Ajker Patrika

বিপজ্জনক মোড়ে মধ্যপ্রাচ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৩০
Thumbnail image

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বছরের পর বছর চলে আসা নানা দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য অঞ্চলটির নেতারা যখন জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, ঠিক তখনই সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির কেন্দ্রস্থলে ভয়াবহ এক ড্রোন হামলা যেন এলোমেলো করে দিয়েছে সব হিসাব।

গত সোমবার আবুধাবির বিমানবন্দরের কাছে ওই ড্রোন হামলা চালানো হয়। যার ফলে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে এবং তিনজন নিহত হন। ঘটনার পরপরই এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা। জবাবে, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বিমান হামলা চালিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাল্টাপাল্টি এই হামলায় যে শুধু হতাহত বাড়বে তা নয়, পাশাপাশি এক দশকের প্রক্সি যুদ্ধের ইতি টানতে মধ্যপ্রাচ্যের প্রচেষ্টাও এতে বাধাগ্রস্ত হবে। এমনকি সৌদি আরব এবং এর আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের মধ্যে ঐতিহাসিক আলোচনা, যা আলোর মুখ দেখছিল; আবুধাবিতে হামলার ফলে সেই আলোচনাও ভেস্তে যেতে পারে।

হুতি হামলা কেন তাৎপর্যপূর্ণ

বহু বছরের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রথম প্রাণঘাতী হামলার পাশাপাশি গত সোমবারের ড্রোন হামলায় প্রমাণ হয়েছে যে দূরপাল্লার হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে হুতিদের। এ ছাড়া হামলার পর তেলের দাম বেড়ে গেছে, যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা।

২০১৯ সালে, ইয়েমেন থেকে নিজেদের বেশির ভাগ সেনা প্রত্যাহার করে নেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু তাদের অভিযান একদিকে যেমন বিদ্রোহীদের দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে, অন্যদিকে ওই যুদ্ধে হাজার হাজার বেসামরিক ইয়েমেনি নিহত হয়েছেন।

সানার সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক মাজেদ আল-মাধাজির মতে, ‘ইয়েমেনে আমিরাত-সমর্থিত বাহিনীর হস্তক্ষেপ হুতিদের ক্ষুব্ধ করেছে। তারা এখন আমিরাতের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার চিত্রকে আঘাত করে একধরনের ভারসাম্য তৈরি করার চেষ্টা করছে।’

আরব আমিরাতের ঝুঁকি যেখানে

কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছে তেলসমৃদ্ধ দেশটি। বিশ্ব মঞ্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম বড় ইমেজ তাদের স্থিতিশীলতা, যা বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বড় ভূমিকা রাখে। তবে হুতিদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাড়লে সেই ইমেজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

এ ছাড়া বিদেশি কর্মীদের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল সংযুক্ত আরব আমিরাত। রাজনৈতিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা কার্যত অস্তিত্বহীন হলেও আমিরাত কর্তৃপক্ষ দেশের সুনাম ধরে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে সংঘাত বাড়লে এই সুনাম ধরে রাখাও কঠিন হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত