Ajker Patrika

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২১৭ বস্তা চাল লাপাত্তা, এলাকায় ক্ষোভ

বাসাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২২, ১৫: ৫৯
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২১৭ বস্তা চাল লাপাত্তা, এলাকায় ক্ষোভ

বাসাইলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২১৭ বস্তা চাল লাপাত্তার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের ডিলার নাছরিন আক্তার ও জাকির হোসেন পাপনের স্টোর রুম থেকে চাল বিতরণের সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হলে তাঁরা স্থানীয় মেম্বারদের এ ঘটনা জানায়। পরে ইউপি সদস্য ঘটনাস্থলে এসে বস্তা গণনা করলে দুই ডিলারের ঘর থেকে মোট ২১৭ বস্তা চাল কম পাওয়া যায়।

ফুলকি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শামছুল আলম বিজু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

চেয়ারম্যান শামছুল আলম বিজু বলেন, ‘আজ ১০ টাকা কেজির খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের তারিখ ছিল। সে অনুযায়ী উপকারভোগীরা চাল নিতে আসেন। এ সময় কয়েকজন ইউপি সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সামনে চালের বস্তা গণনা করা হলে নাছরিনের স্টোর রুম থেকে ৩০ কেজি ওজনের ১৩০ বস্তা ও পাপনের স্টোর রুম থেকে ৮৭ বস্তা চাল কম পাওয়া যায়। চাল আনার সময় ডিলারেরা দালালদের কাছে এ সব চাল বিক্রি করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় চাল বিতরণ বন্ধ রয়েছে। তাঁরা চাল আবার স্টোরে তুললে বিতরণ করা হবে।’ চাল গায়েবের বিষয়টি ইউএনও এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। ডিলার নাছরিন ও পাপনের কাছে বেশ কিছু উপকারভোগী কার্ড রয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী উপকারভোগীরা সকালে উপজেলার ময়থা বাজার এলাকা ও ফুলকী পশ্চিমপাড়া বাজার এলাকায় চাল আনতে যান। এ সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে কয়েকজন ইউপি সদস্যসহ আরও কয়েকজনে মিলে চালের বস্তার হিসাব নেন। এ সময় তাঁরা ময়থা উত্তরপাড়া এলাকার ডিলার নাছরিন বেগমের স্টোর রুমে ১৩০ বস্তা ও ফুলকী পশ্চিমপাড়া বাজার এলাকায় জাকির হোসেন

পাপনের স্টোর রুমে ৮৭ বস্তা চাল কম আছে বলে অভিযোগ তোলেন। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল আলম এসে চাল বিতরণ বন্ধ করে দেন।

চাল নিতে আসা জশিজাটী গ্রামের নজরুল, একঢালার আশরাফ আলী, আইসড়া গ্রামের দুলালী রাজ বংশী ও কনিকা রাজ বংশীসহ একাধিক উপকারভোগী বলেন, ‘নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী চাল নিতে এসেছি। কিন্তু ডিলারদের স্টোরে সব চাল জমা না হওয়ার কথা ফাঁস হলে আমাদের চাল দেওয়া হয়নি।’

বাসাইল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কনক কান্তিদেব নাথ বলেন, ‘চাল গায়েব হয়নি। গোড়াইয়ের মাশাফি এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ পুষ্টি চাল মিশানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁরা চালের বস্তা কম দিয়েছেন। এ জন্য ওই ডিলারদের স্টোরে ২১৭ বস্তা চাল কম রয়েছে। ডিলারদের কাছে ট্যাগ অফিসার ও খাদ্য পরিদর্শককে পাঠানো হয়েছে। এখানে ডিলারদের জালিয়াতি প্রমাণ হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে গোড়াই মাশাফি এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার এখান থেকে নির্ধারিত পরিমাণ চাল ডিলারদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আমরা চালের একটি বস্তাও কম দিইনি। চাইলে আমাদের চালান কপি দেখতে পারব।’

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কর্মকর্তা নাহিদা পারভিন বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে সরেজমিনে পরিদর্শনে যেতে বলেছি। তিনি পরিদর্শন শেষে রিপোর্ট দিলে নীতিমালা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত