Ajker Patrika

ইভার মিষ্টির দোকান

রিক্তা রিচি, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২২, ২০: ৪৭
ইভার মিষ্টির দোকান

দোকান শব্দটি শুনলে একটি ছোট্ট ঘরের কথা মনে পড়ে। যেখানে থাকে অনেক রকম জিনিসপত্র। কিন্তু কালে কালে আমরা দেখেছি দোকানগুলো ঢুকে গেছে অনলাইনে। এখন ঘর না থাকলেও দোকান থাকতে পারে। তাতে মালামালও থাকতে পারে। সেটা বিক্রিও হতে পারে। এমনকি তা যদি খাবার জিনিসও হয়।

রেবেকা সুলতানা ইভার মিষ্টির দোকান সেরকমই, মূলত ফেসবুককেন্দ্রিক। তাঁর দোকানের নাম ‘মনটা করে খাই খাই।’ এ দোকানের একমাত্র সদাই মিষ্টি। কোন মিষ্টি নেই সেখানে? রসগোল্লা, সন্দেশ, আমভোগ মিষ্টি, গুড়ের ছানার জিলাপি, পুডিং, গোলাপজাম, কালো জাম, কাঁচাগোল্লা, আম মোহিনী, রসমালাই, মালাইচপ, গুড়ের সর মালাইসহ অনেক কিছু আছে। ইভার নিজের বানানো মিষ্টি তো আছেই। আবার চাইলে আপনি নিজেও বানিয়ে নিতে পারেন আপনার পছন্দ ও চাহিদামতো যেকোনো মিষ্টি।

যেভাবে শুরু

পড়াশোনা শেষ করে বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন রেবেকা সুলতানা ইভা। বিয়ের পর সন্তানের মা হলে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। এ সময় তিনি খেয়াল করেন, শ্বশুরবাড়ির মানুষেরা মিষ্টি খেতে দারুণ পছন্দ করেন। এ সময়েই শখের বসে তিনি একটি প্রফেশনাল কোর্স করেন। সেই কোর্স করার পর থেকে বাসায় মিষ্টি বানাতেন। সেসব মিষ্টি খেয়ে একান্নবর্তী শ্বশুরবাড়ির মানুষেরা বেশ প্রশংসা করতেন। সন্তান কিছুটা বড় হলে যখন তিনি ঘরে বসে অর্থ আয় করার পথ খুঁজতে থাকেন, সে সময় এই প্রশংসাকে পুঁজি করে তিনি খুঁজে নেন অর্থ উপার্জনের পথ। পরিবারের সদস্যরাও সে বিষয়ে অনুপ্রেরণা ও সাহস দিয়েছেন। ঘরে বসে আয় করার মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন অনলাইন ব্যবসাকে। স্বামীর অনুপ্রেরণায় ‘মনটা করে খাই খাই’ নামের ফেসবুক পেজ দিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি।

মিষ্টির প্রতি মানুষের সহজাত একটা আকর্ষণ আছে বলে মনে করেন ইভা। সে জন্য মানুষ যেখানেই যায়, সেখানেই মিষ্টি খাওয়ার চেষ্টা করে। আবার পরিবারের জন্যও কিনে আনার চেষ্টা করে। এ বিষয়টি তাঁকে বেশ ভাবিয়েছে। মিষ্টি বানিয়ে বিক্রি করার চিন্তাটা এখান থেকেও এসেছে কিছুটা হলেও—জানান ইভা।

রংপুরের মেয়ে রেবেকা সুলতানার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকার সাভারে। পড়াশোনা করেছেন মিরপুর বাঙলা কলেজ থেকে। ‘মনটা করে খাই খাই’ নামে ফেসবুক পেজটি খুলেছেন ২০১৮ সালে। তবে করোনাকালীন দুর্দিন কাটিয়ে ব্যবসা পুরোদমে শুরু করেছেন ২০২১ সাল থেকে। মাত্র ৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও ব্যবসা বেশ ভালোই চলছে এখন। যে পরিমাণ টাকা প্রতি মাসে ঘরে আসে, তাতে সন্তুষ্ট ইভা।

ইভা একাই সামলান তাঁর ব্যবসা। রোজ দুই থেকে তিনটা অর্ডার রাখেন। তবে সামনে আরও অনেককে যুক্ত করে ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা চালাবেন বলে পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

রেবেকা সুলতানা ইভা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ঝামেলা ছাড়াই তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর মিষ্টির ব্যবসা। স্বামী তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার। এমনকি তাঁর ৫ বছর বয়সী ছেলে রইনীল তাঁকে উৎসাহ দেয়।

উদ্যোক্তা-জীবন ভীষণ উপভোগ করছেন ইভা। এই কাজ তাঁকে ভালো থাকতে সাহায্য করছে মানসিকভাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত