রজত কান্তি রায়, ঢাকা
চমকাবেন না। টেরাকোটা মানে পোড়ামাটির কাজ। তা আবার খাওয়া যায় নাকি! না, যায় না। কিন্তু রেস্তোরাঁর নাম ‘টেরাকোটা’ হলে তাতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায় বৈকি। বলছি ফরিদপুর শহরের দৃষ্টিনন্দন রেস্তোরাঁ টেরাকোটার কথা।
ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি এলাকার অম্বিকা সড়কে ভরদুপুরে টেরাকোটা শোভিত বাড়িটি দেখে একটু ধাক্কা খেয়েছিলাম— সেটা স্বীকার করি। টাইলসে ঢাকা বাড়ি হরহামেশা চোখে পড়লেও প্রায় পুরো দেয়াল টেরাকোটা প্ল্যাক দিয়ে মোড়ানো বাড়ি এখন দেখা যায় না সাধারণত। সে দেখা যেত আজ থেকে তিন-চার শ বছর বা তারও আগে, মন্দির আর মসজিদের গায়ে। তার প্রমাণ আজও আছে কান্তজিউ, পুঠিয়া মন্দির কিংবা বাঘা মসজিদের দেয়ালে। কিন্তু এই একুশ শতকে ফরিদপুর শহরে টেরাকোটার কাজ বিস্মিত করেছিল বৈকি! ফলে থামতে হলো। রিকশাও ছাড়তে হলো। সঙ্গে থাকা বিখ্যাত তরুণ গিরিধর দের ইশারায় ভেতরে যাওয়া হলো।
সে আর এক বিস্ময়!
কাচের দেয়াল ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই নাকে ভুরভুর করে ঢুকে পড়ল বিরিয়ানির সুগন্ধ। একটু পর তাকে ছাপিয়ে নাকে ঝাপটা মারল বেশি করে রসুন দিয়ে রান্না করা কোনো খাবারের ঝাঁজালো ঘ্রাণ। এ ঘ্রাণ যেন স্টার্টার! ভরদুপুরে ক্ষুধা বাড়িয়ে তোলে। আর অবধারিতভাবে কানে বেজে চলল কাটলারি ও ক্রোকারিজের ঠোকাঠুকিতে তৈরি হওয়া চিরপরিচিত টুংটাং শব্দ। প্রায় নিঃশব্দে চলছে প্যান্টে শার্ট গোঁজা ওয়েটারদের আনাগোনা। পাশের টেবিল থেকে আসা গরম-গরম খাবারের ঘ্রাণ নাকে ঝাপটা মারছে। মসলার সুবাসে টের পাওয়া যাচ্ছে, এখানে বারবিকিউ কোরাল পাওয়া যায়। পাওয়া যায় ফিশ ফিঙ্গার। মেন্যু কার্ড হাতড়ে দেখা গেল আপনি যা খেতে চান তার প্রায় সবই এখানে পাওয়া যায়।
চিকেন কিংবা চিজ বার্গার, চিকেন উইংস, তন্দুরি চিকেন, মাটন কারি, মাশরুম চিকেন, বেসনে ভাজা চিংড়ি বা ফ্রাইড প্রন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বিরিয়ানি, ফ্রাইড রাইস— কী নেই টেরাকোটায়? মেন্যু কার্ডে দামও যে আহামরি লেখা আছে, তাও নয়। মোটামুটি দুই শ টাকার মধ্যে একজনের দুপুরের খাবার হয়ে যায়। পরিবার নিয়ে খেতে গেলে হাজার টাকায় চারজনের অনায়াসে খাওয়া হয়ে যাবে টেরাকোটায়।
ভরদুপুর হলেও রেস্তোরাঁটি বেশ ফাঁকা। কিন্তু খেয়াল করে দেখলাম, বসলে বাইরে থেকে বোঝা যাবে না এমন উচ্চতার সেমি কেবিনে বসে থাকা তরুণ-তরুণী বা পরিবারসুদ্ধ খেতে আসা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। গিরিধর বললেন,‘একটু পর লোকজনের ভিড় আরও বাড়বে।’ প্রশ্ন করতেই পারেন, স্বাদ কেমন? বলে রাখা ভালো, টেরাকোটার খাবার সুস্বাদু। মসলার পরিমিত ব্যবহার আপনার জিভকে আরাম দেবে। বিরিয়ানি খেতে গিয়ে অযথাই এলাচি চিবোনোর আশঙ্কা এখানে কম।
টেরাকোটা নামের এই রেস্তোরাঁটির যাত্রা শুরু হয়েছিল বছর দশেক আগে, ২০১২ সালে। এর উদ্যোক্তা ছিলেন ফরিদপুর জেলা স্কুলের ১৯৯৮ সালের ব্যাচের আট বন্ধু। রেস্তোরাঁটি যে জায়গায়, সেটি ওই আটজনের মধ্যকার একজনের পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে থাকা একটি স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে সেটিই পাঁচ বছরের জন্য ভাড়া নিয়ে টেরাকোটা নামের রেস্তোরাঁটির যাত্রা শুরু হয়। এই আটজনই পরে বিভিন্ন জায়গায় উচ্চপদে চাকরি ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। কিন্তু রেস্তোরাঁটি চালিয়ে যান। অবশ্য এর মধ্যে কয়েকজন চাকরিগত কারণে দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় এখন টেরাকোটার সঙ্গে যুক্ত নেই। সেখানে এসেছেন নতুন মানুষ। তাঁরাও মোটামুটি একই বৃত্তের।
টেরাকোটায় ঢোকার মুখে দেখা হয়েছিল তানসিব জুবায়ের রহমান সাম্যর সঙ্গে। পেশাগত জীবনে স্থপতি সাম্য টেরাকোটা রেস্তোরাঁর উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন। তিনি জানালেন, শিল্প ও খাবারের মধ্যে একটা মিল আছে— দুটিই আমাদের তৃপ্ত করে। ফলে শিল্পের সৌন্দর্যের সঙ্গে স্বাদের গল্প মিলিয়ে রেস্তোরাঁটির নাম রাখা হয়েছিল টেরাকোটা। শুধু খাবারই নয়, টেরাকোটায় আছে সুসজ্জিত কনফারেন্স রুম। সেখানে দুই শ মানুষের বসার ও খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। আছে পরিবার নিয়ে দীর্ঘ সময় আড্ডা ও খাওয়ার ব্যবস্থা।
ফরিদপুর ছোট শহর। এই ছোট শহরের বড় রেস্তোরাঁ টেরাকোটা স্বাদ ও শিল্পের এক অনন্য ব্যঞ্জনা।
চমকাবেন না। টেরাকোটা মানে পোড়ামাটির কাজ। তা আবার খাওয়া যায় নাকি! না, যায় না। কিন্তু রেস্তোরাঁর নাম ‘টেরাকোটা’ হলে তাতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায় বৈকি। বলছি ফরিদপুর শহরের দৃষ্টিনন্দন রেস্তোরাঁ টেরাকোটার কথা।
ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি এলাকার অম্বিকা সড়কে ভরদুপুরে টেরাকোটা শোভিত বাড়িটি দেখে একটু ধাক্কা খেয়েছিলাম— সেটা স্বীকার করি। টাইলসে ঢাকা বাড়ি হরহামেশা চোখে পড়লেও প্রায় পুরো দেয়াল টেরাকোটা প্ল্যাক দিয়ে মোড়ানো বাড়ি এখন দেখা যায় না সাধারণত। সে দেখা যেত আজ থেকে তিন-চার শ বছর বা তারও আগে, মন্দির আর মসজিদের গায়ে। তার প্রমাণ আজও আছে কান্তজিউ, পুঠিয়া মন্দির কিংবা বাঘা মসজিদের দেয়ালে। কিন্তু এই একুশ শতকে ফরিদপুর শহরে টেরাকোটার কাজ বিস্মিত করেছিল বৈকি! ফলে থামতে হলো। রিকশাও ছাড়তে হলো। সঙ্গে থাকা বিখ্যাত তরুণ গিরিধর দের ইশারায় ভেতরে যাওয়া হলো।
সে আর এক বিস্ময়!
কাচের দেয়াল ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই নাকে ভুরভুর করে ঢুকে পড়ল বিরিয়ানির সুগন্ধ। একটু পর তাকে ছাপিয়ে নাকে ঝাপটা মারল বেশি করে রসুন দিয়ে রান্না করা কোনো খাবারের ঝাঁজালো ঘ্রাণ। এ ঘ্রাণ যেন স্টার্টার! ভরদুপুরে ক্ষুধা বাড়িয়ে তোলে। আর অবধারিতভাবে কানে বেজে চলল কাটলারি ও ক্রোকারিজের ঠোকাঠুকিতে তৈরি হওয়া চিরপরিচিত টুংটাং শব্দ। প্রায় নিঃশব্দে চলছে প্যান্টে শার্ট গোঁজা ওয়েটারদের আনাগোনা। পাশের টেবিল থেকে আসা গরম-গরম খাবারের ঘ্রাণ নাকে ঝাপটা মারছে। মসলার সুবাসে টের পাওয়া যাচ্ছে, এখানে বারবিকিউ কোরাল পাওয়া যায়। পাওয়া যায় ফিশ ফিঙ্গার। মেন্যু কার্ড হাতড়ে দেখা গেল আপনি যা খেতে চান তার প্রায় সবই এখানে পাওয়া যায়।
চিকেন কিংবা চিজ বার্গার, চিকেন উইংস, তন্দুরি চিকেন, মাটন কারি, মাশরুম চিকেন, বেসনে ভাজা চিংড়ি বা ফ্রাইড প্রন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বিরিয়ানি, ফ্রাইড রাইস— কী নেই টেরাকোটায়? মেন্যু কার্ডে দামও যে আহামরি লেখা আছে, তাও নয়। মোটামুটি দুই শ টাকার মধ্যে একজনের দুপুরের খাবার হয়ে যায়। পরিবার নিয়ে খেতে গেলে হাজার টাকায় চারজনের অনায়াসে খাওয়া হয়ে যাবে টেরাকোটায়।
ভরদুপুর হলেও রেস্তোরাঁটি বেশ ফাঁকা। কিন্তু খেয়াল করে দেখলাম, বসলে বাইরে থেকে বোঝা যাবে না এমন উচ্চতার সেমি কেবিনে বসে থাকা তরুণ-তরুণী বা পরিবারসুদ্ধ খেতে আসা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। গিরিধর বললেন,‘একটু পর লোকজনের ভিড় আরও বাড়বে।’ প্রশ্ন করতেই পারেন, স্বাদ কেমন? বলে রাখা ভালো, টেরাকোটার খাবার সুস্বাদু। মসলার পরিমিত ব্যবহার আপনার জিভকে আরাম দেবে। বিরিয়ানি খেতে গিয়ে অযথাই এলাচি চিবোনোর আশঙ্কা এখানে কম।
টেরাকোটা নামের এই রেস্তোরাঁটির যাত্রা শুরু হয়েছিল বছর দশেক আগে, ২০১২ সালে। এর উদ্যোক্তা ছিলেন ফরিদপুর জেলা স্কুলের ১৯৯৮ সালের ব্যাচের আট বন্ধু। রেস্তোরাঁটি যে জায়গায়, সেটি ওই আটজনের মধ্যকার একজনের পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে থাকা একটি স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে সেটিই পাঁচ বছরের জন্য ভাড়া নিয়ে টেরাকোটা নামের রেস্তোরাঁটির যাত্রা শুরু হয়। এই আটজনই পরে বিভিন্ন জায়গায় উচ্চপদে চাকরি ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। কিন্তু রেস্তোরাঁটি চালিয়ে যান। অবশ্য এর মধ্যে কয়েকজন চাকরিগত কারণে দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় এখন টেরাকোটার সঙ্গে যুক্ত নেই। সেখানে এসেছেন নতুন মানুষ। তাঁরাও মোটামুটি একই বৃত্তের।
টেরাকোটায় ঢোকার মুখে দেখা হয়েছিল তানসিব জুবায়ের রহমান সাম্যর সঙ্গে। পেশাগত জীবনে স্থপতি সাম্য টেরাকোটা রেস্তোরাঁর উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন। তিনি জানালেন, শিল্প ও খাবারের মধ্যে একটা মিল আছে— দুটিই আমাদের তৃপ্ত করে। ফলে শিল্পের সৌন্দর্যের সঙ্গে স্বাদের গল্প মিলিয়ে রেস্তোরাঁটির নাম রাখা হয়েছিল টেরাকোটা। শুধু খাবারই নয়, টেরাকোটায় আছে সুসজ্জিত কনফারেন্স রুম। সেখানে দুই শ মানুষের বসার ও খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। আছে পরিবার নিয়ে দীর্ঘ সময় আড্ডা ও খাওয়ার ব্যবস্থা।
ফরিদপুর ছোট শহর। এই ছোট শহরের বড় রেস্তোরাঁ টেরাকোটা স্বাদ ও শিল্পের এক অনন্য ব্যঞ্জনা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
২ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪