Ajker Patrika

ছুটে চলা জীবন

সম্পাদকীয়
ছুটে চলা জীবন

ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা শহরে গিয়ে পাড়া ভ্রমণে বের হতেন ওয়াহিদুল হক। যাঁরা গান শিখতে আগ্রহী, তাঁদের বাড়ি বাড়ি যেতেন। সব সময় যে উষ্ণ সংবর্ধনা পেতেন, তা নয়। কিন্তু হাল ছাড়তেন না।

সে রকমই একবার গেছেন চট্টগ্রামে। ঢাকায় ফিরে এসে আবার বাইরে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করলেন। কবি মোহাম্মদ রফিককে বললেন, ‘নিজের দেশটাই ভালো করে দেখলে না তুমি। চলো, আমার সঙ্গে অমুক জায়গায় ঘুরে আসবে, চলো।’

বহুবার এ কথা বলেছেন। এবার মোহাম্মদ রফিক বললেন, ‘যাব আপনার সঙ্গে।’ময়মনসিংহ যাচ্ছেন ওয়াহিদুল হক। মোহাম্মদ রফিকও চললেন। দুখানা প্রথম শ্রেণির টিকিট কেটে মোহাম্মদ রফিক চড়ে বসলেন ট্রেনে। ট্রেন গাজীপুর পার হতেই উসখুস করতে লাগলেন ওয়াহিদুল হক। বললেন, ‘সময়টা কি এভাবে কাটবে? চলো, ওদিকে যাই!’

কোনদিকে, তা ঠিক বুঝতে পারছিলেন না মোহাম্মদ রফিক। তিনি করিডর দিয়ে বেরিয়ে এসে বসলেন বাথরুমসংলগ্ন মেঝেতে। বললেন, ‘আজকে ভোরটা মাটি হয়ে গেল। রেওয়াজ হলো না। তোমার তো কোনো শিক্ষাই হলো না। খুব খারাপ লাগছে আমার। বসো, আমি গান ধরি।’ তারপর শুরু করলেন রেওয়াজ।

একমনে রেওয়াজ করে চলেছেন ওয়াহিদুল হক। বাথরুমগামী লোকেরা একটু বিরক্ত হচ্ছে, কিন্তু তাতে যেন ওয়াহিদুল হকের কিছুই আসে-যায় না। পরম আনন্দে গেয়ে চলেছেন তিনি। খানিক পরে দেখা গেল, সেই ছোট জায়গাটায় একটু একটু করে মানুষ আসছে। সবাই মেঝেতে বসে থাকা সংগীতগুরুর রেওয়াজ শুনছে।

ময়মনসিংহ পৌঁছে দেখা হয় নুরুল আনোয়ারের সঙ্গে। সে বাড়িতেই ওঠেন তাঁরা। ওয়াহিদুল হকের ভীষণ প্রিয় মানুষ নুরুল আনোয়ার। তিনি নিজেকে তৈরি করেছেন ওয়াহিদুল হকের আদলে। সে বাড়িতে মাছ-ভাত-তরকারি সামনে নিয়েই ওয়াহিদুল-নুরুর মধ্যে শুরু হয়ে যায় সাংস্কৃতিক আলাপ। রবীন্দ্রসংগীতের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথোপকথন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল, সন্ধ্যা। তখন ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘চলো, বেরিয়ে পড়ি!’

এরপর ঘরে ঘরে গিয়ে তিনি খুঁজতে থাকেন শিল্পীদের, যাদের রেওয়াজ করাবেন। এভাবেই ছুটতে থাকেন এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি।

সূত্র: মোহাম্মদ রফিক, জগতের আনন্দযজ্ঞে ওয়াহিদুল হক, পৃষ্ঠা ৬০-৬৩ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত