Ajker Patrika

করলায় আয় বছরে ২০ লাখ টাকা

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২৩
করলায় আয় বছরে ২০ লাখ টাকা

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়নের চর হাসান গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদিন সবুজ শীতকালীন করলার চাষ করেন। করলা চাষ করে তিনি গত ১০ বছরে প্রায় ২ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সে হিসাবে বছরে তাঁর আয় হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা।

স্থানীয়রা জানায়, দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়ে গ্রামের পাঠ শেষ করে শহরে গিয়ে স্নাতক শেষে শিক্ষক নিবন্ধন পাস করেন জয়নাল আবেদিন সবুজ। স্বপ্ন ছিল শিক্ষকতা করবেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে চাকরির সুযোগ হয়নি। একসময়ের বেকার সবুজের অধীনে এখন ডজন খানেক যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ইউটিউব দেখে করলা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি।

এলাকাবাসী জানায়, পাঁচ মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে যৌথ পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা লেগেই আছে। পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেও চাকরি পাননি। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেন সবুজ। একপর্যায়ে তিনি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউব দেখে করলা চাষের প্রতি আগ্রহী হোন সবুজ। করলা চাষে পরিবারের পক্ষ থেকে অসম্মতি থাকলেও প্রথম বছরেই স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে ধার করে ১ লাখ টাকা পুঁজিতে চাষ শুরু করে ৩ লাখ টাকা লাভ করেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।

জয়নাল আবেদিন সবুজ বলেন, মাদ্রাসার চাকরি ছেড়ে নিজের সবজি খামারে ডজন খানেক যুবককে চওড়া বেতনে চাকরি দিয়েছেন। করলা চাষে লাভের টাকায় দোতলা বাড়ি করেছেন। তিনতলা দোকানের ভিটে কিনেছেন। ৮০ শতাংশ জমি কিনেছেন। সব মিলিয়ে ১১টি গরুসহ ১০ বছরে ২ কোটির বেশি টাকার মালিক হয়েছেন সবুজ। এ ছাড়া পরিবারের অন্যান্য চাহিদা তো মেটাচ্ছেনই।

জয়নাল আবেদিন সবুজ আরও বলেন, এ বছর তিনি ২৪০ শতাংশ জমিতে করলার চাষ করেছেন। এতে ৬ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। এ বছর করলার দাম ভালো পেয়েছেন। পৌষ মাসের প্রথম দিকে প্রতি কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করেন। বৈশাখ-জ্যেষ্ঠ মাস পর্যন্ত ৪০ লাখ টাকার করলা বিক্রি হবে বলে তিনি জানান। নিজস্ব পরিবহনে নোয়াখালী ছাড়াও কুমিল্লা, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সরবরাহ করেন।

চর হাসান গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন জানান, জয়নাল আবেদিন সবুজের সফলতা দেখে তিনি নিজেও ১২০ শতাংশ জমিতে করলা চাষ করেছেন। কোনো সমস্যা দেখা দিলে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নেন।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হারুন অর রশীদ বলেন, জয়নাল আবেদিন সবুজ একজন সফল করলা চাষি। তিনি আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করেন। এতে স্বাভাবিকের তুলনায় তিন গুণ ফলন পান। শিক্ষিত যুবক হওয়ায় অল্প সময়ে সফলতা পেয়েছেন। তাঁর মতে, এককভাবে অত বড় করলা চাষ বৃহত্তর নোয়াখালীতে নেই। সবুজকে কৃষি থেকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত