসারত মুমূর্ষু রোগীদের সর্বস্বান্ত করছে—তার কোনো প্রতিবাদ তাঁরা করেছেন? বরং উল্টো রাজনৈতিক পরিচয়ে সেখান থেকে কিছু কামানো যায় কি না, তার ধান্দা করেন।
দেশের স্বাধীনতার জন্য একসময় আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে, মানুষ প্রাণ দিয়েছে, দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে, কিন্তু কিসের জন্য এই স্বাধীন দেশ, কার জন্য—সে হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন কি রাজনৈতিক দলগুলো কখনো অনুভব করেছে? শুভ যা কিছু কখনো হয়েছে, তা-ও নাগরিকদের উদ্যোগে।
মানুষের শেখার ব্যবস্থা শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিকে তা আরও পাকাপোক্ত হয়। উচ্চমাধ্যমিকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পরিপক্ব হয়ে মূল্যবোধে যুক্ত হতে থাকে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এসব নিয়ে গবেষণা করার কথা। কিন্তু প্রাথমিকেই শিশু শিখে যায়, তার শিক্ষকটি লেখাপড়ায় ভালো নন; কিন্তু লাখ লাখ টাকা দিয়ে চাকরিটি নিয়েছেন। মাধ্যমিকে গিয়ে এই অভিজ্ঞতাই সম্প্রসারিত হয়, উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে আরও একটা নোংরা চেহারা দেখে। লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত ডিগ্রি নিয়ে বেকারত্বের জীবন বেছে নেয়। শত শত ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পায় না। টাকার খেলায় বিপর্যস্ত হয়ে একটা রাজনৈতিক দলের ক্যাডার বনে গিয়ে কিছু টাকাপয়সার মালিক হওয়ার চেষ্টা করে। দুর্নীতি তখন হাতছানি দিয়ে ডাকে। তাই সুবুদ্ধি, দেশপ্রেম—এসব তার কাছে ধরা দেয় না। এ অবস্থাতেই কিছু লোক দায়িত্বপূর্ণ কিছু কাজও পেয়ে যায়। দুর্নীতির হাতছানি তখন সে অগ্রাহ্য করতে পারে না। দায়িত্বে অবহেলা করে। অসৎ হলে, দুর্নীতিবাজ হলে, সমাজ তাকে ঘৃণা করে না। ঘরে-বাইরে বেশ একটা সম্মান মেলে।
তাই বিস্ফোরণে মানুষ মারা গেলে অপরাধী আত্মরক্ষার সুযোগ খোঁজে। সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেল, চালক আর তাঁর সহকারী পালাল, মালিক প্রভাবশালী কারও তদবির নিয়ে হাজির হলো, ব্যস, মিটে গেল। কিছু টাকাপয়সার লেনদেন হলো, এতেই পরিসমাপ্তি ঘটল সবকিছুর। কে কাকে বোঝাবে যে আহমদিয়াদের ওপর আক্রমণ অন্যায্য, নিজের ধর্মটি ঠিকমতো পালন করো। বাড়িঘর ভাঙচুর, মারপিট, হত্যা—এসব ধর্মের অনুশাসন নয়। এ কাজটি যে রাজনৈতিক দলের, তা বোঝার চেষ্টা কোনো রাজনৈতিক দল করেনি। কারণ, যিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বটি হাতে পেয়েছেন, তিনিও তো ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ওই জায়গায় যাননি। তাঁরও যে নেতৃত্বের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা নেই, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা কোত্থেকে আসবে?
আমরা পঞ্চাশ-ষাটের দশকে ছাত্র হিসেবেও মানুষের শ্রদ্ধা পেয়েছি। খেয়ার মাঝিও ছাত্রদের কাছ থেকে ভাড়া নিতে চাইতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র পেলে তার কাছ থেকে দেশের কিসে কল্যাণ হবে, তা জানতে চাইতেন। একাত্তরের মার্চ মাসে এই অভিজ্ঞতা আমাদের বারবার হয়েছে। তখন ভালো ত্যাগী শিক্ষক যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন রাজনীতিবিদ; যাঁরা জানতেন শিক্ষাটাই আসল। এখান থেকেই মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। এখন কি সেখান থেকে কিছু তৈরি হওয়া সম্ভব?
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
মামুনুর রশীদ

আশা ছিল একাত্তরের মার্চ মাস এবং তার গৌরবগাথা নিয়ে মাসব্যাপীই লেখালেখি করব। কিন্তু তা আর হলো না। একের পর এক বিস্ফোরণে মৃত্যু এবং পঞ্চগড়ের ধর্মভিত্তিক সংঘাত মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্বহীনতা এক চূড়ান্ত মাত্রায় চলে গেছে। আবার ওদিকে চট্টগ্রামে রেল ইঞ্জিনের ওপর বাস চালিয়ে দেওয়ায়ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বিস্ফোরণ এবং মৃত্যু যেন আমাদের নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কোনো ধর্ম আছে পৃথিবীতে, যেখানে বিভাজন নেই? খ্রিষ্টানধর্মে বিভক্তি আছে, বৌদ্ধধর্মে আছে, পৃথিবীতে আরও যত ধর্ম আছে, সব ধর্মেই নানাভাবে বিভক্তি আছে, ভিন্ন মতামতও আছে। আবার ধর্মে ধর্মেও আছে সংঘাত। এসবের মীমাংসা হাজার বছর ধরেও হয়নি। কিন্তু এসব নিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ, দাঙ্গা অব্যাহতভাবে চলছে। সাধারণ মানুষ এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না। কিছু উসকানিদাতা আছে, যারা এসবে অনুঘটকের কাজ করে থাকে। অদ্ভুত সব দাবি ওঠায় তারা। যেমন আহমদিয়া বা কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে! কে অমুসলিম ঘোষণা করবে? কোনো সরকারের পক্ষে কি এ দাবি মানা কোনো দিন সম্ভব? যে যার ধর্ম পালন করুক, এটা নিশ্চিত করাই তো সরকারের কাজ হওয়া উচিত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্ম নিয়ে বিভেদের পেছনে সম্পদ লুণ্ঠনের একটা বিষয় থাকে। না হলে এসব ঘটনায় মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় কেন? ভাঙচুর হয় কেন? লুটপাটের ঘটনাই বা কী করে ঘটে?
এসব ব্যাপারে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল একে অপরকে দোষারোপ করবে, জনগণ এসবের কোনোটাকেই বিশ্বাস করবে না। মাঝখান থেকে আসল অপরাধীরা নিরাপদে বসে তাদের ব্যবসাটি চালিয়ে যাবে। ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার না করার জন্য কোনো দলই কোনো দিন দৃঢ় অবস্থান নেয়নি। ভবিষ্যতেও নেবে বলে মনে হয় না।
বিস্ফোরণ ঘটছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, দুর্ঘটনায় মানুষ বেঘোরে প্রাণ দিচ্ছে—এসব নতুন কিছু নয়। দুর্ঘটনার সময় এবং তারপর দু-চার দিন এ নিয়ে কথাবার্তা হয়। আবার নতুন কোনো ডামাডোলে সেসব মানুষ ভুলেও যায়। বিস্মরণপ্রিয়তাই যেন একমাত্র ভরসা।
দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়, তারা প্রধানত দুর্বল, দরিদ্র মানুষ। বড় কোনো জায়গায় যাওয়ার ক্ষমতাও তাদের নেই। দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মীয়-স্বজনের আহাজারির ছবি সংবাদপত্রে ছাপা হয়। তারপর আর কোনো খোঁজ থাকে না। পত্রপত্রিকায় মাঝে মাঝে দু-চারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় বটে, কিন্তু সেগুলো কি কেউ দেখে? দাহ্য পদার্থ রাখা, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ কি না, এসব তদারকির দায়িত্ব যেসব প্রতিষ্ঠানের, তারা কি যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন? সীতাকুণ্ডে গ্যাস কারখানাগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিকঠাক আছে কি না, তা কি কোনো সংস্থা কখনো খতিয়ে দেখেছে? দেখলে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনাগুলো ঘটত না।
রাজনৈতিক নেতাদের এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময়ই নেই। তাঁদের প্রাত্যহিক জীবন বড়ই কর্মব্যস্ত। আর এখন তো সেলফোনের কল্যাণে তাঁদের হিসাব সেকেন্ডের। একটু অবসর নেই, কোথাও কোনো মনোযোগ দেওয়ার সময় নেই। ফোন করতে করতেই সময় শেষ। আর এই ফোনাফোনি দেশের বা মানুষের কোনো কল্যাণের নয়। একেবারেই যার যার অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়। তদবির, বড় লিডারকে ম্যানেজ করা, ছোট লিডারকে বশে রাখা এবং ক্যাডারদের কল্যাণে তাদের দিন কেটে যায়।
আমলারা একসময় ন্যায়বিচারের জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। অনেক দিন হলো সেসব পাট চুকে গেছে। প্রমোশন, পোস্টিং, অবসরের পরও কীভাবে চাকরিতে থাকা যায়—তার জন্য মরিয়া। ক্ষমতাসীন দলের প্রতি কে কতটা অনুগত, তা প্রমাণ করতে গিয়েই তাঁরা দিশেহারা।
তারপর আছে দুর্নীতি। দুর্নীতি বিষয়টিতে আর কোনো রাখঢাক নেই, তা এখন প্রকাশ্য। টাকা না হলে কোনো কাজ হবে না, এটা প্রায় সর্বস্বীকৃত। আমলা-রাজনীতিবিদদের অনেক দায়িত্ব। তাঁদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে লেখাপড়া করে। তাঁদের প্রচুর টাকা দরকার। একটা সেকেন্ড হোম করার তাগিদ সর্বক্ষণ তাড়া করছে।
বর্তমানে এই দৌড়ে নেমেছেন স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরাও। পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবদের হাতেও এখন টাকা আসার ব্যাপার আছে। আগে ভোটের একটা ব্যাপার ছিল, এখন তা-ও নেই। ক্ষমতাসীন দলের নমিনেশন পেলেই ভোট এখন ‘ম্যানেজ’ হয়ে যায়।
অথচ যাদের কথা এতক্ষণ বলা হলো, তাদের কাজটা কী? রাজনৈতিক দলের কর্মীদের কাজটাই-বা কী? কার ঘরে চাল নেই, খাবার নেই, অসুস্থতায় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই—তাঁদের কাজ হলো ওইসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো, খোঁজখবর নেওয়া। কিন্তু এই যে দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত চিকিৎসাব্যবস্থা, তার বিরুদ্ধেও কখনো তাঁদের সোচ্চার হতে দেখা গেছে? কীভাবে সরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমনকি চিকিৎসারত মুমূর্ষু রোগীদের সর্বস্বান্ত করছে—তার কোনো প্রতিবাদ তাঁরা করেছেন? বরং উল্টো রাজনৈতিক পরিচয়ে সেখান থেকে কিছু কামানো যায় কি না, তার ধান্দা করেন।
দেশের স্বাধীনতার জন্য একসময় আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে, মানুষ প্রাণ দিয়েছে, দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে, কিন্তু কিসের জন্য এই স্বাধীন দেশ, কার জন্য—সে হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন কি রাজনৈতিক দলগুলো কখনো অনুভব করেছে? শুভ যা কিছু কখনো হয়েছে, তা-ও নাগরিকদের উদ্যোগে।
মানুষের শেখার ব্যবস্থা শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিকে তা আরও পাকাপোক্ত হয়। উচ্চমাধ্যমিকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পরিপক্ব হয়ে মূল্যবোধে যুক্ত হতে থাকে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এসব নিয়ে গবেষণা করার কথা। কিন্তু প্রাথমিকেই শিশু শিখে যায়, তার শিক্ষকটি লেখাপড়ায় ভালো নন; কিন্তু লাখ লাখ টাকা দিয়ে চাকরিটি নিয়েছেন। মাধ্যমিকে গিয়ে এই অভিজ্ঞতাই সম্প্রসারিত হয়, উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে আরও একটা নোংরা চেহারা দেখে। লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত ডিগ্রি নিয়ে বেকারত্বের জীবন বেছে নেয়। শত শত ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পায় না। টাকার খেলায় বিপর্যস্ত হয়ে একটা রাজনৈতিক দলের ক্যাডার বনে গিয়ে কিছু টাকাপয়সার মালিক হওয়ার চেষ্টা করে। দুর্নীতি তখন হাতছানি দিয়ে ডাকে। তাই সুবুদ্ধি, দেশপ্রেম—এসব তার কাছে ধরা দেয় না। এ অবস্থাতেই কিছু লোক দায়িত্বপূর্ণ কিছু কাজও পেয়ে যায়। দুর্নীতির হাতছানি তখন সে অগ্রাহ্য করতে পারে না। দায়িত্বে অবহেলা করে। অসৎ হলে, দুর্নীতিবাজ হলে, সমাজ তাকে ঘৃণা করে না। ঘরে-বাইরে বেশ একটা সম্মান মেলে।
তাই বিস্ফোরণে মানুষ মারা গেলে অপরাধী আত্মরক্ষার সুযোগ খোঁজে। সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেল, চালক আর তাঁর সহকারী পালাল, মালিক প্রভাবশালী কারও তদবির নিয়ে হাজির হলো, ব্যস, মিটে গেল। কিছু টাকাপয়সার লেনদেন হলো, এতেই পরিসমাপ্তি ঘটল সবকিছুর। কে কাকে বোঝাবে যে আহমদিয়াদের ওপর আক্রমণ অন্যায্য, নিজের ধর্মটি ঠিকমতো পালন করো। বাড়িঘর ভাঙচুর, মারপিট, হত্যা—এসব ধর্মের অনুশাসন নয়। এ কাজটি যে রাজনৈতিক দলের, তা বোঝার চেষ্টা কোনো রাজনৈতিক দল করেনি। কারণ, যিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বটি হাতে পেয়েছেন, তিনিও তো ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ওই জায়গায় যাননি। তাঁরও যে নেতৃত্বের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা নেই, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা কোত্থেকে আসবে?
আমরা পঞ্চাশ-ষাটের দশকে ছাত্র হিসেবেও মানুষের শ্রদ্ধা পেয়েছি। খেয়ার মাঝিও ছাত্রদের কাছ থেকে ভাড়া নিতে চাইতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র পেলে তার কাছ থেকে দেশের কিসে কল্যাণ হবে, তা জানতে চাইতেন। একাত্তরের মার্চ মাসে এই অভিজ্ঞতা আমাদের বারবার হয়েছে। তখন ভালো ত্যাগী শিক্ষক যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন রাজনীতিবিদ; যাঁরা জানতেন শিক্ষাটাই আসল। এখান থেকেই মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। এখন কি সেখান থেকে কিছু তৈরি হওয়া সম্ভব?
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব

আশা ছিল একাত্তরের মার্চ মাস এবং তার গৌরবগাথা নিয়ে মাসব্যাপীই লেখালেখি করব। কিন্তু তা আর হলো না। একের পর এক বিস্ফোরণে মৃত্যু এবং পঞ্চগড়ের ধর্মভিত্তিক সংঘাত মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্বহীনতা এক চূড়ান্ত মাত্রায় চলে গেছে। আবার ওদিকে চট্টগ্রামে রেল ইঞ্জিনের ওপর বাস চালিয়ে দেওয়ায়ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বিস্ফোরণ এবং মৃত্যু যেন আমাদের নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কোনো ধর্ম আছে পৃথিবীতে, যেখানে বিভাজন নেই? খ্রিষ্টানধর্মে বিভক্তি আছে, বৌদ্ধধর্মে আছে, পৃথিবীতে আরও যত ধর্ম আছে, সব ধর্মেই নানাভাবে বিভক্তি আছে, ভিন্ন মতামতও আছে। আবার ধর্মে ধর্মেও আছে সংঘাত। এসবের মীমাংসা হাজার বছর ধরেও হয়নি। কিন্তু এসব নিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ, দাঙ্গা অব্যাহতভাবে চলছে। সাধারণ মানুষ এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না। কিছু উসকানিদাতা আছে, যারা এসবে অনুঘটকের কাজ করে থাকে। অদ্ভুত সব দাবি ওঠায় তারা। যেমন আহমদিয়া বা কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে! কে অমুসলিম ঘোষণা করবে? কোনো সরকারের পক্ষে কি এ দাবি মানা কোনো দিন সম্ভব? যে যার ধর্ম পালন করুক, এটা নিশ্চিত করাই তো সরকারের কাজ হওয়া উচিত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্ম নিয়ে বিভেদের পেছনে সম্পদ লুণ্ঠনের একটা বিষয় থাকে। না হলে এসব ঘটনায় মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় কেন? ভাঙচুর হয় কেন? লুটপাটের ঘটনাই বা কী করে ঘটে?
এসব ব্যাপারে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল একে অপরকে দোষারোপ করবে, জনগণ এসবের কোনোটাকেই বিশ্বাস করবে না। মাঝখান থেকে আসল অপরাধীরা নিরাপদে বসে তাদের ব্যবসাটি চালিয়ে যাবে। ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার না করার জন্য কোনো দলই কোনো দিন দৃঢ় অবস্থান নেয়নি। ভবিষ্যতেও নেবে বলে মনে হয় না।
বিস্ফোরণ ঘটছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, দুর্ঘটনায় মানুষ বেঘোরে প্রাণ দিচ্ছে—এসব নতুন কিছু নয়। দুর্ঘটনার সময় এবং তারপর দু-চার দিন এ নিয়ে কথাবার্তা হয়। আবার নতুন কোনো ডামাডোলে সেসব মানুষ ভুলেও যায়। বিস্মরণপ্রিয়তাই যেন একমাত্র ভরসা।
দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়, তারা প্রধানত দুর্বল, দরিদ্র মানুষ। বড় কোনো জায়গায় যাওয়ার ক্ষমতাও তাদের নেই। দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মীয়-স্বজনের আহাজারির ছবি সংবাদপত্রে ছাপা হয়। তারপর আর কোনো খোঁজ থাকে না। পত্রপত্রিকায় মাঝে মাঝে দু-চারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় বটে, কিন্তু সেগুলো কি কেউ দেখে? দাহ্য পদার্থ রাখা, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ কি না, এসব তদারকির দায়িত্ব যেসব প্রতিষ্ঠানের, তারা কি যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন? সীতাকুণ্ডে গ্যাস কারখানাগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিকঠাক আছে কি না, তা কি কোনো সংস্থা কখনো খতিয়ে দেখেছে? দেখলে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনাগুলো ঘটত না।
রাজনৈতিক নেতাদের এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময়ই নেই। তাঁদের প্রাত্যহিক জীবন বড়ই কর্মব্যস্ত। আর এখন তো সেলফোনের কল্যাণে তাঁদের হিসাব সেকেন্ডের। একটু অবসর নেই, কোথাও কোনো মনোযোগ দেওয়ার সময় নেই। ফোন করতে করতেই সময় শেষ। আর এই ফোনাফোনি দেশের বা মানুষের কোনো কল্যাণের নয়। একেবারেই যার যার অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়। তদবির, বড় লিডারকে ম্যানেজ করা, ছোট লিডারকে বশে রাখা এবং ক্যাডারদের কল্যাণে তাদের দিন কেটে যায়।
আমলারা একসময় ন্যায়বিচারের জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। অনেক দিন হলো সেসব পাট চুকে গেছে। প্রমোশন, পোস্টিং, অবসরের পরও কীভাবে চাকরিতে থাকা যায়—তার জন্য মরিয়া। ক্ষমতাসীন দলের প্রতি কে কতটা অনুগত, তা প্রমাণ করতে গিয়েই তাঁরা দিশেহারা।
তারপর আছে দুর্নীতি। দুর্নীতি বিষয়টিতে আর কোনো রাখঢাক নেই, তা এখন প্রকাশ্য। টাকা না হলে কোনো কাজ হবে না, এটা প্রায় সর্বস্বীকৃত। আমলা-রাজনীতিবিদদের অনেক দায়িত্ব। তাঁদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে লেখাপড়া করে। তাঁদের প্রচুর টাকা দরকার। একটা সেকেন্ড হোম করার তাগিদ সর্বক্ষণ তাড়া করছে।
বর্তমানে এই দৌড়ে নেমেছেন স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরাও। পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবদের হাতেও এখন টাকা আসার ব্যাপার আছে। আগে ভোটের একটা ব্যাপার ছিল, এখন তা-ও নেই। ক্ষমতাসীন দলের নমিনেশন পেলেই ভোট এখন ‘ম্যানেজ’ হয়ে যায়।
অথচ যাদের কথা এতক্ষণ বলা হলো, তাদের কাজটা কী? রাজনৈতিক দলের কর্মীদের কাজটাই-বা কী? কার ঘরে চাল নেই, খাবার নেই, অসুস্থতায় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই—তাঁদের কাজ হলো ওইসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো, খোঁজখবর নেওয়া। কিন্তু এই যে দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত চিকিৎসাব্যবস্থা, তার বিরুদ্ধেও কখনো তাঁদের সোচ্চার হতে দেখা গেছে? কীভাবে সরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমনকি চিকিৎসারত মুমূর্ষু রোগীদের সর্বস্বান্ত করছে—তার কোনো প্রতিবাদ তাঁরা করেছেন? বরং উল্টো রাজনৈতিক পরিচয়ে সেখান থেকে কিছু কামানো যায় কি না, তার ধান্দা করেন।
দেশের স্বাধীনতার জন্য একসময় আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে, মানুষ প্রাণ দিয়েছে, দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে, কিন্তু কিসের জন্য এই স্বাধীন দেশ, কার জন্য—সে হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন কি রাজনৈতিক দলগুলো কখনো অনুভব করেছে? শুভ যা কিছু কখনো হয়েছে, তা-ও নাগরিকদের উদ্যোগে।
মানুষের শেখার ব্যবস্থা শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিকে তা আরও পাকাপোক্ত হয়। উচ্চমাধ্যমিকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পরিপক্ব হয়ে মূল্যবোধে যুক্ত হতে থাকে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এসব নিয়ে গবেষণা করার কথা। কিন্তু প্রাথমিকেই শিশু শিখে যায়, তার শিক্ষকটি লেখাপড়ায় ভালো নন; কিন্তু লাখ লাখ টাকা দিয়ে চাকরিটি নিয়েছেন। মাধ্যমিকে গিয়ে এই অভিজ্ঞতাই সম্প্রসারিত হয়, উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে আরও একটা নোংরা চেহারা দেখে। লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত ডিগ্রি নিয়ে বেকারত্বের জীবন বেছে নেয়। শত শত ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পায় না। টাকার খেলায় বিপর্যস্ত হয়ে একটা রাজনৈতিক দলের ক্যাডার বনে গিয়ে কিছু টাকাপয়সার মালিক হওয়ার চেষ্টা করে। দুর্নীতি তখন হাতছানি দিয়ে ডাকে। তাই সুবুদ্ধি, দেশপ্রেম—এসব তার কাছে ধরা দেয় না। এ অবস্থাতেই কিছু লোক দায়িত্বপূর্ণ কিছু কাজও পেয়ে যায়। দুর্নীতির হাতছানি তখন সে অগ্রাহ্য করতে পারে না। দায়িত্বে অবহেলা করে। অসৎ হলে, দুর্নীতিবাজ হলে, সমাজ তাকে ঘৃণা করে না। ঘরে-বাইরে বেশ একটা সম্মান মেলে।
তাই বিস্ফোরণে মানুষ মারা গেলে অপরাধী আত্মরক্ষার সুযোগ খোঁজে। সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেল, চালক আর তাঁর সহকারী পালাল, মালিক প্রভাবশালী কারও তদবির নিয়ে হাজির হলো, ব্যস, মিটে গেল। কিছু টাকাপয়সার লেনদেন হলো, এতেই পরিসমাপ্তি ঘটল সবকিছুর। কে কাকে বোঝাবে যে আহমদিয়াদের ওপর আক্রমণ অন্যায্য, নিজের ধর্মটি ঠিকমতো পালন করো। বাড়িঘর ভাঙচুর, মারপিট, হত্যা—এসব ধর্মের অনুশাসন নয়। এ কাজটি যে রাজনৈতিক দলের, তা বোঝার চেষ্টা কোনো রাজনৈতিক দল করেনি। কারণ, যিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বটি হাতে পেয়েছেন, তিনিও তো ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ওই জায়গায় যাননি। তাঁরও যে নেতৃত্বের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা নেই, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা কোত্থেকে আসবে?
আমরা পঞ্চাশ-ষাটের দশকে ছাত্র হিসেবেও মানুষের শ্রদ্ধা পেয়েছি। খেয়ার মাঝিও ছাত্রদের কাছ থেকে ভাড়া নিতে চাইতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র পেলে তার কাছ থেকে দেশের কিসে কল্যাণ হবে, তা জানতে চাইতেন। একাত্তরের মার্চ মাসে এই অভিজ্ঞতা আমাদের বারবার হয়েছে। তখন ভালো ত্যাগী শিক্ষক যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন রাজনীতিবিদ; যাঁরা জানতেন শিক্ষাটাই আসল। এখান থেকেই মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। এখন কি সেখান থেকে কিছু তৈরি হওয়া সম্ভব?
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আশা ছিল একাত্তরের মার্চ মাস এবং তার গৌরবগাথা নিয়ে মাসব্যাপীই লেখালেখি করব। কিন্তু তা আর হলো না। একের পর এক বিস্ফোরণে মৃত্যু এবং পঞ্চগড়ের ধর্মভিত্তিক সংঘাত মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্বহীনতা এক চূড়ান্ত মাত্রায় চলে গেছে। আবার ওদিকে চট্টগ্রামে রেল ইঞ্জিনের ওপর বাস চালিয়ে দ
০৯ মার্চ ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আশা ছিল একাত্তরের মার্চ মাস এবং তার গৌরবগাথা নিয়ে মাসব্যাপীই লেখালেখি করব। কিন্তু তা আর হলো না। একের পর এক বিস্ফোরণে মৃত্যু এবং পঞ্চগড়ের ধর্মভিত্তিক সংঘাত মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্বহীনতা এক চূড়ান্ত মাত্রায় চলে গেছে। আবার ওদিকে চট্টগ্রামে রেল ইঞ্জিনের ওপর বাস চালিয়ে দ
০৯ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আশা ছিল একাত্তরের মার্চ মাস এবং তার গৌরবগাথা নিয়ে মাসব্যাপীই লেখালেখি করব। কিন্তু তা আর হলো না। একের পর এক বিস্ফোরণে মৃত্যু এবং পঞ্চগড়ের ধর্মভিত্তিক সংঘাত মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্বহীনতা এক চূড়ান্ত মাত্রায় চলে গেছে। আবার ওদিকে চট্টগ্রামে রেল ইঞ্জিনের ওপর বাস চালিয়ে দ
০৯ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আশা ছিল একাত্তরের মার্চ মাস এবং তার গৌরবগাথা নিয়ে মাসব্যাপীই লেখালেখি করব। কিন্তু তা আর হলো না। একের পর এক বিস্ফোরণে মৃত্যু এবং পঞ্চগড়ের ধর্মভিত্তিক সংঘাত মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্বহীনতা এক চূড়ান্ত মাত্রায় চলে গেছে। আবার ওদিকে চট্টগ্রামে রেল ইঞ্জিনের ওপর বাস চালিয়ে দ
০৯ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫