Ajker Patrika

কাজের ফাঁকে মাশরুম চাষে সাফল্য সঞ্জয়ের

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ৪৫
কাজের ফাঁকে মাশরুম চাষে সাফল্য সঞ্জয়ের

সঞ্জয় কুমার। তিনি ভ্যান-সাইকেল মেকানিকের কাজ করেন। তা দিয়েই চালাতেন সংসার। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রেলস্টেশনের উত্তর পাশে ছোট্ট একটা দোকান বসিয়ে সেখানেই এ কাজ করেন তিনি। তবে কাজের ফাঁকে সঞ্চয় (৩২) এবার সরকারি খরচে প্রশিক্ষণ শেষে একটি বেকারি ফ্যাক্টরি ভাড়া নিয়ে সেখানে শুরু করেছেন অয়েস্টার মাশরুম চাষ। ফ্যাক্টরিতে এখন ৩০০ ওয়েস্টার মাশরুমের বীজ (স্পন প্যাকেট) চাষ হচ্ছে।

সঞ্জয় কুমারের পরিবারে মা-বাবা, দুই ভাই ও তাঁদের স্ত্রী, সন্তানসহ এক বোন আছে। করোনার কারণে তাঁর উপার্জন কমে যাওয়ায় সংসারের লাগাম টানতে তাঁকে হিমশিম খেতে হয়। তাই নিজে থেকেই যোগাযোগ করেন উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তার সঙ্গে। কৃষি কর্মকর্তা তাঁর আগ্রহ দেখে সরকারি খরচে ওয়েস্টার মাশরুম চাষের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।

সঞ্জয় সেই কোর্স শেষ করে নিজ এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বেকারির ঘর ভাড়া নেন। সেখানে স্বল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করে অয়েস্টার মাশরুম চাষ। সঞ্জয়ের ওই মাশরুমের একেকটি প্যাকেট থেকে ২০-২৫ দিন পর থেকে মাশরুম তোলার উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রথমবার মাশরুম তোলার পর ওই প্যাকেট থেকে সাত থেকে আট দিন পর আবার মাশরুম তোলা যায়। এভাবে একটি প্যাকেট থেকে তিনবার মাশরুম উৎপাদন করা যায়। তবে এ চাষে তেমন একটা খরচ নেই বললেই চলে।

সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘অয়েস্টার মাশরুম চাষ করে নিজে উপকৃত হওয়ার জন্য আমি এ কাজ শুরু করিনি। যখন দোকানে বসে কাজ করতাম, তখন দেখতাম এলাকার বেকার তরুণেরা চাকরির পেছনে ছুটে হাজার হাজার টাকা নষ্ট করেছেন। তখন চিন্তা করলাম কিছু একটা করি। আর সেটার সাফল্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দিই। সেই চিন্তা থেকেই মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ করে ঢাকা থেকে অয়েস্টার মাশরুমের বীজ কিনে এনে মাশরুম চাষ শুরু করি।’

যেভাবে মাশরুম চাষ করা হয়—প্রথমে খড় টুকরো করে একটি বড় পাত্রে রাখতে হবে। এরপর সেগুলো কয়েক ঘণ্টা সেদ্ধ করতে হবে। ওই টুকরোগুলো একটি ব্যাগের মধ্যে ভরা হয়। আর মাঝে মাঝে মাশরুমের বীজ রাখতে হবে। এভাবে একাধিক প্যাকেট তৈরি করে সেগুলো একটি আবদ্ধ ঘরে (আলো-বাতাসবিহীন) সারিবদ্ধভাবে রাখতে হবে। প্রতিটি প্যাকেটের গায়ে প্যাকেটজাত করার তারিখ লিখে রাখতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর থেকে ওই প্যাকেট থেকে মাশরুম উত্তোলন করা যাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা আশিক কুমার বলেন, ‘সঞ্জয় সরকারিভাবে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে চাষ শুরু করেছে। আমি সেখানে বিনা পয়সায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। সবকিছু শেখা হয়ে গেলে আমিও এই লাভজনক ব্যবসা শুরু করব।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) রুহুল আমিন বলেন, খাদ্যগুণে সমৃদ্ধ মাশরুম পুষ্টিবর্ধক একটি খাবার। মাশরুমের প্রোটিন অতি উন্নতমানের এবং সেটি মানবদেহের জন্য অতি উপকারী।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি বেশ উপকারে আসে। মাশরুম চাষ করতে বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। এটাতে অল্প পরিশ্রমে অধিক টাকা আয় করা যায়। বাজারে মাশরুমের চাহিদা ব্যাপক হারে আছে। যার প্রতি কেজি বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। মাশরুম কাঁচাসহ শুকিয়েও বিক্রি করা যায়। আক্কেলপুর উপজেলায় দুজন অয়েস্টার মাশরুম চাষ করছেন। একজন আক্কেলপুর রেলস্টেশন-সংলগ্ন, অপরজন হালির মোড় এলাকায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত