Ajker Patrika

সংঘাত থামছে না মিয়ানমারে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ৩৪
সংঘাত থামছে না মিয়ানমারে

গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এর পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে চলছে বিক্ষোভ-সংঘাত। অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিলেও গত আগস্টে নিজেকে মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন তিনি। এ ঘটনার পর দেশটিতে তীব্র গণ-আন্দোলন শুরু হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দমন-পীড়ন শুরু করে সেনাবাহিনী, সম্প্রতি যা আরও বেড়েছে।

গতকাল বুধবার ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ৩০ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দেশটির সামরিক জান্তাবিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) বরাতে সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছে, গত সোমবার সাগাইং অঞ্চলে মিয়ানমার সেনারা অভিযান শুরু করার পর পিডিএফের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ৩০ বার্মিজ সেনা নিহত হন।

পিডিএফের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘সংঘর্ষের সময় পেল শহরের বাইরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গাড়িবহর ল্যান্ডমাইনের কবলে পড়ে এবং একজন কমান্ডারসহ সরকারি বাহিনীর ৩০ সেনা নিহত হন।’

পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে জান্তা সরকারের হাতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ১৬৭ জন নিহত হয়েছেন এবং ৭ হাজারের বেশি মানুষকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

এএপিপির তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাসেই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর মধ্যে ১৩২টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের বর্ণনা
সামরিক অভ্যুত্থানের আগমুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ত বলেছেন, অভ্যুত্থানের কয়েক ঘণ্টা আগে সেনাবাহিনী তাকে জোর করে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করেছিল এবং পদত্যাগ না করলে তাঁর মারাত্মক ক্ষতি করা হবে বলে হুমকি দিয়েছিল। গত মঙ্গলবার এক মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে উইন মিন্ত এসব কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।

আলজাজিরা বলছে, এ মন্তব্যের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে কোনো অভ্যুত্থান হয়নি এবং ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট আইনগতভাবে দেশটির ক্ষমতা জেনারেলদের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন বলে সেনাবাহিনীর দাবিকে চ্যালেঞ্জ করলেন উইন মিন্ত।

মিয়ানমারের সাবেক এই রাষ্ট্রপ্রধান মঙ্গলবার রাজধানী নেপিদোতে আদালতকে বলেছেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি দুই ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা তাঁর কাছে এসে অসুস্থতার কথা বলে তাকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন। কিন্তু উইন মিন্ত পদত্যাগে রাজি না হওয়ায়, পরে তাঁর জায়গায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ত সয়েকে মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট করা হয়, যিনি ওই সময় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন এবং পরে জেনারেলদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন।

এর আগে গত সেপ্টম্বরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই চলাকালীন দেশটির ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা চিন রাজ্যের থান্তলাং শহরের বেশির ভাগ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়। শহরটিতে বাস করা অন্তত ১০ হাজার মানুষের অধিকাংশই পালিয়ে আশ্রয় নেন ভারতের মিজোরাম রাজ্যসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়। একই ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও।

থান্তলাং বা অন্যান্য শহর থেকে পালিয়ে যারা ভারতসহ প্রতিবেশি বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়ার আশায় রয়েছেন, তাদের বিষয়ে জান্তা সরকারের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে আশ্রয়প্রার্থীরাও বর্তমানে দুর্বিষহ দিন পার করছেন জানিয়েছে স্থানীয় বিভিন্ন মানবাধিকার বিভিন্ন সংস্থা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি বাসভবনে একাই থাকতেন শরীয়তপুরের ডিসি, পরিবার থাকত ঢাকায়

কারাগারে ১০৫ মন্ত্রী-এমপি

‘তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’ বলেই জুলাই যোদ্ধাকে মারধর

বুশেহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে, বিশ্লেষকদের হুঁশিয়ারি

ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ও পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত